ব্রাদার্স ও সিস্টার্সের কথা আর ভুলি না। যেহেতু পুরুষ তাই সিস্টার্সদের কথা মনে হয়। অনেকটা আপনাদের বাড়িতে কি মা-বোন নেই স্টাইলে। প্লেটোর প্লেটোনিক লাভ কতটা এই ব্রাদার্সও সিস্টার্স থেকে উৎসারিত তা খুঁজে পেতে দেখতে ইচ্ছে হয়।
কিন্তু ভাই-বোনের সম্পর্ক আমাকে সবচে বেশি নাড়া দিয়েছিল তারো আগে। বন্ধু বিশুর চার বছরের বিবাহিত জীবনে যখন অগ্নু্যৎপাত শুরু হয়েছে। বন্ধুপত্নী পদাধিকারবলেই বন্ধু। আমি আদর করে আমাদের বউ বলে ডাকতাম। সেই গুণী, লক্ষ্মী বউ নোটিশ দিয়ে দিয়েছে যে এই দাম্পত্যে সে আর আগ্রহী না। কী কারণ, কী কারণ? রাত-ভর আমরা তিনজন মিলে আলোচনার আসর বসাই যদি কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রেম-বিয়েকে দীর্ঘায়ু দেয়া যায়। বন্ধুপত্নীর জবাব একটাই, এই সম্পর্ক ভাই-বোনের মত হয়ে গেছে। আমি এই সম্পর্ক চাইনা। (এই তথ্য বন্ধনীতে দেয়াই যায় যে, বন্ধুপত্নী বাস্তবে বিশুর বন্ধুর ছোটবোন ছিল।)
আমি অবিবাহিত তখন। দাম্পত্যজীবনের জৈব-রসায়ন সম্পর্কে একেবারেই মুর্খ। দাম্পত্য সম্পর্ক ভাই-বোনের মত হয়ে গেছে মানে কতটা খারাপ তাও বুঝতে পারিনি। শুধু এইটুকু গূঢ়ার্থ উদ্ধার করেছিলাম যে প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোনেরা এক ছাদের নীচে থাকে না। তারা ভিন্ন ভিন্ন সঙ্গী খুঁজে আলাদা হয়ে যায়। আমার বন্ধু ও বন্ধুপত্নীও হয়তো এই যুক্তিকে শিরোধার্য করে আলাদা ছাদের নীচে চলে গেল।
অনেক বছর পরের কথা। বন্ধুর সূত্রে আমরা ঠিক আগের মত রূপবতী ও গুণবতী বন্ধুপত্নী পেয়েছি। পদাধিকার বলে সেও আমাদের বন্ধু। বন্ধুর খোঁজে গতকাল ফোন করেছিলাম। বন্ধুপত্নী ফোনে জানতে চাইলেন, আমরা টোনা-টুনি কেমন আছি। ভালো, নাকি ভাই-বোন হয়ে গেছি?
বললাম, নাহ, আমরা এত খারাপ নাকি? সবাইকে ইনসেস্ট ভাবা ঠিক না।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০