somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেখার কোন বয়স নাই চলো শিয়ালের পাঠশালায় যাই।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা সবাই শিয়ালের স্কুলের গল্প শুনেছি। বনে বনে ঘুরে ঘুরে যখন সে শিকারে অসমর্থ হয়ে পড়লো,তখন শিকার ধরার এক অভিনব কৌশল হিসেবে পাঠশালা সৃষ্টি করলো। বনের প্রাণীদের শিক্ষিত করার জন্য পাঠশালায় আনে এবং দিনে দিনে তার পেট পুরা করে। কুমির মামা তার সাত সন্তানকে শিক্ষিত করতে এসে সাত সন্তানকেই চিরতরে হারায়।
এই পুরানো গল্প মনে করিয়ে দেয়া আমার উদ্দেশ্য না। আমার মনে হয়, বর্তমান শিক্ষার ক্ষেত্রে সেই শিয়ালের পাঠশালায় আমাদের কচি কচি ভাইদের তুলে দিচ্ছি। শিক্ষা নামক শিয়ালটি কুমিরের বাচ্চার মতো গিলে খাচ্ছে,আমাদের কচি কাচাদের। বিনিময়ে কুমিরের মতো আমরাও হারাচ্ছি আমাদের কলিজার টুকরোদের প্রিয় সম্পদ।
শিক্ষা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। এই অধিকার আদায়ে সকলকেই এগিয়ে আসতে হয়। সাধারণত আমাদের আগের সমাজে পাঁচ বছরের কম হলে স্কুলে দিতো না। তারও আগে শুনেছি এক খতম কুরআন না দিলে কাউকে স্কুলে দিতো না। যুক্তি ছিলা,সেখানে গেলে তো আর কুরআন পড়ার সুযোগ হবে না। তাই আগে সালাত-কুরআন শিখা উচিত।
কিন্ত আজকের সমাজের চিন্তাধারা পুরাই ভিন্ন। এখন তিন বছর হলেই, স্কুলে ভর্তির জন্য মা-বাবার দৌড়াদুড়ি শুরু হয়। নামি-দামি স্কুলে ভর্তির জন্য ফরম কিনে আনে। প্রার্থী বেশি থাকার কারণে এই সব কচি কাচাকে প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। মুখে কথা ফুটার আগেই তাকে স্কুলের ব্যাগ কাধে নিতে হয়।
শুধু কি তাই? পরীক্ষায় ভালো করার জন্য রাখা হয় টিউটর। স্কুলে ফাস্ট হওয়ার জন্য বাবা-মা প্রেশার দিতে থাকে এই নিস্পাপ সন্তানের উপর। জীবনে যখন খেলা করে সময় কাটানোর সময়,তখন তাকে শিক্ষা নামক যাতাকলে পিষ্ট হতে হয়। এমন অনেক ছোট ভাই বোন আছে,যারা সকালে স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়,আর বিকেলে আসে। অথচ সে মাত্র ক্লাস থ্রিতে পড়ে। সকালে স্কুল, এরপর স্কুল কোচিং,দুপুরে খাওয়ার পর টিউটর,বিকেল থেকে রাতেও টিউটর,এভাবেই চলে তার জীবন।
অন্যদিকে পড়াগুলোও এত কঠিন যে,আমরা অনার্সে যে সব ইংরেজি শব্দ পড়ছি তার অনেকগুলো এখন ক্লাস থ্রির বইতে পাওয়া যায়।….মা স্কুলে গেলে তার সন্তানের রেজাল্ট নিয়ে বান্ধবীদের সাথে গর্ব করেন। প্রাইভেট কিন্ডার গার্ডেন গুলোয় বইয়ের অভাব নেই। আমার ছোট বোনের ফাইভের সময়,তার বই ছিলো ১৪ টি। টিচারদের বললাম, পি এস সিতে ও তো এতগুলো সাবজেক্ট নেই। কেন ওদের এতগুলো পড়ান? স্যার বললেন,এখন প্রতিযোগিতার যুগ। কেবল সরকারি বইতে সীমাবদ্ধ থাকলে তো চলবে না।
এদিকে এক বিষয়ে মার্কস কম পেলে গার্ডিয়ানরা তার উপর প্রেশার দেন। টিউটর তার পেশা টিউশনি রক্ষার জন্য স্টুডেন্টকে চাপ দেন। এভাবে চাপে চাপিত হয়ে,কচি কাচাদের অবস্থা কী হয়??….আসলেই কি তারা অনেক এগিযে যাচ্ছে।আসলেই কি তাদের মেধার বিকাশ ঘটেছে। নাকি শিক্ষার যাতাকলে পিষ্ট হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে আরেক জ্বালা। এসব কচি-কাচাদের বিনোদনের সময় নেই। শহরে মাঠ না থাকার কারণে,তারা খেলার সুযোগ পায় না। বিকেলে টিউটর থাকায় খেলাধুলা বন্ধ।..তাদের বিনোদন কেবল কম্পিউটার গেমের মাঝেই সীমাবদ্ধ। আমাকে একটু বলুনতো, খেলাধুলা ছাড়া কি শিশুর সুস্থ বিকাশ সম্ভব?
আবার অন্য সমস্যা। টিভিতে এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু সন্তানদের দেখে মা-বাবা আশা করেন,তার সন্তান সেরকম হোক।এতে তিনি সন্তানকে পড়ালেখার পাশাপাশি নাচ-গান ইত্যাদির প্রতি জোর দেন। টিভিতে প্রতিযোগিতার জন্য তাদের চাপ দিতে থাকেন। এবার বলুন এরা যাবে কোথায়?
আবার আমার একজন শিক্ষক এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে একজন বললেন,ভাই এখন পিছিয়ে থাকলে হবে। দুনিয়া অনেক এগিয়ে গেছে। আপনারা তো জানেন না।….
তখন আমার এক ভাই বললেন,একটা কাজ করেন। যে দশ মাস মায়ের গর্ভে থাকে এমন কোনো সিস্টেম চালু করেন,যাতে সেখানেও শিখানো যায়।

হুম, কথায় লোজিক আছে।

আসলেই আমরা তখনকার অবস্থায় কেন পিছিয়ে থাকবো??????
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×