somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংকোচের বিহবলতা নিজেরই অপমান

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক দিন আগেই হুমায়ুন আজাদ লিখে গেছেন, এদেশের প্রতিটি নারী ধর্ষিত হবার ভয়ে ভীত। কথাটা যে কি প্রচণ্ড সত্য আজ আর অস্বীকার করার উপায় নেই। চলুন আগে জেনে নিই নারীরা কাদের দ্বারা ধর্ষিত হয়ে থাকে।

অপরিচিত ব্যক্তি নয়, নারী ধর্ষিত হয় তার চেনা জানা লোকজনদের দ্বারাই। বাইরে নয়, নারীরা সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত হয় তার আপন ঘরে। মুখোশ পড়া আত্নীয়রা উৎ পেতে থাকে সুযোগের। এছাড়াও রয়েছে প্রতিবেশী, শিক্ষক, সহকর্মী, বস, প্রত্যাখ্যাত প্রেমিক।

কাজের প্রয়োজনে নারীকে এখন বাইরে বের হতে হচ্ছে। কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ঢাকার রাস্তায় যা জ্যাম! এসব ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবেঃ
 রাস্তায় চলা ফেরা করার সময় আত্নবিশ্বাসের সাথে চলতে হবে। আপনি যে দূর্বল নন, আপনাকে দেখেই যেন তা বোঝা যায়। তাহলেই আপনাকে আক্রমণ করার সাহস কারো হবে না।
 একা অবস্থায় আইপড বা মোবাইলে গান শোনা যাবে না। চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।
 আপনার মোবাইলে নিকটস্থ থানার ফোন নাম্বার রাখুন। (আমাদের দেশের পুলিশদের যা অবস্থা! এই নাম্বার রেখে কি আদৌ কাজ হবে?)
 অলিগলি নয়, প্রধান সড়ক ব্যবহার করুন। নির্জন রাস্তা পরিহার করুন।
 সে রাস্তায় আলো নেই সে রাস্তা পরিহার করুন। আমাদের দেশে যে কোন সময় বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে। তাই একটা টর্চ সাথে রাখুন।

নারী তার ভালবাসার মানুষটির দ্বারাও হয়ে থাকে নির্যাতিত। মনে রাখতে হবে, ধর্ষক যেই হোক তাকে কখনো ক্ষমা করা চলবে না। প্রেমিকের সাথে ডেটিং করতে যাবার সময় যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবেঃ

 নির্জন কোন স্থানে না যাওয়াই উত্তম। দল বেঁধে ঘুরতে যেতে পারেন।
 ডেটিং-এর সময় এলকোহল জাতীয় কোন কিছু পান করা চলবে না।
 আপনার প্রেমিককে তার সীমা কতটুকু তা বুঝিয়ে/বুঝতে দিন।


আগেই বলেছি, নিজের ঘরেই সবচেয়ে বেশি নারী নির্যাতিত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যে সাবধানতা মেনে চলতে হবেঃ
 বাসায় একা থাকলে বাইরের কাউকে ঘরে আসতে না দিয়ে, বাইরে থেকেই বিদায় করে দেবেন। ঘরের দরজায় সেফটি লক ব্যবহার করতে হবে।
 প্রতিবেশীদের সাথে সদ্ভাব রাখুন। বিপদে কাজে দেবে।


সাবধানতা তো অবলম্বন করা হল। তারপরেও যদি আপনি আক্রান্ত হয়ে যান সে সব ক্ষেত্রে যা করতে হবেঃ

 একদম ভয় পাওয়া চলবে না। মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করতে হবে।
 যতটা জোরে সম্ভব চিৎকার দিন।
 ধর্ষকের সাথে শক্তি প্রয়োগ করতে যাবেন না। সে আপনার চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে। নাকের উপরে জোরে থ্যাবরা মারুন। কয়েক সেকেন্ডের জন্য ধর্ষক থমকে যাবে। এই সময়ে তার হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিন এবং পালান। অবশ্যই চিৎকার করতে করতে।
 নিজের হাতিয়ার ব্যবহার করুন—দাঁত, মাথা, পা, হাত, হাঁটু, নখ।
 আপনি আক্রান্ত হতে পারেন চুলে, চোখে, নাকে, গলায়, কলার বোনে, পাঁজরে, কিডনীতে, পাকস্থলীতে, মেরুদণ্ডে, হাঁটুতে। সুতরাং সাবধান।
 হাতের কাছে চাবি বা বোতল এ জাতীয় কিছু থাকলে ধর্ষকের মাথায় আঘাত করুন।
 চাবি ছুঁড়ে মারুন চোখে।
 পায়ে হাই হিল থাকলে ওটা খুলে নিন। দৌড়ুতে সুবিধা হবে। ধর্ষকের মাথায় আঘাত করুন।
 ধর্ষকের দূর্বল অঙ্গে আঘাত করুন। লাথি মারুন। যত জোরে সম্ভব। এতেই কাবু হয়ে যাবে সে। এবার পালান।


নিজেকে শারিরীক ও মানসিক ভাবে শক্তিশালী করে তৈরি করে নিতে হবে, যেন যে কোন ধরনের বিপদ থেকে নিজেই উদ্ধার পাওয়া যায়। আত্নরক্ষার কিছু সহজ কৌশল শিখে নিতে পারেন।

শেষ করব হুমায়ুন আজাদ দিয়েই। স্মৃতি থেকে লিখছি। তাই হুবহু হবে না। প্রাচীন কাল থেকে নারীকে মনে করা হত অন্যের সম্পদ, কখনো তার বাবার, কখনো স্বামীর, কখনো ভাই বা সন্তানের। সম্পদ চুরি গেলে চোরের শাস্তি দাবি বা বিচার করে সম্পদের মালিক, সম্পদ নিজে নয়। তাই নারী ধর্ষিত হলে, তার বিচার চাইবার অধিকার যেন নারীর নিজের নয়। সে যার সম্পত্তি তার। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে নারীর নিজেকেই। নিজেই প্রতিবাদ করুন, কখন আপনার হয়ে আরেকজন প্রতিবাদ করবে সেই অপেক্ষায় বসে না থেকে।

৬ আগস্ট, ২০১১।

১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×