খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র সংঘর্ষের নেপথ্যে দুই শিক্ষকের ইন্ধন রয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তারা উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য কতিপয় ছাত্রকে উস্কে দিয়ে সোমবারের ঘটনার জন্ম দেন।
সোমবার কুয়েটের সিভিল ও ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে ছাত্র, পুলিশ, সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩১ মে পর্যন্ত বিশ্ব-বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা এবং রাতের মধ্যে হল খালি করার নির্দেশ দেয়। ব্যাপকসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতির কারণে ক্যাম্পাসে হাঙ্গামা না হলেও আশপাশের মেসে হামলা ও কম্পিউটার ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর পুরকৌশল অনুষদের ডিন ডঃ মো: আলমগীর ভিসি এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি ডঃ শিবেন্দ্র শেখর শিখদার প্রো-ভিসির পদ দখলের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কারণ বর্তমান ভিসিও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক। ব্যর্থ হওয়ার পর ওই ডিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে বর্তমান ভিসিকে ব্যর্থ প্রমাণ করার কৌশল নেন। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রদের একাংশকে হাত করেন। এনজিও কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ওই শিক্ষক বিভিন্ন খাতে প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ ছাত্রদের পেছনে ব্যয় করেন বলে সূত্রগুলো জানায়।
৩ মে ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে ঘিরে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কুয়েটের খানজাহান আলী হলে এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও হয়। অনুষ্ঠান প- করতে ওই হলে লাঠিসোঁটা, চাপাতি ও ককটেল মজুদ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব অবহিত হলে হলটিতে তল্লাশি চালানোর জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্র্তৃপক্ষকে অনুরোধ করলেও তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠানটি নির্বিঘেœ সম্পন্ন করতে অডিটরিয়ামে কয়েক শিক্ষককে উপস্থিত থাকার ব্যবস্থা করেন। কয়েক শিক্ষক জানান, অনুষ্ঠানটি ভ-ুল করতে বহিরাগত আনা হয়। সেরকম এক বহিরাগতর কাছ থেকে লাঠি কেড়ে নিতে গিয়ে এক শিক্ষক আঘাতপ্রাপ্ত হন বলেও জানান। সেদিনের অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলেও উত্তেজনা অব্যাহত থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্ররা ওই শিক্ষকের ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে এবং তার পদত্যাগ দাবি করে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেয়। স্মারকলিপিতে পুরকৌশল অনুষদের ডিন ড. মো. আলমগীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল কোনো পদ না দিয়ে উস্কানির মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির দায়ে পদত্যাগের দাবি জানানো হয়।
অন্যদিকে ওই ডিনের সমর্থকরা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মারামারিতে সুবিধা করতে না পারলেও ক্যাম্পাসের বাইরে চোরাগোপ্তা হামলা চালায়। সোমবার রাতে ক্যাম্পাসের বাইরের কয়েকটি মেসে হামলা চালিয়ে সদ্য ভর্তি হওয়া দুই ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করে। মেসে ছাত্রদের ব্যক্তিগত চারটি কম্পিউটারও তারা ভেঙে ফেলে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



