somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বীরশ্রেষ্ঠ: নূর মোহাম্মদ শেখ (১৯৩৬-১৯৭১)

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবি:-বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ (১৯৩৬-১৯৭১)

মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসীকতার জন্য যে ৭ জন শহীদকে বাংলাদেশ সরকার বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেছেন তাদের নিয়ে আমার ৭ পর্বের ধারাবাহিক পোষ্টের আজ ৬ষ্ট পর্ব বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখকে নিয়ে।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের পরিচিতি ও স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর ভূমিকাঃ-

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদরের চন্ডীকপুরস্থ মহেষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ৷ বাবা মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মা জেন্নাতুন্নেসা ৷ বাবা কৃষক ছিলেন ৷ জমিজিরাত যা ছিল তার উৎপন্ন ফসলেই চলে যেত সংসার৷ নূর মোহাম্মদ একমাত্র সন্তান হিসেবে পিতা-মাতার আদর-আহ্লাদে বড় হতে থাকলেন ৷ অতি আদর-যত্নের ফলে বুদ্ধি ও মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও নূর মোহাম্মদের লেখা পড়া বেশিদূর এগোল না৷ গান-বাজনা, যাত্রা-থিয়েটারের মতো সাংস্কৃতিক কার্যকলাপেই তাঁর মন ছিল বেশি৷ খেলাধুলায়ও ছিলেন বেশ ভালো৷ দুরন্ত আর সাহসী হিসেবে গ্রামে নামও ছিল তাঁর৷ বাবা-মায়ের অগাধ ভালোবাসায় এভাবেই কাটছিল তাঁর বেড়ে ওঠার দিনগুলো ৷
কিন্তু কিশোর জীবনেই অনাথ হলেন নূর মোহাম্মদ শেখ৷ বাবা-মাকে হারিয়ে অকুলপাথারে ভেসে গেলেন তিনি৷ কী করবেন আর কী করবেন না ঠিক কিছুই বুঝতে পারছিলেন না৷ আশপাশে এমন কোনো অভিভাবকও ছিল না, যারা তাঁর সান্ত্বনার সঙ্গী হতে পারে৷ সমবয়সী বন্ধুরাই হয়ে উঠল তাঁর সুখ-দুঃখ-আনন্দের সাথী৷ তিনি মেতে উঠলেন গান-বাজনা নিয়ে৷ নিজের গানের গলাও ছিল ভালো৷ নূর মোহাম্মদ যাত্রাদল, জারি গান, বন্ধুবান্ধব ইত্যাদিতে টাকা খরচ করতে লাগলেন৷ কিন্তু টাকা কীভাবে আয় করতে হয় তা তিনি শেখেননি৷ তাই টাকার জন্য ধীরে ধীরে একটু একটু করে জমি বিক্রি করতে শুরু করলেন ৷

এমনি আনন্দ-ফুর্তি করতে করতে নূর মোহাম্মদ শেখ একদিন যুবক হলে গেলেন৷ গান-বাজনার লোকেরা তাঁকে এক নামে চেনে৷ সুযোগ বুঝে গ্রামোফোনও কিনে ফেললেন একটা৷ সবই করছিলেন জমি বিক্রি করে৷ বিয়ে করলেন৷ স্ত্রী তোতাল বিবি, অবস্থাসম্পন্ন কৃষকের মেয়ে ৷ বিয়ে হলো ধুমধামে ৷

নূর মোহাম্মদ শেখ একদিন দেখলেন বাড়ির ভিটি ব্যতীত বিক্রি করার মতো তাঁর আর কোনো জমি নেই৷ অবশ্য বিয়ের পর থেকে তিনি শ্বশুরবাড়িতেই বাস করছিলেন৷ কিন্তু নিজের ভেতর একটা বিষয় জাগ্রত হলো, কিছু একটা করা প্রয়োজন, এখন সংসার হয়েছে৷ উপার্জনের জন্য তিনি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যোগ দিলেন স্থানীয় আনসার বাহিনীতে৷ কিন্তু তাতেও সংসার চলে না ৷

চাকরির সন্ধানে একদিন বের হয়ে এলেন বাড়ি থেকে৷ শিক্ষা না থাকলেও সাহস, উদ্যম, সুঠাম দেহ আর আনসার বাহিনীর প্রশিক্ষণ তাঁকে পথ করে দিল৷ ১৯৫৯ সালের ১৪ মার্চ তিনি যোগ দিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস অর্থাৎ ইপিআরে৷ তখন বয়স মাত্র তেইশ৷ বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার দেড় বছর পর তিনি এই চাকরি পেলেন৷ চাকরি পেয়ে স্ত্রী-পুত্রের জন্য কাপড়-চোপড় কিনে একটি চিঠিতে সব জানিয়ে পাঠিয়ে দেন তোতাল বিবির কাছে ৷

প্রাথমিক সামরিক শিক্ষা সমাপ্ত হলে নূর মোহাম্মদ শেখকে পোস্টিং দেয়া হলো ১৯৫৯ সালের ৩ ডিসেম্বর, দিনাজপুর সেক্টরে৷ এখানে তিনি ১৯৭০ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন৷ পরবর্তীতে তাঁকে বদলি করা হয় যশোর সেক্টর হেড কোয়ার্টারে ৷

একাত্তরের উত্তাল দেশ নূর মোহাম্মদ শেখের মনকে ভীষণ নাড়া দেয়৷ সংস্কৃতিপ্রীতির কারণে দেশপ্রেম, স্বাধীনতা শব্দগুলোর মানে খুব ভালোভাবেই জানা ছিল তাঁর৷ উত্তপ্ত সেই সময় তাঁর চোখেও স্বপ্নের দানা বেঁধেছিল৷ একাত্তরের মার্চে শেষবার তাঁর একমাত্র কিশোর ছেলের সাথে দেখা হয়েছিল৷ পিতার সঙ্গে সাইকেলে চড়ার একটা ঘটনাই প্রমাণ করে, নূর মোহাম্মদ দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কতটা গভীরভাবে ভাবতে পারতেন৷ সাইকেলে চড়ার সময় তাঁর হাতে একটি কঞ্চি ছিল৷ কঞ্চির খোঁচা লেগে নূর মোহাম্মদ শেখের কপাল কেটে যায়৷ রক্ত দেখে আঁতকে উঠেছিলেন ছেলে মোস্তফা কামাল৷ তিনি তাঁর বাবা নূর মোহাম্মদ শেখকে উদ্বিগ্ন হয়ে বলেছিলেন, 'দেখো বাবা, কত রক্ত!' উত্তরে নূর মোহাম্মদ শেখ বলেছিলেন, 'আরও কত রক্ত ঝরবে!' কিশোর মোস্তফা সেদিন তাঁর বাবার কথার মর্মার্থ বুঝতে পারেনি ৷


ছবি:- বাংলাদেশের গৌরব ৭ বীরশ্রেষ্ঠ।

২৫ মার্চের ভয়াল রাতে হিংস্র পাকবাহিনীর পাশবিক নারকীয় কর্মকাণ্ড দেখে নূর মোহাম্মদ আর স্থির থাকতে পারলেন না৷ আপন বিবেকের নির্ভুল নির্দেশেই তিনি যোগ দিলেন মুক্তিযুদ্ধে৷ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ যুদ্ধরত ছিলেন ৮নং সেক্টরে৷ এই কোম্পানিটি মূলত গঠিত হয়েছিল সাবেক ইপিআরের বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে৷ দীর্ঘদিনের সামরিক অভিজ্ঞতা থাকায় নূর মোহাম্মদ শেখকে অধিনায়ক করে গোয়ালহাটি গ্রামের সামনে স্থায়ী টহল বসানো হয়৷ সুতিপুরে নিজস্ব প্রতিরক্ষার নিরাপত্তার জন্যই এর বিশেষ প্রয়োজন ছিল ৷

১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাস৷ দখলদার বাহিনীর সাথে সর্বত্র লড়ে যাচ্ছে মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধারা৷ শুধু প্রতিরোধই নয়, এবার সুযোগে হটিয়ে দেবারও পালা৷ যশোহরের গুঁটিপুর ঘাঁটিতে জড়ো হয়েছে হানাদার বাহিনীর সেনারা৷ সংখ্যায় তারা অনেক৷ সেখানে বসেই তারা করছে মুক্তিবাহিনীকে আক্রমণের নতুন পরিকল্পনা৷ গুঁটিপুর ঘাঁটির সামান্য দূরে গোয়ালহাটি গ্রামের স্থায়ী টহলে মাত্র দুইজন সহযোদ্ধা নিয়ে অসম সাহসে নজর রাখছেন টহল দলের অধিনায়ক ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ৷

সেদিন ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ৷ সকাল সাড়ে নয়টা৷ শত্রুর গতিবিধির ওপর লক্ষ্য রাখছিলেন ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ও তাঁর দুই সঙ্গী৷ শত্রুর দিকে নজর রাখতে গিয়ে উল্টো শত্রুরই নজরে পড়ে যান তাঁরা৷ হানাদাররা তাঁদেরকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে৷ হানাদাররা গুলি চালাতে চালাতে এগুতে থাকে তিন দিক থেকে ৷

এই হঠাৎ পরিস্থিতিকে আঁচ করে নেন নূর মোহাম্মদ৷ তাঁদের কাছে আছে মোটে একটি হালকা মেশিনগান আর দুটি রাইফেল৷ আর গুলিও নেই তেমন ৷ একদিকে ওরা তিনজন আর অন্যদিকে পাকিস্তানের একটি বিশাল সেনাদল৷ সামান্য অস্ত্র দিয়ে তাদের মোকাবেলা করা একেবারেই অসম্ভব৷ তাঁদের সামনে ডানে-বাঁয়ে তিন দিকেই শত্রু, এখন উপায় কেবল পেছন দিক দিয়ে হটে যাওয়া৷ হটে যেতে পারলে মুক্তিবাহিনীর স্থানীয় মূল ঘাঁটিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে৷ নূর মোহাম্মদের ভাবনায় এল, এতে পাক হানাদার বাহিনী মুক্তিবাহিনীর মূল ক্যাম্পে পৌঁছানোর সুযোগ পেয়ে যাবে, যা মোটেও ঠিক হবে না৷ যতক্ষণ পারা যায় প্রতিরোধ করতে হবে৷ এতে মূল ঘাঁটির মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করার কিংবা পিছু হটার সুযোগ পাবে ৷

এরই মধ্যে গুলি আসতে লাগল তিন দিক থেকে৷ গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়লেন সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া৷ হাত থেকে পড়ে গেল এলএমজিটা৷ খুব দ্রুততার সাথে নান্নু মিয়াকে কাঁধে তুলে নিলেন নূর মোহাম্মদ, অন্য হাতে তুলে নিলেন লাইট মেশিনগান৷ ডানে বামে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে লাগলেন তিনি৷ এতে হানাদাররা একটু স্থিমিত হলো ৷

এবার নূর মোহাম্মদ হানাদার বাহিনীকে ভ্রান্ত ধারণা দেবার জন্য নতুন এক কৌশল করলেন৷ এক জায়াগায় থেকে মেশিনগান চালিয়ে তিনি আবার অন্য জায়গা থেকে মেশিনগান চালান৷ এভাবে স্থান পরিবর্তন করে করে মেশিনগান চালাতে লাগলেন তিনি৷ এতে কাজও হলো৷ হানাদার বাহিনী ভেবে নিল শুধু তিনজন মুক্তিযোদ্ধা নয়, এরা সংখ্যায় অনেক আর অস্ত্রও আছে৷ এতে হানাদাররা গুলি কিছু কমিয়ে দিল ৷

এই ফাঁকে কিছুটা সময় পাওয়া গেল৷ এই সুযোগে নূর মোহাম্মদ নান্নু মিয়াকে নিয়ে একটু পিছু হটে এলেন, অনেকটা নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ৷ কিন্তু বাদ সাধল একটা মর্টারের গোলা৷ পড়ল এসে নূর মোহাম্মদের ডানপাশে৷ স্প্লিন্টারের আঘাতে তাঁর হাঁটু ভেঙে গেল, একটা বড় ক্ষত তৈরি হলো কাঁধে৷ রক্তে ভিজে গেল সমস্ত শরীর, মাটি হলো রক্তময় ৷

নূর মোহাম্মদ অতি সামনে থেকে তাঁর মৃত্যুকে দেখতে পেলেন৷ সঙ্গে সঙ্গে তিনি অধিনায়কের দায়িত্ব দিলেন সিপাহী মোস্তফা কামালকে৷ এলএমজি তাঁর হাতে তুলে দিয়ে তাঁর এসএলআর রাখলেন নিজের কাছে৷ এলএমজি শত্রুর হাতে পড়ুক তিনি তা চান না৷ কাতর অথচ দৃঢ়কন্ঠে বললেন, 'মোস্তফা কামাল, তুমি আহত নান্নু মিয়াকে নিয়ে দ্রুত পিছনে হটতে থাকো৷ আমি যতক্ষণ পারি শত্রুকে ঠেকিয়ে রাখব ৷'

মোস্তফা কামাল এরকম নির্দেশ শুনে হতবিহ্বল হলেন৷ বললেন, 'আপনাকে এই অবস্থায় রেখে আমরা যাই কী করে?' সিপাহী মোস্তফা হঠাৎ ফুঁপিয়ে উঠে হাঁটুভাঙা আহত ল্যান্স নায়েকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে কাঁধে তুলে নিতে গেলেন৷ ল্যান্স নায়েক হাত বাড়িয়ে পাশের গাছের শিকড় আঁকড়ে ধরে বলে উঠলেন, 'আরে একি! থামো থামো উঁহ, লাগছে, লাগছে৷' কড়া এক ধমক দিলেন, 'সরো মোস্তফা ৷'

সিপাহী মোস্তফা থতমত খেয়ে ল্যান্স নায়েকের ওপর থেকে হাত সরিয়ে নিলেন৷ নূর মোহামদ তাঁর হাত দুটি ধরে নরম গলায় অথচ দৃঢ়ভাবে বললেন, 'আল্লাহর দোহাই মোস্তফা হুঁশ করে শোনো৷ আমার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখ, যেভাবে জখম হয়েছি তাতে আমার আর বাঁচার সম্ভাবনা নেই৷ যেভাবে রক্তপাত হচ্ছে, তাতে এখনই আমার সারা শরীর ঝিমঝিম করছে, চোখে ঝাপসা দেখছি৷ আমাকে সুদ্ধ নিতে গেলে তোমরা দু'জনও মারা পড়বে৷ তিনজন মরার চেয়ে দু'জন বাঁচা ভালো নয় কি! দেশের স্বাধীনতাকে আনার জন্য তোমাদের বাঁচতে হবে ৷ আমি নির্দেশ দিচ্ছি, তোমরা সরে যাও ৷'

সিপাহী মোস্তফা, ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের এই নিষ্ঠুর আদেশ শিরোধার্য করে নান্নু মিয়াকে কাঁধে তুলে লাইট মেশিনগানটা হাতে নিয়ে পিছু হটতে লাগলেন৷ আহত নূর মোহাম্মদ রক্তাক্ত ভুলুন্ঠিত অবস্থায় একাই লড়তে লাগলেন৷ সে এক ভয়ংকর যুদ্ধ৷ অবিশ্বাস্য লড়াই৷ একদিকে মাত্র একজন মুক্তিযোদ্ধা৷ তাঁর হাতে একটি মাত্র রাইফেল৷ আর তাঁর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন৷ আর অন্যদিকে একটি শক্তিশালী বাহিনী৷ শক্তিশালী বাহিনীর বিরুদ্ধে একেবারে মৃতপ্রায় অবস্থায় একাই লড়াই চালিয়ে গেলেন নূর মোহাম্মদ ৷ তাঁর শরীর রক্তক্ষরণের ফলে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে এল৷
জীবনের শেষবিন্দু শক্তি দিয়ে তিনি হানাদারদের দিকে ট্রিগার টিপলেন৷ ততক্ষণে মোস্তফা কামাল নান্নু মিয়াকে নিয়ে নিরাপদে পৌঁছে গেছে৷ নিজের জীবনের বিনিময়ে নূর মোহাম্মদ এক মরণজয়ী যুদ্ধে বাঁচিয়ে দিলেন সহযোদ্ধাদের ৷

তার এক ঘন্টা পর৷ এবার মূল ঘাঁটির মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমণ করল৷ মুক্তিযোদ্ধাদের পরাক্রমে টিকতে পারল না পাকিস্তান সেনাদল৷ তারা পিছু হটতে বাধ্য হলো৷ দুশমনরা এলাকা ছাড়লে মুক্তিযোদ্ধারা খুঁজতে লাগল ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখকে ৷ তাঁর মৃতদেহ পাওয়া গেল ঝোঁপের পাশে৷ বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত একটা লাশ৷ বর্বর পাকসেনা অন্য কাউকে না পেয়ে সমস্ত ক্ষোভ ঝেড়েছে লাশের ওপর৷ প্রতিহিংসায় উপড়ে ফেলেছে তারা নূর মোহাম্মদের দুটি চোখ ৷

নূর মোহাম্মদ শেখ মরতে ভয় পাননি৷ দেশামাতৃকার কাছে নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে হয়েছে তাঁর৷ এ জন্যই তিনি বীরশ্রেষ্ঠ, উন্নত শক্তির ধারক৷ সহযোদ্ধারা তাঁকে যশোরের কাশিপুরে সমাহিত করেন ৷


ছবি:- যশোরের কাশিপুরের এই কবরে মহান এই বীর চিরশায়িত আছেন৷

ছবিটি ব্লগার রুবেল আহমেদের সৌজন্য প্রাপ্ত।

সংক্ষিপ্ত জীবনী

নাম: নূর মোহাম্মদ শেখ।
জন্ম : ২৬ ফেব্রুয়ারী, ১৯৩৬ সাল।
জন্মস্থান : নড়াইল জেলার মহেষখোলা গ্রামে ৷
পিতা : মোঃ আমানত শেখ ৷
মা : মোছাঃ জেন্নাতুন্নেসা ৷
স্ত্রী : তোতাল বিবি ৷
কর্মস্থল : ইপিআর ৷
যোগদান : ১৯৫৯ সাল ৷
পদবী : ল্যান্স নায়েক ৷
মুক্তিযুদ্ধে অংশরত সেক্টর : ৮নং সেক্টর ৷
মৃত্যু : ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ সাল ৷
সমাধিস্থল : যশোরের কাশিপুর নামক স্থানে ৷

ছবি ও তথ্য সূত্র:- মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর, উইকিপিডিয়া, ইন্টারনেট, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বিভিন্ন গবেষনাপত্র।
বীরশ্রেষ্ঠদের প্রোট্রেট ছবি:- বিকাশ।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা: গবেষক এহসান হাবীবকে।
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×