somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণতন্ত্রের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে, আসুন সিস্টেমটাকে পাল্টাই

২১ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গণতন্ত্রে ‘জনগণের স্বাধীনতা’, ‘জনগণের সার্বভৌমত্ব’, ‘জনগণের তন্ত্র’ ইত্যাদি শব্দগুলো যতোটা মুখরোচক ও লোভনীয়ভাবে প্রকাশ করা হয় আদতে গণতন্ত্রে সরকার-প্রশাসন-আইন সবই পরিচালিত হয় পুঁজিপতি ও বুর্জোয়া শ্রেণিটির দ্বারা । তাদের খায়েশ পূরণের জন্য তৈরি করা হয় নতুন নতুন আইন-খসরা । সেই আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে জনগণের শ্রম বিক্রি হয় পানির দামে । অর্থ্যাৎ পুঁজিপতি ও বুর্জোয়া শ্রেণিটি খুব স্বল্পদামে শ্রম পেয়ে নীট মুনাফার পরিমাণটা দিনেদিনে বাড়িয়েই চলে । ভ্যাটের মাধ্যমে জনগণের পকেট খালি করে বাজেটের স্তুপ করা হয়, যা গণতন্ত্রের বাহকদের খরচ মেটাতেই সিংহভাগ ফুরিয়ে যায় । বাকি যা থাকে তা টেন্ডারবাজদের হয়ে শ্রমিক পর্যায়ে আসতে আসতেই মোট বাজেটের অবশিষ্ট মাইনাস হয়ে যায় । গণতন্ত্র এখানে আরেকটা দাবার গুটি বসায় । বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে প্রস্তাবিত প্রজেক্ট সম্পন্ন করা । প্রজেক্ট কতটা সম্পূর্ণ হয় তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় থাকলেও বৈদেশিক ঋণের ভারটা কিন্তু জনগণের উপরই বর্তায় । গণতন্ত্রের সরকার তো আর জমিদার না, থাকলেও নিজের পকেট থেকে কে সে ঋণ শোধ করতে যাবে ! সমাধান তো করতেই হবে । যেহেতু গণতন্ত্র জনগণের তাই ঋণশোধটা জনগণকেই করতে হবে । হু হু করে বাড়িয়ে দেয়া হয় ভ্যাট । নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনতে পদে পদে হোঁচট খেতে হয় জনগণকে ।

জনগণ এমন এক তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলো যে তন্ত্র জিইয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত রক্ত পানি করতে হচ্ছে । জনগণের নিমিত্তে যে সরকার-আইন-প্রশাসন তৈরি হলো সেটাই এককালে পুঁজিপতি-বুর্জোয়াদের খাদেম হিসেবে নিযুক্ত হলো । একজন পুঁজিপতি তার নিরাপত্তার জন্য বন্দুক-দেহরক্ষী রাখতে পারে, একজন মন্ত্রী তার নিরাপত্তার জন্য সামরিক বাহিনী রাখতে পারে কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ রাতের বেলা চোর-বাটপার-সন্ত্রাস-ছিনতাইকারী-খুনীর হাত থেকে রক্ষার তাগিদে নিরাপত্তাস্বরূপ হালকা গড়নের কোনো অস্ত্র রাখতে পারেনা । অথচ রাজনৈতিক ছাত্র সন্ত্রাস, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিদের হাতে দা-চাপাতি-চাইনিজ কুড়াল-হকিস্টিক-পাইপ গান রাখা আপাত চোখে অপরাধ হলেও তার অনুমতি মেলে রাজনৈতিক দাদাদের চোখের ইশারায় । যদিও ভুলক্রমে কখনো সেই হায়েনা-কুকুরদের হাত থেকে নিরাপত্তার কারণে একটা চাকু হাতে নেয়া হয়, তখন জনগণকে মুখোমুখি হতে হয় প্রশাসনের, যে প্রশাসন চলে তারই রক্ত করা পানি দিয়ে । ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না’ - প্রশাসনীয় এ বাক্যের সৃষ্টিই হয়েছে জনগণকে আজীবন বেসামরিক বানিয়ে নিষ্পেশনের জন্য । অথচ দুর্নীতি-ঘুষের মাধ্যমে সন্ত্রাসী-খুনী-ধর্ষক-চোরবাটপারদের ছেড়ে দেয়ার বৃত্তান্ত সবার জ্ঞাত ।

অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য জনগণ প্রতিষ্ঠা করেছে আইন মন্ত্রণালয় । খোদ একটা ঠুনকো মামলার জন্য আইনব্যবসায়ীদের হাতে পড়ে জনগণকে আবারো মাসুল দিতে হয় । এমনটি হরহামেশায় ঘটেছে যে, একবিঘা জমির সুরাহার জন্য দুইবিঘা সমমূল্যের টাকা-কড়ি খুইয়েছে জমির উপযুক্ত ভাগীদার । শেষ পর্যন্ত জমি চলে গেলো টাকাওয়ালা ব্যক্তির হাতে ।

সরকারি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালগুলো চলে জনগণের টাকায় । এখানকার জাঁদরেল ডাক্তারগুলোকে তৈরি করা হয়েছে জনগণের খরচায় । ডাক্তারগুলোর বেতনও দেয়া হয় জনগণের টাকায় । অথচ যে লোকটি প্রতিনিয়ত গোপনে-প্রকাশ্যে ভ্যাটের শিকার হচ্ছে সেই কিনা উপযুক্ত চিকিৎসা পায় না তাদের কাছে । ভালো চিকিৎসা চাও? পয়সা খরচ করতে হবে । যেতে হবে প্রাইভেট চেম্বারে । ওষুধ কিনতে হবে দামি দামি । বেশ খরচা আছে । অর্থ্যাৎএখানেও পুঁজিপতি-বুর্জোয়াদের খাদেমগিরি । অথচ সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতেই জনগণের রক্ত পানি করে গণতন্ত্রের প্লাটফর্মে দাঁড় করানো হয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা ।

চোখ-কান খুলে বিবেকটাকে নাড়া দিয়ে দেখুন না একবার, গণতন্ত্র কতটা প্রতারণাময় ! ব্যক্তিবিশেষে দোষারোপ করে লাভ নেই । কারণ তারা প্রত্যেকেই গণতন্ত্রের ষড়যন্ত্রের শিকার । আর কত পুঁজিপতি-বুর্জোয়া শ্রেণিটির গলা ভিজাবেন নিজের রক্ত দিয়ে, নিজের ঘাম দিয়ে ! আর কত প্রতারিত হবেন !

আসুন সিস্টেমটাকে পাল্টাই ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×