somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামের স্বর্নযুগ ও আবিষ্কার

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বর্তমান বিশ্বে মুসলিমদের তাকালে যে চিত্রটি আমরা দেখতে পাই ঠিক তার উল্টো আলোকিত যুগ পার করে এসেছে ইসলাম ।
এই যুগ ইতিহাসে ইসলামের স্বর্নযুগ বলে পরিচিত । জ্ঞান,বিজ্ঞান ,চিকিৎসা ,গনিত ,জ্যোর্তিবিজ্ঞান , জীববিদ্যা ,দর্শন ,পদার্থবিদ্যা ,রসায়ন ,অর্থনীতি সহ সকল বিষয়ে একছত্র বিচরনছিল মুসলিমদের ।

ইসলামি স্বর্নযুগের গোড়াপত্তন হয় মূলত ৬২২ সালে মদিনায় প্রথম ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও ইসলামি শক্তির উত্থানের মাধ্যমে ।
ইসলামি স্বর্নযুগের ব্যাপ্তিকাল নিয়ে নানা মতিবাদ রয়েছে । তবে মূলত বাগদাদের খলিফা আল-মনসুরের “বায়তুল-হিকামহ” স্থাপন (৭৫৪ খ্রিষ্টীয় সাল) থেকে শুরু করে ১১ শতকের শেষ বা ১২ শতকের শুরু পর্যন্ত (কেউ ১২৫৪ সালের মঙ্গল আক্রমণ পর্যন্ত বলেন) “মুসলিমদের স্বর্ণযুগ” বলা হয় । আবার ১৪৯২ সালে ইবেরিয়ান উপদ্বীপের আন্দালুসে খ্রিষ্টান রিকনকোয়েস্টার ফলে গ্রানাডা আমিরাতের পতনকেও এর সমাপ্তিকাল হিসেবে গণ্য করা হয় ।

ইসলামি স্বর্নযুগ উত্থানের পিছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা ছিল পবিত্র কোরআন শরীফ আর হাদিসের । কুরআনের প্রথম আদেশ ছিল “ইকরা" অর্থাৎ পড় । ইসলামের স্বর্নযুগ যেন তারই প্রতিচ্ছবি । আব্বাসীয় খলিফা মামুন ৮৩০ খ্রিস্টাব্দে বাগদাদ নগরীতে ‘বাইতুল হিকমাহ’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাইতুল হিকমাকে সত্যিকার জ্ঞান সমুদ্রে পরিণত করেন। বায়তুল হিকমাহ ছিল একাধারে গ্রন্থাগার, শিক্ষায়তন ও অনুবাদ কার্যালয়। এমন একটি পরিবেশ তিনি তৈরি করেছিল- যেখানে শুধুমাত্র মুসলিমরাই নয়, সব মতের, সব ধর্মের, সব বিশ্বাসের, সব যুক্তির আলেম/পণ্ডিতরা নিশ্চিন্তে, নিরাপদে ও নির্ভয়ে জ্ঞানচর্চা করেছে।

সারা পৃথিবী থেকে উটের পিঠে বোঝাই করে বাইতুল হিকমায় জমা হয়েছিল বিভিন্ন দেশের বই। ধর্মীয় বই, ইতিহাস, সাহিত্য যা যেখানে পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের ওস্তাদ পণ্ডিতদের দাওয়াত দেয়া হয়েছে, তারা নিয়ে আসলছিল বই। জাষ্টিনিয়ান এর কাছে বিনীত ভাবে খলিফা লিখেছিলেন প্লেটোর লাইব্রেরীর বইগুলো ধার দেবার জন্য। শুধু বই ধার নেবার জন্য উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন মনি মুক্তার উপহার ।
বাইতুল হিকমায় পন্ডিতদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের জন্যই মানবজাতি অতীতের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনেক কিছুই জানতে পেরেছে। প্রথমে সেগুলোকে মূলত আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হলেও কালক্রমে তুর্কী, সিন্ধী, ল্যাটিন, ফার্সি, হিব্রু ইত্যাদি নানা ভাষায় অনুবাদ করা হয়। ফলে জ্ঞানের যে ব্যাপক বিস্তার ঘটেছিলো তা তো না বললেও চলে। প্রাচীন মেসোপটেমিয়া, রোম, চীন, ভারত, গ্রীস, মিশর, পারস্য, উত্তর আফ্রিকা, বাইজান্টাইন প্রভৃতি সভ্যতার জ্ঞান নিয়ে চর্চা হতো সেখানে।


তৎকালীন মুসলিম বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ন অবদান

# বীজগণিত, এলগরিদম এবং হিন্দু-আরবীয় সংখ্যার বিকাশ ও উন্নয়নে মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল-খাওয়ারিজমি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।তাকে বীজগণিতের জনক বলা হয় ।

# ইবনে মুয়াজ আল-জাইয়্যানি হলেন অন্যতম ইসলামিক একজন গণিতবিদ যিনি সাইনের সূত্র আবিষ্কারের জন্য খ্যাত।১১ শতকে তিনি "The Book of Unknown Arcs of a Sphere" নামে একটি বই রচনা করেন।

# আবু' আলী আল-হাসান ইবনে আলী-হাসান ইবন আল হাইসাম(৯৬৫-১০৪০)পশ্চিমা বিশ্বে তিনি আল-হাইজেন নামে সমধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন একাধারে আরব বিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, এবং দার্শনিক। ইবন আল হাইসামের উল্লেখযোগ্য অবদান অপটিক্স বা আলোকবিদ্যার মূলনীতি, জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত, আবহাওয়াবিজ্ঞান, চাক্ষুষ বিজ্ঞান এবং বৈজ্ঞানিক নীতি।তিনি সর্বপ্রথম ক্যামেরার মূলনীতি আবিষ্কার করেন, যার উপর ভর করে আজকের আধুনিক ক্যামেরা, স্যাটেলাইট ইত্যাদি।

# সার্জারি চিকিৎসার ক্ষেত্রে মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদান অপরিসীম। আনুমানিক ১০০০ সালের দিকে বিশ্বনন্দিত সার্জারি চিকিৎসক ছিলেন আল জাহরাত্তয়ি। তিনি সার্জারির ওপর প্রায় পনেরোশ’ পৃষ্ঠার একটি গ্রন্থ রচনা করেন। পরবর্তী পাঁচশ’ বৎসর পর্যন্ত এ বইটি ইউরোপে সার্জারি চিকিৎসার ক্ষেত্রে মডেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তিনিই সর্বপ্রথম সিজার অপারেশন করেছিলেন এবং শল্য চিকিৎসায় ব্যবহৃত ফরসেপ বা চিমটে জাতীয় অস্ত্র উদ্ভাবন করেন।

# বিশিষ্ট মুসলিম বিজ্ঞানী আব্বাস ইবনে ফিরনাস ওড়ার যন্ত্র আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন এবং সেটির সাহায্যে তিনি আকাশে উড়তে সমর্থ হয়েছিলেন। নবম শতকের দিকে তিনি পাখির আকৃতির মতো বিশাল একটি কষ্টিউম তৈরি করেন এবং স্পেনের কর্ডোভার মসজিদের মিনার থেকে এ যন্ত্রের সাহায্যে তিনি শূন্যে ঝাঁপ দেন এবং কিছু সময় আকাশে উড়তে সক্ষম হন। তাই বলা চলে রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের আগেই তিনি আকাশে উড়ার বিরল কৃতিত্ব দেখান।

# ৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে মেসোপটেমিয়ার অন্তর্গত বাত্তান নামকস্থানে আল বাত্তানি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন অঙ্কশাস্ত্রবিদ এবং একজন জ্যোতির্বিদ। তিনিই সর্বপ্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়েছিলেন যে এক সৌর বছরে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে হয়। তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে সূর্যের আপাত ব্যাসার্ধ বাড়ে ও কমে। সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ সম্বন্ধেও তার বক্তব্য ছিল সুস্পষ্ট। আল বাত্তানি তার নিজস্ব উদ্ভাবিত যন্ত্র দিয়ে প্রমাণ করে দিলেন যে সূর্য তার নিজস্ব কক্ষপথে গতিশীল।

# আবু বকর মোহাম্মাদ ইবন যাকারিয়া আল রাযী বা আল-রাযী। তিনি ৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্ম গ্রহণ করেন। রাযী ছিলেন একজন দক্ষ পার্সিয়ান চিকিৎসক এবং দার্শনিক। তিনি চিকিৎসা বিদ্যা, আল-কেমি, পদার্থবিদ্যা এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর ১৮৪ টিরও বেশি বই লিখেছেন। তিনি সালফিউরিক এসিড আবিষ্কার করেন। তিনি ইথানল উৎপাদন, বিশোধন, ও চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন। তিনি একজন বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন।

# জাবির ইবনে হাইয়ান কুফায় একটি রসায়ন গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিম ঐতিহাসিকরা ওই গবেষণাগারকে পৃথিবীর প্রথম রসায়নাগার বলে অভিহিত করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রসায়নের প্রাথমিক প্রক্রিয়াগুলো চর্চা করার উপায় উদ্ভাবন করেন। রসায়ন শাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা, খনিজ পদার্থ বিশেষত পাথর, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা জ্যামিতি, জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে অবদান রাখেন। তিনি প্রায় ২ হাজার বই রচনা করেন। এর মধ্যে চিকিৎসা বিষয়ে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৫০০।

# ইবনে সিনা ৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে বোখারা শহরে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও দার্শনিক আবু আলি সিনা। বোখারা শহরটি সে সময় ছিল ইরানের অন্তর্ভুক্ত। ইবনে সিনা তার দর্শন চর্চা করেছেন, বিজ্ঞান চর্চা করেছেন, জোতির্বিজ্ঞান থেকে শুরু করে যুক্তিবিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান, অঙ্ক ইত্যাদি সকল জ্ঞান চর্চা করেছেন। তিনি মাত্র ষোলো বছর বয়সে সমকালীন জ্ঞানী গুণী চিকিৎসক এবং মনীষীদের পড়িয়েছেন ।মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি আল মুজমুয়া নামে একটি বিশ্ব কোষ রচনা করেন। এর মধ্যে গণিত ছাড়া সকল বিষয় লিপিবদ্ধ করেন। ইবনে সিনা পদার্থ বিজ্ঞান, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, জ্যামিতি, গণিত, চিকিৎসা বিজ্ঞান, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে প্রায় শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি তার সময়ে পৃথিবীর সেরা চিকিৎসক।

# আল ফারবি পদার্থ বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, দর্শন, যুক্তিশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রভৃতিতে তার অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে বিজ্ঞান ও দর্শনে তার অবদান ছিল সর্বাধিক। পদার্থ বিজ্ঞানে তিনিই “শূন্যতার” অবস্থান প্রমাণ করেছিলেন। দার্শনিক হিসেবে ছিলেন নিয় প্লেটনিষ্টদের পর্যায়ে বিবেচিত ।

# জীবদ্দশায় ওমর খৈয়াম এর খ্যাতি ছিল গণিতবিদ হিসাবে। তিনি প্রথম উপবৃত্ত ও বৃত্তের ছেদকের সাহায্যে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান করেন। ওমরের আর একটি বড় অবদান হলো ইউক্লিডের সমান্তরাল স্বীকার্যের সমালোচনা যা পরবর্তী সময়ে অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতির সূচনা করে। ১০৭০ খ্রিস্টাব্দে তার পুস্তক মাকালাত ফি আল জার্ব আল মুকাবিলা প্রকাশিত হয়। এই পুস্তকে তিনি ঘাত হিসাবে সমীকরণের শ্রেণিকরণ করেন এবং দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধানের নিয়মাবলি লিপিবদ্ধ করেন। ওমর খৈয়াম জ্যোতির্বিদ হিসেবেও সমধিক পরিচিত ছিলেন।

# আবু ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল কিন্দি ছিলেন কোরআন শরিফ, হাদিস শরিফ, ফিকাহশাস্ত্র, ইতিহাস, দর্শন, ভাষাতত্ত্ব, রাজনীতি, গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা প্রভৃতি নানা বিষয়ে বিশারদ। তিনি ছিলেন গ্রিক, হিব্রু, ইরানি, সিরিয়াক এমনকি আরবি ভাষাতেও ব্যুত্পত্তিসম্পন্ন। তিনি নানা বিষয়ে ২৬৫ খানা গ্রন্থ রচনা করেন। তার বইগুলো এখনো বহুল পঠিত ।

# বানু মুসাকে বলা হয় জোতির্বিদদের মধ্যে বিস্ময়কর একজন। কারণ আর কিছুই তার সময়ে তিনি যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন সেটা এককথায় অবিশ্বাস্য। নবম শতকে বাগদাদের তিন মনীষীদের একজন ছিলেন। এই তিনজনকে একত্রে বলা হতো মেশিনারি জগতের বিস্ময়। তার পিরমাপক যন্ত্রের উৎকর্ষ সাধন করেছিল। ভিত্তি স্থাপনেও আধুনিকায়ন করেন তারা।

# ইবনুন নাফিস চিকিৎসা বিজ্ঞান ও আইনশাস্ত্রে তার অবদান অবিস্মরণীয়। ইবনুন নাফিস মানবদেহে রক্তসঞ্চালন পদ্ধতি, ফুসফুসের সঠিক গঠন পদ্ধতি, শ্বাসনালি, হৃৎপিণ্ড, শরীরে শিরা উপশিরায় বায়ু ও রক্তের প্রবাহ ইত্যাদি সম্পর্কে বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডারকে অবহিত করেন। তিনি মানবদেহে রক্ত চলাচল সম্পর্কে গ্যালেনের মতবাদের ভুল ধরিয়ে ছিলেন তিনি এবং এর সম্বন্ধে নিজের মতবাদ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন।

# নুর আদ-দীন ইবনে ইসহাক আল-বেতরুগি। তিনি ইসলামী স্বর্ণযুগে মরক্কোতে জন্মগ্রহণ করেন। তার ব্যক্তিগত জীবনী খুব বেশি জানা যায়নি। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। তিনি ‘স্লেশিয়াল মোশন’ নিয়ে যুগান্তকারী মতবাদ দিয়েছিল। তার সীমাবদ্ধতা থাকার পরও তিনি প্লেনটারি মোশন নিয়ে নিজস্ব থিউরি প্রদান করেছিলেন। যা এখন ঠিক।

# গাড়ি কিংবা যানবাহনে স্টিয়ারিং অপরিহার্য, আর মুসলমানরা এ স্টিয়ারিং আবিষ্কার করেন। বলা চলে এ আবিষ্কারের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটেছে। বর্তমানে এ স্টিয়ারিং কেবল যান চলাচলেই ব্যবহৃত হচ্ছে না বরং ভারী জিনিসপত্র উত্তোলনের কাজেও এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। ১২ শতকে আল জাবারির আবিষ্কৃত এ প্রযুক্তি বিশ্বের প্রায় সকল যান্ত্রিক যানবাহনে ব্যবহৃত হচ্ছে।

# নবম শতকের দিকে ইয়েমেনবাসী প্রথম কফি উৎপন্ন করে। প্রথম প্রথম সুফিরা রাত জেগে ইবাদত করার জন্য কফি ব্যবহার করতো, পরে একদল শিক্ষার্থীর মাধ্যমে এ কফি মিসরের রাজধানী কায়রোতে আনিত হয়। পরে সমগ্র আরব বিশ্বে এ কফি ছড়িয়ে পড়ে। ত্রয়োদশ শতকের দিকে কফি তুরস্কে পৌঁছে। ষোড়শ শতকের দিকে কফি ইউরোপে প্রবেশ করে। যে কফির কাপে চুমুক না দিলে অনেকের দিন শুরু হয় না সে কফিই মুসলমানরা প্রথম উৎপন্ন করে।

ইসলামের স্বর্নযুগের পতনের কারন ;

মুসলিমদের বিরুদ্ধে একাদশ শতকে শুরু হওয়া ক্রুসেড ক্রমেই অস্থিতিশীল করে তোলে গোটা মুসলিম বিশ্বকে। এর অল্প কিছুদিন পরেই তের শতকে ভেতরে ভেতরে ধুঁকতে থাকা মুসলিম বিশ্বের সামনে এসে দাঁড়ায় আরেক ত্রাস- মঙ্গোলদের আক্রমণ। ১২৫৮ সালের ২৯ জানুয়ারি হালাকু খানের নেতৃত্বে মঙ্গোল বাহিনী ও তার মিত্র শক্তিদের সামনে তছনছ হয়ে যায় আব্বাসীয় খেলাফতের রাজধানী জ্ঞান-বিজ্ঞানের আধার বাগদাদ। ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তেরদিন চলা সেই অভিযানে মঙ্গোল বাহিনীতে ছিলো ১,২০,০০০-১,৫০,০০০ সেনা। অপরপক্ষে আব্বাসীয় খেলাফতের সেনাসংখ্যা ছিলো সেই তুলনায় বেশ কম, ৫০,০০০ প্রায়।

মুসলমানদের শোচনীয় পরাজয় , আব্বাসীয়দের পক্ষে থাকা সকল সেনাই সেই অভিযানে নিহত হয়েছিলেন। আনুমানিক সেই যুদ্ধে প্রায় ২,০০,০০০-৮,০০,০০০ সাধারণ নাগরিক মারা গিয়েছিলেন। ঐতিহাসিকের মতে, মঙ্গোলদের এ আক্রমণই ছিলো ইসলামের সোনালী যুগকে ইতিহাসের অধ্যায়ে পরিণত করার মূল নিয়ামক। কালক্রমে একসময় অটোম্যান সাম্রাজ্য উঠে দাঁড়ালেও ইসলামের সোনালী সেই যুগ আর কখনোই ফিরে আসে নি ।দিন দিন মুসলিম সম্রাজ্যে নেমে আসে রাতের কালো আধাঁর । সেই আধাঁরে ক্রমশ গভীরে যাচ্ছে মুসলিম সমাজ ।

বায়তুল হিকমার কিছু ছবি ।




তথ্য ও ছবিসূত্র ;
১) উইকিপিডীয়া
২)বাংলাদেশ প্রতিদিন
৩)দৈনিক সংগ্রাম
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:২৯
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×