আগষ্ট ২৯, ১৯৮১ । আমেরিকার নেব্রাস্কার ডেভিড সিটির এক মন্ত্রীর ঘরে একটি ছেলে জন্ম নিল। ধর্মপ্রাণ বাবা-মা স্থানীয় যাজকের নামের সাথে মিলিয়ে তার নাম রাখা হল জয়েস সি হল। নামটা পরিচিত লাগছে তাই না!
এই ছেলেই বড় হয়ে জন্ম দিয়েছিল বিখ্যাত হলমার্ক কম্পানীর যা আমেরিকার সবচেয়ে বড় শুভেচ্ছা কার্ড কম্পানী । হলমার্ক কম্পানী বাৎসরিক ২৩,০০০ অধিক ডিজাইন ৩০টির ও অধিক ভাষায় বিশ্বের ১০০ এর অধিক দেশে বিপনন করে।
কার্ড ব্যাবসায় যিনি রীতমত দৈবিক পরিবর্তন এনেছেন সেই জয়েস সি হল এর প্রাথমিক জীবন মোটেও সুখকর ছিলনা । ৯ বছর বাবা তাদের ত্যাগ করার পর মাকে নিয়ে অভাবের সংসার চলছিল। নিজেকে প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বালক একসময় ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবনযুদ্ধে। প্রথমে পোষ্টকার্ড বিক্রি থেকে ঝুঁকে পড়ে আরও লাভজনক গিফট কার্ড এর দিকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে ইউরোপীয় কোম্পানীসমূহের অনুপস্থিতিতে ভাইদের নিয়ে নিজেই খুলে ফেলেন একটি কম্পানী। কিন্তু শুধু জন্মদিন, ক্রিসমাস আর ভ্যালেনটাইন উৎসব নির্ভর তার এই ব্যাবসার জন্য যথেষ্ট ছিলনা । প্রয়োজন ছিল নতুন আইডিয়ার ... আর এই থেকেই প্রবর্তন করেন বন্ধু দিবসের। তার পুরোনো কম্পানী নাম পরিবর্তন করে ১৯১৯ সালে রাখেন হলমার্ক।
তাদের প্রথম কার্ডটিতে ছিল ইদগার গেষ্ট এর একটি কবিতার লাইন
I'd like to be the kind of friend you are to me
১৯২০ সালে আমেরিকান কার্ড এস্যোসিয়েশন এই দিবসকে প্রোমট করে। কিন্তু পরবর্তীতে বানিজ্যিক দিবস হিসেবে সমালোচিত হয়ে সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়ে। তারপর হল সাহেব ১৯৩৫ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দু:খ- বিভীষিকা দূর করার ইস্যু পুজি করে মার্কিন কংগ্রেস থেকে আগষ্ট এর প্রথম রবিবার বন্ধু দিবস হিসেবে পাস করিয়ে নেন। কিন্তু প্রায় ১৯৪০ সালের দিকে বন্ধু দিবস এর ধারনা মার্কিনিদের মন থেকে প্রায় মুছে যায় সাথে কমে যায় কার্ড বিক্রিও । এই অবস্থায় হল সাহেব তার আইডিয়া বিক্রিয় নতুন বাজার খূজতে থাকেন। ইউরোপে তেমন সুবিধা করতে না পেরে নিয়ে আসেন এশিয়ায়। আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ের,পর্তুগালের মত কিছু দক্ষিন আমেরিকার দেশে প্রচলন থাকলেও মূলত দক্ষিন এশিয়ার ভারত , বাংলাদেশ , পাকিস্তান, মালোশিয়া এর পূর্ণজন্ম দেয়।
উল্লেখযোগ্য :
** ১৯৯৮ সালে নানে আনান, তৎকালীন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের স্ত্রী , পুহ বিয়ারকে বন্ধুতের প্রতীক হিসেবে ঘোষনা করেন।
**ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশীপ ক্রুসেড , ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত পর্তুগাল ভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংঠন , ৩০ শে জুলাই বিশ্ব বন্ধু দিবস পালন করে। মূলত তাদের বছরের পর বছর লবিংয়ের ফলশ্রুতিতে ২৭ এপ্রিল ২০১১ তে বিশ্ব ৩০ জুলাইকে বন্ধু দিবস হিসেবেঘোষনা করে জাতিসংঘ।
যার উদ্দেশ্য - to promote the international understanding, the respect for diversity and a culture of peace, between peoples, countries, cultures and individuals.
সর্বশেষ সবাইকে ডিয়া ডো আমিগো (বন্ধু দিবস এর পর্তুগীজ ) এর শুভেচ্ছা।
আলোচিত ব্লগ
ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ
গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন
ধর্ম ও বিজ্ঞান
করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
তালগোল
তুমি যাও চলে
আমি যাই গলে
চলে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফুরালেই দিনের আলোয় ফর্সা
ঘুরেঘুরে ফিরেতো আসে, আসেতো ফিরে
তুমি চলে যাও, তুমি চলে যাও, আমাকে ঘিরে
জড়ায়ে মোহ বাতাসে মদির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন
মা
মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।
অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।
একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন