জামাতে ইসলামীর আল-বদর বাহিনীর উদ্দেশ্য, দৃষ্টিভঙ্গী ও মনোভাব সম্পর্কে ধারনা লাভ করার জন্যে ‘দৈনিক পাকিস্থান’র একটি প্রতিবেদন বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেই প্রতিবেদনে দেখা যায় - ঐতিহাসিক বদর দিবস পালন উপলক্ষে ১৯৭১ সালের ৭ই নভেম্বর ঢাকার বাতুল মোকাররম প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত ইসলামী ছাত্র সংঘের ‘পূর্ব পাকিস্থান শাখা’র সভাপতি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ‘চার দফা ঘোষনা’ প্রচার করেছিলেন।
ঘোষনা গুলি হলো:
ঘোষনা ১: দুনিয়ার বুকে হিন্দুস্থানের কোন মানচিত্র আমরা বিশ্বাস করি না। যতদিন পর্যন্ত দুনিয়ার বুখ থেকে হিন্দুস্থানের নাম মুছে না দেওয়া হবে ততদিন পর্যণ্ত আমরা বিশ্রাম নেব না।
ঘোষনা ২: আগামী কাল থেকে হিন্দু লেখকদের কোন বই অথবা হিন্দুদের দালালি করে লেখা পুস্তকাদি (কেউ) লাইব্রেরীতে স্থান দিতে পারবেনা, বিক্রী বা প্রচার করতে পারবে না। যদি কেউ করে তবে পাকিস্থান অস্তিত্বে বিশ্বাসী স্বেচ্ছাসেবকরা জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেবে।
ঘোষনা ৩: পাকিস্থান অস্তিত্বে বিশ্বাসী স্বেচ্ছাসেবকদের সম্পর্কে বিরূপ প্রচার করা হচ্ছে। যারা এই অপপ্রচার করছে তাদের সম্পর্কে হুসিয়ার থাকুন।
ঘোষনা ৪: বায়তুল মোকাদ্দেসকে উদ্ধারের অভিযান চলবে।
বদর বাহিনীর সাফল্যে উদ্দীপ্ত হয়ে বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মতিউর রহমান নিজামী ১৪ই নভেম্বর ১৯৭১ দৈনিক সংগ্রামে লিখেন - “বদর বাহিনীর যোদ্ধাদের যেই সব গুনাবলী কথা আমরা আলোচনা করছি, আল বদরের তরুন মর্দে মুজাহিদদের মধ্যে ইনশাল্লাহ সেই সব গুনাবলী দেখতে পাবো। সেই দিন বেশী দূরে নয় যেদিন আল বদরের তরুন যুবকেরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দাড়িয়ে হিন্দু বাহিনীকে পর্যুদস্থ করে হিন্দুস্থানকে খতম করে সারা বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করবে”।"
অপরদিকে ২৩শে নভেম্বর ১৯৭১ সালে এক বিবৃতিতে মীর কাসেম আলী এবং আলী আহসান মুজাহিদ বলেন -“শত্রু আপনাদের আশে পাশেই রয়েছে। তাই সতর্কতা সঙ্গে কাজ চালাতে হবে। মনে রাখবেন, আপনারা পাকিস্থানকে টিকিয়ে রাখার জন্যেই যুদ্ধ করছে না - এ যুদ্ধ ইসলামের। নমরুদের হাত থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্যে আমাদের আমীরের গোলাম আজম) নির্দেশ পালন করুন”।
(সমাপ্ত)
সূত্র: একাত্তরের ঘাতক জামাতে ইসলামীর অতীত ও বর্তমান - শাহ আহমদ রেজা
(পরের পর্ব: রাজাকার বাহিনী ও জামাত)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৮:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




