শান্তি কমিটি এবং রাজাকার ও আল-বদর বাহিনীর মাধ্যমে জামাত ৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ নাশকতামুলক কর্মকান্ডেই ওদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখেনি - এই সাথে সাথে জামতে ইসলামী পাকিস্থানের রাজনীতিতে দলীয় প্রধান্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে। তাদের লক্ষ্য ছিলো পাকিস্থানের কেন্দ্র ও প্রদেশসমূহে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করা। ‘পূর্ব পাকিস্থানে” সেনাবাহিনীর গনহত্যা ও সকল অপকর্মের নি:শর্ত সমর্থন দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রের ওদের প্রভাব ও আনুকূল্য বেশ বেড়ে গিয়েছিলো - যাতে এরা মন্ত্রীসভায় এদের প্রতিনিধি পাঠানোর জন্যে বায়না ধরে।
কিন্তু জুলফিকার আলি ভুট্টোর পাকিস্থান পিপলস পার্টি জামাতে ক্ষমতায় যাওয়া প্রধান অন্তরায় হয়ে দাড়ায়। পিপিপির ৮৮টা আসনের বিপরীতে জামাতের ৪ টি আসনের সংখ্যানুপাতে ক্ষমতার বৈধ দাবীদার হিসাবে তাদের সম্ভাবনা বাতিল করে ভুট্টো। ফলে এরা “ইসলামী মোর্চা” তৈরী করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এরা ‘পূর্ব পাকিস্থানের’ নির্বাচন বাতিলের কারনে সমগ্র পাকিস্থানের নির্বাচন বাতিলের দাবী জানায়। এই প্রসংগে পাকিস্থান জামাতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল চৈধুরী রহমত এলাহী এক সাংবাদিক সন্সেলনে বলে -
“এই নির্বাচন হতে হবে আদমসুমারীর ভিত্তিতে, কারন আদমসুমারীর সময় আগেই হয়ে গেছে”। (দৈনিক পূর্বদেশ, ২৪শে মে ১৯৭১)
কিন্তু ভুট্টো এই দাবীর বিরোধিতা করে বলেন - “পূর্ব পাকিস্থানের কতিপয় আসনে উপনির্বাচন হতে পারে। তবে যারা নির্বাচনে হেরেছে তাদের পূর্ব পাকিস্থানের সংকটের সুযোগে নেওয়া উচিত নয়। তাদের জনগনের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়”। (দৈনিক পাকিস্থান, ২২শে মে ও ২রা জুন ১৯৭১)
আসল পাকিস্থানী ভুট্টোর দাবীর মুখে দালাল পাকিস্থানীদের চাওয়া পুরন হয়নি বলাই বাহুল্য।
(চলবে)
ফিরে দেখা ৭১: মুক্তিযুদ্ধকালীন জামাতের রাজনৈতিক ভুমিকা (১): ক্ষমতার লিপ্সা।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন
আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”
একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?
যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই
হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই
আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন
তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।