ভুল, বিরাট ভুল।
জামায়াত এর আগেও এই ধরনের পিছলামী করেছে। দলের নামের যে ভুলটা ওরা সংশোধন করেনি - তা হলো - জামায়াতে ইসলামী'র পরিবর্তে জামায়াতে পিছলামী দিলে নামকর পরিপূর্ন সার্থক হতো। কারন এরা যকন পিছলাম পুরো দল জামাত করেই পিছলায়। গঠনতন্ত্ররে মলাট থেকে আল্লার নাম বাদ দিলেও এদের কোন একজন সদস্যও প্রতিবাদ করে না। কারন জামাত করে পিছলানোই এই দলের মুল আদর্শ। সুতরাং সাধু সাবধান।
আসুন সংক্ষেপে একটু আলোচনা করা যাক জামাত সর্বশেষ কি কি বিষয়ে পিছলালো।
১) গঠনতন্ত্রের মলাট পরিবর্তন -
মলাটের উপর "আল্লাহ" আর "আক্বিমুদ্দীন" (আল্লাহ তোমার দ্বীন প্রতিষ্টা করো) শব্দদ্বয় বাদ দিয়েছে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না - এরা জন্মলগ্ন থেকেই এই নীতিতে বিশ্বাসী। শুধুমাত্র রেজিস্টেশনের ঝামেলা এড়ানোর জন্যেই তাদের মলাটের একটা খসড়া তৈরী করেছে। কোন ভাবেই মনে করার সুযোগ নেই - এরা স্বজ্ঞানে আল্লাহর নাম বাদ দিয়েছে।
২) গঠনতন্ত্রে আল্লাহর আইন ও সৎ লো্কের শাসন বাদ:-
আল্লাহ আইনের কথা বলে কাদিয়ানীদের উপর গনহত্যা আর ৭১ এর গনহত্যার দোসরদের সাধারন মুসলমানরা বিশ্বাস করেনি। ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশে রাজনীতি করে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও ভোটের সংখ্যায় এর তৈলাক্ত বাঁশে উঠার মতো এক ফুট উঠে আর দুই ফুট নামে। সুতরাং আল্লাহর আইনের কথা ওদের মুখে মানায় না - এইটা ওরা ভাল বঅবে বুঝতে পেড়েছে। তা ছাড়া সৎলোকের কথা বলার মতো ওদের মুক কোথায়। যে দলের দুই মাথা সহ নির্বাচিত প্রতিনিধির ৬৭% দূর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত - তাদের মুখে কি সৎলোকের শাসন কথাটা চরম কৌতুকের মতো শুনাতো না? তাই ওরা নীরবেই কাজটা করতে চাইতো।
৩) নারী নেতৃত্ব -
জামায়াতের পিছলামীর সবচেয়ে বড় নিদর্শন হলো নারী নেতৃত্ব নিয়ে। মউদুদি নারী নেতৃত্ব হারাম ফতোয়া জারীর কিছু দিন পরই ফাতেমা জিন্নাহকে সমর্থন দেয় - কারন কাদীয়ানীদের গনহত্যার মামলায় ফাঁসির আদেশ হয় আয়ুবের সময়ে - তাই আয়ুবের বিরুদ্ধে নারী নেতৃত্বকে সমর্থন দিয়ে মউদুদি প্রথম নিজের থুথু নিজে গিলেছে। পরে এরশাদের সময় বাংলাদেশের জামাতীরওনারী নেতৃত্ব হারাম বলে প্রচার শুরু করে - কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশের দুই নারী নেতৃত্বকে নেতা মেনেছে। সুতরাং - এই বিষয়ে যত পিছলামীই করুক - এরা আসলেই নারী বিদ্বেষী একটা গোষ্ঠী।
৪) অমুসলিম সহযোগী সদস্য -
বাংলাদেশের কোন অমুসলিম একদল রাজাকারের অধীনে সহযোগী হতে যাবে? তারচেয়ে বড় কথা হলো সংবিধানের যে ধারায় কোন রাজনৈতিক দল ধর্ম-বর্ণেরবিভেদ করতে পারবে না - এইটা হলো তার সুস্পষ্ঠ লংঘন। নির্বাচন কমিশনের এই বিষয়ে ভাবতে হবে - তালেবান শাসকদের মতো একটা বিশেষ ধর্মগোষ্ঠীর অধীনে অন্য ধর্মগোষ্ঠীর সহযোগী অবস্থান তৈরীকে তারা অনুমোদন দেবে কিনা!
৫) মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করা -
একটা দল ২৫বছর দেশে রাজনীতি করে - মন্ত্রী হয় - এমপি হয় - কিন্তু সেই দেশের জন্মকে স্বীকার করে না - তারা যখন ৩৮ বছর পর একটা বিশেষ কারনে স্বীকার করে - সেখানে তাদের আন্তরিকতা নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তোলতে পারে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টা যখনই সামনে আসবে - জামাতের বাংলাদেশে অবস্থান তখনই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। ওরা কি কখনও প্রকাশ্যে তাদের ৭১ এর ভুমিকা নিয়ে লজ্জিত বা দুঃখিত হয়েছে। মোটেও না। হঠাৎ করে শিয়ালের ফাঁদে পড়ে মন্ত্র আওড়ানো মতো তারা সবকিছুই স্বীকার করছে। তাদের কি বিশ্বাস করা যায়?
জামায়াত নাম ফ্যাসিস্ট সংগঠনের ভিতরে গনতন্ত্র চর্চা হবে - এই ধরনের দিবাস্বপ্ন যারা দেখেছেন - তাদের ভুল ভাঙ্গানোর মতো কিছু পরিবর্তন হয়েছে - যাকে তারা গনতন্ত্রের চর্চা হিসাবে দেখাবে। একটা দল দীর্ঘ পনের বছর কিভাবে গনতন্ত্রের কথা বলে বড় দুই দলকে ধোঁকা দিয়েছে - তা ভেবেও অনেকে অবাক হতে পারেন।
আজকের জামাতের পিছলামী দেখে বিষয়গুলো আরো সুস্পস্ট হলো - বাংলাদেশের জন্মের বিরোধীতাকারী - যারা এই দেশের আলো বাতাসে থেকেও দেশটাকে স্বীকার করতে ৩৮ বছর সময় নেয় - তাদের কি কোন অধিকার আছে বাংলাদেশ নামক ভুখন্ডের ভিতরে অবস্থান করার?
পরিষ্কার কথা হলো - যারা একটাদেশের সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে ৩৮ বছর সময় নিয়েছে - যে দেশের জন্মকে আঁতুরঘরেই শেষ করে দিতে চেয়েছে - তাদের কোন কোন কার্যকলাপ ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা বাংলাদেশে চলতে দেওয়া যাবে না। এই সোজা কথাটা যদি বর্তমান সরকার আর নির্বাচন কমিশন বুঝতে অপারগ হয় - তবে হয়তো আরো বড় কোন উদাহরন তাদের বুঝানোর জন্যে তৈরী হবে।
(ছবি সুত্র - প্রথম আলো)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৭:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



