somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতীয়তাবাদী ব্লগার মানে কি?

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগে বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি জাতীয়তাবাদী ব্লগারদের এক হওয়ার জন্যে আহ্বান করা হচ্ছে। প্রশ্ন করেছিলাম - জাতীয়তাবাদী বিষয়টা কি? ভদ্রলোক উত্তর দিলেন না। তার নীচেই একজন এসে গালাগালি শুরু করে দিলেন - পোস্টদাতা তার উপর খুবই খোশ হয়ে কমেন্ট করলেন। উনার জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে কি বলেন তা আমার আর জানা হলো না। বুঝলাম এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে গালি আর গীবত শুনতে হবে। তাই আর প্রশ্ন না করে নিজের বুঝের উপর আস্থা রাখলাম।

"বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে" এমন দাবীর বিপরীতে একদল বাঙালী সংস্কৃতিকে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি বিবেচনা করে বাঙালী পরিচয় দিতে কুন্ঠিত হয়। তাদের জন্যে অবৈধ সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবর্তন করেছেন। যিনি মুখে বিসমিল্লাহ বলে বত্তৃতা শুরু করতেন - তাই উনাকে বাংলাদেশে ইসলামের পুর্নজাগরনের নেতা হিসাবে অনেকে বিবেচনা করে - যদিও জাতীয়তাবাদের চর্চা ইসলামে নিষিদ্ধ -তাতে কি আছে - ক্ষমতার স্বার্থে আইন আর গাইন একই জিনিস। ধর্ম ব্যবহার করে রাজনীতি করা সবচেয়ে কার্যকর পথ তা বাংলাদেশের দুই সামরিক শাসকই না - পাকিস্তানী সামরিক শাসকগন প্রমান করেছেন। আর বাম-ডান-উত্দর দক্ষিন সব পদ নিয়ে সামরিক সরকারে ধামাধরা রাজনীতিকদের কাছে সবই বৈধ। জেনারেল জিয়া বিসমিল্লাহ বলে দল বানালেও সেখানে নাস্তিক কমিউনিস্ট থেকে শুরু করে ৭১ এর ঘাতক দালাল রাজাকার সবই জড়ো হয়ে একটা খিচুরী পাকিয়ে রেখেছিলো। কিন্তু জিয়ার মৃত্যুর পর বিএনপির দখল চলে যায় জিয়াউর রহমানের শশুর পক্ষের হাতে - আর ম্যাকআপ বাক্সের নীচে বিসমিল্লাহও চাপা পড়ে যায়। এখন আছে বামদের দখলে - তাই ইসলামী দলে জোস না থাকলেও - জামাতের মতো উগ্র ধর্ম ব্যবসায়ীদের সাথে উষ্ঞ সম্পর্কের বিষয়টি এখনও চলছে জাতীয়তাবাদের নামে।

কিভাবে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ চর্চার জন্যে বাংলাদেশের জন্মের শত্রুদের বন্ধু বানাতে হয় - সেই হিসাবটা আজো মিলেনাই। জাতীয়তাবাদের নেতা খালেদা জিয়ার চোখে বাংলাদেশের জন্মের নেতৃত্ব দেওয়া দল "সাপ" এর চেয়েও খারাপ বিবেচিত হলেও বাংলাদেশের জন্মের বিরোধী (প্রকৃত সাপ) জামাত বন্ধু হিসাবে বিবেচিত হয় - তখন তথাকথিত "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের" হিসাবটা মিলানো কষ্টকর হয়ে উঠে।

মজার কথা হলো - বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ এমন একটা জিনিস যেখানে বাংলাদেশের জন্মের শত্রুরা (জামাত) সমাদৃত হলেও মুক্তিযুদ্ধের মুল নেতাদের হত্যার বিচারের বিষয়টি তাদের কাছে ছেলে খেলা হয়ে যায়। যুদ্ধাপরাধীরা এদের বন্ধু কিন্তু এরা বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ব করে। যুদ্ধাপরাধী বিচারের যদি-কিন্তু ইত্যাদি অব্যয় ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরী করে।

যাই হোক - আমার বুঝ যতটুকু হয়েছে - দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদীদের চরিত্র দেখে তাতে সহজেই জাতীয়তাবাদীদের ওর স্যলাইনের সাথে তুলনা করা যায়।

এক চিমটি স্বাধীনতার ঘোষনা (মুক্তিযুদ্ধের গন্ধের জন্যে) + একমুঠ রাজাকার + এক বালতি আওয়ামী/ভারতের প্রতি ঘৃনা মিশিয়ে এক বছর অন্ধকারে রেখে দিলে যে মিশ্রন তৈরী হবে তা হলো বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ।

এর থেকে কষ্ট করে মুক্তিযুদ্ধে গন্ধ পেলেও রাজাকারদের ভোটকা গন্ধের নীচে তা চাপা পড়ে যাবে। তবে সবচেয়ে বেশী যে ফ্লেভার পাওয়া যাবে তা হলো "ভারত সব খেয়ে ফেললো" আর "সব দোষ আওয়ামীলীগের"। এই মিশ্রন একবার পান করলে যে কোন মানুষ স্বাভাবিক চিন্তা শক্তি হারিয়ে আবোল তাবোল বকতে থাকে। তারা তখন তাদের কোলে রাজাকার বসিয়ে অন্যদলের চিপাচাপায় রাজাকার খোঁজে - এরা যুদ্ধাপপরাধীর বিচার চায় কিন্তু সহ এবং সেই কিন্তু হলো মগবাজারের ম্যানুয়াল।

দেশের স্বার্থে সবার উচিত এই জাতীয়তাবাদের বিষাক্ত মিশ্রনের আসক্তি
থেকে যুব সমাজকে দুরে রাখা এবং এই বিষের প্রভাব যেন সমাজকে গিলে না ফেলে তার জন্যে সঠিক ইতিহাস চর্চা করা। ইসলামের কথা বললেও জামাত ইসলামের নিষিদ্ধ বিষয় জাতীয়তাবাদকে সমর্থন করছে - বিনিময়ে জাতীয়তাবাদীরা জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধা ইমেজ সামনে এনে জামাতের রাজাকারদের রক্ষার জন্যে ধূঁয়া তৈরী করছে। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের নামে এই অসুস্থ আঁতাত বাংলাদেশের রাজনীতিকে বিষাক্ত করে তুলছে। যুবসমাজ সঠিক রাজনৈতিক দিক নির্দেশনার অভাবে বিভ্রান্তিতে ভুগছে। এরা না পারে ক্ষমতাশীনদের অন্যায় এবং অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে উচ্চকন্ঠে কথা বলতে ( কারন বিরোধী দলে সর্বোচ্চ নেতা এবং তার পরিজন দূর্নীতির যে রেকর্ড করেছে তার বিষয়ে লজ্জিত সবাই আর জামাতের সাথে আতাত যুবসমাজকে একটা কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে) - না পারছে বিরোধী দলের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থণ দিতে। এই পরিস্থিতি একটা দেশের ভবিষ্যতের জন্যে ভয়াবহ পরিনতি বয়ে আনবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০
১৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমী মাদ্রাসায় আলেম তৈরী হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×