কাদের মোল্লার রায়ে প্রায় সবাইকে হতাশ করেছে। বিশেষ করে এতো বড় একটা খুনীকে বাঁচিয়ে রাখা কারোই কাম্য নয়। কিন্তু বিষয়টা ভিন্ন ভাবে দেখতে চাই। বিশ্বের অনেক দেশেই এখন আর মৃত্যুদন্ড নেই - তার মানে এই না যে অপরাধী নিরাপরাধ হয়ে গেলো।
এই বিচারটা কেন দরকার ছিলো?
অনেকের কাছে এই বিচারের অর্থ ভিন্ন - কিন্তু এই বিচারের সবচেয়ে বড় যে প্রয়োজনীয়তা - তা হলো ইতিহাসের পাঠকে শুদ্ধ করা। কাদের মোল্লা দম্ভভরে মুক্তিযোদ্ধাদের তাচ্ছল্য করে যে ৪১ বছর বুক ফুলিয়ে হেটেছে - তা আজ থেকে সমাপ্তি ঘোষিত হলো। কাদের মোল্লা এখন একজন কনভিকটেট ক্রিমিন্যাল। একজন প্রমানিত মানবতা বিরোধী অপরাধী। এইটাই দরকার ছিল - এমন একটা দলিল আজ তৈরী হলো - আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমরা একটা কোর্টের রায় রেখে যেতো পারলাম - যেখানে সুষ্পষ্ট ভাবে লেখা আছে ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলাম মানবতা বিরোধী একটা সংগঠন ছিলো - আর তাদের নেতা কাদের মোল্লা কয়েক শত মানুষকে নির্মমভাবে হত্যার সাথে জড়িত ছিলো।
জামায়াত যদিও বলে ইসলামের কথা - কিন্তু একজন মুসলমান কখনও মৃত্যুকে ভয় পায় না - মৃত্যু তাদের কাছে একটা অতি সাধারন ঘটনা। কিন্তু জামাত শিবিরের কর্মকান্ডে মনে হচ্ছে রাজাকার হিসাবে কোর্টের রায়ে ঘৃনার বস্তু হয়ে বেঁচে থাকা ভাল - মৃত্যুতো হলো না। এরা দুনিয়ার লাভের আশায় এতো মশগুল হয়ে গেছে যে - চরম ঘৃনিত হয়েও বেঁচে থাকার মাঝে আনন্দ খুঁজে বেড়াচ্ছে।
যে ইতিহাস আজ লেখা হলো - তা বর্তমানের কাছে তেমন গুরুত্ব না থাকলেও - একদিন এর গুরুত্ব অনেক হবে - যখন আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম একটা সভ্যতার নিক্তিতে দেশটাকে - জাতিটাকে মাপতে চাইবে - তখন আজকের কোর্টের রায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হয়ে সাক্ষ্য দেবে কাদের মোল্লার মতো কসাইদের বিরুদ্ধে আমাদের বীরেরা কত বেশী ত্যাগ স্বীকার করে দেশটাকে মুক্ত করেছিলো। কি বিশাল ত্যাগ আর কত রক্ত দিয়ে এই নরপশুদের পরাজিত করতে হয়েছিলো।