somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাগাও একবার------ শেষ

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব

৮)

শফিক স্যার কখনো লাইনে পড়াতে পারেন না। থার্মোডিনামিক্সের ৩ নম্বর সুত্রে গিয়ে উনি তালগোল পাকিয়ে ফেললেন। উনার তালগোলের অবস্হাটা এতই ভয়াবহ যে ব্যাক বেন্ঞ্চের অনেকেই টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে। অডিটোরিয়ামের মতো রুমে সবাইকেই দেখা যায় কারন সামনের বেন্ঞ্চ গুলো নীচের দিকে আর পেছনের সারিগুলো উপরে উঠে গেছে।

শফিক সাহেব ব্লাক বডি এনট্রপি বোঝানোর জন্য একটা গোল কিছু একেছেন কিন্তু তালগোলটা কোথায় হলো বুঝে উঠতে পারছেন না। হাতের লেকচার শীট টা বন্ধ করে একটা বক্তৃতা শুরু করলেন:

" আমেরিকান এয়ারফোর্স পারমানবিক বোমা ব্যাব হার করতে পারছিলো না কারন তেজস্ক্রিয়তার মাত্রাটা বেশ ভয়াবহ কিন্তু দুর্গম পাহাড়ী অন্ঞ্চলে যেভাবে গুহা খুড়ে তালেবানী সৈন্যরা যুদ্ধ করেছে সেটা আমেরিকাকে বেশ ভাবায়। ইরাক যুদ্ধে ক্লাস্টার বোমা স হ আরও কিছু বোমার ব্যাব হার করলেও দুর্গম পাহাড়ী অন্ঞ্চলে খুব বেশী কার্যকর ছিলো না।
এমন সময় আলবার্টস উইমর্টস নামের এক বোমা বিশেষজ্ঞ একটা কনসেপ্ট নিয়ে আসলেন। এমন একটা দীর্ঘস্হায়ী বিষ্ফোরন যার ফলে উক্ত স্হানে প্রচুর তাপ এবং শকওয়েভ উৎপন্ন হবে কিন্তু কোনো তেজস্ক্রিয়তার দরকার হবে না। এর ফলে উক্ত এলাকায় জীবন্ত সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। মূলনীতি ছিলো যত ওজন তত বেশী ক্ষতির পরিমান।

বোমাটির নাম দেয়া হলো মোয়েব। মূসা (আঃ) যে এলাকায় অবতীর্ন হয়েছিলেন এবং ঈশ্বরের বানী প্রচার করতে লান্ঞ্চনার স্বীকার হয়ে তার সীমিত উম্মত নিয়ে চলে যাবার সময় পুরো জনপদ মাটিতে চাপা পড়ে যায় সেই জনপদের স্হানিক নাম ছিলো মোয়েব, বাইবেলে বর্নিত। বর্তমানে উক্ত স্হানকে আমরা ডেড সি নামেই চিনি। এর সাথে মিল রেখে এই বোমাটির নামকরন করা হয়: মাদার অব অল বোম্বস"

ক্লাশের সময় শেষে শফিক স্যার বেরুতেই শাহেদের হঠাৎ একটা ব্যাপার মাথায় আসলো। শুভ্রকে জিজ্ঞেস করলো,"রতনের ফোন নম্বরটা লাস্ট দুটো ডিজিট কি?

শুভ্র বিশাল একটা হাই তুলে বললো,"১৬"

শাহেদ শুভ্রর পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে কাকে যেনো ডায়াল করলো," হ্যালো, রতন জানতো আপনি সাইনটা নকল করেছেন আর রডটা আমি জানি কার কাছে। আজ রাত ১০ টায় ঠিক যেখান থেকে রতন নীচে পড়ে গেছে!"

শাহেদের এসব কথা শুনে শুভ্র চমকে গেলো, " আমি জানি এই নম্বরটা কার। আমি জানি।"

শাহেদ মুচকি হেসে বললো,"তোর হাইপারথাইমেশিয়া থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলো কোনো কাজেই আসবে না যদি না মাথা খাটাস।"

শুভ্র ইতস্তত হয়ে মাথা চুলকাতে লাগলো।

৯)

পলাশ চা হাতে নিয়ে বসে আছে। আজকের গবেষনার বিষয়," চায়ে কেনো মাছি পড়ে না?"

: রহমত চাচা, আপনার দোকানের সবকিছুতে মাছি পড়ে কিন্তু চায়ের কেনো মাছি পড়ে না?

রহমত চাচা চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে আছে।

: ফরমালিন যুক্ত ফলে শুনেছি মাছি পড়ে না। আপনি কি চায়ে ফরমালিন দেন? ফরমালিন কি ডাইরেক্ট দেন নাকি ওটাও জাল করে দেন?
: (রহমত চাচা তার হাতের কাপটাকে পানির বাল্টিতে ছুড়ে মারলো) ২ টাকার চা। সব দোকানে ৫ টাকা আমার দোকানে এখনও ২ টাকা। খাইলে খান নাইলে যান। মাথা খাইয়েন না।

এমন সেদিনের সেই সাদা শার্ট পড়া ভদ্রলোক আবারও হাজির যাকে দেখে শাহেদ পলাশকে ইশারা করেছিলো। লোকটা ইদানিং এই এলাকায় শুধু ঘুর ঘুর করছে হাতে একটা প্যাকেট নিয়ে।

: আন্কেল, আপনি কি এই এলাকায় নতুন নাকি কোনো কাজে এসেছেন?

লোকটা কিছু না বলে এক কাপ চা হাতে নিলো। চা একটা চুমুক দিয়ে বললো," বাহ! দারুন চা তো আপনার। গুড়ো দুধ দেন না গরুর দুধ?"
রহমত চাচার মুখে দিগ্বিজয়ী হাসি, পলাশের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো," গরুর দুধ দিয়া তো পোষাইতে পারুম না ২ টাকার চায়ে। কনডেন্সড মিল্ক দিয়া গুড়া দুধ জ্বাল দিয়া বানাই।"

এবার লোকটা পলাশের দিকে তাকিয়ে বললেন," কি যেনো বলছিলেন?"

পলাশ এবার চায়ের কাপটা রেখে,"পুরাই ফাউল চা। আন্কেল, আপনি নতুন আসছেন। আপনি কাউকে চিনেন না। মানুষ জন টাকার জন্য পঁচা জিনিসও খাওয়ায়।জ্বী, আমার নাম...."

"পলাশ" কথা শেষ করতে না দিয়েই লোকটা বলা শুরু করলো," ঢাকা কলেজ, ফিন্যান্স, ফাস্ট ইয়ারে আছো দু বছর ধরে। লেখা পড়ার নাম নেই। শাহেদ তোমার ভালো বন্ধু, কয়দিন ধরে তার কাছে একটা বায়না ধরেছো যে সামনের পরীক্ষায় শাহেদের বন্ধু শুভ্র যেনো একটু সাহায্য করে তোমার জায়গায় পরীক্ষা দিয়ে, কি ঠিক কি না?"

পলাশ ঢোক গেলে, অবস্হা বেগতিক। লোকটা বলতে শুরু করলো," আমি তোরাব আলি। ডিবির লোক। ভয় নেই, তোমার বান্ধবী ঊর্মির বিয়ের জন্য আমি আসিনি। ওর দুটো বিয়ে যে তুমিই ভেঙ্গেছো এটাও আমি জানি!"

পলাশ হা হয়ে দাড়িয়ে আছে, রহমত চাচা তার ৩ টা পোকা খাওয়া দাত সহ ৩২ টা বের করে হাসছে যেন সে আজ সার্কাস দেখতে বসেছে। পলাশ হঠাৎ বলে ফেললো,"আপনিও দেখি শাহেদের মতো!"

তোরাব আলি সাহেব চা টা শেষ করে জিজ্ঞেস করলো," শাহেদ কখন আসবে?"

পলাশের মোহভঙ্গি তখনও কাটেনি। তোরাব আলি রহমত চাচার কাপ ধোয়া বাল্টি থেকে এক কাপ পানি নিয়ে পলাশের মুখের উপর মারলো। পলাশ সম্বিৎ ফিরে ককিয়ে বললো," শাহেদ.....শাহেদ.....ঐ তো.....ঐ তো!"

তোরাব আলি রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখে শাহেদ আর পাশে একটা ফুট ফুটে ছেলে রিক্সা থেকে নামছে।

১০)

ঝুম বৃষ্টি নামলেও আকাশের চাঁদটাকে ঠিকই দেখা যাচ্ছে। জানালার পর্দা গলে পূর্নিমার আলোতে সোহরাব সাহেব নামাজ পড়ছেন। লোডশেডিং এর গরমে এরকম ঝুম বৃষ্টি খুব কম পড়ে। দেখা যায় সারাদিন গরমে হাপিত্যেশ, লোডশেডিং ভারাক্রান্ত সবাই, আকাশ ফক ফঁকা। মসজিদে ঈমামেরা সেই গরমে অস্বস্তি নিয়ে গ্রামে গ্রামে জুম্মাবার গজবের অশনি সংকেত হিসেবেই তুলে ধরে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে। বুড়োরা সেই আবেগটাকে কাজে লাগিয়ে মোনাজাত ধরে কাদবার চেষ্টা করে আর পেছনের কাতারে থাকা ফাজিল পোলাপান গুতোগুতি শয়তানি শুরু করে।

সোহরাব সাহেব মোনাজাত ধরেছেন, তবে তার চোখের অশ্রুর জন্য এরকম আবেগের দরকার নেই। তার সন্তানের দুঃখে ভারাক্রান্ত সে। মোনাজাত শেষ করে জায়নামাজ গোছাতে গোছাতে,"বাবা, চা খাইছো?"
: জ্বি..আন্কেল।
: তোমার পড়ালেখা কেমন চলে? শুনলাম তোমার রেজাল্ট নাকি খুব ভালো হইছে।
: ক্লাসে সেকেন্ড হয়েছি, বলতে গেলে ভালোই।
: বাবা, সে রাতে তোমার কথাটা অনেক ভেবেছি। চাবিটা খুজে পাইনি। আমি একটা কথা ভাবছি। এই এলাকায় কারো সাথে কথা বললে শান্তি পাই না, শুধু তোমার কথাই মনে হয়। তোমার বাবা যদি বেচে থাকতো, খুব গর্ব বোধ করতো।
: কি বলবেন আন্কেল?
: গতকাল আমার এক আত্মিয় আমাকে জানালো তার কাছে ভালো একটা ওঝা আছে। আমি আগামীকাল সবাইকে ডাক দিবো, আমার ভাইটাকেও, ওর ছেলেকেও। ঐ ওঝা বাটি চালান দেবে। আমি জানি তোমরা আধুনিক যুগের ছেলে। কিন্তু আমার একটামাত্র ছেলে মারা গেছে। আমার ছেলেটা একটু অন্য রকম, তাই বইলা তারে মরতে হবে এটা বিশ্বাস হয় না। আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর চাই।
: আন্কেল, আমি কাল আসবো না। একটু কাজ আছে আমার তবে পলাশ আসবে। আমি একটা প্রশ্নের খোজ করছি। প্রশ্নের উত্তর পেলে আপনাকেই জানাবো এবং সেটা কালকেই

এই বলে শাহেদ সোহরাব সাহেবের কাধে হাত রাখলো, সোহরাব সাহেব শাহেদের কাধে ভর করে ডুকরে কাদা শুরু করলেন।

১১.

পলাশের পেট খারাপ শুরু হয়েছে, অথচ সন্ধ্যা সাতটা। শাহেদ তাকে কিছু মোমবাতী কিনতে বলছে, কেনাও শেষ। সেগুলো নিয়ে একটু কাজ ছিলো, সে কাজটা করতে গিয়েই টের পেল তার পেটে কি যেনো গুটগুট শুরু হয়েছে। হিসেব করে দেখলো ঘন্টায় ৪ বার যাওয়া হচ্ছে। শাহেদকে কল করলে ফোন কেটে দিচ্ছে। উল্টো ম্যাসেজে একটা ঔষুধের নাম দিয়েছে। সমস্যা হলো ঘর থেকে বের হতে পারছে না। সিড়ি দিয়ে নামতে গেলেই নিম্নচাপ লঘু হয়ে যাচ্ছে।

যাই হোক, কাজের ছেলেটাকে দিয়ে ঔষুধ আনানো শেষ। ঔষুধ একটা খেলো, কিন্তু কোনো পরিবর্তন হলো না। উল্টো ঘন্টায় চার বারের কোটাথেকে ৫ বার হয়ে গেলো।

মোমবাতীর প্যাকেট নিয়ে সোহরাব সাহেবের বাসার দিকে হাটা দিলো। ভন্ড কোন শয়তান চাচার মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খাবে আর শাহেদ তাতে তাল দিচ্ছে। মেজাজটা পুরাই বিলা। সোহরাব সাহেবের রুমে ঢুকতেই তোরাব আলির ভয়ন্কর চেহারা। ছোটবেলায় মনে করতো কেচোরা হলো সবচেয়ে বুলশীট প্রানী কিন্তু তোরাব আলিকে দেখে মনে হয় কেচো এর চেয়ে অনেক কিউট।

ঘরে ঢুকে আরো যাদের দেখলো তার মধ্যে শিহাব শুধু ঘামছে। শিহাব ওর দু'চোখের বিষ। ডিক্সি, ফেন্সি এমন কিছু নেই যাতে ওর এডিকশন নেই। পাশে দাড়িয়ে শিহাবের বাবা পারভেজ সাহেব তার পাশে সোহরাব আলি আর ঘরের মাঝখানে ভন্ড। লাল আলখেল্লা পড়া বিশাল দাড়ি। কিন্তু চোখ দেখে মনে হয় পুরোই কিশোর। সবাই চুপচাপ বসে আছে কিন্তু তোরাব আলি দাড়িয়ে।

মীনমীনে গলায় দরবেশ লোকটা শুরু করলো....

কত মানুষের কত কিছু হারায় কিন্তু শেরে খাজার চোখ এড়ায় না। সে সব জানে, সবজান্তার ওপর খোদার অশেষ রহমত। তার হাতে ছিলো ২৩ টা জ্বীন। কামরুখ কামখ্যার.....

পলাশ কানে তুলা দিতে চাইলো। এমুন সময় দরবেশ বেটা তার লাল টুপলী থেকে একটা লোহার বাটী বের করে মেঝে উবুদ করে রাখলো আর বিড় বিড় করে সুরা জ্বীন স্পষ্ট সুরে পড়তে শুরু করলো। যদিও পলাশের খানিক সন্দেহ হলো এটা সুরা জ্বীন কিনা, কিন্তু সোহরাব সাহেবের চোখের পানি দেখে শিওর হলো। এমন সময় বিদ্যূৎ চলে গেলো। দরবেশ হঠাৎ বলে উঠলো, "কারো কাছে মোম থাকলে সবার হাতে হাতে দেন।"

পলাশের হঠাৎ টনক নড়লো। আরে ওর কাছেই তো মোমের ডিব্বা। পলাশ এত কিছু চিন্তা না করে সবার হাতে হাতে মোম দিতে লাগলো। কিন্তু শিহাবের হাতে মোম দেয়া মাত্রই মোম জ্বলে উঠলো।

সবাই হা করে তাকিয়ে আছে শিহাবের দিকে। শিহাব অস্ফুট স্বরে বললো,"আরে, ম্যাচ ছাড়াই মোম জ্বললো!" এমন সময় সোহরাব চিৎকার কর উঠলো,"বাটি"

সবাই তাকিয়ে দেখলো শিহাবের পায়ের কাছে বাটি। দরবেশ দ্রুত এসে শিহাবের হাত ধরে বললো,"চোর পাওয়া গেছে!"

শিহাব থতমত খেয়ে মোমটা ফেলে দিলো,"আমি....আমার কাছে... কোনো চাবি .... আমি চাবি নেই নি!"

দরবেশ বললো,"তুমি নাও নাই সেইটা কথা না, কথা হইলো তোমার কাছে চাবি। সোহরাব সাহেব, আপনের চাবি এর কাছে!"

সোহরাব সাহেব থর থর করে মারমুখো ভঙ্গিতে এগিয়ে আসতে তোরাব আলি সামনে এগুতে লাগলেন এমন সময় পারভেজ সাহেব সোহরাব আলির দিকে তেড়ে বলে উঠলেন,"ঐখানেই থাম। আমার পোলার গায়ে হাত তুললে তোর পোলার মত....." হঠাৎ থেমে গেলেন।

এমন সময় একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো। সাথে থাকা দরবেশটা উধাও। দাড়িয়ে আছে শাহেদ। শাহেদ সামনে এসে বললো,"আন্কেল, আমি জানি আপনি খুন করেননি। তবু সত্য কথাটা বলতে পারেন। তোরাব আলি সাহেব ডিবির লোক। তাকে আমি সব বলেছি।"

পারভেজ সাহেব অবাক হয়ে বললো,"তুমি কিভাবে জানলে? দরবেশ কোথায় গেল? তুমি কখন আসলে?"

শাহেদ শুরু করলো," ঘটনার পর দিন আমার মনে সন্দেহ জাগে। সবচেয়ে বেশী সন্দেহ জাগে রতনের লাশটা নিয়ে। পুলিশ বলছে আত্মহত্যা কিন্তু লাশটা এত দূরেই বা পড়বে কেন আর চোখ দুটো বিস্ফোরিত হয়ে আছে কেন? ওর হাতে দেখলে জং পড়া দাগ! আমি তখনই পলাশকে বলি একটা লোহার রড জোগাড় করে বিল্ডিং এর সামনে রেখে দিতে। পলাশের সামনে সেই রড প্যাকেটে ভরে তোরাব সাহেব হাটাহাটি করলেও পলাশ নিজে বুঝতে পারেনি। তবে যখন জানলাম ছাদের একটা চাবি পারভেজ সাহেবের কাছে, তখন হিসাবটা সহজ হয়ে গেলো। শুধু একটাই প্রশ্ন কেন? পারভেজ সাহেব, আপনি কি কিছু বলবেন?"

পারভেজ সাহেব বিচলিত হয়ে শুরু করলো,"শিহাবরে নিয়া আমি হতাশ ছিলাম। সেই রাতে শিহাব আর রতন অনেক ঝগড়া করতে ছিলো। আমার কাছ থেকে শিহাবই চাবিটা নিয়েছিলো। ওটা ওর কাছেই থাকে। কেন থাকে সেটা আমি সেদিন ছাদে গিয়ে বুঝতে পারি। রতনের কাছ থেকে শিহাব নেশার টাকা ধার নিতো। সে রাতে টাকা নিয়েই ঝগড়া। আমি ছাদে গিয়ে দেখি রতন রড হাতে তেড়ে আসছে। আমি তখন শিহাবকে হ্যাচকা টান দিতে গিয়ে রতনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলি। রতন ছাদ থেকে পড়ে যায় দৌড় থামাতে না পেরে। শিহাব নেশা করলেও ও কিছু করেনি!"

শাহেদ সোহরাব সাহেবের দিকে তাকিয়ে বললো,"ঐ দরবেশের ঠিকানা আমিই আপনার আত্মীয়কে দিয়েছিলাম। রতনের সাথে তার বাসায় আমি অনেক আগে গিয়েছিলাম। আমি শিওর হই যখন পারভেজ সাহেব ঐ রডের খোজ করছিলেন রতনের লাশটা তুলে নেয়ার পর।"

পলাশ এতক্ষন চুপ ছিলো, এমন সময় বলে উঠলো,"কথা হলো রড তো আমিই সাপ্লাই দিলাম, তাহলে রতনের হাতের রডটা কোথায়?"

শাহেদ বলে উঠলো,"রডটা ছাদেই ছিলো। খুজলে পাওয়া যাবে কোথাও পড়ে আছে।"

তোরাব আলি এতক্ষনপর মুখ খুললেন,"তার মানে খুনী হচ্ছে রতন নিজেই। এটা একটা এক্সিডেন্ট। আমিও ভেবেছিলাম শিহাবই খুনি। তবে ওকে ফলো করতে গিয়ে পুরো ফেন্সির চালানটা কাল পাকড়াও করেছি। জাহাঙ্গীর জেলে। তাহলে আমি এখন যাই কেস ইজ ক্লোজড। আর শাহেদ, তোমাকে আমি গ্রেফতার করতে পারতাম পুলিশ কেসের এভিডেন্স টেম্পারিং এর জন্য। কিন্তু কেস যেহেতু সলভড....দেখা হবে আবার!"

তোরাব আলি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। সোহরাব সাহেব তার সোফায় বসে কাদতে লাগলেন। শিহাব তার পা ধরে ক্ষমা চাইতে লাগলেন। পারভেজ সাহেব সোহরাব সাহেবের মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন। একটা অপরূপ দৃশ্য।

শাহেদ আর পলাশ বের হবার সময় পারভেজ সাহেব বললেন,"তোমরা মোমবাতী কিভাবে জ্বালালে ম্যাচ ছাড়া?"

শাহেদ কিছু বলতে যাবে এমন সময় পলাশ হঠাৎ বলে উঠলো,"মোমবাতীর মাথায় ফসফরাসের লিকুইড ভরা, বাতাসে বের করলেই আগুন ধরে! অবশ্য এটা করতে গিয়ে আমার পেট টা খারাপ হইছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:০৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×