ইপিআর প্যারাডক্স:
কোয়ান্টাম ফিজিক্সের জন্ম হয় ডি ব্রগলীর একটা ইকোয়েশন থেকে যেখানে তিনি বলেছিলেন যে ইলেক্ট্রনের মতো কনিকাসমূহকে তরঙ্গ দিয়েও ব্যাখ্যা করা যায়। এর মানে হলো একটি কনিকাকে আমরা তরঙ্গের সাথেও তুলনা করতে পারি।
শ্রোয়েডিঙ্গার কিছু দিন পর হাইড্রোজেনের স্পেকট্রাম দেখে ইলেক্ট্রনের এই ব্যাপারটি সম্পর্কে আরো ধারনা দেন। হাইজেনবার্গ আরেকটু এগিয়ে গিয়ে বললেন যে আপনি কখনো ইলেক্ট্রনের মতো কনিকার অবস্হান এবং মোমেন্টাম একই সাথে মাপতে পারবেন না। তার মানে হলো ধরুন একটা কনিকা ঘুরতেছে যে কোনো দিকে। এখন আপনি যদি তাকে তিনটি অক্ষাংশে রেখে বিচার করেন তাহলে হয়তো দেখবেন যখন কনিকাটি x অক্ষ বরাবর ডানে ঘুরছে তখন আপনি জানতে পারবেন না যে y অক্ষ বরাবর কোন দিকে ঘুরছে। আবার আপনি যদি দেখেন y বরাবর উপরের দিকে ঘুরছে তখন আপনি জানতে পারবেন না যে x অক্ষ বরাবর কোন দিকে ঘুরছে।
এই ভ্যাজাল নিয়ে কোপেনহেগেন নিলস বোর কয়েক জন প্রথিতযশা পদার্থবিদ নিয়ে এর সমাধান খুজার চেষ্টা করলেন যার নাম কোপেনহেগেন ইন্টার প্রিটেশন।যার মানে হলো কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সে যতক্ষন না আপনি কোনকিছু মাপতেছেন ততক্ষন পর্যন্ত সবকিছুই অনিশ্চিত এবং অনির্নেয়। ধরা যাক কোনো একটা কনিকাকে আপনি তরঙ্গ তত্ব পরীক্ষা করার সময় দেখলেন যে অসংখ্য ইলেক্ট্রন দ্বারা পূর্ন সাগর যখন তরঙ্গের ন্যায় আচরন করছে তখন তার প্রত্যেকটি ইলেক্ট্রনও একেকটা তরঙ্গের ন্যায় আচরন করবে।
ম্যাক্স বর্ন এই সমাধানের সাথে আরেকটু যোগ করে বললেন যদি আমরা ইলেক্ট্রনের তরঙ্গের যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে তার বর্গ করি অথবা তার জটিল মানের সাথে গুন করি তাহলে আমরা ঐ ইলেক্ট্রনের অবস্হান মানে x অক্ষে কোথায় থাকতে পারে আছে সেটা সম্পর্কে একটা ধারনা পেতে পারি।তার মানে তরঙ্গের চরিত্র যদি আমরা y অক্ষে বসাই তাইলে দেখা যাইতেছে x অক্ষে আমরা একটা গতি করতে পারতেছি। কিন্তু আমরা এখনো x অক্ষ বরাবর এইটা যদি জানতে পারি তাইলে কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিটেশন অনুযায়ী যদি ইলেক্ট্রন x অক্ষ বরাবর কই আছে সেইটা যদি জানতে পারি তখন আর সেইটা তরঙ্গ থাকতেছে না, তখন সেইটা কনিকা হইয়া যাইতেছে। তার মানে এইখানে তরঙ্গ তত্ব মাইর খাইয়া যাইতেছে।
এখন আমরা যদি কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিটেশনরে আরেকটু আগায় নিয়া এই ভাবে বলি যে ধরেন একই কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম থিকা একটা ইলেক্ট্রন আরেকটা এন্টি ইলেক্ট্রন মানে পজিট্রন জোড়া আকারে পয়দা করি তখন সেইটা হবে কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলম্যান্ট। এইটা কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলম্যান্ট এই জন্য যে ধরেন ইলেক্ট্রন ঘুরতেছে t সময়ে যদি উপরের দিকে তাইলে পজিট্রন ঐ একই t সময়ে ঘুরবে নীচের দিকে।
এখন ধরেন যদু মদু দুই ভাই। একজনের হাতে ইলেক্ট্রন ধরায় দিয়া পাঠায় দিলাম আমেরিকা আরেকজনের হাতে পজিট্রন ধরায় দিয়া পাঠায় দিলাম টিম্বাকটুর কুনো এক গুহায়। এখন t সময়ে হঠাৎ কইরা বললাম যদু তুমার হাতের ইলেক্ট্রনরে নীচের দিকে ঘুরাও। সে ঘুরাইলো। এমন সময় মদুরে বললাম টিম্বাকটুতে ঐ t সময়ে পজিট্রন কুন দিক ঘুরছে, সে বলবে উপরের দিকে। দুই ইলেক্ট্রন পজিট্রনের মধ্যে কোনো কানেকশন বা যোগাযোগ নাই কিন্তু একজনের পরিবর্তন হইলে আরেকজন টের পায়। কি তমসা! এইটাই কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলম্যান্ট। এর কারন হইলো ঐ ইলেক্ট্রন আর পজিট্রনের তরঙ্গের যে বৈশিষ্ট্য দুই জনেই একে অপরেরটা ভাগাভাগি কইরা রাখছে। ফলে একজনের টা পরিবর্তন হইলো আরেকজনের পরিবর্তন হয়ে যায়।
এখন যদু মদুরে আরেকটু শিখাইলাম x এবং y অক্ষ। কারন উপরের তরঙ্গের কাহিনীটা আরেকটু কারিগরী করা দরকার।আমরা যদুরে বললাম y ডিরেকশনে t সময়ে ইলেক্ট্রন কুন দিকে ঘুরছে, সে বললো উপরের দিকে আর মদু বললো একই সময়ে y ডিরেকশনে নীচ দিকে। এখন কথা হইলো মদু তার কাজে ফাকি দিলো, সে দেখলো না যে y ডিরেকশনে আসলে কুন দিকে ঘুরতেছে, সে দেখলো তার গুহার সামনে থাকা গার্লস স্কুল কখন ছুটি হইতেছে আর কতগুলা সুন্দরী কুন দিকে যাইতেছে। ধরেন তখন ধমক মাইরা কইলেন কি করলি? সে t সময়ে ভুল করে x ডিরেকশনেরটা দেখে বললো ডান দিকে যাইতেছে। কিন্তু সমস্যা হইলো আপনি কিন্তু যদুর কথা জানেন যে ঐ t সময়ে যেহেতু তারটা উপরে ঘুরছে তাইলে এরটা নীচের দিকে ঘুরবে।
কিন্তু হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্ব অনুযায়ী আপনে কোনো কনিকার অবস্হান আর মোমেন্টাম বা x এবং y অক্ষের অবস্হান একই সময়ে জানতে পারেন না। তার মানে যদু যদি y অক্ষে ইলেক্ট্রন কুন দিকে ঘুরছে তাইলে মদু x এবং y দুইটাই জানতে পারতেছে পজিট্রনের।
এইটাই হইলো ইপিআর প্যারাডক্স।
আইন্সটাইন, পডলস্কি আরেকজন বিজ্ঞানীরে নিয়া ডি ব্রগলীর কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স আবিষ্কারের ১০ বছর পর এই ধাধা বাইর করে। এখন ধাধা যেহেতু বাইর করছে সেহেতু তারা দুইটা সমাধান দেয়।
১) দুই খান জোড়া কনিকা নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে শেখ হায়েনার পোলা সজীব জয়ের মতো আলোর চেয়ে দ্রুত গতিতে তথ্য আদান প্রদান করছে
২) ইলেক্ট্রন আর পজিট্রনের ডিএনএ একই (লোল: ডিএনএ থাকে কোষে, পার্টিক্যালে না, তাইলে হইতে পারে দুইটাই এমুন মাল দিয়া হইছে যেইটা দিয়া একটা আরেকটার সম্পর্কে আগে ভাগেই জানে যে ও কখন কি করবে)
২ নম্বরখান যতই অসম্ভব লাগুক না কেন এর ব্যাখ্যা আবার কিন্তু পলির বর্জন নীতি দিয়া দেয়া যায়। যাই হোক এইটার ব্যাখ্যা আমার এই পোস্টে দেওনের কোনো প্রয়োজন নাই। যদি কেও জানতে চায় তাইলে এইটা আমি কমেন্টে বলতে পারি।
এই প্যারায় পুরা কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স একবারে ২ টাকার মুড়ি বানায়া ঠোঙ্গায় ভইরা দিলাম
ওয়ার্মহোল:
আমরা মনে হয় সবাই জাফর ইকবালের বই পড়ে ওয়ার্মহোল সেটা সম্পর্কে ধারনা পাইছি। যদি কারো ধারনা না থাকে তাইলে আমি সায়েন্স ফিকশনের ভাষায় যদি বলি দুইটা জোড়া কৃষ্ঞগহ্বর আলাদা কইরা তাদের মধ্যে একটা টানেল বানায় দেই, তাহলে আপনি যদি একটা কৃষ্ঞগ হ্বরে টুপ করে ফাল দিলে চোখের পলকে আপনি অন্য প্রান্তে চলে যেতে পারেন। আপনি এভাবে ইচ্ছা করলে কয়েক কোটি আলোবর্ষ এভাবে চোখের পলকে পাড়ি দিতে পারেন। খালি দরকার হবে আপনাকে একটা কৃষ্ঞ গ হ্বর দেখে তাতে টুপ করে ফাল দেয়া। আপনে একটা ওয়ার্ম হোল দিয়া টাইম মেশিনও বানাইতে পারেন যেইটা দিয়া আপনে ইচ্ছা করলে ভবিষ্যতেও যাইতে পারেন আবারও অতীতে গিয়া বদর যুদ্ধে এটম বোমাও ফাটাইতে পারেন নারায়া তকবীর বইলা।
কাজের কথায় আসি। ম্যালকাডেনা না কি ইনস্টিউট এর এক অধ্যাপক সোনার সাহেব এই ইপিআর প্যারাডক্স নিয়া কাজ করতে গেলেন। তিনি শোয়েঙ্গার এফেক্টের মাধ্যমে কোয়ার্ক আর এন্টি কোয়ার্কের জোড়া বানালেন কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম থেকে। তারপর তাদের মধ্যে থেকে কিছু কোয়ার্ক আলাদা করলেন ইলেক্ট্রিক ডাইপোল ব্যাব হার করে।
তো সোনার সাহেবের কাছে আলাদাকৃত কোয়ার্ক গুলো নিশ্চয়ই ঐ এন্টি কোয়ার্কের সাথে এনট্যাঙ্গল করে আছে। আমি উপরে আপনাদের ইলেক্ট্রন পজিট্রনের বর্ননা দুইটা মাত্রা x এবং y দিয়া বর্ননা করছি। কিন্তু সোনার সাহেব দুই কাঠি সরেস হইয়া তার ক্যালকুলেশন আর ম্যাপিং ৪ মাত্রায় করলেন যেটাকে স্পেস টাইম ম্যাপিং হিসেবে বর্ননা করা যায় এবং তাতে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ব আমদানী করে গ্রাভিটিকেও ঢুকিয়ে দিলেন।
হিসাব মেলানোর সময় দেখলেন যদি তিনি স্ট্রিং থিওরীর মাত্রা গত কনসেপ্ট নিয়ে আগান তাহলে উচ্চ মাত্রায় গ্রাভিটি যেভাবে মিশে থাকে সেটার কারনে ৪ মাত্রায় এই এনট্যাঙ্গলম্যান্টে স্পেস-টাইমকে বাকা করে ফেলবে। যার ফলে একটা কোয়ার্কের চাল চলন তার এন্টি কোয়ার্কের চাল চলনকে প্রভাবিত করতে পারবে। সোনার সাহেব স্ট্রিং থিওরীর হলোগ্রাফিক দ্বৈততাকে বিচার করে আরো দেখেন যে এনট্যাঙ্গলম্যান্টের মাধ্যমে ৫ মাত্রায় থাকা গ্রাভিটির দেখা এখানে পাওয়া গেছে যার ফলে দুটো কনিকার উদ্ভবের সাথে সাথে একটি ওয়ার্ম হোলের সৃষ্টি হয়েছে যুগপৎভাবে। তার মানে যে টানেলের মাধ্যমে দুটো কনিকার তথ্য আদান প্রদান হয়েছে সেটাকে স্পেস-টাইম বেকিয়ে এত দ্রুত সময়ে গ্রাভিটির বাকানোর কারনটিকেই বড় করে দেখানো যায় যার ফলে এই ওয়ার্মহোলের উদ্ভব ঘটতে পারে।
তবে বর্তমান প্রযুক্তির মাধ্যমে ওয়ার্ম হোল সনাক্ত করার উপায় জানা নেই যদিও তাত্বিক ভাবে এটা জানি যে ওয়ার্ম হোল কিভাবে সৃস্টি হয় এবং কিভাবে কাজ করে। যাই হোক, ব্যাপারটা নিয়ে আরো গবেষনা করা যেতে পারে।
জার্নালটার লিংক
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:১৪