somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাল্যবিবাহ-২: সমাজ, রাস্ট্রের ওপর এর কি প্রভাব? বিজ্ঞান কি বলে?

২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার আগের পোস্টে বাল্যবিবাহ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা নিয়ে আলোচনা করার চেস্টা করেছি যে ইসলামিক স্কলাররা দু পক্ষ নিয়েই কথা বলেছেন। তবে দু পক্ষ যাই বলুক ইসলামে বিয়ের ন্যুনতম বয়স সীমা নিয়ে কোনো বিধি নিষেধ নেই তবে বিয়ে হলে কি করনীয় সেটা নিয়ে কথা বলা আছে। আবার আমরা সকলেই জানি হযরত মুহম্মদ সাঃ এর সর্বকনিষ্ঠা স্ত্রী হযরত আয়েশা রাঃ এর স হী হাদিস অনুসারে তাদের বিয়ে হয়েছিলো যখন আয়েশা রাঃ এর বয়স ছিলো মাত্র ৬ এবং স হবাস হয়েছিলো তাদের যখন তার বয়স ছিলো ৯।

তার মানে বিয়ের ব্যাপারে কোনো সর্বনিম্ন বয়স না থাকলেও স হবাসের জন্য যেহেতু তিনি তার বয়ঃসন্ধী পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন আমার মনে হয় এটা আমরা সুন্নত হিসেবে ধরতে পারি। যদি নাও ধরি, তাহলে নিজের কমনসেন্সের ওপর ছেড়ে দেই। তার মানে কাহিনী যেটাই হোক ইসলামে বাল্যবিবাহে কোনো বিধি নিষেধ নাই এবং মোটামোটি সুন্নতের কাতারে ফেলা যায়। যদিও হযরত আসমা রাঃ, যিনি কিনা হযরত আয়েশা রাঃ এর বড় বোন তার মৃত্যু সাল হিসেব করলে দেখা যায় বিবাহের সময় হযরত আয়েশা রা এর বয়স ছিলো ১৬। তাহলে হযরত আয়েশা রাঃ এর মুখ থেকে নিঃসৃত তার নিজের বয়স সম্পর্কিত হাদিসটি মিথ্যে হয়ে যায় যার ফলে তার মুখ দ্বারা নিঃসৃত প্রায় আড়াই হাজার হাদিস সন্দেহের মধ্যে পড়ে যায় যার পরিনতি আরো ভয়াবহ। আমরা সেই বিতর্কে না যাই।

এই পোস্টের মূল উদ্দেশ্য হলো বাল্যবিবাহের ফলে সমাজ রাস্ট্রের ওপর কি প্রভাব পড়ে এবং বিজ্ঞান অনুযায়ী এর প্রতিক্রিয়া কি।

এই পোস্টের সাথে ইসলামের ভালো মন্দ দোষ ত্রুটি ইত্যাদি যাই হোক, শুধু ইসলাম নয়, অন্য কোনো ধর্ম নিয়েও আমরা আলোচনা করবো। যদি করতেই চাই তাহলে আমার আগের পোস্টে করবো। যদিও আমার মনে হয় খুব ডিটেইল আলোচনায় গেলে এর ব্যাপ্তি প্রচুর বিস্তৃত হবে যা একটা ব্লগে সম্ভব না সেহেতু আমি দুটো প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেবো:

১) গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে আমি লেখার মধ্যে হাইপারলিংক করে দেবো যাতে করে ওখান থেকে আপনি ঐ জার্নাল বা পাবলিকেশনের লিংক দেখে পড়ে নিতে পারেন আরো বিস্তৃতভাবে। এই লিংক গুলো নিয়ে কমেন্টে আমরা আলোচনা করতে পারি।
২) পোস্ট টি দুভাগে ভাগ করবো। প্রথম ভাগে আমরা আলোচনা করবো সমাজ রাস্ট্রের ওপর এর কি প্রভাব এবং পরের অংশ মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে কিছু কথা বার্তা। রেফারেন্স গুলো লিংক আকারে লেখা তে দিয়ে দেবো যাতে করে রেফারেন্সের জন্য নীচে স্ক্রল করতে না হয়।

সমাজ, রাস্ট্র এবং বাল্যবিবাহ:

বাল্যবিবাহের নির্দেশনা অনুসারে ১৮ বছরের নীচে কোনো মেয়ের বিয়ে হলেই সেটা বাল্যবিবাহ হিসেবে পরিগনিত হবে। ছেলেদেরও একটা বয়সের ব্যাপার আছে কিন্তু ছেলেদের ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করবো না এই পোস্টে।

বই পুস্তকের মতো পকর পকর করার আগে আসুন একটু ভিডিও দেখি আর এন্টারটেইনড হই। আগেই বলে নেই আমার এই পোস্ট ইসলাম বা মুসলমানদের উদ্দেশ্য করে নয়। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাল্যবিবাহের কি প্রভাব সেটাই নির্নয় করা। অন্য দেশের কথা আসতেই পারে তবে তা উপাত্ত সমর্থনের ক্ষেত্রে।



ভিডিওটা দেখা শেষ করেছেন বোধ হয়। তাহলে আসুন নীচে কিছু ইনফো আমরা পড়ি:

১) ইউনিসেফ অনুসারে বাল্যবিবাহের দিক থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীতে ৩য় তম স্থান অধিকার করেছে। এর আগে আছে আফ্রিকার চাদ (৭২%), মালি (৭১%) এবং বাংলাদেশ (৬৪%)। এর বয়স সীমা ১৮ বছরের নীচে।
২) যদি আমরা বয়স সীমা ১০-১৫ ধরি তাহলে বাংলাদেশ চতুর্থ। তার আগে আছে নাইজার, চাদ এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক।
৩) বাল্যবিবাহ জনসংখ্যা বিস্ফোরনের সাথে সরাসরি সম্পর্ক যুক্ত।
৪) ১৫-১৯ বছর বয়সের সন্তান জন্ম দেবার সময় মাতৃমৃত্যুর হার ২০ বছরের উপরে মাতৃমৃত্যু হারের দ্বিগুন। আর ১৫ বছরের নীচে হইলে ৭ গুন বেশী। তার মানে বয়স যতো কমবে, সন্তান জন্ম দেবারসময় মাতৃমৃত্যুর হার তত বেশী! ১৮ বছরের নীচে শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে দেখা যায়৩৫ থিকা ৫৫% শতাংশকম ওজনের শিশু জন্ম দেয় যা শিশুর দেহের জন্য মারাত্মক জটিলতার সৃষ্টি করে এবং জীবন ঝুকির মধ্যে ফেলে।
৫) ইউনিসেফ তাই একে মেয়েদের জন্য এক প্রকারের মৃত্যুদন্ডবলে ঘোষনা দিয়েছে।
৬) ১৮ বছরের গর্ভবতী মায়ের শিশুর অল্প ওজন এবং ৪০ সপ্তাহের জায়গায় ৩২-৩৪ সপ্তাহেই মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হবার প্রবনতা ১৯ বছরের চেয়ে ৩৫ থেকে ৫৫% বেশী। শিশুমৃত্যুর হার ১৮ বছরের নীচে ৬০ শতাংশ বেশী।আর যেগুলা বাইচা থাকে সেগুলা অপুষ্টি আর দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।
৭) বাল্যবিবাহের কারনে অতিরিক্ত জনসংখ্যা, রোগের প্রাদুর্ভাব আর এতিম হবার সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।
৮) শিশুবিবাহের কারনে অশিক্ষিতের হার বেড়ে যায় এবং স্কুল ছাড়ার প্রবনতা সবচেয়ে বেশি।

তার মানে বাল্যবিবাহের কারনে সমাজের কোনো লাভ হয় বলে আমার মনে হয় না। দৃশ্যতঃ ভৌগলিকভাবে যেকোনো দেশের কথাই ধরি না কেন সেই দেশের শিক্ষার হার থেকে শুরু করে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি, মাতৃমৃত্যুকে সরাসরি প্রভাবান্বিত করে যা পরিসংখ্যান গত গবেষনায় সুনির্দিষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। তবে ইদানিং অনেকে বলেন মেয়েদের ব্যাভিচারী রুখতে অনেকে বাল্যবিবাহ দিতে বাধ্য হোন। সেক্ষেত্রে বলা যায় একটা মেয়ে যদি ব্যাভিচার করেই থাকে তাহলে আধুনিক সমাজ ব্যাবস্থায় কি তাকে মেরে ফেলবেন? কারন বাল্যবিবাহের আরেক নাম মৃত্যুদন্ডই বলা যায় (ইউনিসেফের ভাষ্যমতে: যদিও বক্তব্যটা জেনারালাইজ কিন্তু বাংলাদেশের নিম্ন মন মানষিকতার জনমানুষ আর সমাজ ব্যাবস্থা এর দিকেই ঠেলে দেয়।)

বিরুদ্ধমত: বিরুদ্ধমত বলতে যারা বাল্যবিবাহের পক্ষে আমি তাদের কথা বলছি। তাদেরই একজন এই জার্নালের লিংক এবং জার্নালের মধ্য থেকে কিছু অংশ সুবিধামত উদ্ধৃত করে বললেন আসলে বাল্যবিবাহ স্বাস্থ্য ঝুকিতে ফেলে না। আপনারা জার্নালটি ভালো মতো যদি পড়ে দেখেন তাহলে দেখবেন এটা কোনো জার্নাল বা পাবলিকেশন না। এটা কিছু বিজ্ঞ লোকের কতগুলো জার্নাল একত্রিত করে কতগুলো রচনা লিখেছেন যা মূলত নীতি নির্ধারকদের জন্য তৈরী করা।তার মানে এগুলো কোনো গবেষনা গ্রন্থ নয়। এগুলো প্রবন্ধ।

আসুন আমরা এই রচনাগুলোর ওপর একটু আলোকপাত করি। এই লিংকের প্রায় সব রচনার টপিক হলো টিন প্রেগন্যান্সি যেখানে ১৫ থেকে ১৯ বছরের মেয়েদের ওপর যাবতীয় কিছু স্টাডী আছে। এখন আপনি একটা জার্নাল সম্পর্কে কথা বলতে গেলে দেখবেন তার মাঝখান থেকে কথা বলে আপনি নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

Several studies have found that teenage pregnancy is associated with adverse outcomes for both mother and baby. These include low birthweight, prematurity, increased perinatal and infant mortality and poorer long-term cognitive development and educational achievement for both mother and child.8,9 However, studies which have aimed to address the underlying causes of these adverse outcomes—by controlling for additional factors— have produced conflicting results. Some suggest that adverse outcomes remain even after controlling for maternal socioeconomic position and other confounding factors,8 some find that age has no effect,10–12 whereas other studies report that once maternal socioeconomic position and smoking are taken into account young age is actually associated with better outcomes.13–16

এই অংশে দেখা যায় তারা টিন প্রেগন্যান্সী নিয়ে কথা বলেছেন যার পক্ষে বিপক্ষে উভয় মতেই মত আছে। কিন্তু আপনি যদি অংশের পর আরো এগুতে থাকেন তাহলে তারা একেক সময় একেক কথা বলছে। একবার বলতেছে টিন প্রেগন্যান্সী ভালো আরেকবার বলে মন্দ কিন্তু উপসংহারে গিয়ে বলটেছে যদি অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেয়া আর প্রথম শিশুর জন্ম যদি ৩০ এর দিকে নেয়া যায় তাহলে এই সমস্যা হবে না।

In the developed world it is increasingly common for women to delay their first birth until they are in their thirties—indeed the mean age of first birth for married women in England and Wales was 29.3 in 1999.26 Across Western Europe the age of first-time mothers is at an all time high, which demographers attribute to social and economic factors such as female and male wages and career planning on the part of women.27

কিন্তু গোলটা বাধে তখনই যখন আপনি উপসংহারে যাবেন। সেখানে টনি ব্লেয়ারের উক্তি দিয়ে লেখক সবার কাছে আর্জি জানাইছে যে টিন প্রেগন্যান্সী নিয়ে ভেবে দেখতে। তার মানে এটা কোনো জার্নাল না, এটা হলো টিন প্রেগন্যান্সীর পক্ষ নিয়ে কিছু ডাক্তারে চিঠি। এখন জার্নাল আর চিঠির মধ্যে পার্থক্য সেটা হয়তো পাঠকেরা ভালোই বুঝতে পারেন। তার চেয়ে বড় কথা হলো এই চিঠিগুলোর উপরে একটা কথা লেখা POINT–COUNTERPOINT। তার মানে দেখা যাচ্ছে এই চিঠি গুলো মূলত দুই দিক আলোচনা করে সরকারের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন তাদের ডিসিশনের ওপর তাও শুধু উন্নত দেশে। আর আমরা উন্নয়নশীল এবং দারিদ্র‌্যপূর্ন দেশ যেখানে খাদয় স্বাস্থ্য বাসস্থান এবং চিকিৎসা সবাইকে দেয়ার মতো ক্ষমতা আমাদের নাই। নিজের তেমন কোনো ডিসিশন দেন নি এই টপিকের ওপর। আর তাও আবার মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে কোনো আলোচনাতেও যাননি।

তো আমি ঠিক বুঝলাম না বাল্যবিবাহের পক্ষে যারা কথা বলেন তারা এরকম একটা সেন্সিটিভ ইস্যুতে কতগুলো চিঠি চালাচালি নিয়ে কেন মেতে থাকেন বুঝি না যেখানে হাজার হাজার পীয়ার রিভিউড জার্নাল রেখে এমন চিঠি পত্র নিয়ে কিভাবে মজে থাকেন ঠিক বুঝতে পারলাম না।

যাই হোক, উপরের এই টপিকে আরো আলোচনা করা যেতে পারে যেখানে আমি শুধু বাল্যবিবাহের ফলে সমাজ বা রাস্ট্রে কি ভালো মন্দ প্রভাব পড়ে তার পরিসংখ্যান গত দিক তুলে ধরলাম।

বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বাল্যবিবাহ:

প্রিকোশিয়াস পুবার্টি: প্রিকোশিয়াস পুবার্টির অর্থ হলো অনেক সময় মেয়েদের পিরিয়ড হয় অতি অল্প বয়সে হয় তার মানে অনেকের কৈশোরে পদার্পন করার আগেই বয়োঃসন্ধি হয়ে যায়। অল্প বয়স বলতে ১০ বছরের নীচে। এর কারন অনেক তবে একে দুই ভাবে ভাগ করা যায়। যদি কারন গুলো পিটুইটারী গ্রন্থি রিলেটেড হয় তাহলে তাকে বলে কেন্দ্রিয় কারন।

কেন্দ্রীয় কারন গুলোকে এভাবে সাজানো যায়:

ক) মস্তিষ্কের নিবারকমূলক কাজ যে অংশ সম্পাদন করে তাতে সমস্যা (ট্রমা, ইনফেকশন, রেডিয়েশনের কারনে) হলে
খ) মস্তিষ্কের নিউরন সেলে যদি হাইপোথেলামিক হামারটোমা নামক নন ক্যান্সারাস টিউমার হলে
গ) চামড়ায় ল্যাঙ্গারহ্যানস সেল হিস্টিওসাইটোসিস হলে
ঘ) চামড়ায় ম্যাকিউন- অলব্রাইট সিনড্রোম দেখা দিলে

তবে উন্নয়নশীল দেশে কেন্দ্রিয় প্রিকোশিয়াস পুবার্টি হয় বেশীরভাগ সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমে যদি ইনফেকশনের কারনে (টিউবোরকিউলোসিস)।উন্নত দেশে অনেক সময় অবেসিটি এবং অতিরিক্ত অসম্পৃক্ত চর্বি এবং ডায়েটের কারনেও এটা হতে পারে। আরও অনেক কারন আছে যেগুলো লেখলাম না।

কেন্দ্রিয় কারনের পর আরেকটা হলো পারিপার্শ্বিক। যদি অস্বাভাবিক কোনো উৎস হতে সেক্স স্টেরয়েড বেশী নিঃসরিত হয় তাইলে এইটা হইতে পারে। রক্তে কর্টিসেলের মাত্রা খুব কম থাকে আর এন্ড্রোজেনের মাত্রা থাকে।

কারন সমূহের মধ্যে:

ওভারীতে টিউমার হলে, এড্রিনালিন হরমোন গ্রন্থিতে টিউমার হইলে, ওভারীর আশেপাশে জীবানু জমে টিউমারের সৃষ্টি করলে, জীন মিউটেশনের কারনে দেহের মধ্যে থাকা এনজাইম সমূহ যদি এড্রিনালিন গ্রন্থির কারনে কোলেস্টেরল থেকে কর্টিসেলে পরিণত হয় তখন দেহে কনজেনিটাল এড্রিনাল হাইপারপ্লাশিয়া দেখা দেয় এর কারনে।

এখন কথা হলো এই প্রিকোশিয়াস পুবার্টি অনেকটা এসব রোগ আর এবনরমাল কারনে হতে পারে। আবার দেখা যায় যেসব শিশুরা ছোটবেলা থেকে নিকটাত্মিয়দের কাছে সেক্সুয়াল এবিউজের শিকার হয় তাদের সেক্স স্টেরয়েড খুব বেশী পরিমানে নিঃসরিত হয় তার ফলেও এটি ঘটে। সমস্যা হলো পুবার্টি হয়ে গেলে ওভারী, বুক, শারীরিক গঠনে এগিয়ে গেলেও তার হাড়ের গঠন বৃদ্ধি বন্ধ করে ম্যাচুরিটিতে চলে আসে। ফলে সে খর্বকায় হয়। মানসিক ভাবে অপরিপক্কতা বিরাজ করে, এবং শরীরের অন্যান্য অন্ত্র এসব পরিপক্ক গ্রন্হিদের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে না। ফলে শরীরে প্রজননতন্ত্র গত সমস্যা লেগেই থাকে।

ফলে যেই মেয়ে এমনেই এসব জটিলটা ব হন করে তাকে যদি নিয়মিত যৌনমিলনের মাধ্যমে অন্তঃসত্বা বানিয়ে দেয়া হয়, তাহলে তার কি হতে পারে সেটা নীচে বলি!

পেলভিক ফ্লোর

কোমড়ের হাড়ের বৃদ্ধি যথাযথ না হওয়ায় যখন বাচ্চাটাকে ব হন করে তখন তার কোমড়ে প্রচুর প্রভাব পড়ে। ফলে বয়স যখন ২৫-২৬ হবে তখন সে খুব স হজেই অস্টিরিওপোসিস মানে হাড় ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হবে। অনেক সময় আমরা দেখি একজন স্বাস্থ্যবতী মহিলা হাটতে হাটতে হঠাৎ পড়ে গিয়ে পায়ের হাড় ভেঙ্গে ফেললো। পরে এক্সরে করে দেখা গেলো তার পায়ের হাড় গুলো ক্ষয় ক্ষয় হতে সরু হয়ে গেছে। এমনকি গ্রামে অনেকে লাঠিতে ভর করে পুরো কুজো হয়ে হাটে। কারন তাদের কোমড়ের হাড্ডি ভেঙ্গে গেছে। অনেকে ৩০ এর পরই আজীবন পঙ্গুত্ব এবং গেটোবাতে ভুগতে থাকে।

সূত্র: লাইভ সায়েন্স

ফিস্টুলা।

অল্প বয়সে (ধরা যাক ৯ বছর বয়সে, কিছু স্টাডিতে ১২-১৩ বছর বয়সেও বলা আছে) গর্ভবতী হলে যখন শিশুটির ডেলিভারীর টাইম আসে তখন ভ্যাজিনা দিয়ে বের হবার সময় ভ্যাজিনার ওয়াল আর রেকটাম বা ব্লাডারের ওয়ালের মধ্যবর্তী স্থানে একটা গর্তের সৃষ্টি করে। এমন সময় অনেক মেয়েই পিচকি জন্ম দেবার সময়ই মারা যায়। যারা বেচে যায় তখন দেখা যায় পিচকির মাথাটা যখন ঠেলা দেয়া হয় তখন গর্ত সৃষ্টি হলেও সেটা খুব বেশী বড় না হওয়ায় আটকে যায়। তখন ঠেলাঠেলির চাপের পিচকির মাথার কিছু অংশ আর মায়ের পেলভিক ফ্লোরের নরম টিস্যু ছিড়ে যায়।তখন মেয়েটির টয়লেটের জিনিস আর প্রস্রাব সেই গর্ত দিয়ে চলে যায় যা একটা ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে পরে যা ভ্যাজিনা দিয়ে বের হয়ে যায় (ভাই, এই ব্যাপারটা আমার লিখতেই শরীরে গায়ের রোম খাড়া দিয়ে উঠতেছে কত ভয়াব হ একটা ব্যাপার)। এর পরেও যদি মা আর শিশু বেচে থাকে মায়েদের এই সমস্যা আর স হজে ছাড়ে না। এবং তারা মেন্টালি আর ফিজিক্যালি ধ্বংস হয়ে যায় এবং অনেকের বিয়েও ভেঙ্গে যায়।



শিশু যখন কয়েক সপ্তাহ হয় মায়ের পেটে থাকে তখন সে মায়ের খাবার ভাগ বসায়। তখন দেখা যায় মায়ের প্রেসার ৫০ শতাংশ বেড়ে যায় যা হার্টের ওপর চাপ পড়ে। পিচকি তখন মায়ের ক্যালসিয়াম আর পুস্টিতে ভাগ বসাইলে যেখানে মা নিজেই শারীরিক বৃদ্ধিতে আছে সেখানে যদি এমন একটা ভাগ বসায় তাহলে মা ও শিশু দুইটাই অপুস্টিতে ভুগে। সবচেয়ে বড় সমস্যা ফলিক এসিডে যার ফলে অল্প বয়সী মায়েদের পোলাপান একটু বেশী ভোদাই হয়। আর জাতী হিসেবে কেন আমরা গবেষনায় পিছিয়ে সেটা এই একটা মাত্র কারনে, আমাদের ব্রেন ঠিক মতো ডেভেলপ হতে পারে না! এছাড়া মেয়ের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমে এমন প্রেসার পড়ে যে মেয়েটা যৌবন পার হবার আগেই হার্টের নানা সমস্যায় পতিত হয়।

এছাড়া ফেলোপিয়ান টিউব যখন এমব্রায়ো বহন করে তখন এর অপরিপক্কতার কারনে এর মধ্যে থেকে একটোপিক প্রেগনেন্সি ঘটাতে পারে। এমন সময় যদি ইনফেকশন (ক্লামিডিয়া ইত্যাদি) দেখা দেয় তখন শিশুটি পরিপূর্ন হবার আগেই সর্বনাশ হইতে পারে,। আর যদি প্রেগন্যান্ট না করে নিয়মিত শুধু সহবস করা হয় কন্ডম ছাড়া, তাইলে বলতে হয় ছোট মেয়েটার শরীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় নিয়মিত সহবসের কারনে এসটিডিতে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা প্রচুর থাকে। ক্লামিডিয়া তেমনি একটা প্রানঘাতি যার ফেল ফেলোপিয়ান টিউবে ইনফেকশন খুব দ্রুত ঘটতে পারে যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধ্যাত্ব মেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।


এরকম আরো ব হু কথা আছে যা এক ব্লগে লিখে শেষ করা যাবে না। কিন্তু আমরা যদি এগুলো নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা না করি তাহলে এর ভয়াল দিক সম্পর্কে কখনোই বুঝতে পারবো না। আমাদের এত ছোট একটা দেশে জনসংখ্যার পরিমান ১৬ কোটি যা পৃথিবীতে হয়তো ১ নম্বর। এখানে প্রচুর খাদ্য শস্য উৎপাদন হয় কিন্তু আমরা দু বেলা খাওয়া পাই না। একজন মানুষ খাবার না খেয়ে ৩ দিন বেচে থাকতে পারে সে হিসেবে যখন পুরো ১ টা দিন খেয়ে কেউ থাকে তখন সে বাধ্য হয় ডাস্টবিনের ময়লা খাওয়া খেতে। কিন্তু এখানে আমরা যারা বাল্যবিবাহ, ব হু বিবাহ বা জন্ম নিয়ন্ত্রন বিয়ে কথা বলি তখন কেউ এসব সমস্যা থেকে উত্তরনের কথা বলি না। এজন্যই দেশ এক পা এগুলে ১০ পা পিছায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৯ ভোর ৫:১৯
৩৪টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×