বাংলা ব্লগস্ফিয়ারে, বিশেষত সচলায়তনে, আমার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চলছে। মানহানিকর নানা অপবাদে আমাকে গালাগাল করা হচ্ছে যার কিছু কিছু আবার পরস্পরবিরোধী। আমার প্রথম অপরাধ, আমি ‘মেহেরজান’-এর ‘পক্ষে’ প্রথম আলোয় লিখেছিলাম। আমার দ্বিতীয় অপরাধ আমি সম্প্রতি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস লিখেছিলাম: “মেহেরজানবিরোধীরা দলে দলে ‘গেরিলা’ ও ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ দেখছেন তো?” সারোয়ার রেজা বলে আমার এক ফেসবুক-বন্ধু ‘গেরিলা’ ছবির রিভিউ সচলায়তনে লিখতে গিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে আমার স্ট্যাটাসটিকে দিয়ে তার লেখা শুরু করেন। ফলে তার রিভিউয়ের ভালোমন্দ বা গেরিলার ভালোমন্দ নিয়ে ব্লগাররা আলোচনা করার চাইতে আমার ওপরে আক্রমণ করতে থাকেন। সারোয়ার রেজা ফেসবুকে আমার স্ট্যাটাসের থ্রেডে তার আপত্তি নিয়ে কিছুই বলেননি, সোজা সচলায়তনে এটা অপ্রাসঙ্গিক ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহার করেছেন। তার এই আচরণ বান্ধবসুলভ মনে হয়নি। ফলে ফেসবুকের বন্ধুতালিকা থেকে আমি তাকে মুছে দেই।
সারোয়ার রেজা আর আমি পরস্পরের পূর্বপরিচিতই ছিলাম, সম্পর্ক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর; যদিও তাকে আমি সরাসরি ছাত্র হিসেবে পাইনি, উচ্চশিক্ষায় বিদেশে থাকার কারণে। কিন্তু তাকে বন্ধুতালিকা থেকে বাদ দেয়ার পেছনে কোনো শিক্ষকসুলভ অহম কাজ করেনি, সেটা সারোয়ার রেজাও হয়তো বলবেন না। তার ক্রিয়ার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াই ছিল সেটা। তার প্রসঙ্গ এখানে উত্থপান করার কারণ হলো তার ঐ পোস্টের কারণেই সচলায়তনে আমার চরিত্রহননের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। প্রথম ঢেউটি ছিল প্রথম আলোর ঐ কলামের পরে। সেসব হননকার্যে বেশ কিছু অসম্ভব কষ্টকল্পিত সমীকরণ টানা হয়েছে আমাকে নিয়ে। আমার এই রচনার কারণ হলো বাংলা ব্লগিস্ফিয়ারে, ফেসবুকে বা অনলাইনে আমি সক্রিয় আছি ২০০৭-এর অক্টোবর থেকে। অনেকেই আমাকে ভার্চুয়ালি চেনেন, আমিও যেমন চিনি অনেককে, কখনো দেখাও হয়নি। এবং অনেকের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এটা আমার কাছে অনেক মূল্যবান। তারা সচলায়তনের ঐসব কল্পকথা শুনে আমার সম্পর্কে বিভ্রান্ত হতে পারেন। যাহোক, সচলায়তনে ঐসব কল্পকাহিনীর কয়েকটি অনুসিদ্ধান্ত এখানে উল্লেখ করি:
১। পরিচালক রুবাইয়াত হোসেন আমাকে অর্থপ্রদান করেছেন, মেহেরজানের ‘পক্ষে’ লেখার জন্য।
২। আমাকে মগবাজার (জামায়াত অফিস) থেকে অর্থপ্রদান করা হয়েছে, ‘পাকিবান্ধব’ ঐ ছবির ‘পক্ষে’ লেখার জন্য।
৩। রুবাইয়াত হোসেন যে রচনাটি লিখেছিলেন রোবায়েত ফেরদৌস ও অন্যান্যদের কলামটির জবাবে, তা সাজ্জাদ শরিফের তত্ত্বাবধানে ফারুক ওয়াসিফ আর আমি মিলে লিখেছি।
৪। বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে আমি ‘সাদা গ্র“পের’ (বিএনপি-জামাতপন্থী) লোক।
৫। আমি ফরহাদ মজহার গোষ্ঠীর লোক।
এইসব অভিযোগের উত্তর সংক্ষেপে দেই:
১। ডাঁহা মিথ্যা। মেহেরজান মুক্তি পাবার আগে মেহেরজান টিমের সঙ্গে আমার আগে থেকেই যোগাযোগ হয়েছে। চলচ্চিত্র গবেষক হিসেবে যেমন তারেক-ক্যাথরিন মাসুদের প্রডাকশন, আবু সাইয়ীদের প্রডাকশন, নূরুল আলম আতিকসহ অন্য অনেকের প্রডাকশন টিমের সঙ্গে আলোচনা হয়ে থাকে। সবক্ষেত্রেই সেই আলোচনা এমন বেশি কিছু না।
২। ডাঁহা মিথ্যা। যারা আমাকে একটুও জানেন তিনিও বলবেন আর যাই হোক তার ঐ কানেকশন নাই।
৩। ডাঁহা মিথ্যা। প্রথম আলোর অনেক সাংবাদিকের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক আছে, কিন্তু প্রথম আলোর নীতির ও ভূমিকার আমি ঘোর সমালোচক। এই সমালোচনা আমি ২০০২ সাল থেকে করে আসছি। প্রথম আলোর অফিসে আমি শেষ গিয়েছি প্রায় এক বছর আগে। সচলায়তনে শুভাশীষ দাশ রচিত এই ব্লগপোস্টে (http://www.sachalayatan.com/subasish/38567) দেখেন আমেরিকাপ্রবাসী কুলদা রায় কী বলেন:
"কাবেরী গায়েন, রোবায়েত এবং ফেরদৌসী প্রিয়দর্শিনী প্রথম লেখাটি যখন প্রথম আলোতে দিল তখন মতি মিয়া ফারুক ওয়াসিফ, ফাহমিদ, আবুলকন্যা রুবায়েতকে ডেকে আনেন প্রথম আলো অফিসে। সাজ্জাদ শরীফের তত্তাবধানে ফারুক রুবাইয়েতের বয়ানে উক্ত লেখাটির একটা জবাবী লেখা প্রস্তুত করে। সহযোগিতা করে বাকী দুজন। এবং মতি মিয়া কাবেরীদের লেখার সঙ্গে রুবায়েতের জবাবী লেখাটাও প্রকাশ করেন। সাংবাদিকতার ইতিহাসে এটা একটা বিরল ঘটনা। ফাহমিদ আরেফিন স্যারের পেয়ারের লোক।"
৪। ডাঁহা মিথ্যা। এই অভিযোগটা করেছিলেন সচলায়তনের মডারেটর হিমু। অথচ ওপরে কুলদা রায় কী বলছেন শেষ বাক্যে দেখেন। ছাত্র-সহকর্মী হিসেবে আরেফিন স্যার নিশ্চয়ই আমাকে স্নেহ করেন, কিন্তু ‘পেয়ারের লোক’ বলতে যা বোঝায় কেউ কেউ নিশ্চয়ই আছেন, আমি নই। একজন ইউরোপ, আরেকজন আমেরিকা থেকে যথেষ্ট যাচাই না করে সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত এইসব অভিযোগ করে চলেছেন।
৫। প্রাজ্ঞ অথচ বিতর্কিত এই বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়, বিডিনিউজ আর্টস আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে। এটাও একটা ডাঁহা মিথ্যা।
অনলাইনে মেহেরজানবিরোধিতার এক বিরাট অংশই এইসব মিথ্যাচারের ওপরে নির্ভর করে আছে।
আমার পেশাগত দায়িত্বের জায়গা থেকে চলচ্চিত্র ও মিডিয়া নিয়ে আমি গবেষণা করি। এই কারণে আমার হয়েছে এক সমস্যা। মাধ্যম-গবেষক হিসেবে আমি মনে করি মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার ক্রমাগত প্রো-মার্কেট ও এ্যান্টি-পিপল হয়ে পড়েছে। তাই প্রো-পিপল সাংবাদিকতার জন্য আমাদের বিকল্প মিডিয়া অনুসন্ধান করতে হবে এবং আজ বা আগামীকাল সাইবারপরিসরই হবে বিকল্প সাংবাদিকতার জায়গা। ২০০৯ সালে আমি গবেষণা করেছিলাম, বাংলা ব্লগ কমিউনিটির ওপরে। সম্প্রতি যোগাযোগ পত্রিকায় (সংখ্যা ১০, জানুয়ারি, ২০১১) তা ছাপাও হয়েছে। সেই গবেষণাপত্রে অন্তঃত দুইটি বিষয়ে আমি ভুল করেছিলাম:
১। বাংলা ব্লগ কমিউনিটি নিয়ে আমি উচ্চাশা ব্যক্ত করেছিলাম।
২। বাংলা ব্লগ কমিউনিটির মধ্যে সচলায়তন সবচাইতে সিরিয়াস।
উচ্চাশার কিছু নিদর্শন এখনও আছে। যেমন আমার ‘জার্গনভরা’ মেহেরজান-রিভিউ পড়ার পর ভালো পাল্টা ব্লগ লিখেছিলেন শুভাশীষ এবং হাসিব। আমার লেখাটার অবদানও এই ছিল যে ব্লগাররা পড়াশুনা শুরু করেছেন। কেউ দেরিদা পড়ে এলেন এবং লিখলেন, কেউ বেনেডিক্ট এ্যান্ডারসন পড়ছেন এখন। কিন্তু ঐসব ব্লগপোস্টের মন্তব্য অংশে যেসব অর্থহীনতা, অসংলগ্নতা ও বিকার লক্ষ করা গেছে, সেটাই আমার আশাবাদকে ভুল প্রমাণ করছে। আর আমার ধারণা ছিল সামহোয়ারইন-এর ব্লগারদের তুলনায় সচলায়তনের ব্লগাররা সিরিয়াস, কিন্তু তাদের মতো বিকার আমি সামহোয়ারের গালিবাজ ব্লগারদের মধ্যেও দেখিনি। আর বিকারগ্রস্তদের সর্বাধিনায়ক হলেন হিমু। যে-ব্লগের মডারেটরই বিকারচর্চায় নেতৃত্ব দেন, সেই ব্লগের হাল যে কী তা সহজেই অনুমেয়। আমাকে বিরোধিতা করতে গিয়ে জনাব হিমু দুই দুইটা ব্যঙ্গাত্মক গল্প লিখেছেন। তার এই চর্চা অব্যাহত থাকলে নিশ্চয়ই তিনি একদিন ব্যক্তিআক্রমণবিবর্জিত সত্যিকারের গল্প লিখে উঠতে সমর্থ হবেন।
আমি ২০০৯ সালে ব্লগ নিয়ে গবেষণা করেছিলাম। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে সামহোয়ারইনপ্রবর্তিত ব্লগকমিউনিটির যে প্যাটার্ন তা সম্ভবত ফেইল করতে চলেছে, বিশেষত ফেসবুক নোট আসার পরে। বান্ধবদের ভুবনে, ফেসবুকে ব্লগের মতোই সবকিছু করা যায়, বাড়তি কিছু ফিচারসহ। আমি সামহোয়ারইনে একজন সক্রিয় ও পরিচিত ব্লগার ছিলাম। সক্রিয়তা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।
চলচ্চিত্র গবেষক হিসেবে আমি অনেক ছবি নিয়ে সমালোচনা লিখেছি: অন্তর্যাত্রা, খেলাঘর, থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার, রানওয়ে, মেহেরজান ইত্যাদি। মেহেরজান নিয়েও হয়তো একভাবে লিখতাম, যেমনটা অন্যগুলোর ক্ষেত্রে ঘটেছে। প্রথম আলোর ঐ আর্টিকেলটা লিখি, মেহেরজান নিয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দেখার পর। আমার মনে হয়েছে ছবিটাকে ট্রিট করা হয়েছে জামাতের প্রেস রিলিজের মতো। একটা ক্রিয়েটিভ এক্সপ্রেশনের সমালোচনার ধরন ওরকম হওয়া উচিত নয়। আমি তাত্ত্বিকভাবে বিষয়টা ব্যাখ্যা করতে চেয়েছি। একজন চলচ্চিত্র-গবেষক হিসেবে আমি এটা মনে করেছি। আর মনে হয়েছে আমাদের পশ্চিমা সেকুলারিজম-মর্ডানিটিনির্ভর বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণার মধ্যে কিছু গলদ রয়েছে। সেটাকেও এ্যাড্রেস করা দরকার। ঐ লেখার পর মেহেরজানের পাশাপাশি এরপর আমাকে এবং ফারুক ওয়াসিফকে তার আরেক লেখার জন্য আক্রমণ করা হয়েছে। এই জেহাদে অগ্রগণ্য ছিল ব্লগগুলোর মধ্যে সচলায়তন।
ব্লগার হিসেবে আক্রমণের এই সংস্কৃতিকে আমি জানি। জামাতবিরোধিতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্লগিস্ফিয়ারে দাপট দেখানোর একটা হাতিয়ার অনেক ব্লগারের জন্য। এই রাজনীতিকে ঘিরে দল পাকে, ঘোঁট বাঁধে, ব্লগারখেদানো চলে। এইসব ব্লগসাইট প্রতিষ্ঠাতাদের কেউ কেউ থাকেন বিদেশে। তাদের পঠনপাঠন, সমাজচেতনা, এবং দেশের সঙ্গে যুক্ত থাকার বাসনা এইসব ব্লগসাইট প্রতিষ্ঠায় তাদের উদ্বুদ্ধ করে। আবার তাদের অর্জিত জ্ঞানও জাহির করার প্রয়োজন হয়। তাই অনলাইন ও মুদ্রণ উভয় মাধ্যমে পরিচিত ব্লগারদের সুযোগ পাওয়া মাত্রই সংঘবদ্ধ আক্রমণের মাধ্যমে খেদানো হয়। সচলায়তন থেকে এর আগে খেদানো হয়েছে সুমন রহমান ও ফারুক ওয়াসিফের মতো শক্তিশালী ব্লগারকে। সাদা-কালো (মুক্তিযুদ্ধ বনাম জামাত/পাকিস্তান এই ডিসকোর্সের বাইরে যেমন কিছু নাই) বিভাজনের বাইরে এসে যারাই কথা বলেছেন এরকম আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এই তালিকায় আছেন মানস চৌধুরী, ব্রাত্য রাইসু, মাহবুব মোর্শেদ। এই তালিকায় যুক্ত হলাম আমি। অনেক ত্যাড়া-বিপ্লবী ব্লগার রাসেলকেও মেহেরজান ইস্যুতে ফ্রেমের বাইরে কথা বলার কারণে আক্রমণ করা হয়েছে। সর্বোপরি এইসব লাঠিয়ালগিরি তাদের একঘেঁয়ে-কষ্টকর প্রবাসজীবনে একটা ভিন্ন ফ্লেবার দেয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাদের কাছে প্রেরণা নয়, তাদের ব্লগজীবনের প্রাণভোমরা। এটা না থাকলে তারা প্রাণহীন হয়ে ধুঁকতে থাকেন।
আমি এটা জানি বলেই ওরকম একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম যে “মেহেরজানবিরোধীরা নিশ্চয়ই দলে দলে গেরিলা আর আমার বন্ধু রাশেদ দেখছেন”। ডিভিডি-ইন্টারনেট-কেবল টিভির যুগে আমাদের মতো একটা দেশে একটা ছবি বানানো বিরাট চ্যালেঞ্জ। বাপের টাকা থাকলেই তো সবাই ছবি বানাতে পারেনা। মেহেরজানের হল থেকে নেমে যাওয়াটা বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে রইলো। কাল ইসলামবিরোধী বলে আরেকজন হল থেকে নামিয়ে দেবে। আর এগুলো সেল্ফ সেন্সরশিপকে চূড়ান্ত করে। আমি চলচ্চিত্রপ্রেমী বা স্বাধীনধারার চলচ্চিত্র-ক্ষেত্রের শুভার্থী হিসেবে আশা করছিলাম, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ছবি মেহেরজান নিয়ে এত কথা, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ছবি গেরিলা বা রাশেদ নিশ্চয়ই এইসব টালমাটাল ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার পর সবাই দলে দলে দেখতে যাবেন। তাই ঐ স্ট্যাটাসটা ঐভাবে লিখেছিলাম। কিন্তু আমার এক বান্ধব ফেসবুকের মালকে ঘি বানিয়ে সচলায়তনের আগুনলাগা গুদামে গিয়ে ঢাললেন। সেই বন্ধুত্বকে অস্বীকার করা ছাড়া আর উপায় রইলো না। ফেসবুকের মতো ‘লুজ ফেডারেশন’-সদৃশ বন্ধু-ফেডারেশনের সদস্যদের তাই এটা জানিয়েই করেছিলাম।
আমি জানি এই লেখার পর সচলায়তনের লাঠিয়ালরা বিষ্ঠা আরও ঘাঁটবেন তাদের লাঠি দিয়ে। কিন্তু আশাবাদ এই যে আমার ভার্চুয়াল ও বাস্তবজীবনের বন্ধু-শুভার্থীদের দিক থেকে আমাকে নিয়ে উদ্ভূত দ্বিধা-সন্দেহ এই লেখা পাঠের পর দূরীভূত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ২:২৬