somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রিকেটের কুলাঙ্গার সমাজ : দ্বিতীয় পত্র(ভারত)

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অর্থের জন্য প্রলোভিত হয়ে খেলার মাঠে গড়াপেটার ঘটনা প্রথম ঘটে ১৯১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাস্কেটবল খেলায়! কিন্তু ক্রিকেটের বুকে এই কালো থাবা পরতে পরতে বেশ সময় লেগে যায়। ১৯৯৯ সালেই প্রথম সকলের সামনে আসে ম্যাচ গড়াপেটার ঘটনা! এর আগেও বেশকিছু ঘটনা ঘটেছিল, কিন্তু তা এত প্রচার হয়নি।
২০০০ সালে ভারতীয় অধিনায়ক আজহারউদ্দিন প্রথম এই অভিযোগে অভিযুক্ত হন। তখন থেকেই ভারতের পেছনে কালো এই থাবা লেগেই আছে। বর্তমান যুগের আইপিএল এর কতগুলো খেলা স্পট বা ম্যাচ ফিক্সিং এর আওতার বাইরে সে ব্যাপারে প্রশ্ন থেকেই যায়। ম্যাচ ফিক্সিং না হলেও স্পট ফিক্সিং এর বাইরে শতকরা ১০ ভাগ ম্যাচ ও থাকে না।



মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন ছিলেন ভারতের ইতিহাসের অন্যতম সেরা টেস্ট অধিনায়ক! মানুষ নাকি যখন ভাল হয়ে যায় তখন ই তাকে ধরা পরতে হয়। ক্যরিয়ারের শেষের দিকে এসে হ্যানসি ক্রুনিয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে দোষী করা হয়। হ্যানসি ক্রুনিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, বুকিদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন আজহার-ই!! পরবর্তিতে তদন্তে বেরিয়ে আসে তিনি নিজেও ম্যাচ গড়াপেটার সাথে জড়িত ছিলেন।
২০০০ সালে তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু যা হয় আরকি! ২০০৬ সালে তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ উঠিয়ে নেয়া হয় এবং তাকে অন্যতম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বিশেষ সম্মান ও দেয় ভারত।

অজয় জাদেযা, মনোজ প্রভাকর এবং অজয় শর্মা'র বিরুদ্ধে ২০০০ সালেই অভিযোগ আসে বিভিন্ন সময়ে ম্যাচ গড়াপেটার সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার। এর মাঝে মনোজ প্রভাকর করেছিলেন সবচেয়ে দুর্ধর্ষ কাজটা, কপিল দেবকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন ম্যাচ পাতানোর। উলটো নিজে পরে যান ফাদে। করা হয় ৫ বছরের জন্য বহিষ্কার। বাকি ২ অজয় কেই বহিষ্কার করা হয়েছিল আজীবনের জন্য। কিন্তু পরবর্তিতে এই ৩জনের উপর থেকেই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়।



২০০৭ সালে সাবেক তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে কপিল দেব আয়োজন করেন আইসিএল! এটাই ছিল ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টি-২০ ঘড়োয়া আসর। বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এতে খেলতে আসেন ব্রায়ান লারা, স্টুয়ার্ট ল, ইনজামাম উল হক, সাকলাইন মুশতাক, ল্যান্স ক্লুজনার দের মত প্রবীন ক্রিকেটারেরা! টাকার ঝনঝনানির টানে তরুন ক্রিকেটাররাও আসেন খেলতে। কিন্তু আইসিসি এই টুর্নামেন্ট কে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে এবং প্রতিটা ক্রিকেট বোর্ড এই টুর্নামেন্ট এ খেলা ক্রিকেটারদের নিষিদ্ধ করতে শুরু করে। কিন্তু টাকার ঝনঝনানির কাছে অনেক ক্রিকেটারই নিজের মাতৃভূমিকে ভুলে চলে আসেন এখানে খেলতে।



২০১৩ সালে আইপিএল এর এক ম্যাচে আগে থেকে টাকা নিয়ে ওভারে ১৪ রান দেন ক্রিকেটার শান্তাকুমারন শ্রীশান্ত! কিন্তু বছর ঘুড়তে পারেনি, ধরা পরতে হয় রাজস্থান রয়ালস এ খেলা তখনকার এই ক্রিকেটারকে। নিষিদ্ধ হন আজীবন। কিন্তু স্বীকার করেননি নিজের দোষ এখনো। ধারনা করা হয়, যেহেতু তদন্তে সব বেড়িয়ে এসেছে, স্বীকার করে নিলে হয়ত তার শাস্তি কিছুটা হলেও কমে যেত।
এছাড়াও শ্রীশান্তের সাথে খেলা রাজস্থান এর ক্রিকেটার অমিত সিং এবং সিদ্ধার্থ ত্রিভেদী যথাক্রমে ৩ এবং ১ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন ম্যাচ গড়াপেটার সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার জন্য।
শ্রীশান্তের সাথে সবচেয়ে ভালভাবে জড়িত থাকার জন্য আজীবন নিষিদ্ধ হন ক্রিকেটার আঙ্কিত চাবান। তার বিরুদ্ধে সরাসরি ম্যাচ ফিক্সিং এর প্রমান মিলেছে।

এর আগে পরে টিপি সুধিন্দ্রা আজীবন নিষিদ্ধ হন ঘড়োয়া ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিং এর জন্য।
এছাড়াও মনিশ মিশরা নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ১ বছরের জন্য ডেকান চার্জার্স এ খেলার সময়।
অমিত যাদব, শালভ শ্রিভাস্তাভা এবং অবিনাব বালি ও নিষেধাজ্ঞার গ্যাড়াকলে পরেন কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব এ খেলার সময়। অমিত যাদব এবং বালির নিষেধাজ্ঞা ছিল ১ বছর করে, কিন্তু শালভ শ্রিভাস্তাভা'র বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিং এর অভিযোগে এর সত্যতা পাওয়া যাওয়ার তাকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

বর্তমান যুগের প্রতিটি ঘড়োয়া ক্রিকেট লিগের মূলে ছিলে আইসিএল। এই টুর্নামেন্ট ছিল অনেকাংশেই বাজিকর দের খেলা। এর জন্যই অনেকটা আইসিসি একে নিষিদ্ধ করে। পরবর্তিতে সেখানেই শুরু হয় আইপিএল, এর খেলাও কতটুকু শুদ্ধ ছিল সন্দেহ ছিল এই বিষয়েও! কিন্তু আইসিসি'র বর্তমান দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রমের কারনে আইপিএল এখন অনেকটাই শুদ্ধ বলে দাবি করার হয়। কিন্তু ফিক্সিং এর মূল আখরা তথা আন্ডারওয়ার্ল্ড এর অন্যতম "হেড-অফিস" কিন্তু এই ভারতেই। তাই সেই দাবি কতটুকু যুক্তিযুক্ত সে ব্যাপারে প্রশ্ন থেকেই যায়। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে ক্ষমতাধর বোর্ড টাও যে ইন্ডিয়া, তাই তাদের ক্রিকেটাররা প্রতিবারই বেচে যান, অনেক ক্ষেত্রে ধরাও খান না। যা ঝড় যাওয়ার তা অন্যান্য দের উপর দিয়েই যায়।
ক্রিকেটের স্বার্থেই এসব ব্যাপারে ভারতের নিজ উদ্যোগি হওয়া উচিৎ!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×