সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে নাও। তুমি যাকে ইচ্ছা ইজ্জত দান কর, আর যাকে ইচ্ছা বেইজ্জতি কর।তোমার হাতেই মঙ্গল।নিশ্চয়ই তুমি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
সহিহ আবু দাউদ, ৪৫৭৭ নং হাদিসের (সুন্নাহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৫৭৭। হযরত সাফীনা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, নবুয়তের খেলাফতের সময়কাল হলো ত্রিশ বছর। তারপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রাজত্ব বা বাদশাহী দান করবেন।
হযরত সাঈদ (র.) বলেন, সাফীনা (রা.) আমাকে বলেন, তুমি হিসাব কর। আবু বকরের (রা.) শাসনকাল দু’বছর, ওমরের (রা.) দশ বছর, ওসমানের (রা.) বার বছর, আলীর (রা.) ছ’বছর।হযরত সাঈদ (র.) বলেন, আমি সাফীনাকে (রা.) জিজ্ঞেস করি যে, বনু মারওয়ান ধারণা করে যে, আলী (রা.) খলিফাদের অন্তর্ভূক্ত নন। তিনি বলেন, বনু-মারওয়ানরা মিথ্যা বলেছে।
* নবুয়তের খেলাফত আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে হওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং এর ধারাবাহিকতা আল্লাহর ইচ্ছায় নির্ধারিত হয়েছে।
সূরাঃ ৯ তাওবা, ৪০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪০। যদি তোমরা তাঁকে সাহায্য না কর, তবে আল্লাহতো তাঁকে সাহায্য করেছিলেন যখন কাফিরগণ তাঁকে ধাওয়া করেছিল (হত্যা করার জন্য), আর তিনি ছিলেন দু’জনের মধ্যে দ্বিতীয় জন। যখন তাঁরা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিলেন, তিনি তখন তাঁর সঙ্গিকে বলেছিলেন, তুমি বিষণ্ন হয়ো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।অতঃপর তাঁর উপর আল্লাহ তাঁর প্রশান্তি নাজিল করেন এবং তাঁকে শক্তিশালী করেন এমন সৈন্যবাহিনী দ্বারা যা তোমরা দেখনি।আর তিনি কাফেরদের কথা তুচ্ছ করে দেন।আর আল্লাহর কথাই সুউচ্চ। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী সুবিজ্ঞ।
# সূরাঃ ৯ তাওবা, ৪০ নং আয়াতের তাফসির তাফসিরে ইবনে কাছির
৪০। আল্লাহ তা’আলা জিহাদ পরিত্যাগকারীদেরকে সম্বোধন করে বলেছেন, তোমরা যদি আমার মহান রাসূলের (সা.) সাহায্য সহযোগিতা ছেড়ে দাও তবে জেনে রেখ যে, আমি কারো মুখাপেক্ষী নই। আমি নিজে তাঁর সহায়ক ও পৃষ্ঠপোষক। ঐ সময়ের কথা তোমরা স্মরণ কর যখন হিজরতের সময় কাফেররা আমার রাসূলকে (সা.) হত্যা করা বা বন্দী করা বা দেশান্তর করার চক্রান্ত করেছিল। তখন তিনি প্রিয় সহচর আবু বকরকে (রা.) সঙ্গে নিয়ে গোপনে মক্কা থেকে বেরিয়ে যান। সেই সময় তাঁর সাহায্যকারী কে ছিল? তিনদিন পর্যন্ত তারা সাওর পর্বতের গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য এই যে, তাঁদের ধাওয়াকারীরা তাঁদেরকে না পেয়ে যখন নিরাশ হয়ে ফিরে যাবেন, তখন তাঁরা মদীনার পথ ধরবেন।ক্ষণে ক্ষণে আবু বকর (রা.) ভীত বিহবল হয়ে উঠেন যে, না জানি কেউ হয়ত জানতে পেরে রাসূলকে (সা.) কষ্ট দিবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে সান্তনা দিয়ে বললেন, হে আবু বকর! দু’জনের কথা চিন্তা করছ কেন? তৃতীয় জন যে আল্লাহ রয়েছেন।
সহিহ আল বোখারী, ৩৩৯৪ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৯৪। যুবাইর ইবনে মোতইম (রা.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, একদা এক মহিলা বললেন, আচ্ছা বলুন তো, আমি পুনরায় আগমন করে আপনাকে না পেলে? মহিলা যেন নবির (সা.) ওফাতের দিকে ইঙ্গিত করছিলেন। নবি (সা.) বললেন, তুমি আমাকে না পেলে তবে আবু বকরের (রা.) নিকট যাইও।
* প্রথম খলিফা হয়েছেন আল্লাহ ও রাসূলের সাহাবী হযরত আবু বকর (রা.)। রাসূলের (সা.) পর তাঁর চেয়ে যোগ্য আর কেউ ছিলো না।
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
সহিহ আল বোখারী, ৩৪২১ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪২১।হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি করিম (সা.) বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তী কিছু লোক এলহাম প্রাপ্ত ছিল। আমার উম্মতের মধ্যে এমন কেউ থাকলে সে ওমর বৈকি?
* দ্বিতীয় খলিফা হয়েছেন আল্লাহ ও রাসূলের (সা.) ছাত্র হযরত ওমর (রা.)। তাঁর পর তাঁর চেয়ে যোগ্য আর কেউ ছিলো না।
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১১২ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১১২। হযরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন হে ওসমান (রা.)! আল্লাহ তা’আলা একদিন তোমাকে এ কাজের (খিলাফতের) দায়িত্ব অর্পণ করবেন। তখন মুনাফিকরা ষড়যন্ত্র করবে, যেন আল্লাহ প্রদত্ত জামা (খিলাফতের দায়িত্ব) তোমার থেকে খুলে ফেলতে পারে, যা আল্লাহ তোমাকে পরিয়েছেন। তুমি কখনো তা’ খুলে দেবে না। তিনি এ বাক্যটি তিন বার বললেন।
* তৃতীয় খলিফা হয়েছেন রাসূলের ছাত্র ও আল্লাহর খলিফা হযরত ওসমান (রা.)।তাঁর পর তাঁর চেয়ে যোগ্য আর কেউ ছিলো না।
সূরাঃ ২০ তা-হা, ২৫ নং আয়াত হতে ৩২ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫। মূসা বলল, হে আমার রব! আমার বক্ষ প্রসস্ত করে দিন।
২৬। আমার কাজকে সহজ করে দিন।
২৭। আমার জিহবার জড়তা দূর করে দিন।
২৮। যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।
২৯। আমার জন্য করে দিন একজন উজির আমার আহল থেকে।
৩০। আমার ভাই হারুন।
৩১। তার দ্বারা আমার শক্তি সুদৃঢ় করুন।
৩২। আর তাকে আমার কাজে অংশিদার করুন।
সহিহ আল বোখারী, ৩৪৩৮ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪৩৮। হযরত সাদ (রা.)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি (সা.) আলীকে (রা.) লক্ষ্য করে বলে ছিলেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট যে মর্যাদার দিক হতে মূসা (আ.) এর নিকট হারুণ (আ.) যে পর্যায়ের ছিলেন তুমিও আমার নিকট সে পর্যায়ে আছ।
* চতুর্থ খলিফা হয়েছেন রাসূলের (সা.) ছাত্র ও উজির হযরত আলী (রা.)।
# আল্লাহর খলিফা + রাসূলের (সা.) ছাত্র > রাসূলের (সা.) উজির + রাসূলের (সা.) ছাত্র। সুতরাং হযরত ওসমান (রা.) > হযরত আলী (রা.)।
# আল্লাহর ছাত্র + রাসূলের (সা.) ছাত্র > রাসূলের ছাত্র। সুতরাং হযরত ওমর (রা.) > হযরত ওসমান (রা.)।
# আল্লাহর সাহাবী + রাসূলের (সা.) সাহাবী > রাসূলের (সা.) সাহাবী। সুতরাং হযরত আবু বকর (রা.) > হযরত ওমর (রা.)।
# তিনিটি সমীকরণ অনুযায়ী হযরত আবু বকর (রা.) > হযরত ওমর (রা.) > হযরত ওসমান (রা.) > হযরত আলী (রা.)। সুতরাং আল্লাহ কর্তৃক খেলাফতের ধারাবাহিকতা নির্ধারণ শতভাগ সঠিক। সুতরাং হযরত আলীকে (রা.) প্রথম খলিফা বলার মাধ্যমে সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের কুফুরী হয়।
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
সূরাঃ ৩৫ ফাতির, ২৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮। এভাবে রং বেরং- এর মানুষ, জন্তু ও আন’আম রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলেমরাই তাঁকে ভয় করে।নিশ্চয়্ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাশীল।
সূরাঃ ২৯ আনকাবুত, ৪৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৩।এসব দৃষ্টান্ত আমি মানুষের জন্য পেশ করে থাকি, যেগুলো কেবল আলেমরাই বুঝে থাকে।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী সাহাবায়ে কেরাম (রা.) ও আলেমগণের সর্ববৃহৎ দলের অভিমত সঠিক। তাঁরা নবুয়তের খেলাফতের ক্রমধারা অনুমোদন করেন। তাঁদের অনুমোদন বাতিল করে যারা হযরত আলীকে (রা.) প্রথম খলিফা বলে তাদের যোগ্যতা কি? তাদের অভিমত সঠিক হিসাবে কোরআন ও হাদিস অনুমোদন করে কি? রাসূলের (সা.) ছাত্রদের উপর তাদের প্রাধান্য কিভাবে স্বীকার করা যায়? এটাতো কোন ভাবে সম্ভব নয়।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭