সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।
* হযরত ইব্রাহীম (আ.) বংশে মানব জাতির ইমাম হয়েছেন ১। হযরত মুসা (আ.) ২। হযরত দাউদ (আ.) ৩। হযরত ঈসা (আ.) ৪। হযরত মোহাম্মদ (সা.)। এ ছাড়াও এ বংশে বাদশা ছিলেন ১। হযরত সুলায়মান (আ.) ও বাদশা তালুত।
সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের মধ্যে আমির।কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে বিরোধ দেখাদিলে উহা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসুলের নিকট। ওটা উত্তম এবং পরিনামে ভাল।
সহিহ আল বোখারী, ৩২৪৭ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩২৪৭।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। নবি করিম (সা.) বলেছেন, এ দায়িত্ব (মুসলিম নেতৃত্বের) চিরকাল কুরাইশদের হাতেই থাকবে। যতদিন তাদের দু’জন লোক অবশিষ্ট থাকবে।
সহিহ আবু দাউদ, ৪৫৭৭ নং হাদিসের (সুন্নাহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৫৭৭। হযরত সাফীনা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, নবুয়তের খেলাফতের সময়কাল হলো ত্রিশ বছর। তারপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রাজত্ব বা বাদশাহী দান করবেন।
হযরত সাঈদ (র.) বলেন, সাফীনা (রা.) আমাকে বলেন, তুমি হিসাব কর। আবু বকরের (রা.) শাসনকাল দু’বছর, ওমরের (রা.) দশ বছর, ওসমানের (রা.) বার বছর, আলীর (রা.) ছ’বছর।হযরত সাঈদ (র.) বলেন, আমি সাফীনাকে (রা.) জিজ্ঞেস করি যে, বনু মারওয়ান ধারণা করে যে, আলী (রা.) খলিফাদের অন্তর্ভূক্ত নন। তিনি বলেন, বনু-মারওয়ানরা মিথ্যা বলেছে।
* নবুয়তের খলিফাগণ ছিলেন হযরত ইব্রাহীম (আ.) বংশিয় কুরাইশ।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৭৭৬ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৭৭৬। আনাস ইবনে মালেকের (রা.) খালা এবং মহানবির (সা.) দুধ খালা উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! কে আপনাকে হাসালো? তিনি বললেন, আমার উম্মতের কতক লোককে আমার নিকট এমন অবস্থায় পেশ করা হয়েছে যে, তারা এই সমূদ্রের উপর সওয়ার হয়েছে, যেমনভাবে বাদশাহ সিংহাসনে আরোহন করে। উম্মু হারাম বললেন, তিনি তাঁরজন্য দোয়া করলেন। এরপর পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লেন। অতঃপর প্রথম বারের ন্যায় জাগ্রত হলেন। তারপর উম্মু হারাম (রা.) অনুরূপ বললেন, রাসূলও (সা.) প্রথমবারের অনুরূপ জবাব দিলেন। উম্মু হারাম (রা.) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বললেন, তুমি প্রথম দলের অন্তর্ভূক্ত থাকবে। আনাস (রা.) বলেন, অতঃপর তিনি তাঁর স্বামী উবাদা ইবনে সামিতের (রা.) সাথে বের হলেন জিহাদ করার জন্য, যখন মুসলিমগণ মু’আবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানের সাথে সর্ব প্রথম নৌযুদ্ধে রওয়ানা করে। অতঃপর তারা জিহাদ থেকে ফিরে এসে সিরিয়ায় অবতরণ করলেন তখন সওয়ার হওয়ার জন্য তাঁর কাছে একটা জন্তুযান আনা হলো। জন্তুযানটি তাকে ফেলে দিল। এতেই তিনি ইন্তিকাল করলেন।
* হযরত মুয়াবিয়া (রা.) প্রতিষ্ঠিত উমায়া বংশের শাসনের শাসকগণ ছিলেন হযরত ইব্রাহীম (আ.) বংশিয় বাদশা।
সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১নং হাদিসের [রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১।হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আলআব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথেনিয়ে আসবেন।আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও।সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম।তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ! আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকে এমনভাবে মাফ করেদিন, যারপর তাদের আর কোন অপরাধ বাকি না থাকে।হে আল্লাহ! তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।
রাযীন এবাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ-মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।
* আব্বাসীয় শাসকগণ ছিলেন হযরত ইব্রাহীম (আ.) কুরাইশ খলিফা ও রাজা।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৪০৮৪ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৪০৮৪। হযরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের একটি খনিজ সম্পদের নিকট তিনজন নিহত হবেন। তাদের প্রত্যেকেই হবেন খলিফার পুত্র। এরপর সেই ধনাগার তাদের কেউ পাবেন না। প্রাচ্য দেশ থেকে কালো পতাকা উড্ডীন করা হবে । তারা তোমাদের এমনভাবে হত্যা করবে, যেমনটি ইতিপূর্বে কোন জাতি করেনি। অতঃপর তিনি আরো কিছু উল্লেখ করেছিলেন, যা আমার মনে নেই। আর তিনি এও বললেন, যখন তোমরা তাঁকে দেখতে পাবে, তখন তাঁর হাতে বায়াত গ্রহণ করবে, যদিও তোমাদের বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে অতিক্রম করতে হয়। কেননা তিনি আল্লাহর খলিফা মাহদী।
সহিহ তিরমিযী, ২২১৫ নং হাদিসের (কলহ ও বিপর্যয় অধ্যায়) অনুবাদ-
২২১৫। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, খোরাসানের দিক থেকে কালো পতাকাবাহীগণ বের হবে (মাহদীর সমর্থনে)। অবশেষে সেগুলো ইলিয়া (বায়তুল মাকদিস) এ স্থাপিত হবে এবং কোন কিছুই তা’প্রতিহত করতে পারবে না।
# হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মাহদি আমার বংশে ফাতেমার সন্তানদের মধ্যে হবে- আবূ দাউদ-১১/৩৭৩ ।
* হযরত ফাতেমার বংশে ইব্রাহীম বংশিয় কুরাইশ খলিফা হবেন মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ (আ.)। যাঁর খেতাব হবে ইমাম মাহদী (আ.)।
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে নাও। তুমি যাকে ইচ্ছা ইজ্জত দান কর, আর যাকে ইচ্ছা বেইজ্জতি কর।তোমার হাতেই মঙ্গল।নিশ্চয়ই তুমি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* হযরত ইব্রাহীম (আ.) বংশে আল্লাহ মোট সাতাত্তর জনকে রাজত্ব, খেলাফত ও বাদশাহী দিয়েছেন।তাদের সবচেয়ে বড় দল ছাপ্পান্ন জন আব্বাসীয় খলিফা।
সূরাঃ ৩৫ ফাতির, ২৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮। এভাবে রং বেরং- এর মানুষ, জন্তু ও আন’আম রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলেমরাই তাঁকে ভয় করে।নিশ্চয়্ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাশীল।
সূরাঃ ২৯ আনকাবুত, ৪৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৩।এসব দৃষ্টান্ত আমি মানুষের জন্য পেশ করে থাকি, যেগুলো কেবল আলেমরাই বুঝে থাকে।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* আলেমগণের সর্ববৃহৎ দল হযরত ইব্রাহীম (আ.) বংশিয় তিপ্পান্ন জন কুরাইশ খলিফাকে সঠিক সাব্যস্ত করে। সুতরাং আল্লাহ প্রদত্ব রাজত্বের সবচেয়ে বড় দল তিপ্পান্ন আব্বাসীয় খলিফার দল। সুতরাং ইমাম মাহদী (আ.) আসার আগ পর্যন্ত তারাই মুসলিম নেতৃত্বে থাকবে।
সহিহ মুসলিম, ৪৪৫৬ নং হাদিসের (কিতাবুল জিহাদ) অনুবাদ-
৪৪৫৬। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার আমিরের মধ্যে এমন কোন ব্যাপার দেখে, যা সে অপছন্দকরে তবে সে যেন ধৈর্য্য অবলম্বন করে। কেননা, যে লোক জামায়াত থেকে কিঞ্চিত পরিমাণ সরে গেল এবং এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করল সে জাহেলিয়াতের মুত্যুই বরণ করল।
* বাংলাদেশে আব্বাসীয় কুরাইশ মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ছাড়া আর কোন নেতার উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে না। সুতরাং তাঁর কোন কোন দিক কারো কারো অপছন্দ হলেও বাংলাদেশের মুসলিমগণ তাদের নেতা হিসাবে তাঁরই অনুসারী হবে। এছাড়া অন্য কোন নেতার অনুসারী হয়ে কেউ পথভ্রষ্ট হলে তার পথভ্রষ্ট হওয়ার দায় একান্তই তার।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫