somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তানভীর মোকাম্মেল ও গৌতম ঘোষের ছবিতে লালন : কিছু খণ্ডচিত্র

০২ রা জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




গত ১০ মাসে আমি ৪টি পূর্ণদৈর্ঘ্য মুভি দেখেছিলাম : ১) আক্কেল আলীর নির্বাচন ২) প্রিন্স অব পার্শিয়া ৩) খোঁজ দ্য সার্চ ৪) ট্টয় (১০ মাসের হিসাব দেবার কারণ হলো ১০ মাস ধরে আমি বিদেশে ছিলাম/আছি)। দেশে গিয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে ৩টা সিডি কিনলাম : ১ ও ২) এলভি টপচার্ট ২ ও ৩ (বাংলা মিউজিক ভিডিও) ৩) গৌতম ঘোষের 'মনের মানুষ'। প্রসেনজিতের অভিনয় আমার কোনোকালে ভালো লাগে নি (তাঁর ঘাড় ও শরীর বাঁকা করে হাঁটা চরম বিরক্তিকর লাগে আমার কাছে)। 'মনের মানুষ' দেখে আমার উচ্ছ্বাস প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। প্রসেনজিৎ হয়ে গেলেন আমার 'সাঁই'। এতো ভালো বাংলা ছবি- নাকি এটা একটা ডকুমেন্টারি, জীবন্ত ও জ্বলন্ত ইতিহাস! সময় নেই হাতে, একটা পূর্ণাঙ্গ মুভি-রিভিও তাই লেখা হবে না। কিন্তু ছবিটি আমাকে দিয়েছে প্রশান্তি ও তৃপ্তি, অপরিসীম সুখ ও আনন্দ। আসাদ ও চঞ্চল চৌধুরীর অনবদ্য অভিনয়, কমলি-'শিমুলতলীর মা-জননী' যাকে বললেন লালন, এক মুহূর্তের জন্য উদ্ভাসিত হয়ে লালনের সাধন-সঙ্গিনীর হৃদয় পাগল করা আবেদন- আমি কী করে ভুলিব এতোসব?




একটা মরা নদী, যাতে স্রোত নেই, ঢেউ নেই; হয়তো নদীটিকে সুবিশাল ও অথৈ দেখানো ছিল উদ্দেশ্য, কারণ নদীর পার ধু-ধু করে, কিন্তু খেয়াল করে দেখলে মনে হয় তা ধু-ধু নয়, এই তো খুব কাছেই নদীতীর- এ নদীর বুকে ভাসছে ছোটো ছোটো কয়েকটা নৌকা। এর গধ্যে একটা একটু বড়- তাতে পাল তোলা- ক্যামেরা তাক করা হলো সেদিকে, একটু পরই হঠাৎ 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর'; গায়েবী কণ্ঠে কে যেন বলে উঠলেন, 'অধৈর্য্য লাগছে, না, ফকির সাহেব?' প্রথমে মনে হয়েছিল 'অধৈর্য্য লাগছে' এ-কথাটা বোধ হয় রবীন্দ্রনাথই বললেন। কিন্তু গায়েবী 'ফকির সাহেব' উচ্চারণে আমার ভুল ভাঙলো, কথাটা অন্য কেউ বলছেন, এবং পক্বকেশ ও শ্বেত শ্মশ্রূমণ্ডিত এবং আগাগোড়া শাদা বসনের এ সৌম্যমূর্তিই স্বয়ং লালন ফকির। লালন ফকির সামান্য ঘাড় ফেরালেন বাম দিকে, (দর্শকের দিকে), অথবা সামান্য কাঁপছেন বার্ধক্যের কারণে। 'আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য দুঃখিত।' ক্যামেরা ধীরে ধীরে বামে ঘোরালে দেখা যায় কোনো এক চিত্রকর লালন ফকিরের ছবি আঁকছেন, আর লালন ফকির একটা চেয়ারে আসীন থেকে প্রাণপণে অনড় থাকবার চেষ্টা করছেন মডেল হিসেবে। 'এই আঁকার খাতায় নানাধরনের মানুষজনের ছবি ধরে রাখা আমার ছেলেবেলার শখ।' একটু বিরতি দিয়ে শিল্পী বলেন, ' ... পোর্ট্রেট ড্রয়িং। আমাদের বঙ্গদেশে অবশ্য এসবের প্রচলন কোনোকালেই ছিল না। ইংরেজরা আসার পর থেকেই শুরু।' ক্যামেরার স্থান বদল হয়, বামহস্তে ছড়িতে ভর দিয়ে বসে থাকা লালন তেমনি বসে থাকেন, তাঁর ভেতরে হয়তো অধৈর্য্য জ্বলছিল, কারণ লালনকে এভাবে বসিয়ে রেখে ছবি তোলা আমার কাছে বিব্রতকর লাগছিল, এবং আমারও ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটছিল। চিত্রকর বলতে থাকলেন, 'আপনার মতো সাধকের গান নিয়ে আমাদের পরিবারে চর্চা শুরু হয়েছিল। আপনাকে ঘিরে অনেক উৎসাহ, অনেক জিজ্ঞাসা। এবারে আপনার ছবি দেখতে পেলে সকলে খুব উল্লসিত হবে।' চিত্রকর লালনের চিত্রে তুলির রং দিতে থাকেন, আর তখনই লালন ফকির প্রথম মুখ খোলেন, 'পায় জিজি ধরে গেলো যে বাবু মশাই।' তুলির কাজ থামিয়ে বাবু মশাই বললেন, 'ঠিক আছে, আপনি এখন বিশ্রাম নিন, পরে আবার বসা যাবে। আসলে আপনাদের সাধন-ভজন নিয়ে বিশেষ কৌতূহল আছে। লোকে নানাকথা বলে, তবে সব কথা আমার বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন থেকে যায়। তাই আপনার কাছে জানতে চাই।' লালনের মুখাবয়ব উজ্জ্বল হয়। মাথা ধীরে ধীরে ঝুলিয়ে বলেন, আপন ভজন-কথা, না কহিবে যথাতথা, আপনাতে আপনি হইবে সাবধান।' বলে লালন হাস্যোজ্জ্বল চোখে বাবুর দিকে তাকান। বাবুর প্রতিক্রিয়া বোঝা যায় না, তিনি পুনরায় তুলিতে লালনের ছবি আঁকতে মনোনিবেশ করেন।
পরের দৃশ্য চলে আসে। আবছা অন্ধকারে ঘোড়া দাবড়ে চলেছে কোনো এক সওয়ারী, আবছা বোঝা যায় তার পেছনে এক সঙ্গি/সঙ্গিনীও আছে।

কে এই ঘোড়সওয়ার? লালনের ফ্ল্যাশব্যাক চলতে থাকে। বৃদ্ধ লালন আর তরুণ লালনের জীবনের মধ্যে এক অনবদ্য সমন্বয়ে গল্প শুরু হয়। অপূর্ব দক্ষতা আর মুন্সিয়ানায় পরিচালক আমাদেরকে সামনে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। আমরাও ছুটে চলি 'মনের মানুষ' খুঁজতে।




সিরাজ সাঁইয়ের চোখে নারী ও প্রেমসাধন

সিরাজ সাঁই কোষা বাইছেন, আর মাঝখানে বসে আছেন লালন। বৈঠা বাইতে বাইতে লালনের উদ্দেশে সাঁই বলেন, : তোর এখন একটা কায়াসঙ্গিনী লাগে।

সন্ধ্যা, কিংবা কিছু আগে। ঘরের দাওয়ায় দাঁড়ানো সাঁই ও লালন। দূরে সাধনসঙ্গিনীরা গেরস্থালির কাজ করছে। সাঁই স্বর সামান্য উঁচু করে সেদিকে ডাকলেন, 'ময়ূর! আমার কাছে আয়।'

ময়ূর কাজ করছিল উপুর হয়ে। ধীর গতিতে উঠে দাঁড়িয়ে যে মুচকি হাসি ছড়িয়ে দিল, তাতে নয় শত বাউল পাগল হয়ে যেতে বাধ্য।

ময়ূর ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে। সাঁই এই ফাঁকে লালনকে বয়ান দিচ্ছেন , ময়ূরের রং হলো গিয়ে নীল, আর চোখ দুটা লাল। নীল মানে ঈর্ষা, আর লাল মানে কামনা। নারীর অন্তরে থাকে ঈর্ষা, আর চক্ষুতে কামনা।

ময়ূর সামনে এসে দাঁরালে লালন ময়ূরকে : তোমাদের অন্তরে ঈর্ষা থাকে নাকি? এতো যে সেবা করো, মানুষরে ভালোবাসো, কোথায়, ঈর্ষা দেখি না তো!!

ময়ূর : ঈর্ষা কি চক্ষুতে দেখা যায়? ঈর্ষা আছে আমার অন্তরে ভরা। গোসাঁই কতো বকে, তবু ঈর্ষা কি মরে?

****

সিরাজ সাঁই : শোনরে অবোধ লালন, যে কর্মে লিপ্ত হতে চলেছিস তার পরিণাম অতি ভয়ংকর। তবু সাধক এই ভয়ংকর থেকেই পরমানন্দ প্রেম সংগ্রহ করে। নারী হলো আনন্দ-সহচরী; মহামায়া। তিনি সৃষ্টি ও স্থিতির জননী। আবার লয়-বলয়ের মহাশক্তি শরতী (শব্দটি বুঝি নি ভালো করে)। সেই নারীর সঙ্গে লীলা সহজ কাম নয় বাবা। না বুঝে না সংগ্রহ করলে সমূলে বিনাশ হবি। যখনই বুঝবি সে তোরে গ্রাস করছে, কুম্ভব করবি (শব্দটা বুঝি নি) বিন্দু ধারণই প্রেম সাধন। যা...






শরীর জাগে শরীরের নিয়মে

চাঁদনি রাত, অথবা রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকার। বাউল আখড়ার কয়েকটা কুঁড়েঘর দূরে। কে যেন ঘর থেকে বেরিয়ে গায়ের কাপড় ঠিক করতে করতে ধীর পায়ে হেঁটে যাচ্ছে। সে কমলি। অন্যঘরে মৃদু কুপির আলোয় মাটির শানকিতে চুমুক দিয়ে পানি কিংবা পানীয় পান করলেন লালন। একটু আগে 'যেখানে সাঁইর বারামখানা' গান হয়ে গেলো আসরে। দূর থেকে বয়েত ধরেছিলেন লালন, কমলির সাথে গেয়েও ছিলেন। শানকি পাশে রেখে সামনে সামান্য এগিয়ে ঝুঁকে পড়ে ফুঁ দিয়ে কুপি নেভালেন তিনি। বাইরে থেকে চাঁদের আলো ঠিকরে এসে পড়ছে তাঁর মুখমণ্ডলে, ঘরের বেড়ায়।

'সাঁই।' ডেকে ওঠে কমলি, ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে। সাঁই ফিরে তাকালে কমলি জিজ্ঞাসা করে, 'এখনো ঘুমাও নাই?'
'না।' সাঁই জবাব দেয়। 'দেখতেছিলাম, চাঁদের গায়ে কেমনে চাঁদ লাগে।' বলে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকেন লালন।
'তোমার সাথে একটু কথা কই?' দরজায় দাঁড়িয়ে কমলি জানতে চায়।
'আসো।' লালন বলেন। কমলি আস্তে আস্তে ভিতরে ঢুকে লালনের কাছ ঘেঁষে বসে। আবছা অন্ধকারে কমলির মুখ দেখা যায় না।
'আমার গান শুনতে আসরে আইলা না ক্যান?' কমলি অনুযোগ করে।
'শুনছি তো দূর থিক্যা। গানটা ভুলে গেছিলাম। প্রেম-পিরিতির গান। কাম থেকে নিস্কাম প্রেম।' এ-কথা আপন মনে বলতে বলতে লালন থামলেন।
কমলি জানতে চায়, 'প্রেম ক্যামনে নিস্কাম হয়, সাঁই? তুমিই তো কইছো, প্রেম সাধিতে ফাপরে ওঠে কাম-নদীর তুফান।' বলতে বলতে কমলির কণ্ঠ ঘন হয়ে আসে।
'কাশেম কই?" লালন কমলির কাছে তার স্বামীর কথা জানতে চায়।
কমলি বলে, 'সে ঘুমায়। অজ্ঞানের মতো' কমলির গলার স্বর কাঁপতে থাকে। সে লালনের দিকে তাকায়, লালনের শরীরের দিকে ঝুঁকে পড়ে বলতে থাকে, 'আর আমি?' তারপর লালনের বাহুর দিকে ডান হাত বাড়িয়ে শরীর এলিয়ে দিয়ে লালনের শরীরে কমলি হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, 'আমি জ্বলে মরি। আমার সালামি দাও সাঁই।' বলে লালনের ঘাড়ে মুখ ঘষতে থাকে কমলি। ঘন নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বলে, 'কী হলো? তুমি কি পাথর? তোমার কামনা-বাসনা নাই?' বলে লালনের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে কমলি।
'থাকবে না ক্যান?' অনেকক্ষণ পর মুখ খুলে নির্জীব লালন বলেন, 'সব মানুষের যেমন থাকে---' বলতে বলতে লালনের কণ্ঠও ভিজে আসে। দুজনের ঘননিশ্বাস দ্রুত বইতে থাকে। কমলির শীৎকারের শব্দ বড় হয়। মুখ ঘাড় থেকে শরীর ঘসতে ঘসতে উরুর কাছে চলে আসে, তার মুখ দেখা যায় না, শব্দ শোনা যায়। তখনই কমলি ছেনালি হাসিতে হিহি করে হেসে ওঠে। বলে, 'এইতো--- এইতো তোমার কাম জাগছে।' তার মাথা লালনের উরু থেকে উপরে উঠে আসে। লালনের বুকে হাত ঘসতে ঘসতে বলে, 'তোমার--- তোমার বাসনা আছে সোনা ময়না।' বলে সে ভুবনভোলানো মুচকি হাসি হেসে ওঠে। আর বলে, 'তুমি ভাবের ঘরে চুরি করো সাঁই। আমারে---- আমারে শান্ত করো।' বলে কমলি তার মাথা লালনের ঘাড়ে এলিয়ে দেয়।'
চোখ বুজে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত লালন বলেন, 'শরীর জাগে শরীরের নিয়মে। মন যদি না জাগে?' কিছুক্ষণ নীরবতা। কমলির সম্বিৎ হয়। সে মুখে হাত তুলে নিজের সর্বনাশের কথাই হয়তো ভাবলো, কিংবা লালনের শেষ কথার মর্ম বুঝতে পেরে দংশিত বোধ করলো। সে লালনের দেহপাশ ছেড়ে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেলো।




যেখানে সাঁইর বারামখানা




ফেইসবুকে 'মনের মানুষ' নিয়ে কোনো এক আলোচনায় আমি তানভীর মোকাম্মেলের 'লালন'-এর কথা খুব জোরেসোরে প্রসংশা করছিলাম; তখনো আমি 'মনের মানুষ' দেখি নি। 'লালন' চ্যানেল আইতে দেখেছিলাম যে বছর মুক্তি পেলো, তবে পুরোটা দেখতে পারি নি; অল্পবিস্তর যা দেখেছিলাম তাতে আসাদকে লালনের ভূমিকায় অসাধারণ মনে হয়েছিল। 'মনের মানুষ' দেখবার আগে আমার কেবলই মনে হচ্ছিল প্রসেনজিৎ কোনোদিনই 'লালন' রূপে আসাদের ধারেকাছে পৌঁছতে পারবেন না, এখনো তাই মনে করি। কিন্তু এ ছবিতে আসাদ তাঁর নিজ গুণেই 'সিরাজ' রূপে অনেক উপরে উঠে গেছেন, আর প্রসেনজিৎও নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন। এটা আমার ধারণা। আমার এ ধারণা প্রথমবার ছবি দেখার আবেগের ফলাফল। এর চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে গেলে দোষত্রুটি অবশ্যই বের হবে। প্রথম দেখায়ও যে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায় নি তা নয়- যেমন প্রসেনজিতের সাথে জ্যোতিন্দ্রীনাথ ঠাকুরের কথোপকথনগুলো মাঝে মাঝে একঘেঁয়ে মনে হয়েছে। জমিদারবাড়িতে লালনের সাথে মুসল্লিদের যে 'বাহাস' হয়েছে, তাতে লালনের জবাবগুলো শক্তিশালী মনে হয় নি; সাঁইয়ের আদেশ অমান্য করে ২য় বার বউয়ের কাছে ফিরে এলে 'জাত হারানোর' ঘটনায় লালনের যুক্তিগুলো শক্তিশালী মনে হয় নি- এতো অল্পতেই বউ-মা-সংসার ছেড়ে দিলেন লালন? লালনকে পানিতে ভাসিয়ে দেয়া, ইত্যাদি। যৌন-উত্তেজক দৃশ্যগুলো হয়তো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে, ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনা থেকে; তবে গৌতম ঘোষ কি এটা করবেন? কিন্তু ছবি দেখার সময় এ ত্রুটিগুলোর কথা মন ভুলে যায়। যেমন, যে কোনো সাড়া-জাগানো ছবিতেও এসব ত্রুটি থাকতে পারে। বিশাল সমুদ্রের বুকে ছুটে চলা টাইটানিকের উপরে নায়ক-নায়িকার হাত খুলে পাখা-উড়ানো একটা একান্ত অসম্ভব ও কাল্পনিক ব্যাপার, বাস্তবে তা কখনো ঘটতে পারবে না, অথচ এই দৃশ্যটা একটা সেরা রোমান্টিক দৃশ্যে পরিণত হয়ে গেছে। এরকম আরো উদাহরণ দেয়া যায়।

'মনের মানুষ-এর উপর যতোটুকু ভালোলাগা জন্মেছে তা নিয়ে আপাতত চলি। এটা একটা ভালো ছবি নিঃসন্দেহে, এটা নিয়ে বেশ লেখালেখি হবে। তখন নিজের মতের সাথে অপরের মতামত মিলিয়ে দেখা যাবে, ব্যাপার এটাই।




সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে গৌতম ঘোষ পরিচালিত, রোজভ্যালি ফিল্মস লিমিটেড (ভারত) ও ইমপ্রেস টেলিফিল্ম (বাংলাদেশ)-এর যৌথ প্রযোজনায় তৈরি এ ছবিতে অনেক গান ব্যবহার করা হয়েছে, যার বেশিরভাগই প্রথম কয়েকটা চরণ; 'যেখানে সাঁইর বারামখানা' সহ গুটিকতক গান পুরা গাওয়া হয়েছে। এ ছবিতে স্বয়ং লালন ফকির ছাড়াও শাহজাদ ফিরদাউসের গান গাওয়া হয়েছে। শিল্পীরা হলেন :

আব্দুল লতিফ শাহ
সুরজিত বর্মন
গোলাম ফকির
অন্তরা চৌধুরী
চন্দনা মজুমদার
কালিকা প্রসাদ
রাজীব দাশ
উপালি চট্টোপাধ্যায়
ফরিদা পারভীন

'যেখানে সাঁইর বারামখানা' নতুন করে গাওয়া ও রেকর্ডকৃত ফরিদা পারভীনের গান। যে কোনো বড় শিল্পীর বেলায়ই যেটা ঘটে তা হলো, তাঁদের আগের গাওয়া গানগুলো শ্রোতারা যা আগে শুনেছেন, ২য় বারের গাওয়া গানের চেয়ে অধিক শ্রুতিমধুর ও মাধুর্যময় মনে হয়; ২য় বার গাওয়া গানটাকে অনেক সময় বেসুরোও মনে হয়, ওরিজিন্যালিটি হারিয়ে গেছে এমন মনে হয়। ফরিদা পারভীনের বেলায় তার ব্যত্যয় ঘটে নি, আমার তাই মনে হয়েছে। এর সাথে পুরুষকণ্ঠটি বড্ড বেমানান মনে হয়েছে- যা ফরিদা পারভীনের সাথে যায় নি, এবং প্রসেনজিতের সাথেও যায় নি। বৃদ্ধ লালন ফকির, প্রথম দৃশ্যে যাঁকে দেখামাত্র আমার মতো কারো কারো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলে ভ্রম হতে পারে (কারণ, লালন ও রবিঠাকুর প্রায়ই একত্রে বসতেন, আমিও প্রথমে ভেবেছিলাম যে লালন ও রবিঠাকুরের দৃশ্য দিয়েই বোধ হয় ছবি শুরু হচ্ছে), তিনি জমিদার জ্যোতিরীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে গান শোনাচ্ছিলেন, আর গান শেষে জমিদার মহাশয় 'সাধু' 'সাধু' বলে বাহবা দিচ্ছিলেন, তার পরেই লালনের বাক্যালাপ শুরু হওয়ায় গানের কণ্ঠ ও বাক্যের কণ্ঠের মধ্যে তফাৎটা প্রকট হয় নি- এটা পরিচালক বেশ বুদ্ধিমত্তার সাথেই করছিলেন; তবে মাঝে মাঝে এটা আর অব্যাহত রাখতে পারেন নি, আর তখনই গানের ভয়েস আর কথার ভয়েসের মধ্যকার বৈসাদৃশ্য কানে বেশি লেগেছে।

চরিত্র রূপায়ণ করেছেন:

প্রসেনজিৎ
রাইসুল ইসলাম আসাদ
চঞ্চল চৌধুরী
প্রিয়াংশু চট্টোপাধ্যায়
সৈয়দ হাসান ইমাম
গুলশান আরা চম্পা
পাওলি দাম
শুভ্রা
রোকেয়া প্রাচী
বিবি রাসেল
শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়
মীর নওফিল আশরাফি
তাথৈ

আরো অনেকে, যাঁদের নাম ছবির শুরুতে দেখানো হয় নি।




ছবির শুরুতেই দেখবেন, যাঁদের গবেষণা এই চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করেছে :

শ্রীযুক্ত বসন্ত কুমার পাল
ডক্টর সুধীর চক্রবর্তী
ডক্টর উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
ডক্টর শক্তিনাথ ঝা
শ্রীযুক্ত অন্নদাশঙ্কর রায়
ডক্টর ওয়াকিল আহমদ
ডক্টর মুহম্দদ মনসুরউদ্দিন
ডক্টর আহমদ শরিফ
ডক্টর রমাকান্ত চক্রবর্তী
ডক্টর এস, এম, লুৎফর রহমান

বিশেষ উপদেষ্টা : আবুল আহসান চৌধুরী

সম্পাদনা : মলয় বন্দোপাধ্যায়

প্রযোজনা :

গৌতম কুন্ডু (ভারত)
ফরিদুর রেজা সাগর (বাংলাদেশ)
হাবিবুর রহমান খান (বাংলাদেশ)

চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ ও সঙ্গীতে পরিচালক নিজে।





'মনের মানুষ' দেখার পর 'লালন' দেখবার জন্য অস্থির হয়ে গেলাম। অনেক খোঁজাখুঁজির পর 'লালন' পেলাম ও দেখলাম। কেউ যদি জীবনে এ-দুটির যে কোনো একটি ছবি দেখেন, তাহলে সেটিই তাঁর কাছে একটি স্মরণীয় ছবি হিসেবে প্রতিভাত হবে। দুটোই দেখে ফেললে যে-কোনো একটিকে কৃত্রিম, অন্যটিকে অকৃত্রিম মনে হবে; আর লালনের সঠিক জীবনেতিহাস যেমন আজো জানা যায় নি, দুটো ছবি দেখলেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়; কারণ, দু ছবিতে লালনের জীবনকাহিনি দু রকম। দুটি ছবিতেই বেশ কিছু মৌলিক পার্থক্য দেখা গেছে। সময় পেলে সেগুলো লিখে যোগা করে দেবো।

তবে, লালনের চরিত্রে প্রসেনজিতের অভিনয় দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম; 'লালন' পুনর্বার দেখে মনে হলো লালন-চরিত্র রূপায়ণে প্রসেনজিৎ আসাদের সমকক্ষ হতে পারেন নি। তবে, চরিত্র সৃষ্টিতে গৌতম ঘোষ বিশেষ দক্ষতা দেখিয়েছেন, তাঁর ছবির প্রতিটি চরিত্র মূর্ত হয়ে ওঠে। লালনের সমগ্র গান ও জীবনে তাঁর সাঁইয়ের প্রভাব ছিল অলঙ্ঘ্য ও অনবরত; 'মনের মানুষ' ছবিতে সিরাজ সাঁইয়ের ভূমিকা ও তাতে আসাদের অভিনয় থেকে লালেনর উপর সিরাজের সুস্পষ্ট প্রভাবের গুরুত্ব বোঝা যায়। 'মনের মানুষ' ছবিতে একটা সুন্দর ও ধারাবাহিক গল্প বোঝা যায়, প্রতিটা সিকোয়েন্সও স্পষ্ট। 'লালন' ছবিতে লালনজীবনের কোনো ধারাবাহিক গল্প সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় না। 'মনের মানুষ' ছবিতে মনে হয়েছে জোর করে কিছু যৌনোপাদান ঢোকানো হয়েছে, এতে একটা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য লুকায়িত ছিল বোঝা যায়। 'লালন' ছবিতে ফ্ল্যাশ ব্যাকের মাধ্যমে লালনের কাহিনি শুরু হয়; গৌতম ঘোষ স্রেফ তানভীর মোকাম্মেলকেই অনুসরণ করেছেন; তানভীরের বেঁধে ফেলা ছক থেকে বেরিয়ে এলে সেটা প্রসংশনীয় হতো।

'লালন' একটা নির্মল ছবি। লালনের জীবনচরিতের পবিত্রতা ও মাহাত্ম্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এতে। মনিরুদ্দিনের ভূমিকায় অভিনেতা চমৎকার অভিনয় করলেও, মনিরুদ্দিন যে লালনের একজন সতত-সঙ্গী শিষ্য ছিলেন, কারো জানা না থাকলে ছবি দেখে তা বোঝা যাবে না। 'মনের মানুষ' ছবিতে গৌতম ঘোষ কিছু কিছু জায়গায় গুলিয়ে ফেলেছেন মনে হয়। লালনকে দিয়ে 'বাহাস' করানো হলো। বিবি রাসেল যখন জনসমক্ষে পুরোহিতের ইজ্জত লুটবার তথ্য ফাঁশ করে দেন, তখন জনতা ঢিল ছোঁড়ে; প্রথমে মনে হয়েছিল তারা ঢিল ছুঁড়ছে ভণ্ড পুরোহিতের প্রতি, কিন্তু পরে দেখা গেলো জনতা মারধোর করছে বাউলদেরক। অবশেষে জমিদারের লোকজন এসে বাউলদের রক্ষা করে। চঞ্চল চৌধুরী মারা যান, লালন আহত হোন।





তানভীর মোকাম্মেল ও গৌতম ঘোষ দুজনই যাঁদের গবেষণা থেকে উপকৃত হয়েছেন ছবিতে তাঁদের নাম উল্লেখ করেছেন। আহসান চৌধুরীর নাম দু পরিচালকই উল্লেখ করেছেন। এ দুটি ছবির মধ্যে তুলনা করার ব্যাপারটা কারো কারো কাছে অবান্তর মনে হতে পারে। তবে আমার কাছে এসব তুলনামূলক আলোচনা অবান্তর নয়। দেবদাসকে নিয়ে বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পরিচালক ছবি বানান যখন, তখন দর্শক-সমালোচকগণ আনন্দ-বিনোদন-শিক্ষা-ফিল্ম মেকিং ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে ওসব ছবির তুলনা করে থাকেন। ছবি কোনো উপন্যাস বা ছোটোগল্প নয়; ছোটোগল্প বা উপন্যাস পাঠে যেমন কাহিনিতে কী মেসেজ বা দর্শন দেয়া হয়েছে তা হৃদয়ঙ্গম সহজতর, ছবিতে ঐ ব্যাপারটা সেভাবে মনে হয় আসে না, তাই একই ব্যক্তির উপর বিভিন্ন ছবি হলে তুলনার ব্যাপারটা আপনা-আপনিই চলে আসে। উপরে আমি দু ছবির গুণাগুণের কিছু কথা বলেছি, আমার দৃষ্টিতে। 'মনের মানুষ' একটা ‌উপন্যাসের উপর দাঁড়িয়েছে, আর উপন্যাস হলো একটা সহজবোধ্য গল্প, তাই 'মনের মানুষ' দেখে লালনের জীবনী বোঝা খুব সহজ, তা সঠিক বা ভুল সেটা আসে পরে। 'লালন' ছবিটি মূলত লালনের জীবনকাহিনি নয়, লালনের জীবনের বিভিন্ন সময়ের খণ্ডচিত্র, এতে তুলনামূলকভাবে বেশি গান গাওয়া হয়েছে। এটা লালনের উপর একটা গীতি-আলেখ্যও বলা যেতে পারে। ইত্যাদি। আপনি যখন দর্শক হিসেবে দেখবেন দুটো ছবি, তখন দুটোতেই মজা পাচ্ছেন, আবার দুটোর মধ্যে মিল-অমিল খুঁজে হয়রান হচ্ছেন। সমালোচক হিসেবে সবকিছু ছিঁড়েফেড়ে দেখার পরই বলবেন- যাহ শালার, দুটো ছবির উদ্দেশ্যই তো আলাদা! আর এ-কথাটা কিন্তু তুলনার ফল। দুটো ছবিই নিঃসন্দেহে খুব ভালো। কিন্তু দুটো ছবি একজন মহান সাধকের উপর নির্মিত। দুজনই গুণী ও ট্যালেন্টেড চলচ্চিত্রকার। তাঁদের প্রোডাকশন কীরকম হলো, সে বিষয়টা নিয়ে এজন্যই তুলনাটা চলে আসছে।

লালন তাঁর শিস্যদের নিয়ে তত্ত্ব আলোচনা করছেন, এ দৃশ্যের সংখ্যা 'মনের মানুষ'-এর চেয়ে 'লালন'-এ অনেক বেশি। আর 'লালন'-এ তত্ত্বালোচনা বেশি হয়েছে, যার ফলে 'লালন'-এ গল্পটা সুস্পষ্ট নয়। অন্যদিকে, 'মনের মানুষ'-এ একটা গল্প এগিয়ে গেছে লালনকে নিয়ে। সেখানে লালনের জীবনের বিভিন্ন ঘটনা-উপঘটনা, ঝড়-তুফানের বর্ণনা বেশি, তত্ত্বালোচনা অপেক্ষাকৃত কম। মোট কথা, যে-ছবির যে অংশটা আমার কাছে ভালো লেগেছে আমি সেটাই বলেছি।

লালনের মা (রোকেয়া প্রাচী) ও বাবার ভূমিকা 'মনের মানুষ'-এ অনেক উজ্জ্বল; এ দুজনের চরিত্র খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। সে তুলনায় 'লালন'-এ চিত্রলেখা গুহ ও পিতা ভূমিকার অভিনেতাকে যেমন খুব নিষ্প্রভ মনে হয়েছে, এ গল্পটুকুও মনে দাগ কাটতে পারে নি।

দু ছবির সৌন্দর্য দু রকম। কমলির সাথে যৌনোদ্দীপক অংশটুকু লালনের চরিত্রের দৃঢ়তা দেখানোই হয়তো উদ্দেশ্য, সাথে ব্যবসায়িক একটা উদ্দেশ্যও ছিল মনে হয়। বাউল ধর্মে এসব যৌন বিষয় খুব মুখ্য ভূমিকা রাখে। কমলি প্রথমে কালুর প্রেমে পড়ে, কালু পালিয়ে যায়। পরে কাশেমের প্রেমে পড়ে, কাশেম নপুংসক, 'অজ্ঞানের মতো ঘুমায়।' আগুনজ্বলা শরীরে সে লালনের কাছে এসে 'সালামি চায়।' সাধনসঙ্গিনীর চাহিদা খুব তীব্র থাকতে পারে বাস্তব জীবনে, কিন্তু এসব অবাধ যৌনমিলন বা মিলনের আকাঙ্ক্ষা দেখানো বাউলদেরকে খুব ছোটো করা হয় বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। কালুর শরীর একটা নারী চায়, লালন গিয়ে কমলিকে এ-কথা বলেন, কমলি সম্মত হলেও 'সময় গেলে সাধন মেলে না বলে,' আর কাশেম তা দেখে ফেলে। কাশেম তা সহজে মেনে নেয় নি বলেই মনে হলো। বাউলদের জীবনের বাস্তবচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। অনেক বাস্তবকথা আবার সম্মানজনক না।


১০

লালনকে নিয়ে বানানো দুটি ছবিই বাংলা ছবির জগতে অনন্য সৃষ্টি। দু চলচ্ছিত্রকারই যুগান্তকারী কাজ করেছেন। কোনো কিছুই সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত করা সম্ভব নয়- 'লালন' ও 'মনের মানুষ'ও সে দোষ থেকে মুক্ত নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১১ বিকাল ৫:৫৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×