পুরুষ ও সুন্দরী
১
পুরুষ চিরকালই ‘পুরুষ’ নয়- ‘সুন্দরী’দের দেখলেই কুপোকাত।
২
পুরুষেরা চির-উন্নত-শির; তাঁদের মাথা আকাশ ছাড়িয়ে যায়, কিন্তু সুন্দরীদের সামনে সে-মাথা নুয়ে পড়ে।
সুন্দরীদের সমীপে পুরুষেরা চিরকালই নতজানু। এর ব্যতিক্রম মাত্র একজনকেই দেখা যায়- সে হলেম আমি।
৩
অর্থাৎ, আমি বলতে চেয়েছিলাম যে, পুরুষ মানুষ যত বড়, যত জ্ঞানী, যত মহৎ, যত দেমাগী বা অহঙ্কারীই হোন না কেন, সুন্দরীদের সামনে তাঁদের ব্যক্তিত্ব কোথায়, কীভাবে যেন লোপ পেয়ে যায়। তাঁরা সবকিছু ভুলে সুন্দরীদের তোষণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এর যত ব্যতিক্রম, তা দেখা যায় কেবল আমার মধ্যে- তাই হিংসুটে ললনারা আমার দিকে বাঘের মত হাঁ করে আছে- সুযোগ পেলেই আস্ত গিলে খাবে।
৪
সত্য ভাষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লোকটি কে, জানেন?
আমি।
১১ মার্চ ২০১৪
সততা
একবার তুমি আমার কিছু লেখা চুরি করে সামান্য সাজিয়ে নিজের নামে ছাপিয়ে দিলে, রেফারেন্স হিসাবে লিখলে সুমনা চৌধুরীদের নাম। আরেকবার একটা গল্প লিখবার পর কৃতজ্ঞতা জানালে সহেলিকে, যার প্রাপ্য আমি ছিলাম।
তুমি কি চোর নও?
ভেবো না, আমি এ কথার কোনো জবাব চাইছি না।
এমন কিছু প্রশ্ন আছে, যা তোমার বিবেকের কাছে প্রক্ষিপ্ত হবে; এমন কিছু জবাব আছে, যা তোমার বিবেকের কাছেই গচ্ছিত রয়েছে। মনে রেখো- এগুলো তুষের আগুন, আর-কেউ না জানুক- তুমি জানো, তোমার বিবেক তোমাকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
কারণ,
তুমি জানো, তুমি সৎ নও- তুমি একটা চোর।
১২-১৮ মার্চ ২০১৪
অনির্বাণ বোধ
উড়ে যায় দূরের আকাশ, পালকে একগুচ্ছ মেঘ
বিকেল হেসে ওঠে কাঁধে রেখে দুপুরের সুখ
বাতাস আছড়ে পড়ে জরাজীর্ণ, বিদীর্ণ ধুলোয়। একঝাঁক পিঁপড়ে
ঘুম ভুলে উল্লাসে ফেটে পড়ে। ঝিমখাওয়া সময়কে খাবলে খেতে খেতে
সতেজ ঘাসের মতো লকলকে চোখে থরে থরে জেগে ওঠে বিশুদ্ধ জিগীষা
চলো, জীবনকে খুঁড়ে দেখি- সব রং, রূপ ও নির্যাস- তোমারই
১৩ মার্চ ২০১৪
কবিতা
ক্রমশ রিয়েলিটি ছেড়ে ফ্যান্টাসির দিকে ধাবিত হচ্ছে কবিতা। একটা সমুদ্র হঠাৎই পাখি হয়ে আকাশে উড়ে যায়, মেঘের বুক ছিঁড়ে গজিয়ে ওঠে অসংখ্য চারাগাছ। একটা পাহাড় নদী হয়ে মহাকাশে ডুবে যায়, একটা নদী মানবীর হাত বাড়িয়ে প্রেমিকা হয়ে ওঠে। উড়ন্ত রোদ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে পড়ে পাখির শাবক, বৃষ্টিতে ঝরে পড়ে থোকা থোকা সুখ এবং অমরাবতীর ফুল। কবিতারা ফ্যান্টাসি- কাল্পনিক সুরম্য ভুবন। শব্দেরা চিত্রকল্প।
শব্দেরা চিত্রকল্প - এসব বাহাস বাতুলতা। শব্দেরা একটা যুদ্ধ। শব্দেরা বোমারু বিমান। শব্দেরা গোলন্দাজ শেল- তোমার বুকের উপর সজোরে ধাক্কা খাবে। তুমি বিধ্বস্ত। শব্দেরা সুবিপুল ভাব। শব্দেরা সুগভীর সিন্ধু। শব্দেরা আপনআপনিই আসবে, তোমার পঙ্ক্তিতে বেছে নেবে যে যার অবস্থান। অভিধান ঘেঁটে শব্দদের জোর করে চাপিয়ে দিও না- এরা অপাঙ্ক্তেয়; এরা কিছুদিন বাদে ঝরে যাবে, মরে যাবে- তোমার কবিতা অবশ্য তার অনেক আগেই মৃত এক ফসিল।
কবিতারা ফ্যান্টাসি নয়, কবিতারা জীবন। তুমি আর আমি রক্তমাংসে কবিতার ভিতর।
১৪ মার্চ ২০১৪