একটু আগেই চলে যেতে যেতে
রেখে গেলি অগ্নিদাহের সুতীব্র জ্বালা শরীরের প্রত্যেক পরতে
একটি রাত কিংবা কিছু বেশি- কেন তবে যন্ত্রণা জাগালি মনে?
কে দেবে অঙ্গারে জল আমায় এখন, বারুদ যৌবনে?
চলে যাবার অনেক আগেই এভাবেই চলে যায় সব পাখি
আমার পাখির পালকপুঞ্জের ঘ্রাণ
বাতাসে বাতাসে ভেসে ভেসে আমাকেই খোঁজে নাকি!
তুই তো জানিস না পাখি, সমগ্র রাতের বৃষ্টির শব্দ প্রেমের মূর্ছনার মতো
বুঁদ করে আঁখি ও অন্তর।
তোকে ছাড়া কীভাবে বাঁচি রে বাবুই?
আমার ঘর ও পৃথিবী তোকে ছাড়া বিরান কবর
তুই ফিরে আয়... তোর লাগি এখনও আমি কাঁদি।
২৫ নভেম্বর ২০০৮
সংশয়
সবখানি তুই দিয়েছিলি মেয়ে
দেহের গভীরে দেহ
শুধু মনটারে কারে দিয়েছিলি
আজও তায় সন্দেহ
দেহখানি তোর চাঁদের প্রতিমা
তাতে কিবা সুখ হয়
যদিবা প্রেমের পরম সূত্রে
রয়ে যায় সংশয়!
৪ জানুয়ারি ২০০৯
দুঃখিনী মেয়েটার কথা
মেয়েটা দুঃখিনী খুব
তীব্র ডিপ্রেশনে রোজ রোজ কাঁদে
আর ভালোবাসা সাধে
একদা তুফানের কালে ডেকে নিয়ে শয্যায়
রাতভর অপূর্ব সঙ্গম দিল সুনিপুণ দক্ষতায়
সেই ছিল শুরু
এখন আর সে কাঁদে না, ভালোবাসাও সাধে না
অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকে আশ্চর্য এক হাসনাহেনা
৯ এপ্রিল ২০০৯
একটা অচিন গাছের ছবি
প্রতিদিন একটা গাছের ছবি আঁকি
গাছটা দেখি নি কোথাও কোনোদিন
তার ডালপালা ফুলফলপাতা নদীপাড় পাখপাখালির পরিণাহ
অদ্ভুত ছায়া ফেলে আঙুলচুড়ায়
আমি আঁকি
কিংবা আর কেউ
তাকেও চিনি না জানি না দেখি নি কস্মিন যুগেও
গাছেরা কি কথা বলে? ছায়া ও ছবিরা? বলে,
আর তারা কোরাস গায়, দল বেঁধে নাচে, শোনায় ইতিহাস :
মানুষ নাকি গাছ আর গাছেরা মানুষ
হাড্ডিসার গাছ দেখে মানুষ চমকালো যেদিন
ঘরকুনো পাখিরা নদীমুখো হলো
আর বৃক্ষের বীজেরা খুঁজে নিল মানুষের ওম
মানুষ মানুষ হয়ে গেলে হয়ে যায় পাখিদের গাছ
এককালে বয়রা বিটপীর বীজতলাও বানভাসী হয়
আমরা তখন মৃত বায়সের শুকনো হাড় খুঁজি
প্রতিদিন একটা অচিন গাছের ছবি আঁকি
আমি কিংবা অচেনা একজন
১৩ এপ্রিল ২০০৯
এক সুপরিচিতার কথা
আগুন ও বরফে দেখা যেতো তাকে
পৃথিবীর নিয়মে অনীহা প্রকট, কদাচিৎ আমাদের ডাকে
সদাশয় সমাবেশে বসতেন তিনি
তাই তাঁর কাছে আমরা খুব সামান্যই ঋণী
তাঁর ছিল বিরল বৈভব; সমুদয় করেছেন অপাত্রে দান
আজ তিনি ভিখারিনী, সকাতরে সেই ধন খুঁজিয়া বেড়ান।
১৪ এপ্রিল ২০০৯
শুদ্ধিস্নান
তুমি শুদ্ধিস্নানে গিয়ে
আর এলে না
আমি পাতার নূপুর পায়ে বায়ুর স্বননে কাঁদি
আর, চাঁদের জানালায় উল্কা জ্বেলে রাখি
আর, তোমার আগুনে অশুদ্ধ হবার বাসনায় লালায়িত রাত জাগি
প্রেমের কসম, শুদ্ধ না হও-
এসো না
২০ আগস্ট ২০০৯
ঠাণ্ডা যুদ্ধ
তোমার তখন কিচ্ছু ছিল না
আমার দু’হাত শূন্য
তোমার তখন দুঃখ ছিল না
আমার ছিল না কান্না
তোমার এখন পূর্ণ দু’হাত
আমার দু’হাত ঋদ্ধ
তোমার ভুবন ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুর
আমার ভুবন বর্ষা
তোমার-আমার সন্ধিসকল
অগ্রন্থিত, রুদ্ধ
তোমার-আমার হিম মহাকাল
রক্তবিহীন যুদ্ধ
২৬ জানুয়ারি ২০১০ রাত ১১:৩৩
২৫ বছরের মৃতদেহ
একদা আমি তাকে ভালোবাসতাম। তাকে কাল আবার নতুন করে ভালোবাসতে গেলে আন্তরিক হাসিযোগে আমাকে গ্রহণ করলো। অন্তরঙ্গ আতিথেয়তা শেষে সে বললো, তোমাকে অভিবাদন, আজ আমার ২৫তম মৃত্যুদিবস।
১৫ মার্চ ২০১১
খোঁজ
কেউ তোমাকে ভুল পথে দেয় ঠেলে
কেউ তোমাকে অন্য পথে ডাকে
তার ঠিকানা নিজেই কি সে জানে
তোমার ভেতর খুঁজছো তুমি যাকে?
তোমার ভেতর খুঁজছো তুমি কাকে?
সত্যি বলো, পাও নি কি তার দেখা?
হন্যি হয়ে সারা ভুবন খোঁজো
তোমার পাশে তোমার ছায়া একা
তোমার পাশে তোমার ছায়া নড়ে
তোমরা দুজন বাস করো এক ঘরে।
১৭ আগস্ট ২০১১
যদি বারণ করো তবে...
তুমি যদি বলো
তোমার চোখেতে
আর চোখ রাখিব না
নাহি যদি চাও
প্রিয় মধু নামে
কোনোদিনই ডাকিব না
নাহি চাও যদি
আজই ফিরে যাবো
যে-পথে আসিয়াছিনু
তুমি যদি বলো
সবই রেখে যাবো
যা কিছু লইয়াছিনু
তুমি যদি বলো
হয় নি কিছুই
আর তুমি লিখিয়ো না
প্রেমের কসম
তোমার নামেতে
আমি আর লিখিব না
একদা নিশীথে
ঘুম ভেঙে যদি
চোখ ভিজে যায় জলে
আমার কবিতা
কাঁদিবে সেদিন
লুটায়ে পায়ের তলে
১১ এপ্রিল ২০১৪