হ্যালো সোমা, আমি তোমার নামে এক মেয়েকে খুঁজছি,
হয়তো সে-মেয়ে তুমি নও,
হয়তো সে তুমিই
অথবা আমাকে আরও কাঁদাবে বলে বহু আগেই সে-মেয়ে
পৃথিবীর মাটিতে মিশে গেছে
তার সাথে প্রায় এক যুগ আগে অন্তর্জালে আমার দেখা হয়েছিল
লিটল ম্যাগের জন্য লেখা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি ছেড়ে দিলে
‘সাদাপাতা’ ভর্তি একগুচ্ছ শুভ্র কবিতা পাঠিয়েছিল সোমা।
তাকে বই পাঠিয়েছিলাম
তার উজ্জ্বল মুখ ও মননের মতো ঝকঝকে ছাপা আর
চমৎকার প্রচ্ছদে বইটি দেখতে অসাধারণ হয়েছিল।
সোমা বই পেয়েছিল, জানিয়েছিল মেইলে
তার বাবা অধ্যাপক, মা একজন এ্যাডভোকেট
সোমা কলকাতার মেয়ে। তার বাবার জন্ম সিলেটে, ময়মনসিংহে মায়ের বাড়ি।
বাংলাদেশের মাটিতেই তার শিকড়- এ কথা জানবার পর
মুহূর্তে সে আমার আত্মীয় হয়ে যায়।
হ্যালো সোমা, আমি কি তোমাকেই খুঁজছি?
যদি সেই সোমা হয়ে থাকো, তাহলে জলদি বলো, এই যে তুমি বেঁচে আছো-
এ কোনো স্বপ্ন নয়। জলদি বলো- তুমি খুব ভালো ছিলে। সুস্থ ছিলে।
এরপর শোনো, তোমাকে এতোদিন হন্যে হয়ে খুঁজেছি।
তুমি বেঁচে আছো- শুধু এটুকু জানতেই আমার মন সারাক্ষণ ছটফট করেছে।
বলো সোমা- তুমি কি বেঁচে নেই?
তুমি কি সত্যিই বেঁচে নেই?
একটা জীবন্ত সম্পর্ক মরে যেতে পারে না,
তোমাকে, বা তোমার ফসিল আমি খুঁজছি।
তাহলে, অন্য যে-সোমাই তুমি হও না কেন,
তুমি ভালো থাকো- ভালো থেকো।
যদি দৈবাৎ সেই সোমা তুমি না হয়ে থাকো, তবে
আমার সোমার জন্য প্রার্থনা কোরো- যেন সোমা বেঁচে থাকে,
যেন সুখে থাকে, সোমা যেন নিরাপদে থাকে।
এরপর কোনোদিন যদি আমার সোমাকে তুমি খুঁজে পাও,
তাকে বোলো, ‘বাংলাদেশের এক অজগ্রাম থেকে
তোমাকে খুঁজছিল তোমার জন্মগ্রন্থিত ভাই,
যে তোমাকে আজও খুঁজছে, হয়তোবা তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে
এতোদিনে সীমান্ত ছুঁয়েছে, হয়তোবা এমনও হতে পারে-
সীমান্ত পেরিয়ে এখন সে নিজেই নিখোঁজ হয়েছে।’
১৫ মে ২০১৪
পাদটীকা
আমার গত পোস্টেও এ ছবিটা দেয়া হয়েছিল। ছবির মেয়েটা কে- এ প্রশ্ন ছিল অনেকের। মেয়েটার নাম সোমা। সে কবিতা লেখে, গল্প বা আর্টিকেল লেখে। আবৃত্তি করে, অভিনয় করে। শিল্পের অনন্য কলাগুলো তার মুখস্থ। আমি তার ঠিকানা জানি, পরিচয় জানি। কিন্তু তাকে আমি খুঁজে পাই না।
সে বেঁচে আছে- এটাই আমার সবচেয়ে বড় চাওয়া।
উৎসর্গ
আমার গত পোস্টটি যাঁরা পড়েছেন, তাঁদের সবাইকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:৫২