somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাগের ডগায়ই রাজধানীর যানজটের উৎস্য

২৫ শে মে, ২০১১ রাত ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বর্তমানে রাজধানীর যানজট এমন একটি দুর্ভোগ যা জীবনকে বিতৃষ্ণা করে তোলছে। সকাল, দুপুর, বিকাল, সন্ধ্যা কিংবা মধ্যরাতেও দূর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। ছোট্ট শিশু, যুবক, বৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি, সরকারী ও বেসরকারী চাকুরীজীবি, সাংবাদিক এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তাসহ সকল শ্রেণীর মানুষ এই যানজটের শিকার যা খুব কষ্টকর। প্রতিদিন যানজটে পড়ে অপব্যয় হচ্ছে মূল্যবান তেল ও গ্যাস, ফলে পরিবহন মালিকরা বেশি ভাড়া নিয়েও লাভবান হতে পারছে না এবং যাত্রীরাও বেশিভাড়া দিয়েও সামাল দিতে পারছে না, নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা। ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের তথ্য অনুযায়ী, যানজটের কারণে সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।


বছরের পর বছর বিভিন্ন ভাবে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সকলের অনেক প্রচেষ্টার দ্বারা এবং অধিক অর্থের বিনিময়েও যানজট সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। তার প্রধান কারণ হচ্ছে প্রকৃত সমস্যা নির্ণয়ে ত্র“টি। যে কারনে ১০/১৫ বছর যাবত বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করার পরও তেমন কোন সুফল পাওয়া যায় নাই।


অনেকেই যানজটের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে অফিস আদালত, প্রাইভেটকার ও জনসংখ্যা। তাহলে ১৫বছর আগে কেন যানজট ছিল? সেই সময় তো জনসংখ্যা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং গাড়ীর পরিমাণও কম ছিল। বর্তমান এখনও এর ছোট্ট একটি প্রমাণ হলো শুক্রবার। এই দিনে সকল প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত বন্ধ থাকে। তারপরও যানজটের হাত থেকে রক্ষা নাই। এখানেই প্রমাণিত হয় যে জনসংখ্যা, গাড়ীর চাপ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এগুলোই যানজটের প্রধান কারণ নয়।

আরেকটি উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, মাত্র ২ লেনের সড়ক হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। কিন্তু দৈনন্দিন অতিদ্রুত এবং অধিক গাড়ী ২৪ঘন্টা চলাচল করে এই মহাসড়কে। কোন প্রকার দুর্ঘটনা ছাড়া তীব্র যানজটের স্বীকার হতে হয় না। তার কারণ হচ্ছে ঐ সব প্রধান সড়কে সংযোগ সড়ক খুবই অল্প যার কারণে প্রধান সড়কের গাড়ী গুলো বাধা গ্রস্থ হয় না এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘন্টায় ৬০/৮০/১০০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে।


অপর দিকে ঢাকার ভিতরে প্রতি ঘন্টায় ১০/১৫ কি:মি: চলা যায় কিনা তারও নিশ্চয়তা নাই। ৫মিনিটের রাস্তা কখনো ৩০মিনিট কখনো ৪৫মিনিট সময় লাগে। তার প্রধান কারণই হচ্ছে ঢাকার তিন রাস্তা / চার রাস্তার সংযোগ সড়ক বেশি। তেমনি এক নতুন সংযোগ সড়ক হচ্ছে বিজয় স্মরণী লিংক রোড। এর ফলে আগে এখানে এত তীব্র যানজট ছিল না। কিন্তু বর্তমানে এই সংযোগ সড়কের কারনেই তীব্র যানজটের স্বীকার হচ্ছে সকল যানবাহন। এর তীব্রতা মহাখালী ফ্লাইওভার পর্যন্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে।



আমার গবেষণায় যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে নিরবচ্ছিন্নভাবে যানবাহন চলতে না পারা।

আর রাজধানীতে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে চলতে না পারার অন্যতম কারণ হিসেবে আমার গবেষণায় উৎঘাটন করেছি সিগন্যালের লালবাতি/তিন/চার রাস্তার মোড়। পর্যাপ্ত সড়ক থাকা সত্বেও সিগন্যাল / লালবাতির আওতায় সকালের শুরু থেকে রাজধানীতে যানজটের উৎপত্তি। একটি তিন রাস্তা / চার রাস্তার সিগন্যালের কারণে প্রধান সড়ক সহ সংযোগ সড়ক গুলোর যানবাহন বার বার বাধাগ্রস্থ হয় এবং তীব্র যানজটের স্বীকার হয় এবং গাড়ী গুলো ধীর গতির হয়ে স্থীর হয়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশ এক পাশের গাড়ী গুলোকে চলার সুযোগ করে দিতে গিয়ে আরও কয়েক লেনের গাড়ীকে লাল সিগন্যালের আওতায় স্থগিত করে দিতে হয়। প্রযুক্তির অভাবেই বহু বছর যাবৎ এই যানজটের সমস্যা। যার কারনে কিছুক্ষণ এই লেন সচল করে ঐ লেন বন্ধ করে এবং ঐ লেন সচল করে এই লেন বন্ধ করে। পর্যাপ্ত সড়ক থাকা স্বত্ত্বেও চলমান গাড়ী গুলো বাধাগ্রস্থ হয় এবং অপেক্ষা করতে হয়। এই অপেক্ষার কারনে ঐ গাড়ী গুলো যেখানে কয়েক কিলোমিটার চলে যেতে পারত এবং তার পিছনের গাড়ী গুলো অগ্রসর হয়ে চলে আসতে পারত। সেখানে এই অপেক্ষার ফলে পিছনের গাড়ী সামনের গাড়ী এক সাথে জড়ো হয়ে যাচ্ছে এবং সিগ্যানাল ছাড়ার পর হুলুস্থুল করে ছুটাছুটি করছে। এভাবে চলতে চলতে এক পর্যায়ে চারপাশের সড়ক ব্লক হয়ে যায় এবং নগরীতে দুুঃর্বিসহ যানজটের সৃষ্টি হয়। তখণ ট্রাফিকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আশ্চর্যের বিষয় হলেও সত্য যে, এই পদ্ধতিতে ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন সড়কই বিভিন্ন সময়ে অব্যবহৃত থাকে সিগন্যাল / লালবাতির কারণে। এই চলমান গাড়ীকে বাধা সৃষ্টি এবং অব্যবহৃত সড়ক প্রকৃতভাবে ব্যবহার না হওয়ার কারণেই প্রধান সড়ক এবং শাখা সড়ক গুলোতে যানজটে স্থির হয়ে থাকে।
Click This Link





বাংলাদেশসহ বহু দেশ বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহন করেছে। এই যানজটের নিরসনের জন্য বিভিন্ন ব্যয় বহুল ফ্লাইওভার / এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প গ্রহন করেছে। কিন্তু তারপরও এর প্রকৃত সমাধান হয়নি। তার একটাই কারণ সঠিক রোগ নির্ণয়ের ক্রুটি। উড়ালেই সমাধান তা নয়, আসলে আমাদের জানা ছিলনা কোথা হতে অল্প উড়াল দিলে এর সমাধাণ হবে। যে কারণে বিভিন্ন স্থানে ফ্লাইওভার / এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ফলে প্রকৃত সমাধান না হয়ে বিপরীতে সহজ ভাবে এর সমাধাণের প্রযুক্তি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।




আমার গবেষণার কয়েকটি ভিডিও দেওয়া হলো ঃ-


http://www.youtube.com/watch?v=3R7UrCOSrAU


http://www.youtube.com/watch?v=5LzA2J4S164


http://www.youtube.com/watch?v=3GI32gQbU5c
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×