সারাদিন কোনো ভাবে গেলেও সন্ধ্যা হতেই আবার বেড়িয়ে পরে অনন্ত। সেই একই ভাবে আবারও যেয়ে দাড়ায় নীলার বাসার সামনের গলির মুখে। অনন্ধকারে দাড়িয়ে একটার পর একটা সিগারেট পুড়িয়ে যায়। আজকেও দেখা হয়না নীলাকে। খুব অস্থির লাগতে থাকে ওর, ইচ্ছে হয় চিৎকার করে নীলাকে বলতে "নীলা একবার এসে বারান্দায় দাড়াও, কয়েকটা সেকেন্ডের জন্য হলেও, আমি তোমাকে একবার দেখেই ফিরে যাবো নীলা"। অনন্তর মনে মনে বলা কথা হয়তোবা নীলাও শুনতে পায়, আস্তে করে এসে দাড়ায় বারান্দায়, কেন জানি নীলার বার বার মনে হচ্ছিলো আজকেও অনন্ত এসে ওই জায়গায় দাঁড়াবে।যতবার সিগারেটের আলো জলে উঠেছে ওই আলোয় নীলা দেখেছে অনন্তর মুখ। অন্ধকারে নীলাকে দেখা যায়না তাই অনন্ত দেখতেও পায়না আর জানতেও পারেনা ওর থেকে ১০০গজ দুরেই নীলা দাড়িয়ে আছে। হয়তো হাত বাড়িয়ে ধরা যাবেনা কিন্তু নিঃশ্বাস দিয়ে হয়তোবা যাবে। আজকেও তিরিশ মিনিট পরে অনন্ত ফিরে যায়।
অনন্ত চলে যাবার পর আজকে নীলার জানি কেমন লাগতে থাকে। এই প্রথম কোন ছেলের জন্য একটু খারাপ লাগে।আহারে বেচারা ওকে একটু দেখার জন্য অন্ধকারে দাড়িয়ে থাকে। কালকে অনন্ত আবার আসবে নীলা জানে। কালকে অনন্ত এলে একবার বারান্দার আলো জ্বালিয়ে দেবে, অবশ্যই দেবে।
ফারজানা মিতু
উপন্যাস- ভালোবেসে রুমাল দিতে নেই
একুশে বইমেলা ২০১৬
প্রকাশক- দিব্য প্রকাশ