somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড ২০১৫ঃ ক্যাপাসিটি অবজার্ভেশন ও উত্তরণের দিক সমূহ

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড সামার পিক হিসেবে ৮,১৭৭ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড করেছে ১৩ আগস্ট ২০১৫ ইং তারিখে।



গ্রাফ ০১ ব্যাকগ্রাউন্ডঃ
বার গুলো যথক্রমে ৯ টি BPDB জোন এর পাওয়ার স্টেশনের নিমিনাল ইন্সটলেশন ক্যাপাসিটি (জোন এর গড়), একচূয়াল উৎপাদন সক্ষমতা (জোন এর গড়), ১৩ আগস্ট ২০১৫ এর একচুয়াল উৎপাদন (জোন এর গড়) এবং একই জোনে গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সংখ্যা দেখানো হয়েছে। উল্লেখ্য ১৩ আগস্ট ২০১৫ বাংলাদেশে রেকর্ড ৮১৭৭ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে।

Installed Capacity (Avg)-নীল বার, Derated Capacity (Avg)-মেরুণ বার, Actual Peak Evening (Avg)-সবুজ বার। Actual Peak Day-বেগুনী বার টা ভ্যালূ হিসেবে আনি নাই, বরং পাওয়ার স্টেশনের সংখ্যা দেখানোর জন্য ব্যবহার করেছি। যেহেতু ইভনিং পিক ডে পিক হতে বেশি, তাই ডে পিকের হিসেব অগুরুত্ব পুর্ন।

ক্যাপাসিটি অবজার্ভেশন

১। ৮১৭৭ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উতপাদনে মোট ১০৮ টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র লেগেছে। (নোট- লং টার্ম মেইন্টেনেন্স এর আওতাধীন ৯ টি প্ল্যান্ট সহ মোট ১৬টি কেন্দ্র উৎপাদনে যায়নি কিংবা বন্ধ ছিল, মোট প্ল্যান্ট হিসেবে এই সংখ্যা ১১৭)। জ্বালানী ইফেসিয়েন্সি, ক্যাপেক্স এবং ওপেক্স সকল কস্ট হিসেবে এত অধিক সংখ্যক প্ল্যান্টের এর মাধ্যমে মাত্র ৮১৭৭ মেগা ওয়াট ডেলিভারি আন্তর্জাতিক স্টান্ডার্ড এ ঠিক কোন অবস্থানে রয়েছে, সেটা বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড এর ইভালূয়েশন করা টা গুরুত্ব পুর্ন।

২। ঢাকা খুলনা সিলেট রংপুর জোনের ডি-রেটেড ক্যাপাসিটির তুলনায় ইভনিং পিক যথেষ্ঠ কম! এটা এই জোন গুলোর নিন্ম উৎপাদন ইফিসিয়েন্সি কিংবা নিন্ম মেইন্টেনেন্স ইফিসিয়েন্সি নির্দেশক।


গ্রাফ ০২ঃ ইন্সটল্ড কিং ডি-রেটেড ক্যাপাসিটির সাথে ইভনিং পিক এর ডিফারেন্স

৩। বরিশাল (১ম) এবং রাজশাহী (২য়) জোনের একচুয়াল উৎপাদন ইন্সটল্ড কিংবা ডি-রেটেড ক্যাপাসিটির খুব কাছাকাছি, যা এই কেন্দ্র গুলোর বা জোনের উৎপাদন ইফিসিয়েন্সি কিংবা উচ্চ মেইন্টেনেন্স ইফিসিয়েন্সি নির্দেশক। এই ধরনের সক্ষমতা আনয়ন এবং সময়ের সাথে তা ধরে রাখা জোন গুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ।

৪। কুমিল্লা জোনে ২০ টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে ৬৪,১৫ মেগাওয়াট করে উৎপাদন করছে। জ্বালানী ইফেসিয়েন্সি, ক্যাপেক্স এবং ওপেক্স সকল কস্ট হিসেবেই এত বেশি ছোট ছোট কেন্দ্রের উপস্থিতির এই চিত্র খুব হতাশা জনক। রাজশাহী জোনে ১৩টি প্ল্যান্ট গড়ে ৫৮.৬৯ মেগাওয়াট করে উৎপাদন করছে।

৫। অন্তত ৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন সক্ষমতা এবং ইভনিং পিক ডেলিভারির পার্থক্য ছোখে পড়ার মত!



৬। লং টার্ম মেইন্টেনেস ২ টি খুব ছোট ( মাত্র ৩২ ও ৬৪ মেগাওয়াট) বিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে যা অবাক করার মত।

৭। ১২ টি অতি নগন্য সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে! এগুলো বা এধরনের প্ল্যান্ট বন্ধ করা জরুরী।




৮। রেকর্ড উৎপাদনের এর দিনে উৎপাদন ইন্সটল্ড প্ল্যান্ট এবং ডি রেটেড ইন্সটল্ড প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটির যথাক্রমে ৬৮,৮৫% ও ৭২.৫%। এটা সম্ভবত জেনারেশন এবং মেইন্টেনেন্স ইন ইফিসিয়েন্সি বাস্তব নির্দেশক। উল্লেখ্য বাংলাদেশের মোট পাওয়ার প্ল্যান্টের ইন্সটল্ড হার্ড-ওয়ার ক্যাপাসিটি ১১,৮৭৭ মেগাওয়াট এবং প্ল্যান্ট গুলোর সম্মিলিত ডি-রেটেড ক্যাপাসিটি ১১২৮২ মেগাওয়াট।



ব্যাখ্যাঃ আমাদের পুরানা গ্যাস জেনারাটর গুলোর ইফিসিয়েন্সি মাত্র ২৫-৩০% (ম্যাক্স)। কারন মেয়াদ উত্তীর্ন বিদেশি গ্যাস জেনারেটর ক্রয়, শুধু প্ল্যান্ট চ্যাঞ্জ করে বা আধুনিক প্ল্যান্ট দিয়ে প্রায় অর্ধেক গ্যাস বেইজড প্ল্যান্ট থেকে একই ফুয়েল খরচে দ্বিগুন বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।

৯। বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ডঃ প্রতিটি গ্রীষ্ম কালীন মাসেই এক একটি নতুন রেকর্ড কাম্য, যা কন্টিনিউয়াস ডেভেলপমেন্ট এবং ইফিসিয়েন্সি নির্দেশক।


[প্রাসঙ্গিক একটা কথা বলি,
গত তত্তাবধায়ক আমলে জাইকার অর্থায়নে চমৎকার একটা কাজ হয়েছে, পাওয়ার জেনারেশন এ জাপানি ডিজাইনাররা একটা মাস্টার প্ল্যান বানিয়ে দিয়েছিল। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটি বাস্তবায়ন শুরু করেছে, এটা খুব ভালো বিষয়।

(০১। কুইক রেন্টাল এর অতি দীর্ঘ লাইফ টাইম এর চুক্তি, ০২। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ এর রেট দিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং বাজেটে এর ভর্তুকি প্রভিশন রাখা, ০৩। কুইক রেন্টাল প্ল্যান্ট গুলো বিদেশ থেকে কিনা পুরানো জেনারেটর,এগুলো জ্বালানী সাশ্রয়ী না, এগুলোর ম্যাক্স ইফিয়েসিয়েন্সি ২০-২৫%। এই তিনটি বিষয় বিদ্যুৎ খাতের হোল!) লো পার্ফর্মিং প্ল্যান্ট গুলোর অনেক কটাই কুইক রেন্টাল, এই ফাঁদ থেকে মুক্তি জরুরি।

ফাইনালি, প্রাইম মিনিস্টার বুঝতে পেরেছেন পাওয়ার (ইলেক্ট্রিসিটি!) দরকার, এটা একটা ভালো দিক। যেটা আগের সরকার বুঝেই নাই! ]


আমরা চাই, বিদ্যুৎ খাত দুর্নীতি মুক্ত হোক।
মেইন্টেনেন্স সহ যে যে কারিগরি খাত গুলোতে নজর দিলে ইফিসিয়েন্সি বাড়বে, তা সততার সাথে করা হোক।

অতি ইনভেস্ট ইনভল্ভড এই খাত অতি দুর্নীতি থেকে মুক্ত হয়ে উপর্জপুরি বিকশিত হোক,
বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!



ডেটা সোর্সঃ বি পি ডি বি ডেইলি পাওয়ার জেনেরেশন, ১৩ অগাস্ট ২০১৫ দিনের।
ডেটা প্রসেসঃ ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, সবাক নির্বাক স্ট্যাডি। ​
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৩
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×