somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এক নিরুদ্দেশ পথিক
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব,ইইই প্রকৌশলী। মতিঝিল আইডিয়াল, ঢাকা কলেজ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।টেলিকমিউনিকেশন এক্সপার্ট। Sustainable development activist, writer of technology and infrastructural aspects of socio economy.

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের ট্রেন্ড ব্রেক- একটি ক্রিটিক্যাল পর্যালোচনা

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
​বাংলাদেশ এক্সটার্নাল ডেবট-এর (বৈদেশিক ঋণের) ট্রেন্ড ব্রেক ফেইজ গুলোর সাম্প্রতিক বিন্যাস মোটামুটি এরকম-


১৯৯৪ থেকে ২০০১ (অতি নিয়ন্ত্রিত বৈদেশিক ঋণ)
২০০১ থেকে ২০০৪ (৪.৫ থেকে ৫.৫% জিডিপির উর্ধগতির সাথে সামঞ্জস্য পুর্ণ উর্ধগতি)
২০০৫ থেকে ২০১২ (৫.৫ থেকে ৬% জিডিপির উর্ধগতির সাথে সামঞ্জস্য পুর্ণ উর্ধগতি)
২০১৩ থেকে ২০১৭ (বল্গাহীন উর্ধগতি)


বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের ট্রেন্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ২০০৫ থেকে ২০১২ সময়ে এই ট্রেন্ড মোটামুটি একই। মানে বাংলাদেশ এক্সটার্নাল ডেবট এর ট্রেন্ড বৃদ্ধির উচ্চ হার ছিল কিন্তু তা ডেবট টু জিডিপি রেশিওকে নিয়ন্ত্রনে রেখে হয়েছে, এই সময়ে বাংলাদেশের ঋণ স্বাধীনতা অব্যবহতি পরের ৪০ বছরের স্থিতির তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি। মানে এই সময়ে জিডীপি বাড়লেও বাংলাদেশ তার বৈদেশিক ঋণ জিডিপির বিপরীতে নিয়ন্ত্রিত করে এনেছিল (বরং এই সময়ে এক্সটার্নাল ডেবট টু জিডীপি রেট কমেছে)। এটাকে বলা যেতে পারে জনাব "সাইফুর রাহমান এবং শাহ এসএমএস কিবিরিয়া" সাহেবদের নিয়ন্ত্রিত বৈদেশিক ঋণ নেয়ার কঞ্জার্ভেটিভ প্রথা, এই সময়ে গড়ে জিডিপি ৫.৫ থেকে ৬% করে বেড়েছে। এই ফেইজের লাইফ টাইম ১৯৯৪ থেকে ২০১২।



২০০৫ পরবর্তি সময়ে ২০১৬ পর্যন্ত গড় জিডিপি বর্ধনের হার আনুমানিক ৬%, তথাপি ২০১৩ এর পরে এসে বৈদেশিক ঋণ বল্গাহীন!

২০১৩ থেকে ২০১৭, মাত্র ৫ বছরেই বল্গাহীন ঋণের বর্তমান ফেইজে বাংলাদেশের ফরেন ডেবট প্রায় সাবেক ৪০ বছরের মোট ঋণ স্থিতির ২গুন পেরিয়ে ৩ গুনের দিকে ছুটছে।

২০১২ এ দেশের মোট বৈদেশিক ঋণ ছিল ২২ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার এর মত।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্যমতে, বর্তমানে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার। >>৩৭ বিলিয়ন ডলার।

তবে চীনের ঋণ (২৪ বিলিয়ন ডলার) যুক্ত হলে দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ছয় হাজার ১৪৫ কোটি ডলার।>৬১.৪৫ বিলিয়ন ডলার। ইতিমধ্যেই আগের ভারত চীন এবং রাশান ঋণে মাত্র ৪-৫ বছরে (২০১৩-২০১৭) মাথায় বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ৩ গুন হতে চলেছে!

এর পরবর্তিতে ২০১৭ তে বিশ্ব ব্যাংকের প্রস্তাবিত জলবায়ু বিষয়ক ঋণ নিলে তা ২০১২’র ডেবট ভলিয়মের ৩গুণ পেরুব।


গুগল পাবলিক ডেটা, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এর ডেটা অনুযায়ী।

২০১৩ এর নির্বাচনী বছরে শুরু হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি, সেটেল্ড নির্বাচনী প্রথা তত্বাবধায়ক ভেঙে দেয়া এবং একদলীয় নির্বাচনী সহিংসতার প্রেক্ষাপটে দেশে ব্যবসার পরিবেশে আস্থার সংকট সৃষ্টি জনিত কারনে উদ্ভূত বিদেশে বেপারোয়া অর্থ পাচার (আরও ৭৬ হাজার কোটি টাকা পাচার) এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ কমে আসার মূখে অগণতান্ত্রিক সরকার নিয়ন্ত্রিত বৈদেশিক ঋণ নেয়ার কঞ্জার্ভেটিভ প্রথা থেকে বেরিয়ে এসে বল্গাহীন উর্ধগতিতে বিদেশ থেকে প্রাপ্ত নির্বাচনহীন সরকারের সমর্থন দান এবং আঞ্চলিক ক্ষমতার বুঝাপড়ার উপর ভিত্তিক করে নির্দিস্ট কিছু দেশ থেকে দ্বিপাক্ষিক ঋণ দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা ডলার এবং ইউরোর এর বর্তমানের ব্যাংক সুদের (০,৩৫% থেকে ০,৫%, ইনভেস্টমেন্ট লোনের) তুলনায় দ্বিপাক্ষিক ঋণ গুলোর সুদ অতি মাত্রায় বেশি (১,০ থেকে ২,৫%)। বক্তব্য হোল মাত্র ৫ বছরে একটি দেশ তার ফরেন ডেবট দ্বিগুন বা তিনগুন করতে পারে না, এটা একটা খুব খারাপ বার্তা, এর কারনে ভবিষ্যতের ঋণে সুদ আরো বেশি বাড়বে (ক্রেডিট রেটিং কমবে) এবং অর্থনীতিকে ঋণের সুদ-আসল পরিশোধেই ব্যস্ত থাকতে হবে। সুদ পরিশোধে ব্যয়ের চাপ! সুদ পরিশোধের জন্য সরকারকে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে, তা দিয়ে মোট বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির পাঁচ ভাগের দুই ভাগ ব্যয় মেটানো সম্ভব৷


২০১৪ তে এসে বাংলাদেশকে বছরে ১.৭৫+ বিলিয়ন ডলার সুদ-আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে! এটা ২০০৬ পুর্ববর্তী সময়ের প্রায় ৩ গুণ যা ২০১৭ তে একটি অস্বাভাবিক উচ্চতায় যাচ্ছে! মোট ৩,৫৬ বিলিয়ন ডলার ভিতরের ও বাইরের ঋণের সুদ। ২০১৪ অর্থবছরে অনুন্নয়ন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য ছিল এক লাখ ৫৫ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা৷ বাজেট দলিল অনুসারে এর ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ চলে যাবে সুদ পরিশোধের জন্য, যার পরিমাণ ২৭ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা৷

যেহেতু ৫ বছরেই মোট ফরেন ডেবট ২২ বিলিয়ন ডলয়ার থেকে ৬১ বিলিয়ন এর বেশি হয়ে যাচ্ছে তাই বিশ্ব ব্যাংক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফাইনান্সিয়াল হাউজ আগের মত কম সুদে টাকা দিতে পারবে না ক্রেডিট রেটিং এর অধগমনের উল্লম্ফের কারনে। অর্থাৎ এক্সটার্নাল ডেবট টু জিডিপি এর উচ্চ হারের কারণে দেশের ভবিষ্যৎ প্রকল্প গুলো অধিক খরুচে হয়ে উঠবে।


২০১২ থেকে বাংলাদেশের ফিচ, মুডী, এস এন্ড পি রেটিং এজেন্সি গুলো বাংলাদেশকে BB- ব্যান্ডে রেটিং করে আসছে। টিই রেটিং এ এটা ৪০। গ্রীসের ঋণ খেলাফি হবার প্রেক্ষিতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তার সদস্য দেশ গুলোকে রেটিং ৬০% এর উপরে আনার নির্দেশনা দিয়েছে। অথচ বল্গাহীন বৈদেশিক ঋণের হঠাত উচ্চ প্রবাহ বাংলাদেশের টিই রেটিং ৩০-৩৫% এর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। (উল্লেখ্য বাংলাদেশ দীর্ঘদিন নন ইনভেস্টমেন্ট ব্যান্ড (Non-investment grade speculative) টিই-৪০, মুডি-বিএ৩, ফিচ-বিবি- এ স্ট্যাবল ছিল, বর্তমানের ঋণ এই ব্যান্ডে নেগেটিভ স্ট্যাগ পাবার উপযোগীতা সৃষ্টি করেছে)। ) তাছাড়া নির্বাচনী সাম্যাবস্থার অবর্তমানে আবারো রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হলে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, রপ্তানি খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা হ্রাস পাবে, ভোক্তাদের আস্থা, ঋণপ্রবাহ, রাজস্ব আদায় হ্রাস পাবে,যা মূল্যস্ফীতিতে উস্কে দিতে পারে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দুরদর্শী হওয়া বাঞ্চনীয়।

(আগেই বলেছি গণতান্ত্রিক নিয়মতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকায় বাংলাদেশ সরকারের ডেবট দ্বিপাক্ষিক নেগোসিয়েশন পাওয়ার একেবারেই হ্রাস পেয়েছে) বর্তমানের অতি সীমিত পরিসরের স্বল্প নেগোসিয়েশনের বৈদেশিক ঋন গুলোর শর্ত এমন যে, যন্ত্র/মেশিনারি, পণ্য, সার্ভিস, সাপোর্ট, কাঁচামাল, ডিজাইন এন্ড প্ল্যানিং, ইমপ্লিমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বাস্তবায়নের ঠিকাদারি সহ সমুদয় কাজের প্রায় ৮৫% ঋণ দান কারী দেশ থেকে নেয়া বাধ্যতামূলক।

উদাহরণ স্বরূপ রুপপুরের প্রকল্প ঋণের প্রসঙ্গ টানা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার। আর রূপপুর প্রকল্পে এককভাবে ঋণ নেওয়া হবে এক হাজার ১৩৯ কোটি ডলার। এ ঋণের সুদের হারও বেশি। লন্ডন আন্তব্যাংক অফার রেটের সঙ্গে (লাইবর) অতিরিক্ত ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে এ ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে। এ সুদ বিশ্বব্যাংকের নমনীয় ঋণ সংস্থা আইডিএর সুদের চেয়ে অনেক বেশি। এ ঋণ এক লাফে সরকারের সার্বিক বৈদেশিক ঋণ প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাড়িয়ে দেবে।

পদ্মায় আমরা দেখেছি ১ মাত্র ঠিকাদার থেকেই তাকে বিনা শর্তে নিয়োগ দিতে হয়েছে। এতে পদ্মা সেতুর ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। মানে ঋণের টাকার সক্ষমতা "দুর্নীতি এবং কম নেগসিয়েশনের কারনে" কমে যাচ্ছে। আর্থত ২টি ব্রিজের টাকা দিয়ে ১ টা হচ্ছে। শুধু একটাই ১% জিডিপি গ্রোথ বাড়াবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। মানে এই ঋণ জিডিপিতে যে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সৃষ্টির কথা তাকে নস্যাৎ করে ফেলা হচ্ছে একদিকে। জিডিপির বর্তমান সক্ষমতা এত দিনের কঞ্জার্ভেটিভ ঋণ নেয়ার এপ্রোচের কারনে মানে স্বাধীনতার প্রথম ৪০ বছরের ক্রেডিট রেটিং এর মারফতে যাকে ব্রেক করে ফেলা হচ্ছে খুব কম সময়েই যা অবাক করার মত।

টেলিটকের ঋণের কেইস নিয়ে বলা যায়। ৩০০ মিলিয়ন ডলার চাইনিজ ইকুইপমেন্ট নেয়ার হয়েছে শর্ত মত চীনের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। সেটাতে আমার আপত্তি নেই, চাইনিজ্রা ভালো প্রোডাক্ট বানায়। কিন্তু এই ঋণে ট্রেনিং, টেকনোলোজি ট্রান্সফারের উইন্ডো ছিল না। লোকাল রিসোর্স ডেভেলপ করার কথা নেই। ফলে টেলিটক এর শেয়ার এখনো ১%, সবার আগে ৩জি ছাড়ার পরেও। এমনকি নেটওয়ার্ক পারফর্মেন্সের রিপোর্ট যেটা চাইনিজ ভেন্ডর থেকে দেয়া হয় সেটা যাচাই করার মত লোক টেলিটকে নেই।

ভারতীয় ঋণের ক্ষেত্রে সুদ কন্ডিশনালি ১%, বিশ্ব ব্যাংকের সুদের ২ গুণ (বর্তমান ক্রেডিট রেটিং বিবি- এ সুদ ০,৫ ০,৫৬%), কিন্তু প্রকল্প ২ বছরের মধ্যে পুরোপুরি অর্থায়ন না করলে সুদ ২% এর উপরে মানে বিশ্ব ব্যাংকের সুদের প্রায় ৪ গুণ (বাংলাদেশের প্রজেক্ট বাস্তবায়ন বাস্তবতায় এই শর্ত মানা অসম্ভব, তাই আদতে ভারতকে ২% হারে সুদ গুন্তে হবে!)।

এই ধরনের সুকঠিন শর্ত যুক্ত বৈদেশিক ঋণ জিডিপির ভলিউম কিছু বাড়াবে করবে ঠিক, কিন্তু দেশের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এক্সসিলেন্স এর কিছু যোগ হবে না, দেশের কর্মসংস্থান সংখ্যা এবং কর্মসংস্থান এর মান বাড়বে না। বরং বাংলাদেশে বিদেশি শ্রম বাজার উন্মুক্ত করছে, দৃশ্যমান ভাবেই অন্যরা এর সরাসরি সুফল নিচ্ছে। মানে বাংলাদেশের জিডীপির উচ্চ হার তাঁর নিজের নাগরিকের মান সম্পন্ন কর্মিসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা রাখছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ১০-১৫ হাজার টাকা বেতনের জব খুঁজছেন দিনের পর দিন, এটা এই বাজারে কষ্ট অফ লিভিং এর সাথে যায় না। অন্যদিকে ভারত তার বিদেশ ফেরত স্নাতকদের আত্মীকরন করছে, আমাদের সমবয়সীরা ভারতে আরো বেশি বেতন এবং মানসম্পন্ন কাজের পরিবেশ উপভোগ করছেন।


বাংলাদেশের বাজেট ভলিউম এবং ফরেন ডেবট এর শার্প রাইজিং কার্ভ এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে এমপ্লয়মেন্ট ভালনারেবিলিটি শার্প ডিক্লাইন করছে না!

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ একদিকে অনিয়ন্ত্রিত অন্যদিকে এমন শর্ত যুক্ত যা অভ্যন্তরীণ পণ্য, সেবা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির অনুকূলে নয়। এটা বর্তমান জেনারেশনের জন্য একটা বার্তা।

উন্নয়ন মহাসড়কে বাংলাদেশের এই ঋণ করে ঘি খাবার গল্প এখানেই শেষ নয়, এর জন্য রয়েছে বৈদেশিক ঋণের টাকার প্রকল্পে হরিলুটের বল্গাহীন আয়োজন। বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা শ্রমের দেশে, নিজস্ব স্টীল, পাথর, গ্যাস এবং সিমেন্ট কাঁচামাল হিসেবে থাকার পরেও রাস্তা, সড়ক, সেতু, উড়ালসেতু, নন ইলেকট্রিক রেল ট্র্যাক বানানোর প্রাক্কলিত ব্যয় প্রকল্প শুরুর ফেইজেই বিলিয়ন ডলার করে বাড়ছে। আমাদের দেশে কিমি প্রতি অবকাঠামো তৈরিতে বিশ্বে সবেচেয়ে বেশি রেটে খরচ হতে শুরু হয়েছে সম্প্রতি, তার পরেও আমাদের কোন মেগা প্রজেক্টর কাজই এগুচ্ছে না! পদ্মা সেতুর ব্যয় এবং সময় বৃদ্ধি আমাদের উন্নয়ন প্রকল্প অপ-বাস্তবায়নের উদাহরণ হয়ে রইবে (১ বিলিয়ন ডলার করে ২টি একনেক বৈঠকে ২ বিলিয়ন ডোলার শুধু ব্যয়-ই বেড়েছে, সময় বেড়েছে ২০১৫ থেকে ২০২০)। ব্যয় বৃদ্ধির ইউনিটই হচ্ছে আধা থেকে ১ বিলিয়ন ডলার! (এই প্যারার বিপরীতে সোর্স গুলো নিচে দেয়া আছে )

অর্থাৎ ঋণ এনে তা কার্জকর ভাবে (দুর্নিতিহীন এবং দ্রুততায় একই ঋণের সক্ষমতা বাড়ানো ) ব্যবহার করে ঋণের বিপরীতে প্রিন্সিপাল+ইন্টারেস্ট ফিরিয়ে দিবার জন্য দ্রুত “মানি মেকিং বা সেভিং বা ফ্লোয়িং বা অপরচুনিটি ক্রিয়েশন ফেইজে” যাবার যে বিজনেস কেইস তা বাংলাদেশ অতি দুর্নীতির বশবর্তী হয়ে মানছে না।

পোস্টের মূল বক্তব্য (কিছু থিউরিটিক্যাল রাজনৈতিক দলের) মত করে সামগ্রিক অর্থে পুরো ঋণ নেয়াকেই বিরোধিতা করা নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা বলা যে "বাংলাদেশ বল্গাহীন ভাবে ঋণ নিচ্ছে এতে সতর্ক হওয়া দরকার, আন নেগোশিয়েটেড ঋণ দেনায় দায় বাড়াবে (ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাথা পিছু বৈদেশিক ঋণ) এবং দুর্নিতি ঋণের টাকার সক্ষমতা হ্রাস করছে""।

মাত্র ৫ বছরের (২০১২-২০১৭) মাথায় বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ৩ গুন হতে চলেছে! যে শিশু আজ জন্মাচ্ছে কিংবা ২০১৭তে জন্মাবে তার উপর বৈদেশিক ঋণের দায় কত হবে?

এর ফলাফল কি হবে? “ দ্যি এন্সার ইজ ব্লোয়িং ইন দ্যি উইন্ড”!


সোর্সঃ

মহাসড়ক নির্মাণ বিশ্বে সবচেয়ে ব্যয়বহুল হচ্ছে বাংলাদেশ
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা চার লেন- মন্ত্রণালয়ের আপত্তির পরও ৯৩৩ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি
পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বাড়ল ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা
দোহাজারী-গুনধুম রেলপথ নির্মাণে অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাব
প্রকল্পের টাকায় বিলাসঃ পরামর্শকের জন্য ১০৬ গাড়ি
অনুমোদন পাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সড়ক ও রেলপথ
দ্বিগুণ ব্যয়ে দ্বিগুণ সময়েও কাজ শেষ হচ্ছে না

(নোট-বণিক বার্তার নতুন ওয়েব এডিশনে লিংক কাজ করছে না, শিরোনাম এবং বণিক বার্তা দিয়ে গুগল সার্চ দিয়ে ডেটা ভিত্তিক সংবাদ গুলো পাওয়া যাবে। তথ্য এবং উপাত্ত ভিত্তিক সংবাদ প্রতিবেদন গুলো ইসমাইল আলী সাহেবের। এই ভদ্র লোক বাংলাদেশে স্টোরি বেইজড সাংবাদিকতার বদলে ডেটা বেইজড অবকাঠামো সাংবাদিকতার সূচনা করেছেন)।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ২:৪২
১৬টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×