আকাশ ছুতে চাইলে যেতে পারেন বান্দরবানের নীলগিরি...........
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
আপনি কি আকাশ ছুঁতে চান? তাহলে চলে আসুন বান্দরবানের অন্যতম পর্যটন স্পট নীলগিরিতে। আকাশ ছুঁয়ে দেখা যায় বান্দরবানের এই নীলগিরি পর্যটন স্পটে। জেলা সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের চূড়ায় নীলগিরির অবস্থান। অল্প সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত পর্যটন স্পট নীলগিরি সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেছে। পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা পথে বান্দরবান থেকে চাঁদের গাড়ি কিংবা জীপ-মাইক্রো বাসে নীলগিরিতে যাওয়া যায়।
দুর্গম পাহাড়ে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে আকাশ নীলা, মেঘদূত, নীলাতানা নামে পর্যটকদের জন্য সকল সুবিধা সম্বলিত তিনটি কটেজ। কটেজগুলো রাত্রি যাপনের জন্য ভাড়া পাওয়া যায় এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। এখানে এক কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক একটি রেস্টুরেন্টও। পাহাড়ি পথ পেরিয়ে নীলগিরিতে পৌঁছেই রেস্টুরেন্টে পেট পুরে খেতে পারা যায়।
নীলগিরি যেন প্রকৃতির এক অনন্য দান। যারা আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেন নীলগিরিতে গেলে তার কিঞ্চিত স্বপ্ন পূরণ হতে পারে। নীলগিরিতে গেলে মনে হবে আপনি আকাশের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। মেঘেরা নিজ থেকেই আপনাকে ছুঁয়ে যাবে। নীলগিরির চূড়া থেকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং, প্রাকৃতিক আশ্চর্য বগালেক, কক্সবাজারের সমুদ্র, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের আলো-আঁধারি বাতি এবং চোখ জুড়ানো পাহাড়ের সারিও দেখতে পাওয়া যায়।
নীলগিরির কাছাকাছি রয়েছে বেশ কয়েকটি ম্রো উপজাতীয় গ্রাম। নীলগিরির একদম কাছে কাপ্রু পাড়া, আপনি সহজেই পরিদর্শন করে ম্রো আদিবাসী সম্পর্কে জানতে পারবেন। নীলগিরিতে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প। ফলে এখানে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই। আপনার যে কোন প্রয়োজনে সেনা সদস্যরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।
নীলগিরির রাতের সৌন্দর্য আরো হতবাক করে। চারিদিকের হরিণ, শিয়ালসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর ডাক আর পাহাড়গুলোর আলো-আঁধারির খেলা দেখে আপনার জীবনকেই যেন রহস্যময় বলে মনে হবে। যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের জন্য রাতের নীলগিরি হতে পারে উৎকৃষ্ট স্থান। নীলগিরি যাওয়ার পথে আপনি দেখে যেতে পারেন বান্দরবানের অপার সৌন্দর্যময় শৈলপ্রপাত। এখানে আদিবাসী বম তরুণীরা আপনাকে স্বাগত জানাবে। এখান থেকে কিনে নিতে পারেন আদিবাসীদের হাতের তৈরি নানা পণ্য। এর পরই চোখে পড়বে স্বপ্নচূড়া। স্বপ্নচূড়া থেকেও বান্দরবানের অবাক করা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
স্বপ্নচূড়ার পরই বাংলার দার্জিলিং খ্যাত চিম্বুকে পৌঁছে যাবেন আপনি। চিম্বুকের সুনাম সারা দেশব্যাপী। এখানে রয়েছে টি এন্ড টির বিশাল টাওয়ার, উন্নয়ন বোর্ড তৈরি করেছে সকল সুবিধা সম্বলিত রেস্ট হাউস। সড়ক ও জনপথ বিভাগের পুরনো একটি রেস্ট হাউসও রয়েছে এখানে।
চিম্বুকে পৌঁছেই স্থানীয় আদিবাসীদের হাতের তৈরি এক কাপ চা খেয়ে নিজেকে চাঙ্গা করে রওয়ানা দিতে পারেন নীলগিরির দিকে। অথবা এর একটু দূরেই সেনাবাহিনী পরিচালিত ক্যান্টিন রয়েছে। এখানে আপনি সেরে নিতে পারেন দুপুরের খাবার অথবা হালকা খাবার।
নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। অল্প সময়ের মধ্যেই দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সম্ভব সব কিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। অতি কম সময়ে এটি পরিচিতিও লাভ করেছে। প্রতিদিন শত শত পর্যটক আসছে এখানে। স্থানীয়দের ধারণা অদূর ভবিষ্যতে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র হবে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট। এছাড়াও স্পটটিকে ঘিরে সরকারেরও রয়েছে নানা পরিকল্পনা। সরাসরি গাড়ি নিয়ে নীলগিরি চূড়ায় আরোহণ করা যায়। ফলে পাহাড়ি পথে কোন দুর্ঘটনার ভয় নেই।
নীলগিরির সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এখান থেকে চোখে পড়ে বান্দরবানের উপর দিয়ে বয়ে চলা সর্পিল সাঙ্গু নদী। এখান থেকে মনে হবে সাঙ্গু নদী আপনার খুব কাছে। সাঙ্গু নদীর অপরূপ সৌন্দর্য এখান থেকে উপভোগ করা যায়। সাঙ্গুর বুক চিরে বয়ে চলা ছোট ছোট নৌকাগুলোকে দেখলে দূর থেকে মনে হবে স্বপ্নের কোন ডিঙি বয়ে চলছে সাঙ্গু নদী দিয়ে।
ভিআইপিদের সরাসরি অবতরণের জন্য এখানে নির্মাণ করা হয়েছে হেলিপ্যাডও। তবে সাধারণ দর্শনার্থীদের হেলিপ্যাডে প্রবেশ করা নিষেধ। নীলগিরিতে সৃষ্টি করা হয়েছে ফুলের বাগান,পাহাড়ের উপরে সুন্দর এই ফুলের বাগানও অবাক করার মত। নীলগিরিতে যাওয়ার জন্য বান্দরবান হিলবার্ড এর সামনেই রয়েছে নানা ধরনের গাড়ি। আপনার পছন্দের গাড়িটি ভাড়া করে চলে যেতে পারেন নীলগিরিতে। তবে কটেজ বুকিং এর জন্য আগে থেকেই কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
লেখা ঃ বাংলাদেশ এক্সপে্লাবারর ডট কম.......
১২টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”
একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?
যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই
হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই
আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন
তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন
নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।