এবারের নির্বাচনের পর সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা চমক সৃষ্টি করেছেন বলে বাজারে জোর প্রচারনা চলছে। অনেকেই বলেছেন আওয়ামীলীগের বুড়ো নেতাদের বাদ দিয়ে শেখ হাসিনা বাপের কাজ করেছেন। সবাই তাকে বাহবা দিচ্ছে। শেখ হাসিনা যখন মন্ত্রী সভা গঠন করেন তখন আমি ছিলাম দেশে, মধ্য রাতে কে একজন খবর দিয়েছিলেন দিপু মনি পররাষ্ট মন্ত্রী আর সাহারা খাতুন স্বররাষ্ট মন্ত্রী। দিপু মনিকে আমি প্রথম দেখেছিলাম লন্ডনের হাউস অব লর্ডসের একটি মিটিংএ। আওয়ামীলীগের এক নেতা আমাকে বলেছিলেন দিপু মনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেত্রী। কথা হয়নি। তার বক্তব্য শুনারও সুভাগ্য হয়নি আমার। পররাষ্টমন্ত্রী হওয়ার পর তার কথা শুনেছি। দেশে থাকতে দুএকজনের সাথে কথা বলেছি, বলেছি সরকারের মন্ত্রী সভায় প্রধান মন্ত্রীর পরে যে দুইতিনটি পদ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ তার মধ্যে পররাষ্টমন্ত্রলায় হচ্ছে অন্যতম। দিপু মনি কি পারবেন পররাষ্টমন্ত্রলায় চালিয়ে নিতে? যাকে বলেছিলাম তিনি বলেছিলেন সামাদ আজাদ যদি পররাষ্টমন্ত্রনালয় চালাতে পারেন, বিএনপির সময়ে মোর্শেদ খান যদি চালাতে পারেন, তাহলে দিপু মনি পারবেননা কেন? তাকে বলেছিলাম সামাদ আজাদ পারেননি, পারেননি মোর্শেদ খানও। আমার মনে আছে সামাদ আজাদ যখন পররাষ্টমন্ত্রী তখন কমনওয়েলথের একটি কনফারেন্সে স্কটল্যন্ডে এসেছিলো বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিনিধি দল। তৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার যখন গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা করছিলেন সামাদ আজাদ তখন বসে বসে হাই তুলেছিলেন। তারপর লন্ডনের এক বাংলা সাংবাদিক একটি পত্রিকায় লিখেছিলেন “সামাদ আজাদ যে দেশের পররাষ্টমন্ত্রী সে দেশের জন্য দুঃখ হয়“------। লন্ডনে এক আওয়ামী নেতাকে বলেছিলাম দিপু মনি পররাষ্টমন্ত্রী “ওয়ার্ল্ড বিগেষ্ট জৌক“ আওয়ামী নেতা বলেছেন মহিলা বলে কি আমি তাকে সমালোচনা করছি? বললাম আপনার কি তাই মনে হয়। আমাকে ঐ নেতা বলেছেন সময় দিন দেখবেন দিপু মনি কি করেন, ঐ আওয়ামী নেতা আমাকে ধারনা দিলেন যে দিপু মনি ওয়ার্ল্ড ডিপ্লমেসি যা বুঝেন তা সাউথ ইষ্ট এশিয়ায় অনেক ক্যারিয়ার ডিপ্লোমেট ও তা বুঝেননা, (অবশ্য আমরা কিছুটা বুঝতে পেরেছি সদ্য ভারতের পররাষ্টমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় দিপু মনির পারফরমেন্স) কিছুদিন আগে একটি পত্রিকায় দেখলাম দিপু মনি আর্ন্তজাতিক সর্ম্পকের উপর পড়াশুনা করছেন। দিপু মনির পররাষ্টমন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমার মনে হয়েছে সাবেক বৃটিশ ফরেন সেক্রেটারী মার্গারেট বেকেটের কথা। টনি ব্লেয়ারের প্রধানমন্ত্রীত্বের শেষের দিকে মার্গারেট বেকেটকে পররাষ্টমন্ত্রী করেছিলেন টনি ব্লেয়ার, কারন মার্গারেট বেকেট ছিলেন অনেকটা ইয়েস মিনিস্টার টাইপের। শেখ হাসিনার কেবিনেট দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে অনেকটা তাই। অবশ্য আমাদের দেশে যেখানে কোনো পররাষ্ট্রনীতি নেই, সেখানে দিপু মনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হলেই কি আর সামাদ আজাদ হলেই কি? আর মোর্শেদ খান হলেই কি? সবই তো সমান।
ফয়সল চৌধুরী
লন্ডন
২৪/০২/০৯
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০০৯ ভোর ৬:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




