somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাল ১৯৭১ খৃঃ এ্যবোটাবাদ থেকে মুজাফ্ফরাবাদ

১৬ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১ খৃঃ সালে এ্যবোটাবাদ পাবলিক স্কুলে আমি অধ্যয়নরত। ক্লাশ হবে নবম নিশ্চয়ই। ২৫ শে মার্চ ইয়াহইয়া খানের ভাষন শোনার জন্য এই বোর্ডিং স্কুলে সময় দেয়া হয়েছিল, আমার যাওয়া হয়নি রুমেই সম্ভবত পড়ছিলাম। সাদা কালো টিভি হলের কমনরুমে থাকত। শীত কালে রাতে আমাদের "প্রেপ টাইম" ছিল রাত সাতটা থেকে ন টা আর গৃষ্ম(গ্রীষ্ম) কালে ঐ "প্রেপ টাইম" রাত আটটা থেকে ন টা। আমার সিনিয়র রুমমেট ও রুম"পৃফেক্ট" (ভাল কৃকেট খেলোয়ার, শেখ ইউনুস ভাষন শুনে এসে উর্দুতেই (যদিও ইংরেজিতেই কথোপকোথনের আমাদের নিয়ম) আমাকেই বললো, " দেখ্ না আব সব্ কুছ্ ঠিক হো জায়েগা, দো চার গোলি চলেগি, উস্সে সব্ ঠিক হোতা হ্যয়।" আমি আমার ঘরোয়া কথাবার্তার রিয়েকশান অনুযায়ী বললাম, " গোলি সে সব্ কুছ্ ঠিক নেহি হোতা হ্যয়।" বোর্ডিং স্কুলের পরিবেশের কারনে কথোপকোথন এর বেশি এগোয়নি।

ঐ সময়ে প্রায় সব বাঙ্গালী মনে প্রানে আওয়ামী লীগ করতেন। আর আমার মা ও মেজ বোন তো শেখ মুজিবের একনিষ্ঠ সমর্থক। বাবা যেহেতু সরকারী চাকুরে সবসময়ই বলতেন তাদের কোন পক্ষ নেই। মুজাফ্ফরাবাদের সামরিক হাসপাতালে বাবার চাকুরী ছিল। (এই মুজাফ্ফরাবাদ শুনেছি ভুমিকম্পের কারনে গুড়িয়ে গেছে।) মেঝ বোনতো আওয়ামী লীগ জেতার পর তাদের প্রকাশিতব্য পত্রিকা "স্বরাজ" এর গ্রাহক হওয়ার জন্য ডাক যোগে পত্রিকার অর্থ পাঠিয়েই দিলেন। ওটা হয়তো আর প্রকাশিত হয় নি।

জুন ১৯৭১; ঐ মাসে বাসে করে মুজাফ্ফরাবাদ আসি গৃষ্মের চুটি কাটানোর জন্য। লম্বা ছুটি। মনে পরে দেড় মাসের ছুটি। হিমালয়ের পাহাড়ের মাঝ দিয়ে আঁকাবাঁকা খাড়া পাহাড়ি সড়ক। পাচশ কি হাজার ফিট নিচে কোথাও খরস্রোতা নিলাম ও ঝেলাম নদি আর কোথাও গভীর খাদ। দূর্ঘটনা ক্রমে পতিত হলে কোন রক্ষা নেই, একে বারে সৃষ্টিকর্তার নিকট। ছুটিতে আমার এক অর্ধ বৃটিশ কাজিন ও তার ছুটি কাটাতে আসল। ওর বাবা ড্যভিড পাওয়ার এবং মা জহরত আরা ("মুখ ও মুখোশের" অভিনেত্রী)। মুজাফ্ফরাবাদে মাঝে মাঝে আমরা দুজন বাইরে খেলতে যেতাম। তখন মাঝে মধ্যে শুনতাম "গাদ্দার, গাদ্দার" করে কিছু ছোট ছোট ছেলেরা আমাদের উদ্দেশ্য করেই ডাকছে। প্রথম ঐ উর্দু শব্দটির মানে আমার জানা ছিল না। পরে যখন জানলাম, ঐ শুনলে গা জ্বলতে থাকলেও কিছু প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারতাম না। বাবার বারন ছিল তাদেরকে বলতে দাও, তোমরা চুপ করে থাকবে।

যেহেতু আজাদ কাশ্মিরে আমরা ছিলাম, পাঞ্জাবীদের সরাসরি রোষানলে পরতে হয়নি। অধিকাংশ কাশ্মিরি ও পাঠানরা আমাদের প্রতি এবং আমাদের সংগ্রামের প্রতি বেশ সহানুভুতিশীল ছিলেন। এক পাঠান সামরিক অফিসার আমার বাবার প্রতি পাকিস্তান ত্যাগ করার দিন পর্যন্ত সাহায্য করে গেছেন।
ইউটিউবে মুজাফ্ফরাবাদ
১৯৭০ থেকে ১৯৯০; আরও উপস্থাপন করার ইচ্ছা রইল।
ছবিগুলো ইন্টারনেটের
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×