somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অরুনাচল প্রদেশ নিয়ে চীন - ভারত স্নায়ুযুদ্ধ!! পর্ব -৫

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অরুনাচল প্রদেশ নিয়ে চীন - ভারত স্নায়ুযুদ্ধ!! পর্ব - ৪
১৯৬২ সালের চীন - ভারত যুদ্ধ
এই যুদ্ধটি কেন এবং কি কারনে হয়েছিল, তা বিষদভাবে জানা না গেলেও অনুমান করা যায় চীন তার শক্তি প্রদর্শন করার একটি উদাহরন হিসেবে সাময়িক সময়ের এই যুদ্ধটি করেছে বলে মনে করা হয়। এই যুদ্ধটি অধিকাংশই আবার অরুনাচল প্রদেশকে নিয়েই হয়েছিল। কয়েক মাসের স্থায়ী এই যুদ্ধে চীন অরুনাচলের অধিকাংশ অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল। চীন একতরফা ভাবেই নিজেকে এই যুদ্ধে জয়ী ঘোষনা করে।
মজার বিষয় হোল বছর যেতে না যেতেই চীন দখলকৃত অঞ্চল থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করে, আর ১৯৬৩ সালে সকল ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের ভারতের কাছে ফিরিয়ে দেয়।
কারন হিসেবে ঐ সময়ে চীন অতটা শক্তিশালী ছিল না বলে তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ছিল। ঐ অঞ্চলের গুরুত্বও ১৯৬২সালে কিছু ছিলনা বলেই মনে করা হয়েছিল।

বর্তমান বিরোধঃ
তাওয়াং (Tawang)
সাম্প্রতিক কালে চীন তাওয়াং নামের একটি ছোট শহর বা জেলাকে তাদের তথা চীনের অংশ হিসেবে দাবী করা শুরু করেছে। শহরটি অরুনাচলেরই একটি অংশ বা শহর। চীনের দাবীর যুক্তি হোল, এই শহরে তিব্বতের এবং তিব্বত বাসীর উপসনালয় রয়েছে এবং এই শহরের অধিবাসিরা তিব্বতের অধিবাসীদের বংশধর।
এরই সূত্র ধরে চীন ২০০৯সালের দালাই লামার অরুনাচলের ঐ অঞ্চলে ভ্রমন ও তিব্বতিয় অনুষ্ঠান পরিচালনা করার প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারত যথাযথভাবেই এই প্রতিবাদের কোন আমল দেয়নি। প্রতিবাদের উত্তরে চীনকে জানিয়েছে, দালাই লামা ভারতের যে কোন স্বাধীন অঞ্আলে ভ্রমন করার অনুমতি দালাই লামার আছে।

অরুনাচলের অর্থনীতিঃ-
বর্তমান বিশ্বে একটি দেশ অন্য একটি দেশকে সহজে আক্রমন করে দখল করতে পারে না। এর আসল কারন হোল তথ্য প্রযুক্তির কারনে তথ্যের "আলোর" গতিতে প্রবাহ।
তদুপরি প্রতিটি দেশের জনসংখ্যা ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলছে। যুদ্ধ বিগ্রহ কম থাকায় অতিরিক্ত জনশক্তির জন্য আধুনিক প্রযুক্তির প্রভাব জনগনকে পৌঁছে দেয়া প্রতিটি সরকারের জন্য চ্যলেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০১২ সালে অরুণাচল প্রদেশ এর গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট বা জিডিপি ১.৭৫ বিলিয়ন ডলারে (মার্কিন) চলে এসেছে। ২০০৪ সালে এটি ছিল আনুমানিক ৭০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কৃষিই ছিল প্রাথমিক অর্থনীতি। ঝুম চাষ পদ্ধতিতে এই চাষাবাদ করা হোত যেহেতু এলাকাটি উর্বর কিন্তু পাহাড়ি (অনেকটা আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের ন্যয়)। এই পদ্ধতি চাষাবাদ ব্যাপকভাবে উপজাতীয় গোষ্ঠী মধ্যে চর্চা করা হয়। অরুণাচল প্রদেশে বনাঞ্চল প্রায় ৬১,০০০ বর্গ কিলোমিটার যা বাংলাদেশের আয়তনের প্রায় অর্ধ সমান। স্বাভাবিকভাবেই বন পণ্য অর্থনীতির পরবর্তী ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত। এখানে উৎপাদিত ফসলের মধ্যে ধান, ভুট্টা, ভুট্টা, গম, ডাল, আখ, আদা, এবং তৈলবীজ প্রধান। এছাড়াও অরুণাচল ফল ফলের বাগানে জন্য আদর্শ। কৃষিজাত পণ্যের করানে প্রধান শিল্প হয়ে গেছে রাইস মিলস, ফল সংরক্ষণের ইউনিট, এবং তাঁত হস্তশিল্প। Sawmills বা স' মিল এবং পাতলা পাতলা কাঠ ব্যবসা আইনে নিষিদ্ধ করা আছে।

কিন্তু এই প্রদেশে মুল আকর্ষন এখন হয়ে গেছে বিদুৎ শক্তি।
অরুণাচল প্রদেশ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ভারতের প্রবাহমান সম্ভাবনা। এই পাহাড়ি অঞ্চলে রয়েছে ব্যপক নদ নদীর উৎপত্তি স্থল। বাংলাদেশের ব্রম্মপুত্র নদীর উৎপত্তি এই প্রদেশেই।
ভারত সরকার ২০০৮ সালে সালে, অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের সরকার বিভিন্ন কোম্পানিকে ইজারা দিয়ে ২৭,০০০ মেগাওয়াটের ও অধইক বিদ্যুত উত্পাদন করার পরিকল্পনা করেছে। ৪২টি জলবিদ্যুত প্রকল্প পরিকল্পনা করা হয়েছে এই উৎপাদন করার জন্য।
শুধু মাত্র Siang জলবিদ্যুত প্রকল্প থেকেই ১২,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যৎ উৎপাদিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এটি নির্মাণ শুরু হয় এপ্রিল ২০০৯ সালে।

চীন এখন মনে করছে যে, ১৯৬২ সালে দখলকৃত অরুনাচল ভুখন্ড ছেড়ে দেয়া ঠিক হয় নি। যেহেতু চীন "ম্যকমোহন লাইন" এর চুক্তিতে সই করেনি এবং পরবর্তীতে কোন প্রকার আলোচনায় ও অংশ গ্রহন করেনি, সুতরাং অরুনাচলের কিছু ভুখন্ড তাদের তথা চীনের অংশ, এই দাবী যুক্তি সংগত।

মুল কারন অরুনাচলের পানি বিদ্যুত শক্তি ক্ষমতা যা এই অঞ্চলের চেহারা পাল্টে দিবে। কিন্ত বাংলাদেশ কে পানি সমস্যা ভুগতে হবে এই সব পানিবিদ্যুত বাধঁ গুলোর কারনে।

............................................. (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×