যেভাবে গ্রেফতার হলেন বঙ্গবন্ধু ---------------পাকিস্তান কমান্ডো ব্রিগেডিয়ার জহির আলম খান
ব্রিগেডিয়ার জহির আলম খান ১৯৭০ সালের মে মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৃতীয় কমান্ডো ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসাবে কুমিল্লা সেনানিবাসে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন চৌকস সেনা অফিসার এবং নিজ দেশের বাইরে লেবাননে সেনা কর্মকর্তার দায়িত্বপালন করেছিলেন। সত্তরের নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্রিগেডিয়ার জহিরের মতো অনেক চৌকস পাকিস্তানী সামরিক অফিসারকে পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন সেনানিবাসে নিয়ে আসা হয়। তিনি ১৯৭১-এর মাঝামাঝি সময় পর্যনত্ম পূর্ব পাকিস্তানে তার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১-এর মার্চ মাসের ২৩ তারিখ তাকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় 'অপারেশন সার্চ লাইট' শুরু হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বঙ্গন্ধুকে গ্রেফতার করার সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে। ২০০৮ সালে তার সামরিক জীবনের অভিজ্ঞতা সম্বলিত "The Way It-Was" নামক একটি আত্নজীবনীমূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। বইটি তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসকে দিয়েছিলেন প্রকাশের জন্য। তারা তা প্রকাশ না করে তাকে ফেরত দেয় কারণ তাদের মতে বইতে কিছু স্পর্শকাতর বিষয় আছে। ১৯৯৮ সালে তিনি বইটি করাচীর 'ডাইনাভিস' প্রকাশনা সংস্থা হতে প্রকাশ করেন। তাঁর বইয়ে তিনি বাঙালীদের প্রতি তার তাচ্ছিল্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি গোপন করেননি। বাঙালীদের সম্পর্কে তার ধারণা তারা বাংলায় লেখাপড়া করে, ইংরেজীতে খুবই দুর্বল এবং সেনাবাহিনীতে যে কয়েকজন চাকরি নিয়ে আসত ইংরেজী না জানার কারণে তাদের সমস্যা হতো এবং শারীরিকভাবেও তারা বেশ দুর্বল ছিল।
ব্রিগেডিয়ার খান ২০০২ সালে গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জানান তার পিতা সরকারী চাকরি সূত্রে ১৯৫২ হতে ১৯৫৪ সন পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে কাটিয়েছিলেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে ফেরত গিয়ে তাদের বলেছিলেন একদিন পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হয়ে যাবে। ১৯৫৫ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনেটারও একই কথা বলেছিলেন বলে তিনি দাবি করেন। তবে তা তার বিশ্বাস হয়নি। তার ছোট ভাই শোয়েব পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে কর্মরত ছিল। পূর্ব পাকিস্তানে সে তার দায়িত্ব পালন শেষে ফেরত গিয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেন এবং বলেন আলাদা হওয়ায় অন্যতম কারণ হবে পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে চরম অর্থনৈতিক বৈষম্য। ব্রিগেডিয়ার খান তার সাক্ষাতকারে আরও বলেন, পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে আসলে ধর্ম ছাড়া আর কোন কিছুরই মিল নেই। তার মতে পূর্ব পাকিস্তান প্রথম থেকেই আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়া উচিত ছিল। তিনি তার বইতে উল্লেখ করছেন ১৯৭০-এর শেষের দিকে 'জয় বাংলা' স্লোগানটি এতই জনপ্রিয় ছিল যে তার আড়াই বছর বয়সী ছোট মেয়েটিও কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসায় সারাদিন 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে বাড়ি সরগরম করে রাখত এমনকি তার বড় মেয়ে অনেক চেষ্টা করেও তা থামাতে ব্যর্থ হতো ।
ব্রিগেডিয়ার জহির ১৯৭১-এর ২৩ মার্চ অপরাহ্নে একটি সি-১৩০ কার্গো বিমানে করে কুমিল্লা হতে জেনারেল নিয়াজির আদেশ পেয়ে ঢাকায় আসেন। তিনি দেখতে পান সারা ঢাকা শহর বাংলাদেশের পতাকায় ছেয়ে গেছে। তাকে বলা হলো একমাত্র পাকিস্তানী পতাকাটি উড়ছিল মোহাম্মদপুরের বিহারি কলোনিতে। বিমানবন্দর হতে তাকে সরাসরি সামরিক আইন প্রশাসকের সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে প্রথমবারের মতো কর্নেল এসডি আহমদ বলেন পর দিন অথবা তার একদিন পর শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করার জন্য তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবং তিনি যেন সে মতে তার পরিকল্পনা তৈরি করেন। সেই সন্ধ্যায় তিনি মেজর বিল্লাল, ক্যাপ্টেন হুমায়ূন, ক্যাপ্টেন সাঈদকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরের বাড়ির আশপাশ এলাকা রেকি করেন। তারা বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনের সড়কে প্রচুর জনসমাগম দেখতে পান। পরদিন সকালে তারা ধানমন্ডির সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে সেগুলোর অবস্থান সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করেন।
২৪ মার্চ সকালে নির্দেশ মতো ব্রিগেডিয়ার জহির জেনারেল রাও ফরমান আলীর সাথে সাক্ষাত করেন। ফরমান আলী তাকে বলেন ২৫ তারিখ রাতে শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করতে হবে। জেনারেল তাকে আরও বলেন, শুধু একজন অফিসারকে সাথে নিয়ে একটি বেসামরিক গাড়িতে শেখ মুজিবের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে। জবাবে ব্রিগেডিয়ার জহির বলেন, শেখ মুজিবের বাড়ির চারপাশে সর্বক্ষণ এত মানুষের ভিড় লেগে থাকে যে তাঁকে গ্রেফতার করতে হলে কমপক্ষে এক প্লাটুন সৈন্য লাগবে (ত্রিশ জনের মতো)। এতে জেনারেল রাও ফরমান আলী তার ওপর কিছুটা রুষ্ট হন এবং বলেন তিনি যেভাবে হুকুম দিচ্ছেন সেইভাবেই হুকুম পালিত হবে। উত্তরে ব্রিগেডিয়ার জহির বলেন, এই হুকুম তার পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়।
২৪ তারিখ সন্ধ্যায় পিআইএ বিমান যোগে করাচী হতে জেনারেল মিট্টা ঢাকায় আসে। জহির জেনারেল মিট্টার সাথে সাক্ষাৎ করে পুরো বিষয়টা খুলে বলেন। সেদিন রাতে পাকিসত্মানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল হামিদ খান, জেনারেল টিক্কা খান আর রাও ফরমান আলীর মধ্যে 'অপারেশন সার্চ লাইট' নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে ব্রিগেডিয়ার জহির জেনারেল হামিদের সাথে সাক্ষাত করেন এবং বলেন যে শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করতে হলে অন্তত এক প্লাটুন কমান্ডোর প্রয়োজন হবে। জেনারেল হামিদ জেনারেল ফরমান আলীকে ফোন করে ব্রিগেডিয়ার জহিরকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সৈন্য দিতে বলেন এবং ব্রিগেডিয়ার জহিরকে এও বলেন যেন মুজিবকে জীবিত গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় যদি শেখ মুজিবের মৃত্যু হয় তাহলে তার দায় দায়িত্ব তাকে নিতে হবে।
মার্চের ২৫ তারিখ রাত নয়টায় ব্রিগেডিয়ার জহির তার সৈন্য সামন্ত নিয়ে ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরের দিকে যাত্রা করার কথা। যাত্রা করতে করতে রাত প্রায় এগারোটা হয়ে যায়। সাথে আরও ছিল মেজর বিল্লাল, ক্যাপ্টেন সাঈদ ও ক্যাপ্টেন হুমায়ূন। তাদের যাত্রাপথ ছিল তেজগাঁ বিমানবন্দর, সংসদ ভবন (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়), মোহাম্মদপুর হয়ে ধানমন্ডি। পথে পথে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা বা ব্যারিকেড। কোথাও উল্টানো গাড়ি, কোথাও বা গাছের গুঁড়ি অথবা বড় বড় পাইপ। একাধিক জায়গায় ব্রিগেডিয়ার জহিরের সৈন্যরা তাদের সাথে থাকা রকেট লঞ্চার দিয়ে গোলা বর্ষণ করে স্থাপিত প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে ফেলে। অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হয়ে গেছে।
মধ্যরাতের পর পাকিস্তানী সৈন্য বাহিনী বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে প্রবেশ করে। চার পাশে গাঢ় অন্ধকার। এসময় রাস্তার বাতিগুলোও নেভানো ছিল। ক্যাপ্টেন হুমায়ূনের সৈন্যরাই প্রথম বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে প্রবেশ করে। গোলাগুলির কারণে তখন বত্রিশ নম্বর জনমানব শূন্য হয়ে পড়েছে। বাড়ির সামনে কিছু পুলিশ পাহারা ছিল। তারাও ইতোমধ্যে সরে পড়েছে। হঠাৎ পাকিস্তানী সৈন্যরা দেখে বাড়ির একজন লোক একটি বড় দা নিয়ে তাদের দিকে ধেয়ে আসছে। তাকে সঙ্গে সঙ্গে গুলি করা হয়।
বত্রিশ নম্বর বঙ্গবন্ধুর বাড়ির নিচতলায় তখন কেউ ছিল না। প্রথম তলাও খালি। একটি বন্ধ কক্ষের ভেতরে কিছু মানুষের আওয়াজ শুনতে পেয়ে ব্রিগেডিয়ার জহির মেজর বিল্লালকে কক্ষের দরজা ভাঙ্গার হুকুম দেয়। দরজা ভাঙ্গার পর দেখা যায় ভেতরে পরিবারের অন্যদের সাথে বঙ্গবন্ধুও আছেন। এ সময় হঠাৎ করে সাথের হাবিলদার মেজর খান ওয়াজির বঙ্গবন্ধুকে শাবীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করে। ব্রিগেডিয়ার জহির বঙ্গবন্ধুকে তার সাথে যেতে আদেশ দেয় এবং তার জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়। বঙ্গবন্ধু তার পরিবারের সদস্যদের কাছ হতে বিদায় নেন এবং নিজের প্রিয় পাইপটাকে হাতে তুলে নিয়ে ব্রিগেডিয়ার জহিরের সাথে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন। ততক্ষণে সারা ঢাকা শহরে ইতিহাসের ভয়াবহতম হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়ে গেছে। বন্দী বঙ্গবন্ধুকে যখন সেনানিবাসে নিয়ে যওয়ার জন্য একটি ট্রাকে তোলা হয় তখন ঢাকা শহর জ্বলছিল। চারদিকে মানুষের গগনবিদারি চিৎকার আর আগুনের লেলিহান শিখা। ঢাকা তখন জ্বলছে ।
জহির খান আরও লিখেছেন, আমার প্রতি নির্দেশ ছিলো শেখ মুজিবকে শুধুই গ্রেপ্তার করা। আমাকে এটা বলা হয়নি যে, আমি তাকে কোথায় নিয়ে যাবো। কার কাছে হস্তান্তর করবো। আমি গাড়িতে ফেরার পথে এসব কথাই ভাবছিলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম তাঁকে ন্যাশনাল এসেম্বলি ভবনে নিয়ে যাবো। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সেখানেই তাকে রাখবো। আমি ন্যাশনাল এসেম্বলি ভবনে থামলাম। মুজিবকে ভবনের উপরতলায় নিয়ে গিয়ে বসতে দিলাম। যখন আমরা এসব করছিলাম, তখন ফার্মগেট এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষের পায়ের আওয়াজ পাচ্ছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম এসব লোক বুঝি আমাদের দিকেই ছুটে আসছে। তাই আমরা নিজেদের আত্মরক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই সে সব শব্দ মিলিয়ে যায়। পরে আমরা জেনেছিলাম, এসব ছিল আওয়ামী লীগ কর্মীদের কাজ। তারা সমবেত হয়ে সেনানিবাসে হামলা চালাতে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু পরে তারা পালিয়ে যায়।
ন্যাশনাল এসেম্বলি ভবন থেকে আমি মার্শাল ল’ হেড কোয়ার্টারে গিয়েছিলাম। সেখানে জেনারেল টিক্কা খান তার সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমি ব্রিগেডিয়ার গোলাম জিলানী খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি তখন সবে ইস্টার্ন কমান্ডের চিফ অব স্টাফের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাকে বললাম, আমি শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে ন্যাশনাল এসেম্বলি বিল্ডিংয়ে রেখে এসেছি। তিনি আমাকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানের অফিসে নিয়ে গেলেন। বললেন, ভেতরে গিয়ে জেনারেলের কাছে রিপোর্ট করে এসো। জেনারেল টিক্কা ততক্ষণে নিশ্চয়ই গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে গেছেন। তিনি বেশ কেতাদুরস্ত হয়ে বসেছিলেন এ আশায় যে, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে গ্রেপ্তারের খবর দেবো। কৌতুকবশত আমি তাঁকে বললাম, আমি এমন একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি, যাকে মুজিবের মতো দেখায় কিন্তু আমি নিশ্চিত নই যে তিনি মুজিব কিনা। একথা শোনামাত্র জেনারেল টিক্কা খাঁচা ছাড়া খেঁকশিয়ালের মতো তাঁর চেয়ার থেকে লাফ মেরে উঠে দাঁড়ালেন। তিনি দরজার বাইরে অপেক্ষমাণ ব্রিগেডিয়ার জিলানিকে ডাক দিলেন। জিলানি তাঁকে নিশ্চিত করেন যে, তিনি শিগগিরই বিষয়টি পরীক্ষা করে তাকে জানাচ্ছেন। কর্নেল এস ডি আহমদকে তখনই বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখতে পাঠানো হলো। তিনি ন্যাশনাল এসেম্বলি ভবনে দ্রুত ছুটে গেলেন। তিনি পরীক্ষা করে দেখলেন আমি সত্যিই প্রকৃত মুজিবকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি কিনা।
কর্নেল এসডি আহমেদের প্রত্যাবর্তনের আগ পর্যন্ত আমি অদূরে পায়চারী করছিলাম। সিগারেট খাচ্ছিলাম। আমি যখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছিলাম, তখন কারও হাত ফসকে কিংবা গানার হয়তো কিছু একটা সন্দেহজনক দেখে থাকবেন। তিনি একটি লাইট মেশিনগান দিয়ে একটি গোলা ছুড়লেন। বিস্ফোরণের পরে চারপাশ হঠাৎ শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু পরমুহূর্তেই সেনানিবাস এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন থাকা বাহিনীগুলোর প্রত্যেকটি অস্ত্র যেন গর্জে ওঠে। সেই মিশনে অ্যান্টিএয়ারক্রাফট রেজিমেন্টও অংশ নেয়। ঢাকার আকাশ আতশবাজির রঙে ভরে উঠেছিল। কিন্তু কয়েক মিনিট পরেই যেভাবে হঠাৎ গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছিল, সেভাবেই তা স্তব্ধ হয়ে যায়।
প্রায় বিশ মিনিট পরে কর্নেল আহমদ ফিরে আসেন এবং নিশ্চিত করেন যে আমি সত্যিকারের মুজিবকে গ্রেপ্তার করেছি। আমি যখন জানতে চাইলাম গ্রেপ্তার করে তাকে আমার কোথায় নিয়ে যাওয়ার কথা, তখন বুঝলাম সেই প্রশ্ন কার মাথায়ই ছিল না। পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত হয় যে, মুজিবকে সেই কক্ষে রাখা হবে, যেখানে তাকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় অন্তরীণ রাখা হয়েছিল। আমরা তাকে ১৪ ডিভিশন অফিসার্স মেসে নিয়ে গেলাম। তাকে একটি স্বতন্ত্র সিঙ্গেল বেডরুম দেয়া হলো। তার জন্য একজন প্রহরী নিয়োগ করা হলো। পরদিন মেজর জেনারেল মিটঠা আমার কাছে জানতে চাইলেন, মুজিবকে কোথায় রাখা হয়েছে? আমি যখন জানালাম, তখন তিনি অসন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনাদের কোন ধারণাই নেই। তাঁকে যেখানে রাখা হয়েছে, সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করতে পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে। তিনি এরপর মুজিবকে একটি স্কুল ভবনের তেতলায় স্থানান্তর করেন।
মুজিব আগেই জানতেন রাস্তার ব্যারিকেড সরাতে রকেট লঞ্চার ছুড়তে হয়েছিল
Click This Link
যেভাবে গ্রেফতার হলেন বঙ্গবন্ধু
Click This Link
ঢাকায় গর্জেছে মেশিনগান ও কামান
Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



