somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেতার অপারেটর কনস্টেবল শাহজাহান মিয়া একাত্তর সালের ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসহ ঢাকা শহরে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রথম এই ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন

২৪ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি: প্রথম আলো
একাত্তর সালের ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসহ ঢাকা শহরে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রথম এই ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন পুলিশ লাইনের বেতার অপারেটর কনস্টেবল শাহজাহান মিয়া


ইতিহাস তুলে ধরবে পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর



একাত্তর সালের ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসহ ঢাকা শহরে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রথম এই ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন পুলিশ লাইনের বেতার অপারেটর কনস্টেবল শাহজাহান মিয়া



দেয়ালজুড়ে অসংখ্য আলোকচিত্র। ঠিক মাঝখানে সেই বেতার যন্ত্রটি, যার মাধ্যমে রাজারবাগে পুলিশের প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে। আছে মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ব্যবহূত সেকেলে থ্রি নট থ্রি রাইফেল এবং অনেক ঐতিহাসিক দলিল।
এটিই সদ্য গড়ে ওঠা বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে স্থাপিত এই জাদুঘর বলবে একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পুলিশের প্রথম প্রতিরোধ ও মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সাহসিকতা আর ত্যাগের কথা। আজ রোববার সন্ধ্যায় এই জাদুঘরের উদ্বোধন করা হবে।
গতকাল সেখানে গিয়ে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার কাজ করছেন জাদুঘরের কর্মীরা। বেতার যন্ত্রটি মন দিয়ে দেখছিলেন এক বৃদ্ধ। কৌতূহলী হয়ে পরিচয় জানতে চাইলে স্মিত হেসে বৃদ্ধ জানালেন, তাঁর নাম মো. শাহজাহান মিয়া। পাকিস্তানি সেনাদের হাতে ২৫ মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইনসসহ ঢাকা শহর আক্রান্ত হওয়ার বার্তা সারা দেশের বিভিন্ন পুলিশ লাইনসে পাঠিয়েছিলেন তিনিই। এ সময় চোখে পড়ল দেয়ালে এই বেতার অপারেটর কনস্টেবলের একটি বড় ছবি।
শাহজাহান মিয়া যন্ত্রটির সামনে দাঁড়িয়ে স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘২৫ মার্চ সন্ধ্যা থেকেই আমরা অপেক্ষা করছিলাম উত্তেজনা নিয়ে। বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস আক্রমণ হতে পারে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।...রাত ১১টা ২০ মিনিটে সেনাবাহিনী পুলিশ লাইনস ঘিরে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পরেই আক্রমণ। শুরু হলো প্রচণ্ড গোলাগুলি। আমি সারা দেশের জেলা ও সাবডিভিশন পুলিশে বেতার মারফত খবরটি জানিয়ে সাবধান হতে বলে দিলাম।’
অনেক গুণ বেশি ও উন্নত অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে রাতভর যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিলেন রাজারবাগের বীর পুলিশ সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত শহীদ হলেন অন্তত এক শ পুলিশ সদস্য। বন্দী হলেন আরও দেড় শ।
২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস আক্রান্ত হলে তখনকার পুলিশ মহাপরিদর্শকের দেহরক্ষী কনস্টেবল আবদুল আলী যে পাগলা ঘণ্টা বাজিয়ে পুলিশ সদস্যদের একত্র করেন, সেটি রয়েছে এই জাদুঘরে। আছে রাজারবাগের প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেওয়া পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহূত হাতব্যাগ, নামাজের টুপি, হাতঘড়ি, চশমা, ওষুধ, মগ, মর্টার শেল ইত্যাদি।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক আবদুল খালেক বেতারে একটি ভাষণ দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে উজ্জীবিত করেন। সেই ভাষণের কপিটিও আছে জাদুঘরে। ওই ভাষণে দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
রাজশাহী বিভাগের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মামুন মাহমুদের পারিবারিক আলোকচিত্র ও নোটখাতা, রাজশাহীর এসপি শাহ আবদুল মজিদ, কুমিল্লার এসপি কবির উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রামের এসপি এম শামসুল হক, বরিশালের অতিরিক্ত এসপি গোলাম হোসেন, পিরোজপুরের পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান আহমেদ (লেখক হুমায়ূন আহমেদ ও জাফর ইকবালের বাবা), দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের মিয়া, নড়াইলের গোলাম রাব্বানীসহ আরও অনেক শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধার কীর্তির আলোকচিত্র আছে এই জাদুঘরে।
জাদুঘর প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন পুলিশ স্টেশন ও অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধসংশ্লিষ্ট স্মারক এবং পুলিশের সংশ্লিষ্টতা-সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন ও সংরক্ষণ করবে এই জাদুঘর।’
কমিটির সদস্যসচিব পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবিদা সুলতানা বলেন, ‘১৪ হাজার পুলিশ সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এক হাজারের বেশি শহীদ হন। আহত ও পঙ্গু হন আরও হাজার দেড়েক সদস্য। আমরা এই জাদুঘরের মাধ্যমে সেই কীর্তি তুলে ধরতে চাই।’

প্রথম আলো
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৫৮
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×