কাজ না থাকায় বসে বসে পুরাতন পোস্ট পড়ছিলাম।
হঠাৎই খুব নষ্টালজিক হয়ে গেলাম। মনে পড়ল ব্লগের প্রথম দিককার দিন গুলোর কথা। খেয়ে না খেয়ে ব্লগিং করতাম। আর ব্লগ তখন ছিল একটা জ্যান্ত প্রানীর মত। ভীষন ফোঁস ফোঁস করত।
আইজউদ্দিন/নিধিরাম/ এর কথা অনেক মনে পরছে। ওনার সাথে অনেক তর্ক হত। সাম্রাজ্যবাদ আর মার্কিন খবরদারী নিয়ে বেশ কয়েকবার লেগে গিয়েছিল। তার লাল বালিকার পোস্ট টার কথা পুরোনো ব্লগাররা কেউ ভুলতে পারবেন না।
রাশেদ যে কই গেলেন। তার এক শব্দের কমেন্ট গুলো মিস করি খুব। মিস করি আগের পরিভাষা গুলো। ইদানিং "বিপ্লব" ইউজ করতে দেখি না কাউকে।
সিহাব ভাই আলবার্টায় চলে গেছেন। আমরা মোটামুটি একই সাথে ব্লগিং শুরু করেছিলাম। ম্যাসেন্জারে ব্লগ নিয়ে তার সাথে কত আলোচনা করেছি। কি উৎসাহ ছিল আমাদের মাঝে! আমার সাপোর্ট নিতে গিয়ে বেচারা একবার ব্যানও খেয়েছিলেন।
আমি যখন শুরু করি তখন ফারহান ভাই আর মেহরাব ভাই ব্লগে বেশ পরিচিত। ওনারা এখনও সক্রিয়। তবে ফারহান ভাই মাইন্ড না করলে একটা কথা বলতে পারি। আগে ওনার মাঝে কিছুটা হলেও কোমলতা /রোমান্টরিকতা ছিল, এখন হয়ত বাস্তবতাই তাকে "একটি কবিতা লিখতে চাই" কিংবা "জোড়া দেয়া কবিতা তোমার জন্যে" এর মত পোস্ট লেখেন না। ওনাদের সক্রিয় থাকতে দেখে অনেক ভালো লাগে।
মনে পরছে হিমুর কথা। অবশ্য আমি যখন লেখা শুরু করেছি তার কিছুদিন আগেই তিনি চলে গেছিলেন। এত মেধাবী এবং রসিক একজন মানুষকে আসলে সচলের গম্ভীরতার মাঝে মানায় না। "বেলুনে পাচ সপ্তাহ বইতে অভিযাত্রীরা টয়লেট কিভাবে করত?" এই প্রশ্ন নিয়ে হুট করেই সামুতে ফিরলে খুব খুশি হতাম।
আনোয়ার সাদাত শিমুল। এই বস কে আর নতুন করে কিছু বলার নাই। তার পাকমন পেয়ার সম্ভবত সবাই পড়েছেন। অসংখ্য পোস্ট দেখি যেগুলো না পোস্টালেও বিশেষ ক্ষতিবৃদ্ধি হত না(যেমন বর্তমান পোস্ট), কিন্তু তিনি কি ফিরে আসতে পারেন না আমাদের মাঝে?
গন্ডার। এখন তাকে দেখি না। সামুতে সেরা কমেন্টবাজ ব্লগার ছিলেন তিনি। সব পোস্টে তার সংক্ষিপ্ত এবং নিজস্ব বাক্যভঙ্গীতে তার কমেন্ট থাকত। আগে রেটিং সিস্টেম যখন ৫ এ ছিল প্রায়ই তার একটি কমেন্ট দেখতাম। "ঠীক বলেচেন ১"। গন্ডারকে খুব মিস করছি।
হাসিব। ওনার সাথেও আমার একবার দুবার তর্ক হয়েছে। একবার মানস চৌধুরীকে যখন ৩০০ জুতা দেখানো হল। তার লজিক্যাল সেন্স ভয়াবহ। সামুতে পরের দিকে লিখতেন না। তবে সচলে তার কিছু লেখা এবং কমেন্ট দেখে বুঝেছি তার ক্যাপাবিলিটি।
জেনারেল। বিশাল ঝগড়াঝাটি করেছি তার সাথে। কোন ভাল কিছু বলারও নেই তার সম্পর্কে। একবার নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অনর্থক বড়াই করতে দেখেছি। আজাইরা পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করেছি। কিন্তু এখন কেন যেন মিস করছি তাকে। এখন দেখা হলে হয়ত তার ট্রেড মার্ক "কেমুন আচু" বলতাম।
নুরে আলম। এই পাব্লিক ব্লগ ছেড়ে যাওয়ায় ব্লগের কত ক্ষতি হয়েছে সেটা আমরা যারা তার ফ্যান ক্লাবের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম তারাই জানে। অবশ্য ব্লগার অন্যরকম কে ইদানিং আবার দেখছি। যিনি সম্ভবত নুরে আলম ফ্যানক্লাবের সেই ঐতিহাসিক পোস্ট টা দিয়েছিলেন।
ফারজানা মাহবুবা। প্রবাসী একজন মেয়ে যে দীর্ঘদিন পর্যন্ত তার আসল পাকি চেহারা লুকিয়ে রাখতে পেরেছিল। তার কিছু পোস্ট আসলেই ভালো ছিল কিন্তু কামরু পুত্র ওয়ামীর পক্ষ নেবার পর থেকে তাকে ঘেন্না করা ছাড়া আর কিছু পাচ্ছি না। তারপরও তাকে এখন দেখলে হয়ত গালি দেব না।
সন্ধাবাতি। নতুন করে কিছু বলার নেই। গোলাম আযম যার আংকেল, ওয়ামী ,ওয়ালী যার ভাইয়া তার সম্পর্কে কি আর বলা যাবে। তবে অত্যন্ত শক্তিশালী লেখিকা ছিলেন। তার লেখা এত ভালো ছিল যে তার রাজনৈতিক পরিচয় টা কষ্ট দিতো।
চতুরভুজ। কিছুই বলার নাই। এখন দেখলেও গালি দিব। আরেকটা মহিলা শিবির।
সরোয়ার চৌধুরী। মধ্যবয়সী চিরকুমার মধ্যপ্রাচ্য নিবাসী দার্শনিক এবং শিবিরের প্রতি কিঞ্চিত সফট কর্নার ওয়ালা ব্যাটা।
মনে পড়ছে চিহ্নিত রাজাকার গুলাকেও। এইসব স্ট্রেইট ফরোওয়ার্ড জামাত শিবির এখন অবশ্য দেখা যায় না। ব্লগের ছাগু গুলি এখন বেশ ক্যামাফ্লাজ নিয়ে থাকে। তবে বর্ন ডট, মইনুল, হলদে ডানা, দিদারুল বান্না র মত শিবির গুলারে লইয়া বেশ ব্যস্ত থাকা হত। বর্নের সাথে একটি ডিবেট এখনও ডিউ আছে। বর্ন কইছিলো পড়ে জবাব দেবে। এখনও দেয় নাই।
আরাশি কেও দেখি না।
নরাধম কই?অপবাকের দেখলাম ব্লগ ডিলিট হইছে, নাস্তিকের ধর্মকথাও নিয়মিত নন, ডট রাসেল নিজের পোস্টের বাইরে মন্তব্য করেন বলে মনে হয় না, মিরাজ ভাই নাই, আলিফ দেওয়ানও(মনে আছে?) নাই, ধুর সবাইরে মিস করতেছি।লোকালটক কত পাল্টায় গেল। এখন তিনি ডিপ্লোম্যাটের মত কথা বলেন। কৌশিক তো এককালে কত অসাধারন কবিতা পোস্টাইতেন, অনেক চেতে যাইতেন, আবেগ ছিল, এখন খালি স্যাটায়ার । লোকটার কি আবেগ মইরা গেল?
আপনেরা কই? একটা বার জানান দিয়া যান।