আজ সকাল থেকেই
অশুচি শরীরটাতে কেমন জানি ক্লান্তি ভর করেছে-
সকালে ঘুম থেকে উঠেই দিদিমা বকাবিদ্ধ করল সাথে বলল-
একটা কাজও ঠিক
মত করিসনা,
যা দোকানে গিয়ে এই
বাজারগুলো করে নিয়ে আয়,
নইলে দুপুরে তোকে ভাত দিবনা-
এটা তোর শাস্তি।
কি আর করা গোমড়ামূখে গেলাম,
হালারপুত দোকানদার
বাজার দিতে ১ঘন্টার
মায়রেবাপ করে দিল-
অবশেষে বাজার নিয়ে বাসায় গমন
করলাম,
তারপর রওনা দিলাম
মাচাঙের উদ্দেশ্যে আড্ডাবাজি করতে-
৪জন মিলে ৫২ পৃষ্ঠার
বইটা পড়ছিলাম
বাকিরা হৃদরোগের
উপাদান সহ
বকবকানিতে মগ্ন-
আড়াইটা নাগাত আসর ভঙ্গ হল- বাসায় আসলাম,
সঙ্গে সঙ্গে দিদিমা ডাক
দিয়ে বলল-
ওই বান্দর স্নান করে আয়,
স্নান আর খাওয়া-
দাওয়া করতে করতে সাড়ে তিনটা বাজল-
এলাম দুরদর্শনের
সামনে,
শুয়ে শুয়ে দুরদর্শনের
বিনোদন উপভোগ
করছিলাম-
কিছুক্ষন পর হঠাৎ
করে বিদ্যুৎ চলে গেল,
ক্লান্তির কারনে দুরদর্শনটাও আর উঠে বন্ধ করিনি-
একটু ঘুমানোর
চেষ্টা করছিলাম-
যেই দু-চোখ তন্দ্রাছন্ন হল-
হঠাৎ করে একটা শব্দ
শুনতে পাচ্ছিলাম
মনে হচ্ছিল পাশের
কক্ষে কে যেন
হিচকে হিচকে কান্না করছে-
উঠে দরজার ফাঁক
দিয়ে দেখলাম দিদিমা-
হাতে একটা ওড়না ছিল-
অবাক দৃষ্টিতে ওড়নাটার দিকে তাকিয়ে আছে আর হিচকে হিচকে কান্না করছে-
আমি বুঝতে পেরেছিলাম কান্নার কারনটা,
চুপচাপ ছিলাম কিছুই বলিনি,
কারন শান্তনা দেওয়ার
ক্ষমতাটা আমার ছিলনা-
ওড়নাটা ছিল তার বড়
মেয়ের,
যেই মেয়ে গত ২০বছর
আগে চলে গিয়েছিল
অচিনপুরে,
যেখান গেলে আর আসা হয়না,
হঠাৎ করে আলমারি থেকে শীতের কাপড় খুঁজতে গিয়ে তার বড় মেয়ের ওড়নাটা খুঁজে পেল-
ভেসে উঠল সেই
আক্রমনাত্বক স্মৃতি,
সময় হওয়ার আগেই দুনিয়া ছেরে যেতে হল তার বড় মেয়েকে,
একটা আড়াই বছর
আর একটা সাড়ে ৫
বছরের সন্তানকে রেখে,
সেই বিকেল থেকেই
এখনও পর্যন্ত দিদিমা কেমন যেন মনমরা হয়ে গেছে।
করুক কান্না, অন্তত মায়ায় ভারি মনটা হালকা হবে,
মা বলে কথা -
দিদিমা তুমিই কাঁদো,
আমি তখনও অবুঝ
ছিলাম,
এখনও অবুঝ থাকতে চাই!
মা.....
তোমার ওড়না
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৫৪