somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাক্ষর সংগ্রহ করে বুকলেট ছেপে কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যাবে?

০২ রা জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভার্চুয়াল দুনিয়ায় মুখে মুখে অনেক কিছুই করা যায়। কিন্তু মাঠে নামার আগে সবদিক ভাবা উচিত, যেন ছোট ছোট উদ্যোগগুলো মাঠে মারা না পড়ে। প্রথমেই দুটি প্রশ্ন। উত্তরও নিজেই দিলাম।

প্রশ্ন : জামাল ভাস্কর নতুন কী করছেন? এর ফলাফল কী?
উত্তর : পোস্ট পড়ে জানা যাচ্ছে, তাদের মূল লক্ষ্য স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান। বাংলাদেশের বাস্তবতা মনে রাখলে এই ধরনের অতি ভদ্রোচিত কাজে খুব একটা উৎসাহ খুঁজে পাই না। তারপরও কথা হল, এই উদ্যোগে জনমত তৈরির জন্য নতুন কী করা হচ্ছে? এই কাজ তো আগেও হয়েছে- আরো ব্যাপকাকারে, আরো বড়ো পরিসরে। ভাস্করের পোস্ট পড়ে আমি ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির একজনকে ফোন করেছিলাম কিছুক্ষণ আগে, কিছু তথ্য জানতে। তিনি জানালেন, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির উদ্যোগে গত জুন মাস নাগাদ সারা বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। অংকটা সঠিক। কারণ সে সময় আমি নিজেও সেই স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে যুক্ত ছিলাম। ওই নেতা জানান, পরে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের মাধ্যমে সবগুলো স্বাক্ষর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। একটি করে কপি জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছিল।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজটি আগে আরো ব্যাপকাকারে হয়েছিল এবং প্রভাবশালী একটি সংগঠনের মাধ্যমে ওই স্বাক্ষরপত্র জাতিসংঘেও গিয়েছিল। কিন্তু এর কোনো ফল, কোনো প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি।
এছাড়া শেখ হাসিনার ভাষণ এবং ১৯৭৩ সালের সংশ্লিষ্ট ভাষণ নিয়ে বুকলেট তৈরি করা হলে তা জনমনে আদৌ প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে কিনা, তা ভাবতে হবে। আপনারা অনেকেই জানেন, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির বেশ অনেকগুলো মানসম্মত প্রকাশনা আছে।

প্রশ্ন : ব্লগারদের ক্ষুদ্র কমিউনিটির পক্ষে সর্বোচ্চ কয়টি স্বাক্ষর সংগ্রহ করা সম্ভব?
উত্তর : ধরা যাক ২০০ জন ব্লগার এবং তাদের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে আরো ১০০ জন স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে সার্বক্ষণিক যুক্ত হলেন। এই ৩০০ জনের প্রত্যেকেই ৫০০ করে স্বাক্ষর সংগ্রহ করলেন। তাহলে মোট স্বাক্ষর দাঁড়াল ১ লাখ ৫০ হাজার। কিন্তু এই স্বাক্ষরগুলো ফাইলে ভরে আমরা করবোটা কী? আমার অভিজ্ঞতায় এই ধরনের স্বাক্ষরপত্র সংসদ ভবনের কোনো একটি কক্ষের ফাইলের স্তূপে চাপা পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। এভাবে আসলে সরকারকে প্রভাবিত করা যায় না। স্বাক্ষর সংগ্রহ করে সরকারকে প্রভাবিত করার কাজটি বিদেশে হয়, কিন্তু বাংলাদেশে সেরকম উদাহরণ এ পর্যন্ত দেখিনি। দৈবক্রমে এই কাগজ যদি শেখ হাসিনার সামনে যায়ও, স্বাক্ষর-টাক্ষরে প্রভাবিত হওয়ার মানুষ তো তিনি নন। আবার মাত্র একটি স্বাক্ষরেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত হতে পারে, যদি শেখ হাসিনা তার কলমটি হাতে তুলে নেন।

এখন সেই কাজটিকেই বেগবান করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরুর জন্য আওয়ামী লীগকেই ক্রমাগত চাপে রাখতে হবে। তার জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান কিংবা বুকলেট তৈরি কার্যকর কিছু নয়। স্বাক্ষরে যদি কাজ হতো, তাহলে নির্মুল কমিটির উদ্যোগের পর বাংলাদেশের ওপর সিডর বয়ে যেতো। তা যেহেতু হয়নি, ভাবতে হবে অন্য কিছু। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ঢাকার অলিগলি পোস্টারে ছেয়ে ফেলার হট্টগোলীয় প্রস্তাবটি বরং অধিক কার্যকর মনে হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:৫৬
২৫টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×