somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিলখানার ঘটনায় সীমান্তের খুঁটিগুলোই আসলে দুর্বল হয়ে পড়ল

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক ঘটনাই ঘটে গেল আজকে পিলখানায়। এখনো দেখার বাকি আরো অনেক কিছু। রাইফেলসের মতো একটি আধা সামরিক বাহিনীতে যে মাপের শৃঙ্খলা আশা করা হয়ে থাকে, এই ঘটনায় দেখা গেল, যে কারণেই হোক না কেন, সেই শৃঙ্খলা আদতে নেই কিংবা শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীতে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে দেখে অনেকেই বেশ আনন্দিত হয়েছেন দেখছি। কিন্তু বুঝতে হবে, শেষ বিচারে বাংলাদেশ রাইফেলস "সুজন" নয়, ইউএনডিপির কোনো প্রকল্পও নয়, আবার মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিও নয়। এ ধরনের বাহিনীতে শৃঙ্খলা এবং শৃঙ্খলাই শেষ কথা, এবং তা যে কোনো পরিস্থিতিতে। রাইফেলসে বেতন-ভাতার বৈষম্য ছিল, আরো নানা কারণে অসন্তোষ ছিল। তাদের দাবিও ন্যায়সঙ্গতই। কিন্তু নির্মম সত্যি এটাই যে, আজ যা ঘটল এবং আগামীতে যা যা ঘটবে- তাতে আমার দেশের সীমান্তের খুঁটিগুলোই আসলে দুর্বল হয়ে পড়ল। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে এই ঘটনা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হচ্ছে। এতে যতো যাই হোক, একটি আধা-সামরিক বাহিনীর এই বিদ্রোহ বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে নিশ্চিতভাবেই চেনাবে অন্যরূপে। সেই রূপ ইতিবাচক নয়। এটা যে কোনো বিচারেই পুরো বাংলাদেশের জন্যই একটি অপমানজনক ঘটনা।

যতো যাই হোক, শৃঙ্খলাই শেষ কথা
রাইফেলসের যে সদস্য আজ মুখোশ পরে টিভি ক্যামেরার সামনে নিজেদের দাবিদাওয়া তুললেন- তার দাবির সঙ্গে একমত- কিন্তু আধা-সামরিক বাহিনীতে থাকার যোগ্যতা তার নেই। সৈনিক মাত্রেই যে কোনো পরিস্থিতিতে তার উর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ মানতে বাধ্য। এর অন্যথা হলে বুঝতে হবে, সেখানে ঘাটতি আছে, বড়ো গলদ আছে। কঠোরতম শৃঙ্খলা না থাকলে বাংলাদেশ রাইফেলস কেন, কোনো বাহিনীই টিকে থাকতে পারবে না। সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন হল- এই ধরনের একটি বিশৃঙ্খল বাহিনী কী করে আমার দেশের সীমান্ত রক্ষার কাজ করবে?

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য করুণা
এতো বড়ো একটি ঘটনা ঘটল, কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এর কোনোই পূর্বাভাস পাবে না- তা কী করে হয়? গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এই ব্যর্থতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার ব্যাপারে পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থ হওয়ায়, বিশেষ করে ডিজিএফআই মহাপরিচালকের পদত্যাগ করা উচিত এখনই। এটা একটি অমার্জনীয় ব্যর্থতা তাদের। এই ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য শ্রেফ করুণাই হচ্ছে।

কে প্রতিপক্ষ, কেন প্রতিপক্ষ
সেনাবাহিনীকে আবার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হচ্ছে। প্রেষণে বিডিআরে যাওয়া কোনো কোনো সেনা কর্মকর্তার অন্যায়-দুর্নীতি-অনিয়ম নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু তার জন্য পুরো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে, তাকে হেয় করে অনেকেই একধরনের সুখ অনুভব করছেন। অথচ এই মানুষগুলোই মিয়ানমার এসে বঙ্গোপসাগরে গ্যাসের জন্য হানা দিলে উদ্বিগ্ন হয়, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমানার ভেতরে ঢুকে ভারত জরিপকাজ চালালে এই মানুষগুলোর উৎকণ্ঠা ঝরে পড়ে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা বাদই দিন, ওই যে ভেনেজুয়েলা- একজনমাত্র অপহৃত সৈনিকের জন্য সেখানেও পুরো দেশ প্রার্থনায় বসে। হানাহানি হবেই, ভাই ভাইয়ের বিরুদ্ধে লড়বেই, দ্বন্দ্ব-সংঘাত থাকবেই- কিন্তু সবার আগে দেশ। সবার আগে দেশের স্বার্থ। তবে বলা হয়ে থাকে, নরকে মাত্র একটি প্রকোষ্ঠেই কোনো প্রহরা থাকে না। কারণ সেই প্রকোষ্ঠে বাঙালিদের রাখা হয়। কেউ নরকের দেয়াল টপকে পালাতে চাইলে অন্যরা তাকে টেনে নিচে নামিয়ে আনেন। বোধকরি এজন্যই এশিয়ায় পাকিস্তান-ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সবচেয়ে কম পরিশ্রম করতে হয় একমাত্র বাংলাদেশেই, না চাইতেই যে তাদের কাজগুলো অন্যরা করে দেন। এই না হলে বাঙালি!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:২৪
৪৭টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

Testimony of Sixty- By Edward Kennedy বাংলাদেশের রক্তাক্ত সত্যের এক আন্তর্জাতিক স্বীকারোক্তি

লিখেছেন কিরকুট, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩




১৯৭১ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর বৈপরীত্যের বছর। এটি যেমন ছিল অন্ধকার ও রক্তাক্ত, তেমনি ছিল সত্যের প্রতি অবিচল এক সময়কাল। এই বছরের গণহত্যা, শরণার্থী স্রোত ও মানবিক বিপর্যয়ের বিবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×