somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদ্যুৎ দে, হারামজাদা!

০৭ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েক দশকব্যাপী বিশৃঙ্খলা, বিশেষ করে গত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের লুটপাটে বিদ্যুৎ খাতে এক দুঃসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল আগেই। মাঝখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও পরিস্থিতি প্রায় একই ছিল। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে তেমন কোনো পদক্ষেপই ছিল না তাদের। কিন্তু কিভাবে কিভাবে যেন ওই সময়টায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি তুলনামূলক সহনীয় ছিল। এবার ভূমিধস বিজয় নিয়ে ক্ষমতায় বসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রতিশ্রুতিও ছিল বিদ্যুৎ পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন। বিধি বাম! ক্ষমতায় আরোহণের মাত্র কয়েক মাসেই বিএনপি সরকারের দুঃসহ সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। অন্তর্ঘাত কিনা কে জানে, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির দ্রুতই অবনতি ঘটছে সারা দেশেই। সারা দেশের বিদ্যুৎ চুষে আনা হয় যে ঢাকায়, সেই ঢাকাতেই এখন প্রতিটি এলাকায় তিন-চার দফা কিংবা তারও বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। অন্য বিভাগীয় শহরের অবস্থা এর চেয়ে খারাপ। আর গ্রামের পরিস্থিতি তো বলাটাই বাহূল্য।

সরকারের ব্যর্থতা যেখানে
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলজির শিক্ষক ও বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ নুরুল ইসলাম আজ প্রথম আলোতে বলেছেন - "দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বর্তমান সমস্যা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। তাই এ সমস্যার সমাধানও রাতারাতি সম্ভব নয়। দেশবাসী তা আশাও করে না। কিন্তু সংকট মোকাবিলায় সরকারের কিছু পদক্ষেপ দেশবাসী আশা করে, যা এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান নয়। বরং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের কার্যক্রমে কিছুটা হলেও সমন্বয়হীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে।
এই সমন্বয়হীনতা মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগের মধ্যে আছে। আছে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত নীতিনির্ধারকদের মধ্যে। সমন্বয়হীনতা আছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের।
এই সমন্বয়হীনতার বড় উদাহরণ হতে পারে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি। মাস তিনেক আগে যে খনি থেকে রেকর্ড পরিমাণ কয়লা উত্তোলিত হলো, সেটি প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে থাকবে কেন? কেন এই কারণে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হবে?...
এভাবে হলে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রাথমিক জ্বালানির সংস্থান সরকার নিশ্চিত করবে কীভাবে? এখন তো বিদ্যুৎকেন্দ্র করার আগে দরকার জ্বালানির সংস্থান করা। সেই উদ্যোগ কি সরকারের আছে?
শোনা যাচ্ছে, সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের পরিচালক (অপারেটর) কেয়ার্ন এনার্জিকে সরকার অনুমতি দিতে চায় তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রি করার। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের যে একটি ভয়াবহ পরিণতি রয়েছে, সে কথা সরকারকে বিবেচনায় রাখতে হবে। আজ কেয়ার্নকে এই অনুমতি দিলে কাল আরও কোনো কোম্পানিকে তা দিতে হবে। আর এই তৃতীয় পক্ষ যে শেষ পর্যন্ত বিদেশি ক্রেতা হবে না, তারই বা নিশ্চয়তা কী। অর্থাৎ কেয়ার্নকে এই অনুমতি দেওয়ার সুত্র ধরে শেষ পর্যন্ত তৃতীয় রাউন্ডের অধীনে সমুদ্রবক্ষের গ্যাস রপ্তানির একটি ক্ষেত্রও তৈরি হতে পারে।
যেখানে দেশীয় কোম্পানির উৎপাদিত প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম সাত টাকার বেশি দিতে জ্বালানি মন্ত্রণালয় আগ্রহী নয়, সেখানে কেয়ার্নকে ভবিষ্যতের উৎপাদিত গ্যাসের দাম পিএসসির নির্ধারিত মূল্য ২১০ টাকার চেয়েও বেশি পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ সরকারের কাজে সমন্বয়হীনতার আরেকটি বড় উদাহরণ।"

কোথায় যাবে মানুষ?
অধ্যাপক নুরুল ইসলামের বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়, বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে শেখ হাসিনার সরকার আন্তরিক নয়। বরং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকরা মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে ছেলেখেলা খেলছে। তবে এই সময়ের সবচেয়ে বড়ো আশঙ্কাটি হল, গ্রীষ্মের আগেই যেখানে এই নারকীয় অবস্থা, সেখানে পুরোদমে গ্রীষ্ম শুরু হলে মানুষ কোথায় যাবে? এই মানুষগুলোই প্রবল উৎসাহে মহাজোটকে ভোট দিয়েছিল সুদিন ফিরে পাওয়ার আশায়। কী হবে তাদের?
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:১৭
৩০টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×