somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনীতির নামে পরিবারতন্ত্র : এমন নির্লজ্জ দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি...

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত কয়েকদিন ধরে যেদিকেই তাকাই, যেখানেই যাই - মিষ্টি আর মিষ্টি, মিছিল আর মিছিল। জোর করে উৎসব উৎসব ভাব আনার শ্রমসাধ্য চেষ্টা লক্ষ্যনীয়। তারেক রহমান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এই উৎপাত সহ্য করতে হচ্ছে ইদানিং। কে কতোভাবে কতো কায়দায় কতো ঢঙে তারেকভক্তি প্রকাশ করতে পারেন- তারই যেন প্রতিযোগিতা হচ্ছে দেশজুড়ে। অথচ এরাই বক্তৃতা-বিবৃতিতে গণতন্ত্রের জন্য কেঁদে-কেটে অস্থির হয়ে উঠেন হরহামেশা। বিএনপির ত্যাগী, বর্ষীয়ান ও যোগ্য নেতাদের পদতলে ঠেলে দিয়ে তারেক রহমান কিভাবে বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ পদটি পান? যেখানে বিএনপি সরকারের গত দফায় এই তারেক মাত্রই দলের প্রাথমিক সদস্য হয়েছিলেন। এরপর একলাফে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে আসীন হওয়ার পরও কয়েকদিন আগে আমরা দেখলাম, লাখো মানুষের সমাবেশ ঘটিয়ে কাউন্সিলের নামে নির্লজ্জ এক পরিবারতন্ত্রের প্রদর্শনী । দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট একাধিক অভিযোগ রয়েছে, এমন একজনকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে অভিষিক্ত করতেই যেন বহুমূল্য ওই কাউন্সিলের আয়োজন। এখন আমরা শ্রেফ প্রত্যাশা নিয়ে বসে আছি, ‌'কারা নির্যাতিত ত্যাগী নেতা' উপাধি নিয়ে তারেক রহমান শীঘ্র্ই লন্ডন থেকে বাংলার ভুবনে আবির্ভূত হবেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর নিজ নিজ দলের শূন্যস্থান পূরণ হয়েছে পরিবারের লোক দিয়ে। তাদের একজন কন্যা এবং অপরজন স্ত্রী। নানা ব্যর্থতা ও সমালোচনার মধ্যেও শেষপর্যন্ত তারা দলের হাল ধরে রেখেছেন- এই কৃতিত্ব তাদের দিতে হয় এবং এই পর্যন্ত একে পরিবারতন্ত্র বলা যায় না। পাশের দেশ ভারতে গান্ধী পরিবার দীর্ঘ সময় ধরে কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিয়ে আসলেও সেটা কখনোই পরিবারতন্ত্র হিসেবে নিন্দিত হয়নি। সেখানে যারা নেতার আসনে উঠে এসেছেন, তারা রাজনীতি করেই উঠেছেন। পশ্চিমেও এই ধারার উদাহরণ আছে। বাংলাদেশে এই পরিবারতন্ত্র কার্যত রাজতন্ত্রেরই একটি রূপ হিসেবে চলে আসছে। রাজার ছেলে রাজা, বাদশার মেয়ে জুলেখা! পরিবারতন্ত্র কিংবা ‌'বাংলা রাজতন্ত্রে' এটাই রীতি, এটাই নিয়ম। এই ধারায় জিয়া পরিবারকে আমরা দেখছি, পরিবারের অযোগ্য সদস্যদের যেনতেনভাবে দলের শীর্ষ পর্যায়ে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিযুক্তি তার একটি রগরগে দৃষ্টান্ত।

হাসিনাপুত্র জয়কে এখনো বাংলাদেশের রাজনীতির দৃশ্যপটে হাজির হতে দেখা যায়নি। তবে আগামী দিনে যদি জয়কে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয়, সেটাও হবে পরিবারতন্ত্রের আরেক নিকৃষ্ট উদাহরণ, নিঃসন্দেহে। এখনো শেখ সেলিম, ব্যারিস্টার তাপস, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের যারা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ে ভূমিকা রেখে চলেছেন, সেটাও ওই পরিবারতন্ত্রের জোরে, যোগ্যতায় নয়। চলতি দফায় শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হতে পেরেছেন, তাও শতভাগ পরিবারতন্ত্রের কল্যাণে।

পরিবারতন্ত্রের ধারা অন্য দলেও প্রবহমান। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তো যথারীতি এক কাঠি ব্যতিক্রম। নিজের স্ত্রী রওশনকে শুরু থেকেই দলের শীর্ষ পর্যায়ে লালন-পালন তো করছেনই, পরে বিদিশা উইসনকে বিয়ের পরপরই তাকে নিয়ে এসেছিলেন দলের শীর্ষ পর্যায়ে। আর ভাই গোলাম কাদের তো আছেনই। সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা বিএনপি থেকে বেরিয়ে নিজে একটা দল করেছেন বটে, সেখানেও তার পরবর্তী পদটি ছেলে মাহী বি চৌধুরীর।

ছবিতে রাজা তারেকখামেনের প্রস্তরমূর্তি
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:২৪
৩৪টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×