somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগারদের বই অপরবাস্তব : ব্লগ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা, স্বাধীনতার সীমা এবং অন্যান্য

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বই প্রকাশ করা কিংবা বিপণন করা আদতে একটা ব্লগের কাজ হতে পারে কিনা- তার পক্ষে-বিপক্ষে ইতিমধ্যে নানা যুক্তি এসেছে। আমার অভিমত হচ্ছে, প্রকাশনার মতো ব্লগবহির্ভূত কাজে কর্তৃপক্ষের যুক্ত হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা প্রকৃতপক্ষে নেই। স্বাধীন ব্লগার হিসেবে আমি নিজেও চাই না যে, ব্লগারদের বইয়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে কর্তৃপক্ষের কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকুক। ব্লগের বইয়ের খাতিরে কর্তৃপক্ষ শুধু প্রচারণার ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে, যেটা আমরা দেখেছি, গত কয়েক বছর ধরে পোস্ট স্টিকি, বিজ্ঞাপন প্রকাশ করার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ সেই কাজটি ভালোভাবেই করছে। কর্তৃপক্ষের ভূমিকা এটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত।

কেউ কেউ হয়তো অন্য ব্লগের উদাহরণ টানতে পারেন। সেক্ষেত্রে আমি বলবো, যেমন সচলায়তন, সেটা প্রকৃতপক্ষে ছোট একটি লেখক কমিউনিটি। ব্লগ যে নয়, এমনকি সেটা তারা নিজেরাও স্বীকার করে। ফলে বছর ধরে বইয়ের জোগাড়যন্ত্র করা, প্রকাশ কিংবা বিপণন করা- এগুলো তাদের জন্য স্বাভাবিক, এমনকি সেটা তাদের মূল লক্ষ্যেরও অন্তর্গত। অন্যদিকে বলাবাহূল্য, আমারব্লগের প্রকাশনা-উদ্যোগটি পুরোপুরি ব্যবসায়িক। ফলে একযোগে ১০-১৫টি বই প্রকাশ, বাংলাবাজারে অফিস খোলা, স্টল খোলা, তার জন্য আবার স্টাফ রাখা, দৈনিকভিত্তিতে স্টল খরচ চালানো- এগুলো তাদের জন্য, একটি প্রকাশনা সংস্থার জন্য খুবই স্বাভাবিক। আর সে কারণেই লক্ষ্য করবেন, ব্লগারদের কোনো যোগ সেখানে নেই, থাকার কথাও নয়।

সম্পাদকমণ্ডলীর স্বাধীনতা বনাম ব্লগারদের অধিকার
গত দুবার অপরবাস্তব সম্পাদনা করতে গিয়ে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে, ব্লগের লেখা সরাসরি বইয়ে প্রকাশযোগ্য নয়। সম্পাদকের দায়িত্ব হচ্ছে, ব্লগের লেখাকে বইয়ে প্রকাশের উপযোগী করে তোলা। ব্লগারদের যেমন লেখার স্বাধীনতা আছে, তেমনি সম্পাদকেরও স্বাধীনতা আছে সেই লেখাকে প্রয়োজনমতো পরিমার্জন-সংযোজন-বিয়োজনের। এই স্বাধীনতা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। পত্র-পত্রিকায়ও লক্ষ্য করবেন, এই চর্চা আছে।
দুই মলাটের ভেতরে নানা মেরুর, নানা প্রান্তের, নানা মেজাজের লেখক ও লেখাকে একসূত্রে আনার কাজটি করতে হয়, ফলে সেটা সবসময়ই দুরূহ একটি কাজ। যতো সমস্যাই থাক না কেন, সম্পাদককে সেই কাজটিই করতে হয়। আমি মনে করি সম্পাদক যে বা যারাই হোক না কেন, একজন সম্পাদকের পূর্ণ অধিকার থাকা উচিত, বইয়ের স্বার্থে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সারাক্ষণ ব্লগারদের কাছে দায়বদ্ধ থেকে, কে কী ভাবলেন- না ভাবলেন সেসব মাথায় নিয়ে ব্লগিং হয়তো করা যায়, কিন্তু ভালো বই আদতে প্রকাশ করা যায় না, যাবেও না। আমি মনে করি, লেখা চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার পরবর্তী যাবতীয় বিষয় একান্তই সম্পাদকের নিজস্ব বিবেচনার বিষয়। খুব বেশি হলে তিনি বা তারা এক বা একাধিক ব্লগারের পরামর্শ নিতে পারেন। লেখার স্বার্থে, বইয়ের স্বার্থে একজন সম্পাদক যদি মনে করেন, কোনো গল্প বা কবিতার শিরোনাম পরিবর্তন করা দরকার কিংবা কোনো অংশ বাদ দেওয়া দরকার কিংবা কোনো লেখা পুরোপুরি বাতিলই করে দেওয়ার, আমি মনে করি সেটা করার পূর্ণ অধিকার একজন সম্পাদকের থাকা উচিত। লেখকদেরও সম্পাদক বা সম্পাদকমণ্ডলীর ওপর আস্থা রাখা উচিত। কারণ বিষয়টা ব্লগ নয়, দেয়ালিকা নয়, ছোটকাগজ নয়- বিষয়টা বইয়ের, মুদ্রিত হরফে যা থেকে যাবে যুগের পর যুগ।

একনজরে অপরবাস্তব
অপরবাস্তব-১
প্রথম প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৭, একুশে বইমেলা
বইয়ের ধরন : মিশ্র
সম্পাদকমণ্ডলী : বাকীবিল্লাহ, কৌশিক আহমেদ, অন্যমনস্ক শরৎ, রাসেল পারভেজ, আরিফ জেবতিক, অমি রহমান পিয়াল, সাদিক মোহাম্মদ আলম, সৈয়দ সাখাওয়াৎ।
প্রচ্ছদ : রাহা

অপরবাস্তব-২
প্রথম প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, একুশে বইমেলা
বইয়ের ধরন : মিশ্র (গল্প ও কবিতা)
প্রধান সংকলক : অন্যমনস্ক শরৎ
সহযোগী সংকলক : অমি রহমান পিয়াল, অন্ধকার, আতিকুল ইসলাম আনন, উদাসী স্বপ্ন, কৌশিক আহমেদ, নওরীন সুলতানা, নাজিম উদদীন, মনের কথা, মুজিব মেহদী, যীশু, রাসেল পারভেজ, সাদিক মোহাম্মদ আলম, সৈয়দ এহসানুল হাবিব, শওকত হোসেন মাসুম, হোসেইন, বাকীবিল্লাহ।
প্রচ্ছদ : শাহরিয়ার হাসান সুলভ

অপরবাস্তব-৩
প্রথম প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০০৯, একুশে বইমেলা
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ৯৬, মূল্য : ১০০ টাকা
বইয়ের ধরন : গল্পগ্রন্থ
সম্পাদক : লোকালটক
প্রচ্ছদ : বিশ্বজিৎ

অপরবাস্তব-৪
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০১০, একুশে বইমেলা
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ১২৮, মূল্য : ১৩০ টাকা
সম্পাদক : লোকালটক, আবদুর রাজ্জাক শিপন ও কৌশিক আহমেদ
সহযোগী সম্পাদক : একরামুল হক শামীম ও নীরা আহমেদ অপ্সরা
প্রচ্ছদ : মাহবুবুর রহমান
সবগুলো অপরবাস্তবেরই প্রকাশক ছিলেন রাশেদ হাফিজ (রাহা)।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:৪৮
১৪টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×