somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাম্প্রতিক চারটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সমস্যা নিয়ে একটি নির্মোহ বিশ্লেষণ!

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে সমস্যার শেষ নেই। খাতার পর খাতা লিখে ভরে ফেলা যাবে, তবু তালিকা শেষ হবে না। তার মধ্যে জনসংখ্যা, খাদ্য, বাসস্থান কিংবা যানজটের মতো নাগরিক সমস্যাগুলো আপাতত পাশ কাটিয়ে রাখছি। আজ ব্লগারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ চারটি জাতীয় সমস্যার দিকে। সুখের বিষয়, তার মধ্যে অন্তত দুটি সমস্যার সমাধান সাম্প্রতিক সময়ে আমরা পেয়েছি মূলত সরকারের ত্বরিৎ উদ্যোগে।

১.
সমস্যা : প্রথম রাকাতের ৩ তাকবির ছাড়া নামাজ আদায় সংক্রান্ত জটিলতা।
মূল ঘটনা : ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ ৬ তাকবিরের সঙ্গে আদায় করতে হয়, যা বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব মাওলানা সালাউদ্দিন ভুলে যান। তিনি প্রথম রাকাতের ৩ তাকবির ছাড়াই নামাজ শুরু করেন।
প্রতিক্রিয়া : ওহ্ আল্লাহ! মুসলিম বিশ্ব এই ধরনের ঘটনা অতীতে প্রত্যক্ষ করেনি। বায়তুল মোকাররমের মুসল্লি সমাজ ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় ঈদের জামাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিজ্ঞ আলেম সমাজও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে খতিব সালাউদ্দিনের অপসারণ দাবি করেন। তবে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের হুমকির পরই বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেছেন, 'প্রথম রাকাতে ৩ তাকবির ছাড়া নামাজ আদায়ের ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে। এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে বাধাগ্রস্থ করবে।' হোয়াইট হাউস মুখপাত্র ক্রিস্টোফার খাঙ্ক্ ইর্পো বায়তুল মোকাররমের এই ঘটনায় সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

২.
সমস্যা : বঙ্গবন্ধুর অধিকার শ্রদ্ধার সঙ্গে পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
সমাধান : সেশনজটে পড়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন নষ্ট হোক কিংবা র‌্যাংকিংয়ে পাঁচ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে 'প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের' স্থান না হোক- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার মূল দায়িত্বসমূহ ভালোভাবেই পালন করে চলেছে। উদাহরণস্বরূপ গত ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতভাবে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ নিয়ে পুরো দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ছিল গভীর উৎকন্ঠায়। ওইদিন দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে আদেশ প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীর মনে স্বস্তি নেমে আসে। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, 'আমরা সকলেই বঙ্গবন্ধুর অধিকার শ্রদ্ধার সঙ্গে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই ।' উপসংহার : এভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা কার্যক্রম নিয়মিত জোরদার করা গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে- এ বলাই বাহূল্য!

৩.
সমস্যা : দেশে দেশে ক্ষমা চাহিয়া পত্র পাঠানোয় উদ্বেগজনক দীর্ঘসূত্রতা।
সম্ভাব্য সমাধান : সরকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি "ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ অধিদপ্তর" গঠনের সিদ্ধান্ত গভীরভাবে বিবেচনা করতে পারে। এই অধিদপ্তর বিশ্বের দুর্বলতম দেশগুলোকে প্রতি তিন মাস অন্তর মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকার জন্য একবার করে ক্ষমা/দুঃখ প্রকাশ করার প্রস্তাব পাঠাবে। প্রাথমিকভাবে তালিকার শীর্ষে রাখা যেতে পারে আফ্রিকার মোজাম্বিক, সোমালিয়া এবং এশিয়ার ভূটান ও শ্রীলংকাকে। অথবা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সম্ভাব্য দেশের তালিকা চেয়ে এইরকম রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে।
বিশেষ সতর্কতা : মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে বিরোধিতাকারী ক্ষমতাধর রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, সৌদি আরব এবং বিশেষভাবে পাকিস্তানকে এই তালিকার বাইরে রাখার নীতি কঠোরভাবে পূর্বের মতো বহাল থাকবে।

৪.
সমস্যা : এটা খুবই দুঃখজনক যে, স্বাধীনতার ৩৯ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের দলিলাদি সমুন্নত রাখা সম্ভব হয়নি। অতীতে এজন্য অনেকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে দায়ী করেছেন, কেউ কেউ আবার সরাসরি আঙ্গুল তুলেছেন ক্ষতিকর পোকা ও রোগবালাই দমন বিভাগের দিকে।
সমাধান : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে দলিলাদি সমুন্নত রাখার কাজটি সম্পন্ন হল গত পরশু। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের দুই পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ আবু নাসের, আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও শেখ ফজলুল হক মণিসহ ৫ মুক্তিযোদ্ধাকে সনদ দেওয়ার মাধ্যমে সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পাদিত হল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদান করে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত সম্প্রতি বাসসকে বলেছেন, 'বীরপ্রতীক তারামন বিবি, বীরপ্রতীক লালুর সন্তান কিংবা ফজলুদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে অবশ্য চিন্তার কিছু নেই। এইসব ছাইপাশ দেখার যথেষ্ট সময় বাংলাদেশের সামনে আছে!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৫৩
২০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×