somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কারণে খালেদা জিয়া ই-ভোটিংয়ের তীব্র বিরোধিতা করছেন

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। কেন মেনে নেওয়া হবে না, সেটা স্পষ্ট নয়। ই-ভোটিংয়ের সুবিধাগুলো যেমন আওয়ামী লীগ-বিএনপি দু দলের জন্যই সমান, অসুবিধাগুলোও সমান। ই-ভোটিংয়ে আওয়ামী লীগ যদি কারচুপি করে, বিএনপিরও সেই একই কারচুপি করার সুযোগ আছে। তাহলে কেন বিরোধিতা? অনেক ভেবেচিন্তে দুটো বিষয় অনুমানের চেষ্টা করলাম-
অনুমান ১ : উপদেষ্টাদের কেউ কেউ তাকে ধারণা দিয়েছেন, ই মানে ইলেকট্রনিক। এবং এই ভোট দিতে হলে আপনাকে কম্পিউটার চালানো শিখতে হবে। কিন্তু এই বয়সে তার পক্ষে মোটেও সেটা সম্ভব নয়। বরং তাকে কম্পিউটার শেখানোর চেষ্টাটা রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল হবে।
অনুমান ২ : খালেদা জিয়া বিএনপিপন্থী ব্লগারদের মাধ্যমে জেনেছেন, সম্প্রতি ডয়চে ভেলে ইলেক্ট্রনিক জালভোট প্রতিযোগিতায় ব্যাপক কারচুপির ঘটনা ঘটেছে। চোখের সামনে এইরকম একটি উদাহরণ থাকার পর তিনি কিভাবে ই-ভোটিং মেনে নিতে পারেন?

মনে পড়ে, মনে পড়ে...
মনে পড়ে, ১৯৯২ সালে যখন বাংলাদেশকে বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবলের (সি-মি-উই-২) সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, তখন এই খালেদা জিয়াই সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। অজুহাত ছিল - ইমেইলের মাধ্যমে দেশের গোপনীয় তথ্য পাচার হয়ে যাবে! পাশের শ্রীলংকা ও ভারত ওই লাইনে ঠিকই যুক্ত হয়। এরপর সিঙ্গাপুর ও ফ্রান্স টেলিকম আরো একটি সাবমেরিন ক্যাবল লাইন (সি-মি-উই-৩) স্থাপনের উদ্যোগ নেয় ১৯৯৪ সালে। বাংলাদেশ সেখানেও যুক্ত হয়নি। অজুহাত ওই একই- দেশের গোপনীয় তথ্য পাচার হয়ে যাবে! এরপর ২০০৬ সালের ২১ মে বাংলাদেশের উপলব্ধি হয় যে, সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া দরকার। আর তাতে খরচ হল দরিদ্র এই দেশের মূল্যবান এক হাজার কোটি টাকা। শ্রেফ এই খালেদা জিয়ার বোকামির চড়া মাশুল।



মানুষের ক্ষোভ কোথায় বিএনপি জানে না
মানুষের ক্ষোভ কোথায়, মানুষের দুঃখ কোথায় - সেটা বিএনপি কখনোই বোঝেনি, বুঝতেও চায়নি। অথচ নিজের একটি বাড়ির জন্য খালেদা জিয়া ঈদের সময়টাতেও হরতাল ডাকতে দ্বিধা করেননি। এখনও যদি জরিপ হয়, এই বাড়ি ইস্যুতে অন্ধ বিএনপি সমর্থক ছাড়া বিএনপিরই সবগুলো ভোট খালেদা পাবেন না। নৃংশসতার নির্মম শিকার এক দরিদ্র কলেজছাত্রকে নিয়ে সাহারা খাতুন আর তার রেব শ্রেফ মাস্তানি করে যাচ্ছে। সেটা নিয়ে বিএনপি চাইলে ক্ষুব্ধ মানুষের মন জয় করতে পারতো। কিন্তু না, তারা আছে তারেক-কোকোর দুর্নীতি মামলা নিয়ে অহর্নিশ কান্নাকাটিতে। কৃষ্ণগহবরের কসম, মানুষের কাছে এইসব ইস্যুর দু পয়সার মূল্য নেই।
শেয়ারবাজারের অরাজকতা নিয়ে ক্ষুব্ধ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভে ফেটে পড়ছে। লাখ লাখ মানুষ শেয়ার-ডাকাতদের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। সেটা নিয়ে বিএনপির কোনো মাথাব্যাথা নেই। একটি সংবাদ সম্মেলন তারা করেছিল বটে, সেখানেও মূর্খতাই স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়েছে। প্রথমে চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী শেয়ারবাজারের তদন্ত প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করা হল। এর পরপরই আবার তদন্ত প্রতিবেদনে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার দাবি করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন যদি প্রত্যাখ্যানই করা হয়, সে অনুযায়ী অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারই বা কেন হবে? শীর্ষ শেয়ার-ডাকাত মোসাদ্দেক আলী ফালু খোদ খালেদা জিয়ার আপনজন। এই মূহুর্তে বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের মতোই আচরণ করতো দলটি।



কেন প্রযুক্তি বিরোধিতা?
ই-ভোটিং বা ইলেকট্রনিক ভোটিংয়ের বিরোধিতা কেন? কেন দেশকে টেনে টেনে পিছনে নিয়ে যাওয়া? বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা? নাকি অজ্ঞতা? যদি বিএনপি মনে করে যে, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়, তারা জালিয়াতি করতে পারে, তাহলে আন্দোলন হোক বরং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রযুক্তির বিরোধিতা কেন? প্রযুক্তির যদি কোনো গলদ থাকে, কোনো সীমাবদ্ধতা থাকে, তাহলে সেটা বিএনপির জন্য যেমন সমস্যা, আওয়ামী লীগের জন্যও কি নয়?

নিজেদের অজ্ঞতা-অক্ষমতা ঢাকতে গিয়ে প্রযুক্তির বিরোধিতা করবেন না, নিজ হাতে দেশকে আর পিছিয়ে দেবেন না, হে অষ্টম শ্রেণী!

ই-ভোটিং নিয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা
চট্টগ্রামের নির্বাচনে ই-ভোট : সফলসূচনা
ই-ভোটিং যুগে বাংলাদেশ
দ্রুত ভোট দ্রুত গণনা
একটি ওয়ার্ডে বোতাম টিপে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন
চট্টগ্রামে ইলেকট্রনিক ভোটের মহড়া
আগামী সংসদ নির্বাচনে বড় পরিসরে ই-ভোট
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৩:৩৩
৭৫টি মন্তব্য ৪৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয় দিবসের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে । সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ২০২৫, ১৬ই ডিসেম্বর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৯




দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রানের এক সাগর রক্তের বিনিময়। দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারানো। লক্ষ শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত‍্যু। এক কোটি মানুষের বাস্তুহারা জিবন। লক্ষ কোটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×