সাহিত্যে নোবেল ঘোষণা করা হবে কিছুদিনের মধ্যেই। সম্ভবত কাল, ৮ই অক্টোবর । সাহিত্যিকদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা। মিলান কুণ্ডেরা, ফিলিপ রথ , নগুগি, আদোনিস, জয়েস, মুরাকামিদের সম্ভবত রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাওয়ার দশা।
সব কিছু বিশ্লেষণে, এবারের নোবেলে কবি আদোনিস পাচ্ছেন না। কারণ, কয়েক বছর আগেই একজন কবি পেয়ে গেছেন। শক্তিশালী প্রতিযোগীদের মধ্যে নগুগি এবং হারুকি মুরাকামি রয়েছেন। মুরাকামির সমস্যা হচ্ছে, ২০১২ সালেই চীনা মো ইয়ান নোবেল হাতিয়ে নিয়েছেন, তাই গাণিতিক হিসেবেই মুরাকামিকে বসে থাকতে হচ্ছে। আর একটা কারণ আমার যা ক্ষুদ্র জ্ঞানে বলে সেটা হচ্ছে, মুরাকামি এবং মো ইয়ান দুজনেই সুররিয়ালিজমে প্রভাবিত। ফলে, মুরাকামি নিশ্চিতভাবেই নোবেল পাচ্ছেন না। তবে , উনি আগামী কয়েক বছরে পাবেন সুনিশ্চিত। ( যদিও ল্যাডব্রোক্স এর বাজিতে মুরাকামি এগিয়ে আছেন!)
কয়েকজন প্রখ্যাত সমালোচকদের দেখছি, সবাই নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গ'ও'র দিকেই বাজি ধরে বসে আছেন। সম্ভবত এটার প্রধান কারণ, দেশের প্রথম সারির একটি পত্রিকা অনুসারেই অন্ধ চোখে হাঁটা। যদিও, পত্রিকাটিতে সবার নাম থাকলেও আলেক্সেইভিচের নাম নেই। স্বভাবতই ধরে নেয়া যেতে পারে, নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গ এবারের নোবেলের শক্ত দাবিদার। তবে, আরও শক্ত দাবিদারও যে আছে। যাকে আমাদের প্রায় সবারই চোখ এড়িয়ে গেছে। উনি হচ্ছেন আলেক্সেইভিচ। একজন নারী ঔপন্যাসিক। নাম শুনেই বুঝতে পারছেন, রাশিয়ার নারী। জন্ম ইউক্রেনে। এখানে উনার নামটা হঠাৎ করেই ফেভারিট হয়ে যাবার কারণ, সিরিয়া বিষয়ে রাশিয়া-আমেরিকা নতুন করে জন্ম নেয়া দূরত্বে। উনি সোভিয়েত বিরোধী একজন লেখিকা। উনাকে নোবেল দিলে রাশিয়াই একটু বিব্রত হবে। উনার একটা বিখ্যাত উপন্যাস, "ভয়েসে'স ফ্রম চেরনোবিল"। স্বভাবতই উনি এবারের হট-ফেভারিট ক্যান্ডিডেট। এছাড়া আরও একটা জরুরী ব্যাপার আছে। সুইডিশ কমিটির স্থায়ী সচিবের পদে ব্রিটিশ নারী সারা দানিয়ুস দায়িত্ব নিয়েছেন। নারী হিসেবে তাই আলেক্সেইভিচ একটা উপরি সুবিধাতো পাচ্ছেনই। এর ওপরে একটা বৈষম্যতো আছেই। নারীরা পুরুষদের অনুপাতে খুব কমই সাহিত্যে নোবেল পেয়েছে ( এলিস মুনরো'র আগের হিসেব ধরলে)। সে হিসেবে এবার নারী হিসেবে উনিই এগিয়ে থাকতে পারেন। সুররিয়ালিজম, ঐতিহাসিক, কবিতা এগুলো বিগত কয়েকবছরের নোবেলের হিসেবে ছিল। এবার বাস্তবধর্মী কিছু থাকতে পারে। সে হিসেবে, অবশ্য নগুগি'ও কম যাচ্ছেন না। তবে, বিশ্ব ভূ-রাজনৈতিক হিসেব ধরেই অ্যালেক্সেইভিচকে এগিয়ে রাখা যেতে পারে।
তবে যদি বাজি ধরতে বলা হয়, হাতের বাজির কয়েনটা তিনজনের মধ্যে আলেক্সেইভিচের দিকেই রাখা যেতে পারে। কি হয়, সেটা ৮ অক্টোবরেই জানা যাবে। অপেক্ষা শুধু, নোবেল কমিটির ফোন কলের।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:১২