somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত তথ্যটি(ফিংগারপ্রিন্ট) কেন বিদেশীদের কাছে দিতে বাধ্য থাকব?? প্রসংগঃ বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কয়েক বছর ধরে সেলফোন ব্যবহার করে অপরাধমূলক কার্যক্রম সংঘটনের অভিযোগ বাড়ছে। মূলত নিবন্ধন ছাড়া বা ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে সিম নিবন্ধনের মাধ্যমে এসব অপরাধ করা হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। গ্রাহকের দেয়া তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিতের এ উদ্যোগ নেয়া হয়।

সিম কার্ড বিক্রি ও নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর ব্যাপারে গত আগস্টে প্রথম প্রস্তাব দেয় বিটিআরসি। ১ জানুয়ারি থেকে যেকোনো সেলফোন গ্রাহক স্বপ্রণোদিত হয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন চলছে। তিনটি পর্যায়ে বাধ্যতামূলকভাবে এ নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এসএমএসের মাধ্যমে সংগ্রহ করা তথ্য যাচাই শেষে যেসব সিমের তথ্যে গরমিল পাওয়া যাবে, সেগুলো প্রথম পর্যায়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি এসব সিমের নিবন্ধন হবে। এছাড়া বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যেসব সিমের তথ্য যাচাই করা হয়নি, সেগুলোর অংশবিশেষও এ পর্যায়ে নিবন্ধন করতে হবে।

দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হবে ১ মার্চ। এ পর্যায়ে বাল্ক আকারে সংগ্রহ করা সিমের তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের মিল রয়েছে এমন সংযোগের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। এ পর্যায়েও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যেসব সিমের তথ্য যাচাই করা হয়নি, তার অংশবিশেষের নিবন্ধন করতে হবে।

শেষ পর্যায়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের বাইরে থাকা অন্য সব সিমের নিবন্ধন বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে। ১ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মোবাইল অপারেটররা। গ্রামীণফোনের প্রধান করপোরেট অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, গ্রামীণফোন তা বাস্তবায়নে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।’ আরেক অপারেটর রবি আজিয়াটার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মুখপাত্র ইকরাম কবির বলেন, আমরা আশা করি, সিম নিবন্ধনের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বাস্তবায়নে যথাযথ সময় দেওয়া হবে।

জানা গেছে, বর্তমানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে মোবাইল অপারেটররা তাদের গ্রাহক নিবন্ধনের তথ্য নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের (এনআইডি ) কাছে সরবরাহ করছে। এনআইডি ওই সব তথ্য তাদের কাছে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডারের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করছে। এ বাছাইয়ের মাধ্যমে যেসব সিম ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিবন্ধন করা হয়েছে, তার তথ্য বিটিআরসি ও মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠাবে এনআইডি।

বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স নিয়ে বাংলাদেশে চুটিয়ে ব্যাবসা করে যাচ্ছে মাল্টিন্যাশনাল এইসব কোম্পানি। প্রায়ই গ্রাহকদের তথা নাগরিকদের এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায়। রাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিক হলেও আমরা এতই বোকা নই যে, আমরা তাদের অসাধু তৎপরতা ও কাজ কর্মের খবর রাখি না।
এরা কি পরিমাণ ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এবং নিজেদের দেশে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছে তা না জানলেও তারা তা করছে না সে ব্যাপারে কি নিশ্চিত? শুধু তাই নয়। গ্রাহকের কেনা ডাটা এরা অনায্যভাবে দ্রুত কেটে রাখে। আর যে ইন্টারনেট ৩০ টাকায় কিনে তা আমাদের কাছে ৩০০ টাকা বিক্রি করে সেটাও নিশ্চয়ই অজানা নয়। কিন্তু আমরা চুপ করে আছি।

জানা থাকার কথা, ফিঙ্গারপ্রিন্ট একজন মানুষের চূড়ান্ত পর্যায়ের ব্যক্তিগত তথ্য। এটা খুবই স্পর্শকাতর একটি ব্যাপার। রাষ্ট্র যেহেতু আমাদের জান ও মালের নিরাপত্তা দিচ্ছে অতএব একজন নাগরিক সেটা রাষ্ট্রের কাছে দিতে পারে। এটা নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি ব্যাপার। এই তথ্য দিয়ে অসাধু উপায়ে আপনাকে আসামী বানিয়ে দেয়া কোন ব্যাপারই না। বিশেষত পশ্চিমা বিশ্বের কোন দেশে আপনার এই জটিল ও ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করা দরকার যদি হয় তাহলে বুঝবেন কপালে খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। খুবই ভয়ানক খারাপ কিছু। আর পশ্চিমে যাতায়াত থাকলে তো আরো বড় কথা।
সম্প্রতি একটা তোড়জোড় লক্ষ্য করছি। আমার এয়ারটেল ও গ্রামীনফোন উভয় মোবাইলে একাধিকবার তাগাদা দেয়া হচ্ছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করার জন্য।
কয়েক বছর আগেও একবার আমাদের সংযোগ রি-রেজিস্ট্রেশন করা হলো। আমরা তা করলাম। এখন আরেকবার রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। করা দরকার হতেই পারে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কার কাছে আমার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দিচ্ছি?
সেইসব কোম্পানি নয় কি, যারা ছুঁতো পেলেই গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেয়। যারা, কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিলেও ব্যবসা করে টাকা নেয়। যারা, মোবাইল ডাটা চুরি করে। যারা আপনাকে প্রতিনিয়ত অফার ও বিজ্ঞাপন দিয়ে বিরক্ত করে তুলে। যাদের কাছে সেবা নয়, টাকাই মুখ্য, টাকাই পূজনীয়। তারা আমাদের ফিংগারপ্রিন্টের ডাটাবেজ তৈরি করার এ মহাসূযোগ কি হাতছাড়া করতে চাইবে?

নাগরিক নিরাপত্তার সাথে জড়িত এই আংগুলের ছাপ সংরক্ষণের অধিকার কেবলমাত্র রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রতিষ্টানই রাখে। এবং যেকোনও ঘটনা ঘটলে নিয়ন্ত্রিতভাবে এটা প্রক্রিয়া করতেও অনেক গোপনীয়তা বজায় রাখার কথা।

আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, বিশ্বের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিশৃংখল রাষ্ট্র পাকিস্তান ছাড়া এ ধরণের নাগরিক নিরাপত্তা বিধ্বংসী পদক্ষেপ আর কোন সরকার নেয় নি। খোদ নেপাল, শ্রীলংকা কিংবা আফ্রিকার সিয়েরালিওন, সেনেগালও নেয় নি। আমাদের সরকার কি ধরণের ভয়ানক বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন একটু ভেবে দেখার অনুরোধ রইল।
জাতীয় পরিচয়পত্রে আমরা বৃদ্ধাংগুলীর ছাপ দিয়েছি। এখন জাতীয় পরিচয় পত্রের আইডি নাম্বারই কি যথেষ্ট নয় সিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে?
আমার কথা হচ্ছে, আমার নিরাপত্তা বিধান করছে রাষ্ট্র। আমি আমার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত তথ্যটি(ফিংগারপ্রিন্ট) কেন তাহলে বহুজাতিক অনিরাপদ, অসাধু প্রতিষ্টানের কাছে দেব?

তথ্যসুত্রঃ
ফিঙ্গারপ্রিন্ট না দিলে মুঠোফোন সংযোগ বন্ধ
সিম নিবন্ধনে আসছে আঙুলের ছাপ পদ্ধতি
তিন ধাপে সম্পন্ন হবে বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৩
৪৫টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×