somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

✤ ✤ গল্পঃ অদৃত্ত

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিশ্বের যে কজন মেধাবী আছেন যারা বিশ্বকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন তাদেরকে একটি গুপ্ত সংস্থা নজরদারি করে। অনিবার্য কারণেই ডঃ স্টিফার্সন তাদের সাথে অর্থের বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ। ডক্টর স্টিফ হলেন একজন বহুমুখী প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব যিনি একাধারে কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদ, খনিজ ও ভারী শিল্প বিশেষজ্ঞ, অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার, রোবটিক ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞান বিশ্লেষক।
সিক্রেট টিমের নজরদারির আওতায় থেকেই নিজের জীবনের শেষ ইচ্ছাটুকু বাস্তবায়ন করতে আরো কয়েকজন নিয়ে কাজ করছেন তিনি। সবে এক ঘন্টা আগে পুরো সিস্টেমটা ইন্সটল করা হয়েছে। হাজারো ঝক্কি ঝামেলা পোহিয়ে অবশেষে সফল প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হচ্ছে দেখছেন মিঃ স্টিফ। আরাম কেদারায় শুয়ে শুয়ে একবছর আগের কিছু স্মৃতি ভেসে ওঠলো তাঁর মনোজগতের পর্দায়। স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য ও শেষমেষ বিচ্ছেদের ব্যাপারটা কেমন যেন ঘোরের মধ্যে থেকেই তিনি সম্পন্ন করে ফেললেন।

✤ শংকা
ডঃ স্টিফের মনে ব্যাপারটা গত কয়েক মাস ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রৌঢ়ত্ব শেষ হয়ে বার্ধক্যের সময় যেন খুব দ্রুতই চলে আসছে। আজকাল ভায়াগ্রা ছাড়া কারো সাথে আনন্দও করতে পারছেন না। পরশু মিসেস স্টিফ তাঁর লাবণ্যময় মুখে একগাল হাসি নিয়ে যখন ফিরে এসে জানালেন ডাক্তার রেডিম খুব চমৎকার কিছু সময় তাঁকে উপহার দিতে পেরেছে তখন ডক্টর স্টিফের অন্তরে কিছু হারানোর বেদনা জেগে ওঠেছিল স্ত্রীর অলক্ষ্যে। যেখানে ডাক্তার রেডিমের বয়স ষাটেরও বেশি যেখানে ডঃ স্টিফ সবে চুয়ান্ন শেষ করে পঞ্চান্নতে পা দিয়েছেন।
ডক্টরের মনে হচ্ছে জীবনের প্রায় সবটুকু সময় চলে গেছে। এখনই কিছু একটা করা দরকার।

✤ বিরোধঃ
ডক্টর স্টিফকে আজকাল বেশ চুপচাপ দেখা যায় অথচ মিসেস স্টিফ কচি মেয়েদের মতোই গাড়ি নিয়ে ইচ্ছেমত উড়ে বেড়াচ্ছেন। কেন জানি ব্যাপারটা অতো পছন্দ করছেন না তিনি যদিও নিজেই এতে খানিকটা বিস্মিত। তিনি মিসেস স্টিফের ব্যাক্তিস্বাধীনতা হরণের মতো একটা মানসিক অবস্থায় চলে আসছেন। অবশ্য মিসেস জেরিন স্টিফার্সনের বয়স এখনো চল্লিশের কোটায় পৌঁছেনি। কিন্তু এটা মানুষের জন্য নিজের ব্যক্তিত্ব প্রদর্শন ও গাম্ভীর্য তুলে ধরার মহৎ সময় চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায়।
যাইহোক, ডঃ স্টিফার্সন কদিন আগে সহকর্মী ডঃ জেরার্ল্ডকে বলেছিলেন ভুমিকম্প পূর্ভাবাস ও গবেষণামূলক একটি প্রতিষ্টান তৈরি করতে চান। জীবনে তো আর কম অর্থসম্পদ সঞ্চয় হয়নি। সিক্রেট গ্রুপের কাছে নিরাপদভাবে ৪০ বিলিয়ন পাউন্ড সমপরিমাণ সম্পদ তার রাখা আছে। নিশ্চয়ই এটা কম কথা নয়। স্টিফ নিজেকে মানবইতিহাসে স্মরণীয় বরণীয় করে রাখতে চান।
মিসেস জেরিন স্টিফার্সন ব্যাপারটা শুনে নিজেকে স্থির রাখতে পারেন নি। তিনি তৎকণাৎ নিজের পা থেকে হিল খুলে হুট হাট ডক্টরের কক্ষের দিকে তেড়ে গেলেন।
তাঁদের পাঁচ সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে না হবে তা চিন্তা না করে কেন তিনি সব সম্পত্তি দিয়ে গবেষণাগার তৈরি করবেন সেটা ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে জানতে চাইলেন ডক্টরের কাছে।
তুষারঝড়ের কবলে পড়লে একজন মানুষ যেভাবে নিথর হয়ে যায় ঠিক তেমনি ঠায় চেয়ারে বসে মিসেসের দিকে তাকালেন তিনি। হাত দিয়ে ইশারা করলেন শান্ত হয়ে বসো।
জেরিন কি মনে করে বসে অগ্নি দৃষ্টিতে প্রফেসরের দিকে তাকিয়ে আছেন। প্রফেসর তাকে এক পেগ দিয়ে বললেন- এটা নাও এবং শান্ত হয়ে বলো কি হয়েছে আমি বিবেচনা করবো।
মিসেস জেরিন তাঁর এ লাইফ পার্টনারকে সিরিয়াস অবস্থায় খুব কমই দেখেছেন। আজ সবচেয়ে সিরিয়াস মুডে অফিস করছেন ডক্টর। আর অফিসে এত উৎপীড়ন করাটা ঠিক হবে না।

✤ খবরঃ
জেরিন টিভি স্ক্রিনের দিকে তাকাতে তাকাতে লাফিয়ে ওঠেছেন ও চিৎকার করে জিম, কার্ল, হ্যারি ও তাদের বাবা স্টিফকে ডাকছেন। "ওঃ জেসাস!! এটা সত্য!! আমাদের জেসাস সত্যিই আছেন। ও মাই গাড!!"
ডঃ স্টিফও যথারীতি সবার সাথে দৌড়ে দৌড়ে আসলেন। তবে তিনি টিভি স্ক্রিনের দিকে না তাকিয়ে ছেলেদের ও স্ত্রীকে পর্যবেক্ষণ করতে করতে জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে?
- আরে তুমি এখনো দেখছো না? খবর?
- কি! কিসের খবর?
- দুরঃ টিভিতে দেখ। জেসাস আকাশে দেখা দেবেন। ঠিক সন্ধার সময় চাঁদ অস্ত যাবার ঠিক পরে।
- ভাল ব্যাপার।
সিরিয়াস হলে কি এত চমকপ্রদ বিষয়ও এড়িয়ে যেতে হয়? জেরিন ব্যাপারটায় চরমভাবে আহত হলেন কারণ নাস্তিক্য মতবাদ থেকে অর্থোডক্স খ্রিস্টবাদে ডক্টরকে ফেরানোর ভাল একটা উপায় ছিল এটা। অথচ লোকটা একদম ভ্রুক্ষেপই করলো না।

✤ রাগু হুয়শাঃ
জাপানের ভু-বিজ্ঞানী রাগু হুয়শা'র সাথে নির্ধারিত গোপন বৈঠকে বসার ঠিক আগ মুহুর্তে মিসেস জেরিন ডক্টর স্টিফকে ফোন করে দশ মিনিটের জন্য দক্ষিণ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে বললেন। তাঁর ওপর বেশ জোর/প্রভাব খাটানোর ব্যাপারটাও ঠিকঠাক ধরতে পারলেন মিঃ স্টিফ।
- রাগু আলতো হেসে জিজ্ঞেস করলেন কি? ঘরের ঝামেলা? হাঃ হাঃ হাঃ
- আরে রাখেন। যত্তসব। এই সময় নাকি আকাশের দিকে তাকিয়ে কি দেখব।
- হাঃ হাঃ হাঃ বেশ মজার বটে! যাইহোক, কাজের কথায় আসা যাক। আপনি শব্দশোষক যন্ত্র চালু করেছেন তো?
ডঃ স্টিফ হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লেন।

✤ ঝগড়াঃ
ডক্টর স্টিফ খুব মনোযোগ দিয়ে কাঠপেন্সিলের সাহায্যে কিছু একটা ডায়াগ্রাম তৈরি করছেন শক্তপোক্ত একটি সাদা কাগজে। তাঁর হাতে গাণিতিক নকশা/ফ্লোচার্ট খুব ভাল হয়।
স্ত্রী জেরিন এসে কয়েক মুহুর্ত চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেন। এরপর তাঁর দিকে রাজ্যের বিরক্তি ও অসন্তুষ্টির দৃষ্টিতে জিজ্ঞেস করলেন- তুমি কি সত্যি সত্যি টাকাগুলো নষ্ট করে ফেলবে?
- হ্যাঁ।
- এটা তুমি ভুল করছ। তুমি তোমার বাচ্চাদের ও আমার সাথে অন্যায় করছো।
- তোমাদের যত টাকা পয়সা দেওয়ার দরকার তা আমি দেব। তবে বাকিটা নিয়ে কোন কথা বলতে পারবে না।
- হায় জেসাস!! এটা কি হচ্ছে!!
ডক্টর স্টিফ আঁড়চোখে দেখলেন মিসেস জেরিনের উভয় চোখে অশ্রু জমা হয়েছে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই এটা গাল বেয়ে নিচে পড়তে যাচ্ছে।


✤ মাটির নিচেঃ
ভুমিকম্পের পূর্ভাবাস নিয়ে কাজ করছেন ডক্টর স্টিফার্সন। তাঁর নেতৃত্বে আছেন আরো ১০-১২ জন সর্বোচ্চ মেধাবী ব্যক্তিত্ব।
বিজ্ঞানী রাগু হুয়শা, ইঞ্জিঃ জাভেদ আলবামা, ইঞ্জিঃ আকাশ মালহোত্রা, ইঞ্জিঃ ইরিওনা লারিস্তুতভা ভুগর্ভে স্থাপিত ল্যাবে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করছেন। পৃথিবীর অভ্যন্তরে প্যাসিফিক প্লেটের ভেতরে থেকে সমুদ্রের নিচে ডিজিটাল নাম্বার ও সংকেত, লেখচিত্র পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। বিশালাকৃতির দেয়াল জুড়ে মাল্টিপল পার্টিশনেবল স্ক্রিনে তারা প্রতি সেকেন্ডের ভূ-কম্পন দেখছেন এবং যন্ত্রের পূর্বাভাসের পার্থক্য নির্ণয় করছেন।
সর্বনিম্ন ৫ মিনিট থেকে শুরু করে ৫ বছরের একটি পূর্ভাবাস সারণি তৈরি করে তাঁরা যান্ত্রিক উন্নয়নে কাজ করছেন।
আপাতত প্যাসিফিক প্লেটের সাথে ইউরেশিয়ান প্লেটের কম্প্রেশনাল/ডেস্ট্রাকটিভ আচরণ নিয়ে কাজ করছেন। এটা সফল হলে তাঁরা যন্ত্রটি পৃথিবীর অভ্যন্তরে মহাদেশীয় বিভিন্ন সীমান্তে সহায়ক কম্পন পরিমাপক যন্ত্র বসাবেন।

✤ পরিক্ষাঃ
কমপক্ষে ছয় মাসের খাবার+পানি+পথ্য নিয়ে ভূ-পৃষ্টের ৩০ কিঃমিঃ নিচে পুরো ল্যাবে অবস্থান নিয়েছেন দুঃসাহসী ২০জন মানুষ। কৃত্রিমভাবে তৈরি করা একটি সবুজ পৃথিবী তৈরি করা হয়েছে সেখানে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ২০ জন মানুষের মধ্যে সবাই-ই অধার্মিক-বাস্তববাদী অথবা নাস্তিক।
মতের মিল থাকায় তারা স্বাচ্ছন্দ্যে সব ধরণের সামাজিক/নৈতিক বাঁধা থেকে মুক্ত হয়ে কাজ করতে পারছেন ও জীবন যাপন করতে পারছেন। নিজের বিবেক কর্তৃক কোন বাধার সম্মুখীনও হতে হচ্ছে না কাউকে।
ইতিমধ্যে ৭.৫ মাত্রার ভুমিকম্প হজম করে ফেলেছে তাঁদের ল্যাব। এই ধরণের বড় বড় ভুমিকম্প মোকাবেলা করতে পেরেছেন তাঁরা মাটির নিচে।
উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেওয়া ভবিষ্যৎবাণীর ৯৮% ই সঠিক হয়েছে। তবে সমস্যার কথা হলো উপাত্তের বাইরে দুই দুইটি ৭.৩ ও ৭.৪ মাত্রার ভুমিকম্প হয়ে গেছে। এটার কারনে আরো বেশি চিন্তা ও কৌশল যুক্ত করতে কাজ করে চলেছেন এই অভিযাত্রিক দল।
ব্যালকুনিতে একটি চেয়ারে বসে বসে উপাত্তের বাইরে ঘটে যাওয়া দুটি ভুমিকম্প নিয়ে ভাবছিলেন ডঃ স্টিফ। অন্যরা নিজ নিজ কাজ করছেন কিংবা বিশ্রাম নিচ্ছেন।
চোখ বুজে আসছিল আসছিল এমন সময় সম্বিত ফিরে পেলেন পেছনে কোনও একজনের উপস্থিতিতে। ডঃ স্টিফের গা শির শির করতে লাগল যেন ঠান্ডা লাগছে এমন।
পেছন ফিরে দেখেন গ্রাম্য পরিচ্ছেদের কুশ্রী দর্শনের চেহারাবিশিষ্ট এক লোক দাঁড়িয়ে আছে। মাথার উপরে অনেকটা গাধার শিংয়ের মতো কিছু দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া চামড়া খুবই বেশি বয়সী মনে হচ্ছে আর কপালে বড় বড় একাধিক ভাঁজ পড়ে আছে। লোকটার কোমড়ে একটি ঘন্টিও রাখা আছে দেখা যাচ্ছে। প্রায় নগ্ন এই লোকের ত্বকে চর্মরোগের কারণে গুটি গুটি কালো বড় বড় গোলক দেখা যাচ্ছে।
স্টিফার্সন কয়েকমুহুর্ত স্থির থেকে ব্যাপারটার বাস্তবতা নিয়ে চিন্তা করতে থাকলেন। এমন সময় তাকে অবাক করে দিয়ে সে বলল-
- ভয় কিংবা দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আমি কিছু অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতার অধিকারী। আপনাকে আমি চিনি এবং আপনার কাজে আমি বেশ খুশি হচ্ছি।
- আপনি কে?
- আমার পরিচয় জানার দরকার নেই। তবে আমি আপনাকে সতর্ক করতে এসেছি। সামনে কোনও একটা বিপদ আছে আর সেখানে আপনার আদর্শের পরিক্ষা হবে। আপনি কতটুকু বাস্তববাদী ও বিজ্ঞানমুখী সেটার পরিক্ষা হবে।
ডঃ স্টিফ চিন্তা করতে থাকলেন ব্যাপারটা কী হচ্ছে আসলে? নিজের মনোজগতের ভেতরেই নাকি আসলেই এটা ঘটছে। লোকটাকে আরো পর্যবেক্ষণ করতে থাকলেন তিনি।
মতিভ্রম নাকি জিরো ডিগ্রির কর্তা সেটা বুঝার জন্য ডক্টর চোখের পাতা না ফেলে খুব সন্তপর্ণে এগুতে লাগলেন। এমন সময় মনে হলো দেয়ালে আঁকা কোনও ছবি।
দেরি না করে দু চোখ কচলে দেখে নিলেন। নাহঃ কোন কিছুই না। হ্যালুসিনেশন নাকি??
ব্যাপারটা তিনি ডাক্তার রবার্ট এর সাথে আলাপ করলেন। এটা নিয়ে আর দুশ্চিন্তা না করে কাজে মনোযোগ দিতে বললেন ডাক্তার রবার্ট।
হ্যালুসিনেশন মনে করেই নিজের কাজে মন দিতে থাকলেন ডক্টর। সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেকে পুরোপুরি কাজের মধ্যে ডুবিয়ে নিলেন এ বৃদ্ধ-প্রৌঢ় গবেষক।
মনিটরিং কক্ষে গুলিয়লিম্যান কাজ করছিলেন গ্রাফচার্ট নিয়ে। দূরবর্তী সিসমোগ্রাফ হতে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি প্রতি ১০ মিনিট অন্তর অন্তর ভবিষ্যৎবাণী পরিক্ষা করছেন। কখন যে পেছনে এসে ডক্টর স্টিফ দাঁড়িয়ে পড়েছেন সেটা উনি খেয়ালই করেন নি।
হঠাৎ এনালাইজ ডাটা'র রেজাল্ট দেখে আঁৎকে ওঠলেন তিনি। ৮.৭ থেকে ৮.৯ মাত্রার আর্থকোয়াক!!!
যদিও এটা ল্যাবের এলাকাতেই বেশি কিন্তু এই মাটির নিচে সব লন্ডভন্ড হয়ে যাবে সেটা নিশ্চিত!! সর্বোচ্চ ৮.৫ সামাল দেয়ার মতো ক্ষমতা আছে ল্যাবের বহিঃনিরাপত্তা প্রাচীরে।
এখন কি করা?
ডক্টর স্টিফ পেছন থেকে বললেন- দাঁড়াও। ভবিষ্যৎবাণী সত্য নাও হতে পারে। বাঁচার জন্য সবাই লাইফ কেবিনে প্রবেশ করো। এখুনি।
ডক্টর এনাউন্সারে ঘোষণা করে দিলেন- এখুনি প্রত্যেকে নিজ নিজ লাইফ কেবিনে ঢুকে পড়ে, তা নাহলে প্রাণনাশের সমূহ সম্ভাবনা আছে।

✤ দূর্যোগ
সুবিশাল প্রসান্ত মহাসাগরে তুফানের তান্ডব চলছে। শোঁ শোঁ শব্দের বাতাস ক্রমশই ভয়ংকর সাঁ সাঁ শব্দে পরিণত হচ্ছে। আকাশের রং ভয়ংকর রকমের কালো রং ধারণ করেছে।
সমুদ্রের পানি উত্তেজিত হয়ে যেন বড় বড় পাহাড়ের সমান আয়তনের ঢেউ তুলে আবার নিচে পতিত হচ্ছে, আবার উঠছে। কালো বর্ণের একটি সেফটি কেবিনকে নিয়ে ইচ্ছেমত খেলা করছে পানির ঢেউয়েরা।
ঢেউয়ের তালে তালে কেবিনটির অবস্থা যাচ্ছে তাই হলেও এর ভেতরে থাকা মানুষটি ভাবতেও পারছে না সে কোথায় আছে। স্থলে নাকি জলে নাকি অন্তরীক্ষে তার কিছুই বুঝতে পারছে না।তবে যতই জোরে তান্ডব চলুক, সে একেবারে নিথর হয়ে পড়ে আছে। সেফটি সুইচ অফ করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষন না নিশ্চিত হচ্ছে যে, তান্ডব থেমে গেছে।
ডঃ স্টিফের যতক্ষণ হুশ ছিল ততক্ষণ প্রমোদ গুণছিলেন, কখন ভুমিকম্প থামবে। তবে খেয়াল রেখেছিলেন, তিনি ইশ্বরের দ্বারস্থ হন কি-না।
সত্যি কথা বলতে কী, ডঃ স্টিফ ইশ্বরের নামও মুখে আনেন নি কারণ লজিক্যালি তিনি ইশ্বরের কোনও অস্তিত্ব পান নি। বরং এই দূর্যোগের মধ্য দিয়ে ডক্টরের দর্শন আরো পাকাপোক্ত হলো যে, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণেই ইশ্বর সৃষ্ট হয়েছে মানুষের নিকট।
এদিকে সেফটি কেবিনের ব্যাটারী ক্রমশই কমতে থাকল এবং একটা সময় এটি ডঃ স্টিফকে ওয়ার্নিং এওয়েক করতে বাধ্য হলো। সহসাই নিরাপদভাবে ডক্টর স্টিফ সজাগ হলেন এবং নিজেকে ভরসন্ধ্যায় কোনও এক সামুদ্রিক দ্বীপে আবিস্কার করলেন।
ডঃ স্টিফ এটাকেও হ্যালুসিনেশন হিসেবে নিতে চাইলেন এবং নিজের দৈবজ্ঞান যাচাই করতে থাকলেন।
নিজের শারিরিক পরিক্ষা শেষে ছোট কম্পিউটারে সেফটি লগ পড়ে নিশ্চিত হলেন যে, আসলেই তিনি দুর্যোগে পড়ে এই দ্বীপদেশে চলে এসেছেন।
জীবনে কখনোই তিনি সার্ভাইভ করেন নি। কিন্তু ভাগ্যের দোষে আজ এই অচেনা জংগলে খাবার ও আবাসের জন্য তাঁকে এই বুড়ো বয়সে কাজ করতে হবে?
অগত্যা কি আর করা। ডক্টর তার খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন।

✤ নাম না জানা দ্বীপে একাঃ
আমরা যতই বাস্তববাদী হই না কেন, অনিশ্চয়তার সমীকরণ থেকে পুরোপুরি নিজেকে অবমুক্ত করতে পারি না। আজ আপনি যে অবস্থায় আছেন, আগামিকাল ঠিক একই অবস্থানে থাকবেন অথবা আরো উন্নত হবেন সে নিশ্চয়তা কেউ আপনাকে দিতে পারবে না। আপনি হোয়াইট হাউসে থাকুন কিংবা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের কমপ্লেক্সে বসবাস করেন না কেন, একটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আপনি এখানেই থাকতে পারবেন কিংবা প্রতিকূল সময় পাবেন না সে ভরসা, সে গ্যারান্টি কেউই দিতে পারবে না।
অথচ ডক্টর স্টিফ মনে করতেন যে, সময় বদলেছে। এখন মানুষ আর প্রকৃতির অধীন নয়, তাই ভাল সময়ের নিশ্চয়তা একান্তই ব্যক্তির ওপর বর্তায়। অন্য কোন শক্তির হাত থাকা সম্ভব না। বড়জোর প্রভাবিত হতে পারবে একটু আধটু।
স্টিফার্সনের ভাবনা ও যুক্তিবিদ্যাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিল প্রকৃতি। আজ সেটা হারে হারে টের পাচ্ছেন তিনি। স্টিফ কখনোই প্রতিকূল পরিবেশে থাকবেন সেটা ভাবেন নি।
উপরি পাওনা হলো এমন সময় তিনি এই নির্জন দ্বীপে পৌঁছেছেন যখন থাকার জন্য কোন জায়গা প্রস্তুত করতে করতেই রাত হয়ে যাবে।
সন্ধ্যার যে অল্প আলো পাওয়া যায়, সেটাকে কাজে লাগিয়ে তিনি কিছু লতাপাতা ও দড়িসদৃশ কিছু জৈব লতা যোগাড় করে ফেলতে অবশ্য পেরেছেন। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর একটি বড় গাছও পেয়ে গেলেন যেটা কোনপ্রকারে এক রাত কাটানো যাবে। তবে বৃষ্টি আসলে আর রক্ষা থাকবে না। তাই প্রকৃতির দয়ার উপর নির্ভর করে প্রথম রাতটুকু কাটিয়ে দিতে মনস্থির করলেন।
এক রাত থাকার জায়গায় স্টিফ ৩-৪ রাত থাকলেন ঐ গাছের কান্ডে তবে এর মধ্যে একবার বৃষ্টিতে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। জবুথবু বৃষ্টিতে রাতদুপুর অন্ধকারে তার যে করুণ দশা হয়েছিল সেটা একমাত্র ডক্টর স্টিফই জানেন।
ত্বকে কি-রকম একটা স্যাঁতস্যাতে অনুভুতি, সাথে চুলকানি। ঘন্টা দুয়েক পরে অস্বস্তির রেশ কাটবে তো দূরের কথা শরীরে জ্বর এসে গেল। জ্বরের মধ্যে কি-সব বকবক করতে করতে দুর্বল কায়ার ঘুম এসে যন্ত্রণা থেকে উদ্ধার করল।
ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখার অভ্যাস স্টিফার্সনের একেবারে নেই-ই বলা চলে। তবে আজ জ্বরের ঘোরে তিনি নিজের ছোটবেলা, ভাই, বোন, মা-বাবা, ঝগড়া, পাশের বাড়ির স্মিথ, কার্ল, পিডু-দের দেখলেন।
গ্রামের সবুজ ক্ষেতের মধ্য দিয়ে তাদের ঘুড়ি ঘুড়ি খেলা, পাশের নদীতে ঝাঁপিয়ে গোসল করা, মা-বাবার বকুনি, স্কুলে স্যারের সাথে ফাজলামো..
ডক্টর স্টিফ কতক্ষণ ঘুমের মধ্যে কিংবা বেহুঁশ ছিলেন সেটা নিজে বলতে পারলেন না। তবে চোখ খুলে দেখেন সুবিশাল নীল-সাদা আকাশ, তার আঙিনা জুড়ে শুভ্র মেঘের পথচলা। এই অবস্থাতেই স্বপ্নে দেখা ছোটবেলার কথা মনের পর্দায় ভেসে ওঠলো তবে কয়েক মুহুর্তের বেশি তা স্থায়ী হলো না। চোখটা একটু অন্যদিকে নিতেই বিরাটকায় একটি পাখি যার একটি পা-ই মোটামুটি তার শরীরের সমান সেটার পাখায় নিজেকে আবিস্কার করতে হলো স্টিফার্সনকে। এত বিশাল পাখি কেবল গল্পে আর উপন্যাসেই থাকতে পারে, বাস্তবেও যে সম্মুখিন হতে হবে সে ব্যাপারটি জানা ছিল না।
পাখির ভয়ানক ঠোঁটের দিকে দেখে তার বুকটা ধক করে উঠেছিল। তবে এর চোখে দৃষ্টি বড়ই মায়াময়! যেন পরম মমতা ঐ দুটি চোখে সংরক্ষণ করে কেউ রেখে দিয়েছে।
এইরকম সার্ভাইবে পড়লে মনে হয় দিব্যজ্ঞান দিয়ে প্রথমে কয়েক মিনিট পাখির আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়। স্টিফার্সনও তা করলেন অবচেতনভাব এবং খানিকক্ষণ পরে নিশ্চিত হয়ে নিলেন, এই বৃহদাকার পাখি তাকে মারতে নয়, বাঁচাতে চাইছে। পাখিটি তাকে চোখ মেলতে দেখে ডানা থেকে পায়ের পাতায় ফেলে দিল। স্টিফ বুঝতে পারলেন না, যদি তাঁকে বাঁচাতেই চাইবে তাহলে কেন এই অনাদর?
যে গাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেটির পাত্তা তো নেই-ই বরং পাখি তাকে কয়েক শো ফুট উঁচু ডালে বানানো বাসায় নিয়ে এসেছে।
পাখিটি কুঁক কুঁক করে মৃদু ডেকে ওঠলো। স্টিফ এখনো পাখির আচরণ ব্যখ্যা করতে পারলেন না। এটা আসলে কি করতে চাইছে? আরেকটু দূরে আরেকটি পাখি বিশালকায় ডিম নিয়ে বসে আছে দেখা যাচ্ছে।
পাখির চোখের দিকে তাকালে রাজ্যের মমতার উপস্থিতি অনুভব করা যায় কিন্তু কেন অদ্ভুত শব্দ করছে সেটা নিজে কোনভাবেই ঠাহর করতে পারলেন না।
কি মনে করে পায়ের পাতায় বসে পড়লে পাখিটি সাঁই করে উড়ে চলল। এই সময় তিন বুঝতে পারলেও দেহের সাথে অভিকর্ষজ টানজনিত কারণে ভুতলের দিকে পড়ে গেলেন।
এবারও ত্রাণকর্তার মতো পাখিটি চিঁ চিঁ করে চিৎকার দিয়ে ভু-পৃষ্টের শ-খানেক ফুট উঁচুতে থাকতেই ঠোঁট দিয়ে ধরতে সক্ষম হলো বেচারি।
এরপর তাঁকে নিয়ে দ্বীপ বন জঙল পেরিয়ে উড়ে চললো সমুদ্রের উপর দিয়ে, নীল ঘন পানি আকাশের নীলে আরো লীলাভ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে নীল রঙ দিয়ে একটি সীমানাহীন জায়গায় পানি রাখা আছে।
স্টিফ ভাবছিলেন, পাখিটি তাঁকে মূল ভূ-পৃষ্টে নিয়ে যেতে হয়তোবা চাইছে, হয়তোবা মুল ভূ-খন্ডে ফিরিয়ে আমার প্রাণ বাঁচাতে চেষ্টা করছে।
বেশ কতক্ষণ উড়ার পরে স্টিফার্সনের ধারণা ভুল প্রমাণিত হল। নাম না জানা অতিকায় পাখিটি তাঁকে আরেকটি বিশাল দ্বীপে নিয়ে এসেছে। এই দ্বীপেও কোন মানুষ নেই তবে এখানে হাজার হাজার গাছ গাছালি ও ফল-ফুলের জঙল। পাখিটি তাঁকে জঙলে ছেড়ে নিজের জন্য খাবার খেতে পাশের একটু উঁচু গাছে উঠে বসে একটা কাঠবিড়ালীকে ছিন্নভিন্ন করে গলাধকরণ করে ফেলল।
স্টিফার্সন অভিভূত হলেও নিজের জন্য খাবার পরিক্ষা করে খেতে থাকলেন। দেহে এখনো বেশ জ্বর!


✤ একা একাঃ
স্টিফের বয়স অনেক বেশি মনে হচ্ছে এখন। দৈহিক শক্তি নিয়ে নিজের সংস্থান করতে অক্ষম মনে হচ্ছে। যে পাখিটি এখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়েছিল সেও আর আসলো না, বাসায় তাঁকে নিয়ে যাচ্ছে না। খাবার থাকলে কি হবে, সাপখোপের ভয়ে তাকে সারাক্ষণ শংকিত থাকতে হচ্ছে।
প্রশান্ত মহাসাগর কি-না সেটাও এখনো নিশ্চিত না স্টিফার্সন। মাত্রই কয়েকদিন আগে তিনি ভূ-গর্ভে ল্যাবে কাজ করছিলেন আর আজ এ জনমানবহীন দ্বীপে কোন প্রকার খাদ্য, চিকিৎসা, নাগরিক অবকাঠামো সুবিধা ছাড়া এক কাপড়ে কাটাতে হচ্ছে।
এটা স্বপ্ন বলে কাটিয়ে দিতে কতোবার চেষ্টা করেছেন তার গণনা বের করা মুশকিল। আধুনিক নগরজীবনে অভ্যস্থ থাকায় চরম পর্যায়ের অসুবিধা হচ্ছে মিঃ স্টিফার্সনের।
এক মগ কফি ঘুম থেকে উঠে পান করা ছাড়া যে স্টিফের দিন শুরু হওয়া ছিল প্রায় অস্বাভাবিক ব্যাপার সেখানে দিনের পর দিন রাতের পর রাত চা-কফি এবং কোনও প্রকার ড্রিংকস ছাড়া জীবনটা চলে যাচ্ছে! চিন্তা করা যায়??
একটা লাল রঙের ফল দেখা যাচ্ছে তবে বেশ উঁচুতে। স্টিফ ঐ ফলের লোভ সামলাতে পারছেন না। তিনি গাছ বাইতে শুরু করলেন। কিন্তু গাছটি পিচ্ছিল বলে খুব সাবধানে উঠতে হচ্ছে।
স্টিফের সামান্য লোভ বিশালকায় বিপদ ডেকে নিয়ে আসল। তিনি গাছ থেকে পড়ে গিয়ে পা মচকে ফেললেন। প্রথমে ভেবেছিলেন ব্যাথা কম। স্বাভাবিকভাবে হাঁটার চেষ্টা করতে গিয়ে চোখে তারাফুল দেখলেন এবং আঁৎকে ওঠে পড়ে গেলেন।
হুঁশ চলে যায়নি বিধায় পায়ের ব্যাথাটা আরো বাড়ছে মনে হচ্ছে। স্টিফ মুখ দিয়ে যথেচ্ছা ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকলেন। কাকে গালি দিচ্ছেন কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।
তার কাতরানো শুনে দুটি খরগোশ পাশে এসে দাঁড়ালো। সম্ভবত সমবেদনা জানাতে এসেছে। স্টিফ তাদেরও গালিগালাজ করলেন তবে এরা কিছুই বুঝলো না।
বেশ খানিক্ষণ পরে তারা চলেও গেল। এখন স্টিফ একা। একটু বসে পড়বেন সে উপায়ও নেই, দাঁড়ানো তো আরো বহু পরের কথা। শেষপর্যন্ত তিনি হতাশ হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। ভর দুপুরের সুর্য মাথার ওপরে থাকায় প্রচন্ড গরমে দিগন্তের দিকে নিথরভাবে তাকিয়ে থাকলেন।


✤ বিপদ কাটে নাঃ
স্টিফার্সন একটা ব্যাপার কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না যে, এখানেই তার আয়ু শেষ তথা আজ/কালই তাঁকে মরে যেতে হবে। পায়ের ব্যাথা কমবার কোনও লক্ষণ নেই। কোন সাপ-জন্তু এসে তাকে আক্রমণ করতে পারে কিন্তু এই ব্যাথাতুর পা নিয়ে এত পথ যাওয়া অসম্ভব।
অগত্যা স্টিফ আকাশের দিকে বিভিন্ন কোণে তাকাতে থাকলেন এবং চিন্তা করার কোনও উপায় খুঁজলেন। শেষমেষ জগৎ সংসার সূচনা নিয়ে নিজের জানা তথ্য দিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখতে থাকলেন।
এভাবে ভাবতে ভাবতে সন্ধ্যা থেকে রাত হয়ে মধ্যরাত হয়ে গেল। স্টিফের পায়ের কোনও উন্নতি হলো না।
চিন্তা ভাবনার এক পর্যায়ে সৃষ্টি ও স্রষ্টা দিয়ে অনেক সমীকরণ মিলাতে চেষ্টা করলেন। অনেকটা সফলও হলেন বটে। তখন তিনি দুটি পথ খুঁজে পেলেন।

১. এই ব্যাথা না কমলে তিনি এখান থেকে সরতে পারবেন না ও এখানেই তার মৃত্যু হবে। এখানে কেউই সাহায্য করার কথা না। জীবন এখানেই শেষ।
২. ইশ্বর বলে কেউ থাকলে সাহায্য করতে পারবেন। ক্যালরিও যেহেতু কমে আসছে তাই উনার কাছে চেয়ে দেখতে পারি, কোনও সাহায্য আসে কি-না।

স্টিফার্সন খানিকটা হতাশ কারণ, আকাশে যে জেসাস কে দেখানো হয়েছিল তা সিক্রেট সংস্থার একটি কার্যক্রম বৈ কিছু নয়। এমনকি তিনি নিজেও এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। তারপরও এই ঘোর বিপদে ইশ্বরের শরণাপন্ন হলেন ডঃ স্টিফ।

✤ প্রার্থনা
“ওহে!
যদি আপনার অস্তিত্ব থেকে থাকে, যদি আপনি এই সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা হন, যদি আপনি এই মানব জাতিকে সৃষ্টি করে থাকেন, যদি আপনি এই পৃথিবীতে অ্যাডাম ঐভ'কে পাঠিয়ে থাকেন, যদি সবকিছু আপনার হুকুমে চলে থাকে..
তবে-
আমাকে আপনি কোনও নিদর্শন দেখান। আমাকে সাহায্য করুন। আমাকে সুস্থ করুন। আমাকে আমার জেরিনের কাছে নিয়ে যান। পথ দেখান আমাকে। পথ দেখান!!!!!”
মনোরম চাঁদজোছনার খোলা আকাশের নিচে শুয়ে শুয়ে গভীর রাতে এইভাবে চিৎকার ও কান্নাকাটি করতে থাকলেন স্টিফার্সন।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:০০
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×