somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২৭ ফেব্রুয়ারীতে ডঃ হুমায়ুন আযাদ স্মরন এবং কিছু কথা!

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেসবুকের মাধ্যমে স্মরন হলো আজ ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী ডঃ হুমায়ুন আযাদের উপর বর্বরোচিত সেই হামলা হয়েছিল। চাপাতি'র আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক!



দেশে'র সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে'র একজন শিক্ষকের উপর এমন আক্রমন জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জা'র। ভয়াবহ লজ্জা'র!

দুঃখজনক বিষয় হলো, তার উপর এমন আক্রমনের কারন ছিল তার কিছু লেখা! আশ্চর্য্যের বিষয় নয় কি?

তিনি প্রথাবিরোধী লেখক ছিলেন। কঠোর কিছু সমালোচনা করার জন্যই জাতীয় পর্যায়ে বিখ্যাত হয়েছিলেন, তার সমালোচনায় বাঙালি জাতিয়তা এবং ইসলাম ধর্মের মত স্পর্ষকাতর বিষয় ছিল। যা দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা'র জন্ম দিয়েছিল।

আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশে'র রাজধানীতে, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের ক্যাম্পাসে সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন শিক্ষকের লেখা'র কারনে তার উপর বর্বরোচিত শারীরিক আঘাত কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না!

কিন্তু বিষয়টিতে আরেকটু গভীরে দৃষ্টিপাত না করলেও বাস্তবতা সম্পূর্ণতা পায় না!বাংলাদেশের জনসংখ্যা ব্যাপক। এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই বাঙালী মুসলমান। বিশ্বব্যাপীই ধর্ম একটি স্পর্ষকাতর বিষয়, এবং দক্ষিন এশিয়ায় একটু বেশিমাত্রাতেই। তার উপর বাংলাদেশের এই দরিদ্র জনগোষ্ঠি'র মাঝে অশিক্ষিতের হার ব্যাপক। দরিদ্র এবং অশিক্ষিত মানুষ দ্রুত উগ্র হয়ে উঠে, তার উপর যদি হয় গরিবের একমাত্র সান্তনা ধর্ম'র মত স্পর্ষকাতর বিষয় তবে তো আগুনে ঘি পরে! তাই ধর্ম সংশ্লিষ্ট বক্তব্য প্রদানে শিক্ষিত এবং জাতীয় পর্যায়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে বিশেষ দায়িত্বশীলতা কামনা করাই স্বাভাবিক।

কিন্তু ডঃ আযাদ পরিষ্কারভাবেই সমালোচনা'র ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ছিলেন না। তার অবস্থানের একজন শিক্ষকের বক্তব্যে যেই মানের দায়িত্ববোধের আশা আমরা করি তার বক্তব্যে মোটেও সেটা প্রকাশ পেত না। তার উপর, ওনার লেখাগুলোও উদ্দেশ্যমূলক প্ররোচনা'র দায়ে সমালোচিত ছিল দেশের শিক্ষিত সুশীল সমাজেও!

সমাজ পরিবর্তনে যারা নিজেদের দায়িত্ব পালনের কথা বলে সমাজে নিজেদের বক্তব্যে'র গ্রহনযোগ্যতা সম্পর্কেও তাদের সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

কিন্তু ডঃ আযাদ কোন এক অজানা কারনে বরাবরের মতই উস্কানীমূলক বক্তব্য এবং ততধিক উষ্কানীমূলক রচনা লিখে গেছেন! যা উনার কাছে কাম্য ছিল না! এই কারনে কাম্য ছিল না যে, ওনার বক্তব্য উষ্কানীমূলক বরং এই কারনে কাম্য ছিল না যে তিনি ছিলেন ডঃ হুমায়ুন আযাদ।

তিনি জানতেন তার লেখনীর কারনে তার জীবনের উপর ঝুঁকি তৈরী হচ্ছে, জাতি'র সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে শিক্ষকতায় নিয়োজিত একজন মেধাবী শিক্ষক হিসেবে উনার উচিত ছিল, পরিস্থিতি অনুধাবন করে আমাদের মাঝে থেকে আমাদের শিক্ষা দিয়ে যাওয়া। এত জ্ঞানী ডঃ আযাদ নিশ্চয়ই জানতেন যে, কিছু জ্বালাময়ী লেখা'র মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের সূচনা হয় কিন্তু পরিবর্তন সম্পন্ন হয় না। সেই পরিবর্তন সম্পন্ন করার জন্যই তাকে আমাদের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু প্রভোকেটিভ আচরন ত্যাগ করতে না পারা'র মূল্য শুধু তাকেই নয় বরং পরিবর্তনকামী গোটা জাতিকেই দিতে হয়েছে!

দুঃখজনকভাবে সেই আঘাতের পর ডঃ আযাদ সুস্থ হয়ে উঠলেও কিছুদিন পরই প্রবাসে মৃত্যুবরন করেন। একসময় তার উপর হামলাকারী জেএমবি সদস্যরা গ্রেপ্তার হয় এবং হামলায় নেতৃত্বদানকারী সানী নামের সেই আসামী'র ফাঁসিও হয়। এটি ছিল জাতি'র কলংকমোচনের জন্য সহায়ক কিন্তু তবুও ক্ষতটি আজো রয়ে গেছে



ডঃ আযাদের মত প্রথাবিরোধী লেখকদের কাছে অনুরোধ থাকবে দেশের বাস্তবতা মাথায় রেখে নিজেদের কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করুন, যুক্তিগুলোকে উষ্কানীমূলক উপায়ে প্রচার না করে গ্রহনযোগ্যভাবে প্রচার করুন।

যেহেতু আপনারা যুক্তি'র মানুষ, আপনারা নিশ্চয়ই সামাজিক পরিবর্তনে'র লক্ষ্যে, আত্মঘাতি ব্যাবস্থা গ্রহন করে নিজ পরিবার ও আমাদের সামাজিক শান্তি নষ্ট করবেন না!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১:২৪
৭০টি মন্তব্য ৭১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×