somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমাঃ ডকুমেন্টস সহ সকল মিথ্যাচারের প্রমাণ

২৩ শে নভেম্বর, ২০১১ সকাল ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জামাতী আর বি এন পি'র এক্ব্রটিভিস্টদের মাধ্যমে বার বলা হচ্ছে যে, বঙ্গবন্ধু রাজাকারদের "এক্ট অফ ক্লেমেন্সি" বা "সাধারন kক্ষমা"র মাধ্যমে ক্ষমা করে দিয়েছেন। যেই বঙ্গবন্ধুর কথা শুনলে ছাগু-বিম্পি নির্বিশেষে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন, ঠিক এই প্রজাতীরা "সাধারণ ক্ষমার" প্রসঙ্গ এলেই বঙ্গবন্ধুর এই ক্ষমাকে মিথ্যে ও পানি মিশিয়ে চমৎকার করে মানুষের মধ্যে বিতরণ করতে এক পা পেছান না। সত্যিই কি বঙ্গবন্ধু রাজাকারদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন? যদি দিয়েই থাকেন, তবে কাদের ক্ষমা করেছেন? আসুন সেই বিখ্যাত এক্ট অফ ক্লেমেন্সি'র ডকুমেন্টটি দেখে নেই-

১৯৭৩ সালের ৩০ শে নভেম্বর এই সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেন বঙ্গবন্ধু।




উপরের এই সাধারন ক্ষমার বাংলা ব্যখ্যাঃ

সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার ৫নং ধারার (ক) অনুচ্ছেদে যে বিধান রাখা হয় তাতে সত্যিকার অর্থে কোন যুদ্ধাপরাধী মুক্তি পাওয়ার কথা নয়। কারণ ঘোষণার ৫ নং ধারায় বলা হয়েছে

" যারা বর্ণিত আদেশের নিচের বর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরোদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরোদ্ধে নিম্নোক্ত ধরা মোতাবেক কোনটি অথবা সবকটি অভিযোগ থাকবে

(১) ৩০২ (হত্য),

(২) ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা),

(৩) ৩৭৬ (ধর্ষণ),

(৪) ৪৩৫ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধণ),

(৫) ৪৩৬ (বাড়িঘর ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার),

(৬) ফৌজদারী দন্ডবিধির ৪৩৮ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন) অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান। এসব অপরাধী কোনভাবেই ক্ষমার যোগ্য নন।"

উল্লেখ্য যে, সাধারণ ক্ষমা ঘোষনার পরেও প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী কারাগারে বন্দী ছিলেন।

আরেকটি ব্যাপার লক্ষ্য করুন, এই সাধারন ক্ষমার ডকুমেন্টস-এ একটি কথা লেখা রয়েছে যে, যদি অপরাধী অনুপস্থিত থাকে তাহলে কি হবে। সেখানে বলা আছে যে সেক্ষেত্রে সেসব অভিযুক্তদের সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন করতে হবে এবং তাদের আত্নসমর্পন করতে হবে, এবং সেই ক্ষেত্রেই তারা সাধারণ ক্ষমার জন্য যোগ্য বিবেচিত হতে পারেন যদি না তাদের বিরুদ্ধে উপরে উল্লেখিত অপরাধের অভিযোগ না থাকে।

এখন কথা হলো, ১৯৭১ সালে আমার জানামতে নীচের ৩ জনের নামে মামলা হয়েছিলো দালাল আইনে যারা এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) ১৯৭৩ এর মাধ্যমে অভিযুক্ত হিসেবে কারাগারে বন্দী রয়েছে।

তাদের নাম ও মামলার বিবরণ নীচে দেয়া হোলোঃ

ক) রাজাকার কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পর প্রথম মামলা হয় ১৯৭২ সালে। মামলার নম্বর হচ্ছে- (৫)৭২, জি আর নং- ২৫০ (২) ৭২। মামলা করেন শহীদ বদিউজ্জমানের ভাই হাসানুজ্জামান। উল্লেখ্য যে, কামারুজ্জামান তখন পলাতক আসামী ছিলো।

খ) সাকা চৌধুরীর নামে ১৯৭২ সালে দালাল আইনে চট্রগ্রাম জেলার হাট হাজারী থানায় ১৩/৪/১৯৭২ তারিখে ১৭ নং মামলা দায়ের হয়। রাউজান থানা ৪১(১)৭২ নং এবং ৪৩(১)৭২ নং মামলা দায়ের করা হয়।

ইতিহাস বলে এবং ডকুমেন্টস বলে যে, উক্ত ৩ জন কখনোই সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন করেনি। এবং তারা পলাতক আসামী হিসেবেই ১৯৭৫ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর এই দালাল আইন বাতিল হবার আগ পর্যন্ত বিদ্যমান ছিলো।






এক নজরে যুদ্ধপরবর্তী দালালদের বিচারঃ



মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে দালালীর জন্য ১৯৭২-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আটক হয় - ৩৭ হাজার ৪ শত ৯১ জন

ট্রাইবুনাল গঠিত হয়- ৭৩ টি ( সারা বাংলাদেশে )

১৯৭৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত উক্ত ট্রাইবুনাল গুলোতে দায়ের করা মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয় মোট ২ হাজার ৮ শত ৪৮ টি মামলা ।

দোষী প্রমাণিত হয় - মোট ৭৫২ জন
মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়ঃ প্রায় ২০ জনেরও বেশী।
মামলায় খালাশ পায় - ২ হাজার ৯৬ জন ।

আইনগত ব্যাবস্থায় দ্রুততা আনার জন্য সে সময় ৭৩ টি ট্রাইবুনালের ব্যাবস্থা করা হলেও প্রতিদিন ৩-৪ টির বেশী মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব হয়নি এবং মাসে যার পরিমাণ ছিলো ১৩০ টির মত মামলা ।

এবার দেখুন এই সাধারণ ক্ষমা ঘোষনার ভিডিওঃ





শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন কিসের ভিত্তিতেঃ

বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপ্রধানের ক্ষমা প্রদর্শনের সুযোগ রয়েছে। লক্ষ করি বর্তমান সংবিধানের ৪৯ নং অনুচ্ছেদ (১৯৭২ সালের সংবিধানের ৫৭ নং অনুচ্ছেদ)

" The President shall have power to grant pardons, reprieves and respites and to remit, suspend or commute any sentence passed by any court, tribunal or other authority."

অর্থাৎ " কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোন দন্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে কোন দন্ড মওকুফ স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।"

সুতরাং বলা যায়, শুধুমাত্র শাস্তি এবং দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার আছে রাষ্ট্রপ্রধানের। কিন্তু যারা শাস্তি কিংবা দন্ড পাননি তাদেরকে কি সাধারণ ক্ষমা করা যাবে?

যুদ্ধাপরাধীদের সাধারণ ক্ষমার নিদর্শন অন্যান্য দেশেঃ

সাধারণ ক্ষমার এমন নিদর্শন কম্বোডিয়া ট্রায়ালের ক্ষেত্রেও দেখা যায় । ১৯৯৬ সালে রাজা নরোদম সিহানুক রেভ্যুলুশনারী ট্রাইবুনালে খেমাররুজ নেতা মানে পলপট সরকারের বিদেশ মন্ত্রী ইয়েং স্যারির দন্ডের মার্জনা ঘোষনা করেন । তবে এই ক্ষেত্রে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে , কম্বোডিয়ায় দন্ড পাওয়ার পর যুদ্ধাপরাধী স্যারির দন্ড মওকুফ করা হয়েছে কিন্তু ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী ৫৭ নং অনুচ্ছেদে শুধু মাত্র দন্ডপ্রাপ্তদের ক্ষমা ঘোষনার এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির থাকলেও , বঙ্গবন্ধু দন্ডিত হননি এমন ব্যাক্তিদের সাধারণ ক্ষমা করেছেন । এই যুক্তিতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষনাটিকেও বাদ করা যেতে পারে অসংবিধানিক সূচিত করে ।

সাধারণ ক্ষমা ঘোষনার প্রাক্কালে কিছু জাতীয় ঘটনার দিকে তাকাইঃ




ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ আবু মোঃ দেলোয়ার হোসেন “স্বাধীনতাত্তোর দালালদের বিচার প্রক্রিয়াঃ একটি পর্যালোচনা” শীর্ষক তাঁর লেখা একটি প্রবন্ধে লিখেন – “যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ পুনর্গঠনে আওয়ামীলীগ সরকারের দূর্বলতার সুযোগে পাকিস্থান আমলই ভালো ছিলো এই প্রচার চালানো হয় এবং এ পর্যায়ে “মুসলিম বাংলা আন্দোলন” বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলাদেশ-বিরোধী তttৎপরতায় লিপ্ত হয় । ধর্ম ভিত্তিক দলগুলো পিকিংপন্থী দলগুলোর সঙ্গে একত্রিত হয়ে দালালদের মুক্তির দাবী তোলে ।

১৯৭৩ সালের মার্চ মাসে নির্বাচনের প্রাক্কালে দালাল ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সমর্থন পেতে ন্যাপ (ভাসানী) এবং আতাউর রহমানের জাতীয় লীগসহ আওয়ামী বিরোধী পিকিংপন্থী জোট নির্বাচনের আগেই দালালদের মুক্তি দাবী করে । এ সময় মাওলানা ভাসানী হুমকি দেন যে, ১৯৭২ সালের ৩১ শে ডিসেম্বরের মধ্যে দালাল আইন বাতিল না করলে তিনি দূর্বার আন্দলোন গড়ে তুলবেন”

বঙ্গবন্ধুর সাধারন ক্ষমার পর যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তৎকালীন সময়ে দায়ের করা হয় নি তাদের ছাড়া সবার বিচারই বঙ্গবন্ধু নির্মম ভাবে নিহত হবার আগ পর্যন্তই চলছিলো।

আসুন নীচে তার কয়েকটি প্রমাণ দেখিঃ

১) ইত্তেফাকের একটি রিপোর্টঃ ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখে,

দুইজন আলবদরের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

“ঢাকার ৩য় স্পেশাল ট্রাইবুনাল জজ জনাব এস এম মাহমুদ গত শনিবার হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করার দায়ে আল বদর মকবুল হোসেন , আয়ুব আলী ও আতিয়ার রহমানকে দোষী সাব্যাস্ত করিয়া যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন । আসামী আতিয়ার রহমান পলাতক বিধায় তাহার গ্রেফতারের দিন হইতে রায় কার্যকরী হইবে” (সংক্ষেপিত)

২) দৈনিক পূর্বদেশের একটি রিপোর্টঃ ১৯৭৪ সালের ২-এপ্রিল

দালালীর দায়ে বরিশালে ১৪ জনের মৃত্যুদন্ড

“বরিশাল জেলার সেশন জজ জনাব আর কে বিশ্বাস মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার বাহিনীর সাথে সহযোগিতা ও হত্যার অভিযোগে আব্দুল মালেক বেগ সহ আরো ১৪ ব্যাক্তিকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছেন । আদালতের কার্যবিধিতে বলা হয়েছে ১৯৭১ সালের ২২ শে আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অভিযুক্তরা মেহেদীগঞ্জ থানার ভাষাঞ্চর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের ততকালীন কোষাধ্যক্ষ জবনাব আব্দুল বারী মোল্লার দোকানে চড়াও হয় । তারা আব্দুল বারী মোল্লাকে হত্যা করে ও দোকান লুট করে ।

৩) দৈনিক সংবাদের একটি রিপোর্টঃ ১৯৭৫ সালের ২০ শে এপ্রিল

পাক দালালীর দায়ে দু’জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

“কুমিল্লা জেলার দায়রা জজ এবং ১ নং বিশেষ আদালতের সভাপতি জনাব কায়সার আলী সম্প্রতি দালালীর দায়ে দু;ব্যাক্তিকে যাবজ্জেবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন । মামলার বিবরণে প্রকাশ শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ তদানীন্তন পাকিস্তান আর্মির হাবিলদার এবং ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন । ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পাক হানাদার বাহিনী বাঙ্গালীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লে তিনি পালিয়ে এসে কিছু কাল বুড়িচং থানার আরাম আনন্দপুরস্থ তার নিজ বাড়ীতে অবস্থান করেন । পরে তিনি ভারতে চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধের যোগ দেন । কিন্তু দৈহিক অপারগতার দরুণ তিনি আবার নিজ বাড়ীতে ফিরে লুকিয়ে থাকেন । ১৯৭১ সালের ২৩ শে সেপ্টেম্বর কথিত বিবাদীদ্বয় কয়েকজন রাজাকার নিয়ে পাকিস্থানী সেনাবাহিনীর লোকেরা রফিক উদ্দিনের বাড়ী ঘেরাও করে এই বাড়ীর আব্দুর রশিদকে তার ঘর থেকে বের করে আনে । পরে বিবাদী দু’জন সহ পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরেরা রফিক উদ্দিনের ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাকে বের করে এনে বিবাদী আব্দুল হামিদের সম্মুখে একত্রিত করে উক্ত মামলার সরকার পক্ষের মোট ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এবং সরাক্র পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন সরকারী উকিল কাজী হাচিবুর রহমান । আদালত বিবাদীদেরকে বাংলাদেশ ফৌজদারী দন্ড বিধির ৩৬৪/৩৪ ধারার সাথে রাষ্ট্রপতির আদেশ ৮ এর ১১(এ) মতে দোষী সাব্যাস্ত করেন এবং উপোরোক্ত কারাদন্ডের নির্দেশ দেন” (আসামী দ্বয় হচ্ছেন- আব্দুল হামিদ আজিজুল্লাহ ও আব্দুস সোবাহান । উল্লেক্ষ্য মামলা চলাকালীন সময়ে আব্দুস সোবাহানের মৃত্যু হয় )

উপরের তিনটি পত্রিকার রিপোর্ট দেয়ার মানে হচ্ছে এই , যদি ৩০ শে নভেম্বর ১৯৭৩ সালের সাধারণ ক্ষমাতে সব রাজাকার রা মাফ-ই পেয়ে যেতো , তবে সেই তারিখের পর দুই বছর পর্যন্ত কিভাবে জাজ সাহেব রায় দিলেন বা মামলা চলেছিলো?


রাজাকার-আলবদরদের এই বিচার আসলে কে বন্ধ করে দিয়েছিলো? কি হয়েছিলো ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের?

এই সাধারণ ক্ষমা ছাড়াও আরো একটি মিথ্যাচার সব সময় শুনতে পাই। সেটি হচ্ছে, ১৯৭১ সালের মুক্তি যুদ্ধে যে ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীকে শনাক্ত করা হয়েছিলো, তাদেরকে বঙ্গবন্ধু ত্রিদেশীয় চুক্তির মাধ্যমে ছেড়ে দিলেন কেন? এই প্রসঙ্গে আসলে আমার কিছুই লিখবার নেই। কেননা আমি যা লিখতে পারতাম বা লিখতাম তার চাইতেও কয়েক হাজার গুনে চমৎকার ভাবে লিখেছেন সচলায়তনের একজন ব্লগার সাঈদ আহমেদ। দয়া করে তার এই বিষয়ক চার পর্বের লেখাটি পড়লে আপনি গ্যারান্টেড ভাবে অনুধাবন করবেন যে, কি হয়েছিলো সেই ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে।

পড়ুন এই লিঙ্কে গিয়ে

কিন্তু এই ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গের সাথে সাথে আমার একটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। গতকাল আমার পোস্টে আপনাদের জানিয়েছিলাম যে, ১৯৭৫ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর জিয়া দালাল আইন বাতিল করে দালালদের বিচার বন্ধ করে দেয়। সেই দালাল আইন রদের ছবিটি আবার দেখুন-




ভালো করে উপরের ছবিটির হলুদ মার্কার দিয়ে রঙ করা অংশটি দেখুন। পড়ুন...পড়েছেন?

কি লেখা রয়েছে সেখানে???

সেখানে লেখা রয়েছে যে, এই দালাল আইন ১৯৭২ বাতিল করা হলেও, এই আইনে দন্ডিত, মানে কনভিক্টেড যারা রয়েছেন তাদের দন্ড চলতে থাকবে এবং তারা এই বাতিলের আওতাভুক্ত না। ভালো করে উপরের ছবিটার শেষের হলুদ অংশের দিকে লক্ষ্য করুন। সেখানে বলা হচ্ছে-

৩য় উপ-অনুচ্ছেদের প্রথম অংশ অর্থাৎ 'ক'-তে বলা হয়েছে- যারা দালাল আইনে ইতোমধ্যে দন্ডিত হয়েছে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে আপিল করেছে, তাদের ক্ষেত্রে এই বাতিল অধ্যাদেশ প্রযোজ্য হবে না।

[2. (3) Nothing in sub-section (2) shall be deemed to affect -
(a) the continuance of any appeal against any conviction or sentence by any Tribunal, Magistrate or Court under the said Order;


এর মানে হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুকে নিহত করবার ঠিক আগ পর্যন্ত, মানে ১৯৭৫ সালের ২০ শে এপ্রিল পর্যন্ত দালাল আইনে ৭৫২ জন ব্যাক্তি দন্ডিত হয়। যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জনেরও বেশী ফাঁসির আসামী ছিলো। জিয়ার এই দালাল আইন বাতিল করবার পরেও কিন্তু সেই ৭৫২ জন কোনোভাবেই উপরের ডকুমেন্টস অনুযায়ী মুক্তি পেতে পারেন না।

কিন্তু সেই ৭৫২ জন, মানে ২০ জন ফাঁসির আসামী সহ সবাই জিয়ার আমলেই জেল থেকে কি করে বের হয়ে গেলেন? কোন যাদুবলে?

১৯৫ জনের কথা আগেই বলেছি, এইবার কেউ কি আমাকে দয়া করে বুঝিয়ে বলবেন যে, জিয়া কি করে ৭৫২ জন দেশে আটক কৃত রাজাকার-আলবদরকে ছেড়ে দিলো।

কিভাবে?? কোনো যুক্তিতে??


সকল তথ্য এবং উপাত্ত সহ সাধারণ ক্ষমাজনিত ঘটনাটি নিয়ে যে মিথ্যাচার জামাত, বি এন পি সহ রাজাকারদের সকল শুভাকাঙ্খীরা করে এসেছে এতটি বছর, তার সকল জবাব আজ দিলাম। আশা করি তাদের মিথ্যের জবাব আমি প্রমাণ সহ দিতে পেরেছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৩১
৪৪টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×