somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লম্পট ও ধর্ম ব্যাবসায়ী সাঈদীকে নিয়ে পিয়াল ভাইয়ের এপিক স্ট্যাটাস,

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেসবুকে প্রতিদিনই অনেক স্ট্যাটাস পড়ি। স্ট্যাটাসের আবার প্রকারভেদ কিংবা ধরন ধারনও ভিন্ন রকমের হয়। এর মধ্যে অনেক স্ট্যাটাস ভালো লাগে, কোনোটা খুব বেশী ভালো লাগে আবার কোনোটা হয়ত তেমন নয়। কিন্তু বছরের ঠিক শেষে এসে পিয়াল ভাইয়ের এই স্ট্যাটাস্টা আসলে আমার জীবনে পড়া সর্বশ্রেষ্ঠ স্ট্যাটাসগুলোর মধ্যে অন্যতম। এতই অসাধারণ একটি স্ট্যাটাস যেটি পোস্ট আকারে না দেয়াটাও অন্যায় বলে মনে করি। পিয়াল ভাইয়ের একজন গুনমুগ্ধ পাঠক হিসেবে আজকে তাঁর এই স্ট্যাটাসটি সামুর সকল পাঠকের সাথে শেয়ার করলাম। স্ট্যাটাসটির সবচাইতে মূল বৈশিষ্ঠ্য হচ্ছে এর শক্তিশালী বয়ানভঙ্গি আর যুক্তির সাবলীলতা। একটানা বলে গেছেন তিনি। একটি লাইনে, একটি অক্ষরে পালটা কথা বলবার স্থান নেই। স্ট্যাটাসে কোনো ক্ষোভ নেই। আছে খুব সহজ ও সরল কিছু কথা। যেন দীর্ঘ যুদ্ধের পর ক্লান্ত এক যোদ্ধা। স্ট্যাটাসটি পড়েই আমার মুখ দিয়ে শুধু দুইটি শব্দ বেরোলো, "Thats it", আর কথা না বাড়াই। আসুন স্ট্যাটাসটি দেখে নেই...
-------------------------------------------------------------

হিংসা-মিথ্যা এবং মোনাফেকির পতনটা সবসময়ই অত্যন্ত ট্রাজিক হয়। ধর্মের সাইনবোর্ডের আড়ালে ভেকধরা একাত্তরের দালাল-খুনী-ধর্ষকরা এবং তাদের পোষা তোতাপাখীরা এতদিনে নিশ্চয়ই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে যে আল্লাহতায়ালা আবারও তাদের উপর গজব নাজিল করেছেন; এদ্দিন ধরে পাপের ষোলকলা পূর্ণ হতে দিয়েছেন মাত্র। একের পর এক ষড়যন্ত্র যখন মুখ থুবড়ে পড়া শুরু করলো তখনই জামাত-শিবিরের সাবধান হওয়া উচিত ছিলো। তারা কিন্তু আল্লাহর বিধানকেই চ্যালেঞ্জ করেছে এতদিন আল্লাহওয়ালা সেজে। কিন্তু সব নাটকেরই দ্য এন্ড থাকে।

ঘাতক ও দালাল শিরোমনি গোলাম আযম না, জামাত-শিবির পুরা জুয়াটা খেলেছিলো দেইল্যা রাজাকার ওরফে আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে নিয়ে। তাদের যাবতীয় ধর্ম ব্যবসার আইকন সে, ব্র্যান্ড এম্বেসেডার। মাগীপাড়ায় সুর করে যৌন বটিকা বিক্রি করা দেলু বিসমিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, মাশাল্লাহ সহকারে আল কোরআনকে চটি বানিয়ে দিয়েছিলো অশ্লীল তাফসিরে। কিন্তু এত স্ট্রংলি সেটা প্রমোট করেছে জামাতিরা যে তার একটা মার্কেট দাড়িয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জামাতের লাস্ট শট সাঈদীর ওই ভোক্তাকুলই। এরা তার জন্য কাবাশরীফ ধরে কান্নাকাটি করে, দূর দেশ থেকে খবর নেয়, তার বয়ানকে অহীজ্ঞান করে। বিচার চলাকালে সাঈদীর সাক্ষীরা গায়েব হয়ে যায়, ভারতে চলে যেতে বাধ্য করা হয়, হুমকি দিয়ে আসতে নিষেধ করা হয় আদালতে, হুমায়ুন আহমেদ-জাফর ইকবাল ভাতৃদ্বয় পর্যন্ত প্রকাশ্যে সাক্ষ্য দিতে ভয় পান, তারা শরণ নেন ক্যামেরা উইটনেস আইনের। গোপন সাক্ষ্য দেন পিতার হত্যাকারীর বিরুদ্ধে। জামাত শিবির গল্প ছড়ায় সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে গলায় রক্ত উঠে মারা গেছে নাকি কে। পুলিশদের নাকি জ্বিনেরা হুমকি দেয় কোনো বেয়াদবি যেন না করে কেউ। সাঈদী কোরআন শরীফ হাতে আদালতে কান্নাকাটি করে, অভিশাপ দেয় খোদার।ট্রাইবুনালের বিচারকের স্কাইপি কথোপকথন অবৈধ উপায়ে হাত করে প্রকাশের পর সেটা সেই অভিশাপের হাতে নাতে ফল বলে প্রচার হয়েছে, এমনকি ফেসবুকেও।

আফসুস! খোদার লানত কিন্তু তার উপরই পড়ে। প্রথমে মারা যায় তার মা, আদালতেই মারা যায় তার ছেলে।আর এখন আমাদের কানে একে একে ভেসে আসে কোরআন শরীফের কসম কেটে স্ত্রীকে প্রবোধ, প্রবাসী এক নার্সের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে অনুযোগে সে আল্লাহ নামিয়ে আনে টেলিফোনে। আল্লাহ নামায় সে কিশোরী এক মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক এবং অশ্লীল ফোনালাপে, যৌনরগরগে সে আলাপে এশার নামাজ ঢোকে, বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে তার প্রেমালাপ চলে মসজিদে যাওয়ার পথে, মাগরিবের ওয়াক্তে।

সাঈদীর এই সত্যিকার এবং অশ্লীল রূপের কদর্য প্রকাশ জামাত শিবিরের পায়ের নীচের মাটি কাপিয়ে দিয়েছে। যেই স্কাইপি হ্যাকিং নিয়ে তারা চারদিক গরম করে রেখেছিলো প্রাইভেসি বিষয়ক মানবাধিকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, সেটা এখন তাদের দিকে ফিরে এসেছে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে। মরিয়া হয়ে তারা বলছে এই কণ্ঠস্বর সাঈদীর না, এটা কোনো অভিনেতার, এটা ভিডিও এডিটিং করে করা ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু লাভ হচ্ছে না কোনো। কারণ এই বাঙালীকে বছরের পর বছর মিথ্যা গালগল্প গিলিয়ে, গসিপপ্রিয় করে তোলার কৃতিত্বটা জামাতের। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হিন্দুঘরের জারজ সন্তান, আমাদের স্বাধীনতার বিনিময়ে ভারতকে এই দেশ লিখে দেওয়া হয়েছিলো ৭ দফা চুক্তি করে, বাকশাল নিয়ে মিথ্যাচার, ধর্মনিরপেক্ষতার ভুল ব্যাখ্যা ইত্যাদি মিথ্যাচার ও ফ্যাক্ট টুইস্টিংয়ের মাধ্যমে তারা মানুষের মধ্যে এমন একটা যুক্তিবিচারহীন বিশ্বাসপ্রবণতা তৈরি করেছে যে তারা যে কোনো মিথ্যাগল্পকেই সত্য বলে ধরে নেয়। যতক্ষণ না কংক্রিট দলিলপত্র দিয়ে সেগুলাকে মিথ্যা প্রমাণ না করা হয় এবং সেই সত্য উপাত্তকেও তুড়ি মেরে আজগুবি বানিয়ে দেওয়ার চর্চাটাও জামাত-শিবিরের তরফেই চলে।তাই এই ফোনসেক্সের কণ্ঠ সাঈদীর না, কাবা শরীফে মাথা ঠুকে মাথা ফাটিয়ে ফেললেও বাঙালী বিশ্বাস করবে না।

মজার ব্যাপার হচ্ছে এই জামাত শিবিরই ওয়ান ইলেভেনের পর সেনানিগ্রহে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার ইন্টেরোগেশনের বিভিন্ন স্বীকারোক্তির টেপ নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে মজা লুটেছে। বিডিআর বিদ্রোহের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আবেগপ্রবণ সেনাঅফিসারদের অভিমানী বিতন্ডার এমপিথ্রি আপলোড করে কেজিদরে লিংক শেয়ার করেছে। সেই একই বিল্ডিং থেকে যখন সাঈদীর ‘কল্পরতির বিশেষ ওয়াজ’ বাজারে আসলো, তারা সেটার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে। যেই গোয়ালের গরু চড়াইলা এতদিন এখন সেই গোয়ালের গরু না চিনলে তো পাবলিক হাসবোই।

এটাই বাস্তবতা। আল্লাহ মুনাফিকদের মিথ্যার প্রাসাদ এভাবেই চূর্ণ করে দেন। প্রকাশ করে দেন তাদের স্বরূপ। জানান দেন তারা ধর্মের নামে দুনিয়া শিকার করতে নামা মুখে মধু কিন্তু হায়েনার অন্তর নিয়ে ঘোরা একদল প্রতারক মাত্র।তাদের বিচারের জন্য আল্লাহ হাশরের ময়দান পর্যন্ত অপেক্ষা করেন না। মুনাফিকরা কৌশলে তাদের খারাপ দিকগুলো মানুষের কাছ থেকে গোপন করে, যাতে তারা তাদের খারাপ না বলে, অথচ, আল্লাহ তা‘আলা তাদের চরিত্রগুলো প্রকাশ করে দেন। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তাদের গোপন বিষয় ও তাদের অন্তরের অন্তঃস্থলে কি আছে, সে সম্পর্কে জানেন। এ কারণেই তিনি বলেন, وَهُوَ َ مَعَهُمۡ إِذۡ يُبَيِّتُونَ مَا لَا يَرۡضَىٰ مِنَ ٱلۡقَوۡلِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِمَا يَعۡمَلُونَ مُحِيطًا﴾ অথচ তিনি তাদের সাথেই থাকেন যখন তারা রাতে এমন কথার পরিকল্পনা করে যা তিনি পছন্দ করেন না। আর আল্লাহ তারা যা করে তা পরিবেষ্টন করে আছেন।﴾سَوَآءٌ عَلَيۡهِمۡ أَسۡتَغۡفَرۡتَ لَهُمۡ أَمۡ لَمۡ تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ لَن يَغۡفِرَ ٱللَّهُ لَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَٰسِقِينَ ٦﴿ [المنافقون: ٦] অর্থ, তুমি তাদের জন্য ক্ষমা করো অথবা না করো, উভয়ই তাদের জন্য সমান। আল্লাহ তাদেরকে কখনো ক্ষমা করবেন না। অবশ্যই আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে হেদায়েত দেন না।

লাম্পট্য, ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার, গিবত অনেক হয়েছে।ফল হয়নি। নাউ ইটস পে ব্যাক টাইম।যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠিকই চলছে। রায়ও হবে। সাঈদীর জন্য বুক ফাটিয়ে কাঁদবে এমন মুমিন ও ঈমানদার মুসলমান বাংলাদেশে তখন আর থাকবে না।পা্ওয়া যাবে না। এটাই আল্লাহর মাইর।

অস্ট্রেলিয়ান অ্যাবোরিজিনিরা জানেও না, হাজারও যুগ আগে তাদের আবিষ্কৃত ‘বুমেরাং’ মাঝে মাঝে রূপক হয়ে কিভাবে ইতিহাসের নিয়তি নির্ধারণ করে দেয়!

সূত্রঃ
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৫
২৩টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×