শেষের আগে
ব্রেক-আপটা হয়েই গেল। যদিও ব্রেক-আপ হবার মত তেমন কিছুই হয় নাই। আমি তার সাথে এমন কোন বিহেভ করি নাই যে ব্রেক-আপ করতে হবে। তেমন খারাপ কথাই বলি নাই যে ব্রেক-আপ করতেই হবে। তারপরও ব্রেক-আপ হয়ে গেল। সারাটা দিন দুজন একসাথে কাটিয়েছি। তারপর রাতে তাকে যখন ফোন দিলাম, ঠিকমতন বাসায় গেছ তো? সে জানাল হ্যা সে গিয়েছে। তারপর বলে, এই তুমি আমাদের বাসায় চলে আস, ভাইয়া-ভাবি কেউই বাসায় নাই। কালকে আসবে।
-আরে বাবা আগে বলতে, এখন আসব কি করে?
- তুমি আসবে কিনা বল?
-না। আমি পারব না। এত রাতে আমি যাই। আর তোমার প্রবলেম হক।না,আমি পারব না। আমি হাসতে হাসতে বলি।
-না তোমাকে আসতেই হবে। তার রাগত ভঙ্গি।
-আরে বাবা তুমি বোঝ না কেন এখন আমি গেলে নিচে গেটে আমার নাম ভিজিটরের খাতায় লেখা থাকবে। তোমার ভাইয়া দেখলে সমস্যা হতে পারে।
-তুমি আসবে নাকি বল? ভাইয়া কি ভিজিটরের খাতা চেক করবে নাকি? আর সমস্যার কি আছে। উই আর ইন আ রিলেশনশীপ। যদি না আমাকে তোমার ডজ দেয়ার চিন্তা থাকে।
-না, আমি আসতে পারব না। তুমি আমাকে আর জোর কর না। তুমি না বুঝে খালি জোর কর।
-আমি খালি জোর করি না!
-হ্যা কর তো। তুমি জোর না করলে কি তোমার সাথে আমার রিলেশন হত নাকি; আমি তাকে ঠান্ডা করার জন্য বলি।। আমি যখন কোন আবেগি কথা বলতে যাই কিনবা যখন কে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে বা কে বেশি ভালোবাসে তা নিয়ে ‘মধুর ঝগড়া’ করতাম তখন সে বলত, আমি না চাইলে তো আমাদের প্রেমই হত না। কত দাম সাহেবের! এত সুন্দর একটা মেয়ে আমি। আমার দিকে ফিরেও তাকাত না। ছয় মাস গ্যান গ্যান করে রাজি করিয়েছি। এখন কত ভাবের কথা। কিন্তু সে উলটা মানে বুঝে আরো বেশী ক্ষেপে যায়।
-এই রিলেশনে তোমার কোন ইচ্ছাই ছিলনা! আমি জোর করে করিয়েছি!
-তুমি উলটা বোঝ কেন,আমি বলতে চেয়েছি………………..?
-আমি উলটা বুঝি না! আমি তোমাকে একটা মেয়ে হয়ে জোর করেছি। ছিঃ কত খারাপ, নির্লজ্জ মেয়ে আমি। আমার তো মরে যাওয়া উচিত।
-দেখ আমার কথা না বুঝেই তুমি চিল্লাইতেছ।
-হরে ভাই। আমি অনেক খারাপ। তোরে টর্চার করি,বেলাজ,চিল্লাই। ওকে; যা তোরে আমি আর জোর করব না। তোর চৌদ্দ পুরুষের ভাগ্য আমি তোর সাথে প্রেম করেছি। যা তোর সাথে আমার ব্রেক-আপ। ঈদ মোবারক। গুড বাই মিস্টার আনিস। গড ব্লেস ইউ।
চার বছর আগে
ভর দুপুর। বাস থেকে নেমেছি-রাস্তা পার হব। কিন্তু রাস্তা জোড়া গাড়ির ভীড়। তারপর একটুখানি ফাকা হলে আট-নয় জন মানুষ রাস্তা পার হয়। আমি পার হতে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। একটা লাল প্রাইভেট কার প্রচন্ড গতিতে আসছে। হঠাত করেই আমার পাশ দিয়ে একটি মেয়ে রাস্তা পার হতে দোড় দেয়, কিছু বোঝার আগেই আমার বাম হাত তাকে ধরে ফেলে। মেয়েটি বিপদ আচ করতে পেরে কাপতে শুরু করে।
এতক্ষন যা করেছি সব অজান্তে, এইবার আমার আঠার বছরের মন নায়ক হতে চাইলো। আপনি ভয় পাবেন না। চলুন আপনাকে আমি রাস্তা পার করে দেই। আমার হাত ধরুন। রাস্তা পার হতে গিয়ে দেখি তার জুতা ছিড়ে গেছে। এক হাতে তাকে আরেক হাতে তার জুতা ধরে রাস্তা পার হচ্ছি। কিন্তু কানা গরুর জুদা মাথার মত আমি তাকে টানি এক দিকে সে যায় আরেক দিকে। এমনি ভয় পেয়েছে যে দুই হাত দুরে গাড়ি থাকতে সে ভয়ে অন্য দিকে সরে গিয়ে আরেক গাড়ির উপর পরার উপক্রম হয়। বোঝলাম নৌকাডুবিতে সাতার না জানা মানুষকে উদ্ধার করতে গিয়ে সাতার জানা মানুষ কেন মারা পড়ে।
আমি এমন ভাবে দাঁড়িয়ে জুতা সেলাই করা দেখছি তাতে যে কেউ মনে করবে আমি জুতা সেলাই করা শিখতে এসেছি। কিন্তু এখনও ওস্তাদের সুনজর পাইনি বলে বসার অনুমতি পাইনি। ট্রাউজারের পকেটে হাত। বাম হাতটি অলস কিন্তু ডান হাতটি একটি মহত কাজে ব্যস্ত। আমার মোবাইল ফোনে যে রাবারে ফিতা লাগানো তা খুলতে ব্যস্ত। আমি যদিও এই ব্যাপারে এক্সপার্ট। যে কার কাছ থেকে আমি নাম্বার নেবার সময় মোবাইল বের করার সময় এই রাবারটি ত্রিশ সেকেন্ডে খুলে পকেট থেকে মোবাইলটি এমন ভাবে বের করে নিয়ে আসি যেন আমার মোবাইলটি অক্ষত। যদিও কাছের লোকেরা জানে মোবাইলের সব গুলো স্কু পরে গেছে। মোবাইলটা রাবারের ফিতা দিয়ে প্যাচানো। কিন্তু আমি নাম্বার নেবার সময় এমন ভাবে ধরি যে কেউ কিছু টের পায় না। আবার পকেটে ঢুকিয়ে ত্রিশ সেকেন্ডে ফিতাটি লাগাতে পারি। কিন্তু আজ কোন বিদ্যাই কাজে দিচ্ছেনা। ফিতা খালি প্যাচ লেগে যাচ্ছে। শালার এমন নায়কের মত একটা কাজ করলাম, এখন কেউ বিশ্বাস করবে না। বলবে চাপা। নাম্বারটা নিয়ে গেলে বলতে পারব বলব মামা বিশ্বাস না গেলে কথা বলে দেখ নাম্বার নিয়ে এসেছি।
-আমাদের কোথায় দেখা হবে? সে জানতে চায়।
-মোবাইল তো বাসায় রেখে এসেছি।
-আপনার মোবাইলের কথা কে জানতে চাইছে! মোবাইল নিয়ে আসলেও লাভ হত না। আমার মোবাইল নাই।
-মোবাইল নাই! আমি আর্তনাদ করে উঠালাম। কেন?
-টেনে পড়া মেয়েদের আমাদের পরিবারে মোবাইল দেয়া নিষেধ। ওকে, এত কথা বলে কোন লাভ নেই। কালকে আপনি সেজান পয়েন্টের সামনে থাকবেন। বিকেল তিনটায়। যাই। ভালো থাকবেন। জুতা সেলাই এর টাকাটা নিজ দায়িত্বে দিয়ে দিবেন।
সেজান পয়েন্ট; বিকেল তিনটা
মোবাইল যে আমাদের মিথ্যাবাদী করে দিচ্ছে শুধু তাই না; এটি আমাদের পাঙ্কচুয়ালিটিও নষ্ট করে দিচ্ছে। আমরা দুজনই ঠিক তিনটায় এসে হাজির। অন্যদের বেলায় হলে আমি মাস্ট আধা ঘন্টা দেরি করে আসতাম। চিন্তা করতাম এসেই তো ফোন দিবে। হয়তো সেও তাই চিন্তা করত। সে এসে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করল, আপনি ছাত্র কেমন? আমি তো অবাক। কেমন আছেন ভাল না খারাপ কিছু না বলে বলে জানতে চায় আমি ছাত্র কেমন। কেন? আমার উলটা প্রশ্ন। আরে ভাই,প্রাইভেট ফাকি দিয়ে এসেছি। ধন্যবাদ দিতে। ধন্যবাদ দিতে তো বেশি সময় লাগবে না। আর এক ঘন্টার আগে বাসায়ও যেতে পারব না। ছাত্র ভালো হলে ক্ষতিটা পুশিয়ে নেয়া যেত।
যদি কথা ছিল এক ঘন্টা থাকবে। দুই ঘন্টা আড্ডা দিলাম। যাবার সময় আমার নাম্বার নিয়ে গেল। পারলে মিস কল দিবে আমি যেন ব্যাক করি।
তারপর থেকে থেকে তার মোবাইল কিনার আগ পর্যন্ত এক মজার ডিউটি পালন করেছি। বাংলাদেশের যেকোন নাম্বার থেকে মিস কল এসেছে সেই নাম্বারে ব্যাক করেছি। বেশির ভাগ সময়ই নিরাশ হয়েছি। পরাজয়ে ডরে না বীর! যে আমি মোবাইলে দশ টাকার বেশী লোড করতাম না। সব সময় মোবাইলে পঞ্চাশ টাকা রাখতাম।
ভালোবাসা দিবস-২০১০
চকলেট কেন? আমি কি এখনো পিচ্চি নাকি? তবে কি দিব। ফুল আনতে পারলেন না। অই তুই ফুল দিয়ে কি করবি? ফুল দিয়ে যাই করি না কেন আপনার জেনে লাভ নাই। আনেন নাই - নাই। কিন্তু আল্লাহর দোহাই লাগে আপনি আমাকে অন্তত আজকের দিনে তুমি করে বলেন। বলে সে একটা প্যাকেট এগিয়ে দেয়। হাতে নিতে নিতে বলি তোর মাথা গেছে। কি আনছিস আমার জন্য। খুলে দেখেন।
অই তুই আমার জন্য বেনসন আনছিস কেন? আমি তো গোল্ডলিফ খাই।
-না, তুমি এবার থেকে বেনসন খাবে, গোল্ডলিফ খাইলে শরীরে বেশি ক্ষতি হয়। এক বছর চিল্লাইয়া তো সিগারেট খাওয়া অফ করতে পারলাম না। তাই এখন থেকে বেনসন থেরাপি। নো গোল্ডলিফ।
-তুই আমারে তুমি তুমি বলা থামাবি। পোলাপাইনের মুখে তুমি শুনতে ভালো লাগেনা। আর আমার শরীর নিয়ে তোর এত টেনশন কেন?
-তুমি না সুস্থ থাকলে কে আমাকে রক্ষা করবে। কে ভুল সংশোধন করে দিবে।
-তুই থাম। ভাবিকে আজি ফোন করে বলব তরে যেন আর হিন্দি সিনেমা দেখতে না দেয়। তোর মাথাটা গেছে হিন্দি সিনেমা দেখে।
-সত্যি আমার মাথা গেছে। তুমি বোঝালে আমি বোঝতে পারি। কিন্তু বাসায় গেলে আমি সব ভুলে যাই। আমার মনে হয় তোমাকে ছাড়া আমি বাচব না।
-দেখ তুই আমার প্রব্লেম বুঝবি না। আমি গ্রামের ছেলে। আমার পরিবারের আমার উপরে অনেক আশা। সে দিন এক মহিলা আম্মুকে বলতেছে দেখবেন পরে ছেলে ভাত দিবে না। তুই বুঝিস কত বড় কথা। আর আমার পরিবারের আমার উপর নর্মাল ফ্যামিলি থেকে একটু বেশি দাবী আছে। কারন আমার ফ্যামিলি আমার জন্য যে কষ্ট করছে তার কোন তুলনা হয় না।
-প্লীজ তুমি এমন করে বলো না। নিজেকে খুব খারাপ মনে হয়, ছোট মনে হয়। আমি কি খুব বেশি খারাপ?
-নারে তুই অনেক ভালো একটা মেয়ে। কিন্তু আমি সবাইকে নিয়ে সুখী হতে চাই।
-তবে আমাকে তুমি কেন বঞ্চিত করব? দেখ আমি অনেক ভালো একটা, লক্ষী একটা বউ হব।
আমি চুপ করে থাকি। মন সায় দেয় না। বিয়ের পরে ভালোবাসা নতুন চেহেরা নেয়। তা আমার থেকে আর কেউ ভালো জানে না। নদী ভাবির মত ভালো মেয়ে আর কেউ ছিল না। তার সাথে যখন একবার ভাইয়ার ব্রেক-আপ হয় তখন আম্মু নিজে তাদের সমস্যা সলভ করেছেন। এতো ভালো ছিলেন তিনি। আজ তার কারনে আমাদের ফ্যামিলির এই অবস্থা। আম্মু মাঝে মাঝেই বলেন, নদী মেয়েটা এমন অভিনয় কেমন করে করলো?
নিরবতা ভেঙ্গে সে বলে, তুমি কি আমার হাত এইবার একটু ধরবে? আমি তার হাত ধরতে গেলে সে আমাকে জড়িয়ে ধরে। বলে দেখ আমি অনেক ভালো একটা বউ হব। তোমার আম্মু একটি মেয়ে পাবে। বলে সে কাদতে থাকে।
এসএমএস ত্রিশ পয়সা
দুইটা ইম্পর্টেন্ট ক্লাশ টেষ্ট, একটা ল্যাব মিস করলাম। ভার্সিটিতে গেলাম না। আজকে ওর পরিক্ষার রেজাল্ট দিবে। বেচারী কার না কার মোবাইল থেকে ফোন দিবে। ক্লাসে থাকলে রিসিভ করতে পারব না। তাই ক্লাসে গেলাম না। যদিও আমি বলেছি তোমার রোল নাম্বার দাও আমি দেখে নিব। সে বলে না। রেজাল্ট খারাপ হলে তুমি অনেক কষ্ট পাবে – একবারে যা সহ্য করা কঠিন হতে পারে। আমি দেখব। ভালো হলে সাথে সাথে জানাব আর খারাপ হলে রাতে। ইন দা মিন টাইম, তুমি বোঝে যাবে আমার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে। আবার আমাকে নিয়ে তোমার আশা একটু বেশিই বলে তুমি ভাববে যে না খারাপ হয়নি। এমন করে তুমি খারাপ সংবাদটা শোনার জন্য মেন্টাল্লি প্রিপার হবে। টাইম ইজ দা বেস্ট হিলার। আজব যুক্তি। বারটার সময় ফোন দিয়ে জানল সে এ প্লাস পেয়েছে। শুধু তাই না। এই উপলক্ষে তার ভাই তাকে একটি মোবাইলো কিনে দিয়েছে। তাকে মনে হল রেজাল্ট থেকে সে মোবাইল নিয়েই বেশি খুশি। কথাটা বলতেই সে বলে অবশ্যই। আমি এখন সারারাত আমার জামাইর সাথে কথা বলব। মনে হবে আমারা একই সাথে আছি। অই তোর সাথে কে কথা বলবে রাত জেগে। মানুষের কোন কাজ নাই তো। সে বলে তাই না। ‘তাই না’টা একটু টান দিয়ে। দেখা যাবে, সাহেব কে কথা বলে!
আগে সে আমাকে মাঝে মাঝে চরম চরম সব চিঠি লিখত। এখন লেখে না। আমি বলি, তুমি তো আমাকে আগে অনেক চিঠি লিখতে এখন লিখ না কেন? সে বলে এখন তো এসএমএস করি। কাগজের দাম আশি পয়সা, আর এসএমএস ত্রিশ পয়সা। কিছু পয়সা বাচান সংসারের কাজে আসবে। হবেন তো অর্ধশিক্ষিত বেকার ইঞ্জিনিয়ার। মাঝে মাঝেই সে এমন আজব সব যুক্তি দিত। আমি কিছু বলার আগে সে বলে এই একটু রাখতো। কে যেন ফোন দিয়েছে।
এত রাতে কে ফোন দিলো। বসে বসে ভাবতে থাকি। কিছুক্ষন পর পর ফোন দেই। ওয়েটিং, ওয়েটিং,এন্ড ওয়েটিং………………। হাসিবের কথার মানে এতদিনে বোঝতে পারলাম। আরে ভাই গার্লফ্রেন্ড এমন আজব চিজ যে তার বাপের সাথে কথা বললেও প্রেমিকের খারাপ লাগে। আমি বলি তোরে বলছে। সে বলে শোন, তুই তোর গার্লফ্রেন্ডকে ফোন দিয়ে দেখলি ওয়েটিং তোর খারাপ লাগবে না। লম্বা সময় ধরে হলে লাগবে। আমি বলি। সে বলে, লম্বা সময় পরে যদি বলে আরে আব্বু ফোন দিয়ে ছিল। তোর কোন এক্সকিউজ থাকবে না। খারাপ কিন্তু ঠিকই লেগেছে তাই না!
দেড় ঘন্টা পরে ফোন দিয়ে সে হেসে কুটিকুটি। আরে রায়হান ভাই ফোন দিয়েছিল। এইডা আবার কেডা? আমার বড় খালার ছেলে সুইডেন থাকে। দেশে নাকি আসবে। ভাইয়া এলে বিয়ে করবে। কত মজা না হবে। আর ভাইয়া যা মজার মানুষ না। হাসাতে হাসাতে দম বন্ধ করে দেয়।
নভেম্বর-২০১২
ঝগড়া হবার দেড় মাস পর, সে ফোন দিল। এই দেড় মাস প্রতিটা দিন, প্রতিটা সেকেন্ড যে কিভাবে কাটিয়েছি তা আমি বলতে পারব। কতটা কষ্ট আমি পেয়েছি, কতটা মিস আমি তাকে করেছি তা কেবল আমিই জানি। কতবার ফোন দিয়েছে তা কেবল আমি জানি। এয়ারটেল কোম্পানির কাছে বোধকরি তার হিসাব নেই। এসএমএস পাঠিয়ে রাখতাম যেন ফোন চালু করার সাথে সাথে সে আমার এসএমএস পায়। আমি যেন ডেলিভারী এসএমএস পাই। একবার ডেলিভারী এসএমএস পেলেই সাথে সাথেই ফোন দিব। বলব আই এম সরি ফর এভরিথিং দাট আই হাভ ডান। আর কি কি বলব সব ভেবে রাখতাম। তারপরও দশ মিনিট পর পর ফোন দিতাম। তার ফোন খোলা পেতাম না। সেও ফোন দিত না। দেড় মাস পরে সে নতুন নাম্বার থেকে ফোন দিলো।
-হ্যালো আমি নীতু। আগামি শুক্রবার আমি সুইডেন চলে যাব।
নীতু সুইডেন চলে যাবে। কার সাথে যাবে, কেন যাবে? সব প্রশ্ন আমার মাথার এসে ভীড় করেছে। আমি কোন প্রশ্ন করতে পারছি না। বিগত দিনের সব স্মৃতি চোখের সামনে ভাসছে। শুনেছি মৃত্যুর আগে মানুষ বিগত দিনের সব কিছু একসাথে চলচিত্রের মত দেখতে থাকে। তবে কি আমি মারা যাচ্ছি।
না আমি বেচে আছি। কারন আমি নীতুর সব কথা শুনছি। কাল বিকেল তিনটায় প্লীজ আমার সাথে একটু দেখা কর। ভাবলাম নীতু হয়তবা দুঃখ প্রকাশ করবে। তাই অভিমান করে বলতে চাইলাম কি আর হবে দেখা করে। কিন্তু নিতু বলে যেতে থাকে তোমার কাছে আমার কিছু জিনিশ আছে কাইন্ডলি নিয়ে এসো। গিফট গুলো আনার দরকার নেই। চিঠিগুলো নিয়ে এসো।